নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘর কেমন ছিল




ভাই ও বোনেরা দেখুন আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘর কেমন ছিল (শৈল্পিক ছাপ) - একটি শিক্ষা নিন। তাকে বেহেশত ও পৃথিবীর সবকিছু দেওয়া হয়েছিল তবুও তিনি এত সরলভাবে জীবনযাপন করেছিলেন। যে ঘর মানুষকে মনে করিয়ে দেয় এই জীবন চিরদিনের জন্য নয়, বরং মুমিনের জন্য পরকালীন জীবনই প্রকৃত আবাস।রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদাসিধে ও কৃচ্ছ্রের জীবন নিজেই বেছে নিয়েছিলেন; যেন উম্মত পার্থিব জীবনের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে জানতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমার ও দুনিয়ার দৃষ্টান্ত একজন আরোহীর মতো—যে একটি গাছের নিচে ছায়া গ্রহণ করে, বিশ্রাম করে এবং তাকে ছেড়ে চলে যায়।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৭)

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, মাস কেটে যায় কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরে খেজুর ও পানি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকতো না। তিনি মদীনায় সারা জীবন কখনো পেট ভরে রুটি খাননি। পেটে পাথর বেঁধে থাকতেন। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিছানা ছিল চামড়ার তৈরি এবং তার ভেতরে ছিল খেজুরগাছের ছাল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৫৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তাঁর ব্যবহৃত বালিশও ছিল চামড়ার তৈরি, যার ভেতরে ছিল খেজুরগাছের ছাল। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪১৪৬)
তিনি একটি মাদুরের উপর ঘুমাতেন এবং এটি তার পিঠে মাদুরের দাগ উঠে যেত। তা দেখে সাহাবীরা কাঁদতেন - তবুও তিনি সমস্ত লোকের মধ্যে সবচেয়ে কৃতজ্ঞ ছিলেন। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর বর্ণনায়ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘরের আসবাবের বিবরণ পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) একটি চাটাইয়ের ওপর শুয়ে ছিলেন। চাটাইয়ের ওপর কিছুই ছিল না। তাঁর মাথার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার বালিশ। আমি তাঁর শরীরে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললাম। তিনি বলেন, কাঁদছ কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কায়সার ও কিসরা ভোগ-বিলাসে মত্ত অথচ আপনি আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে তাদের জন্য পার্থিব জীবন ও আমাদের জন্য পরকাল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৯১৩)
এ ছাড়া মহানবী (সা.) খেজুর পাতার ছোট চাটাইয়ের ওপর নামাজ আদায় করতেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৬৫৬)
রাসুল (সা.)-এর ঘরে একটি চেয়ার, চামড়ার মশক ও লাল রঙের চামড়ার তাঁবু থাকার বর্ণনা পাওয়া যায়।উল্লেখ্য, মক্কায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিজস্ব কোনো ঘর বা বাড়ি ছিল না। খাদিজা (রা.)-কে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত দাদা ও চাচার সঙ্গে থাকতেন এবং বিয়ের পর খাদিজা (রা.)-এর বাড়িতেই। তিনি রাতে ঘুমাতেন না যতক্ষণ না তিনি অভাবীদের মধ্যে সবকিছু বিতরণ করতেন।
আল্লাহ আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন তবুও আমরা মনে করি আমাদের কিছুই নেই। আমাদের ফ্রিজ এবং আলমারি রয়েছে। যা ভরা তবুও আমরা এখনও অসন্তুষ্ট বোধ করি। আমাদের আরামদায়ক শয়নকক্ষ রয়েছে তবুও আমাদের হৃদয় এখনও অশান্তি অনুভব করে। আমাদের প্লেটে দিনে তিন বার খাবার জোটে তবুও আমরা এখনও নিজেকে নিরন্ন মনে করি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল