ইমাম বুখারি



পুরো নাম মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ। তাঁর নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদিস তাঁর উপাধি। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাঁকে বুখারি বলা হয়।

ইমাম বুখারি প্রধান হাদিস সংগ্রহ, সহিহ আল-বুখারির জন্য পরিচিত। ইমাম আল-বুখারিকে ইসলামের ইতিহাসে হাদিসের সবচেয়ে বিশিষ্ট পণ্ডিতদের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
মুহাম্মদ আল-বুখারি ৮১০ খ্রিস্টাব্দে বুখারায় জন্মগ্রহণ করেন।ইমাম বুখারির প্রায় ৬ লাখ হাদীস মুখস্থ ছিল। এরমধ্যে প্রায় ৭,২৭৫ টি হাদিস নির্বাচন করেন।যেগুলিকে তিনি সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেছিলেন এবং এইভাবে, তার আল-জামি আল-সাহিহ আল বুখারিতে স্থান দেন। বুখারি শরিফের পুরো নাম হলোঃ আল-জামি আল-সাহীহ আল-মুসনাদ মিন উমুরি রাসূলিল্লাহ ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়ামিহি।
ইমাম বুখারির পাণ্ডিত্যের ব্যতিক্রমী কৃতিত্ব ইসলামের জন্য একটি মহৎ অবদান। তাঁর সহিহ আল-বুখারির সংকলন গত এক হাজার বছর ধরে হাদিস-ভিত্তিক আইনশাস্ত্রের একটি অপরিহার্য উৎস হিসেবে কাজ করছে। এই গ্রন্থটিকে ইসলামী বিধি-বিধান বিষয়ে কোরআনের পরে সবচাইতে নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ইমাম বুখারী স্বীয় শিক্ষক ইসহাক বিন রাহওয়াইহ থেকে এই গ্রন্থ রচনার প্রেরণা লাভ করেন। একদিন তিনি একটি এমন গ্রন্থের আশা ব্যক্ত করেন যাতে শুধু সহীহ হাদিস লিপিবদ্ধ থাকবে। তাঁর ছাত্রদের মাঝে ইমাম বুখারী তখন এই কঠিন কাজে অগ্রসর হন।২১৭ হিজরী সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি মক্কা শহরের হারাম শরীফে এই গ্রন্থের জন্য হাদিস সংকলন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৩ হিজরী সনে এর সংকলনের কাজ সমাপ্ত হয়।
জীবনকালের শেষদিকে একবার বুখারার তৎকালীন শাসনকর্তা "খালিদ বিন আহমাদ যুহলী" হাদীসশাস্ত্রে ইমাম বুখারির পান্ডিত্য দেখে তাকে দরবারে এসে শাসনকর্তার সন্তানদেরকে হাদিস শেখাতে বলেন। ইমাম বুখারি এটাকে হাদিসের জন্য অবমাননাকর মনে করেন। ফলে উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তখন তিনি মাতৃভূমি বুখারা ত্যাগ করে সমরকন্দের খরতঙ্গে চলে যান এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২৫৬ হিজরীর, ১লা শাওয়াল মোতাবেক ১ সেপ্টেম্বর ৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের শুক্রবার দিবাগত রাতে মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন শনিবার যোহরের নামাজের পর খরতঙ্গেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল