আব্বাসীয় খলিফা হারুন অর রশিদ
হাজার বছর আগের একজন আব্বাসীয় খলিফা হারুন অর রশিদ। যিনি ছিলেন প্রাণচঞ্চল বাগদাদ নগরীর শাসনকর্তা। তাঁর শাসনকালেই বাগদাদ নগরী ঐশ্বর্যের চরমে পৌঁছায়। বাগদাদ নগরী জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধর্মীয় ও সংস্কৃতিচর্চার শিখরে পৌঁছেছিল বলে সে সময়টিকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয়।হারুন ছিলেন তৃতীয় আব্বাসীয় খলিফা আল-মাহদি এবং তার স্ত্রী খায়জুরান যিনি ইয়েমেনের একজন প্রাক্তন দাসের তৃতীয় সন্তান। খলিফা হওয়ার আগে, হারুন ৭৮২ খ্রিস্টাব্দে তার পিতার শাসনামলে বসফরাসে বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে তার সুনাম অর্জন করেন। এই উজ্জ্বল সাফল্য তার পুত্র হারুনের প্রতি আল-মাহদীর স্নেহকে এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে তিনি তাকে মুসা আল-হাদির পরে উত্তরাধিকারী-নিযুক্ত করেন এবং তার নাম রাখেন আল-রশিদ (সঠিক নির্দেশিত)। এইভাবে ১৬ বছর বয়সে তিনি ক্রাউন প্রিন্স হন।
হারুনের পিতা আল-মাহদি ৭৮৫ সালে মারা যান এবং তার ভাই আল-হাদি সিংহাসনে আরোহণ করেন। আল-হাদি অবশ্য ৭৮৬ সালের সেপ্টেম্বরে রহস্যজনকভাবে মারা যান। তাঁর মৃত্যু দরবারে ষড়যন্ত্র বা চক্রান্তের ফল বলে বলা হয়। ফলস্বরূপ, হারুন অবশেষে ৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে ৫ম আব্বাসীয় খলিফা হন।
তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর। যুবক বয়সে খেলাফতের অধিপতি হয়ে প্রাচীন বাগদাদকে ঐশ্বর্যের নগরীতে পরিণত করেন। লোকেরা খলিফা হারুন অর রশিদকে ‘সঠিক’ এবং ‘ন্যায়পরায়ণ’ পদবি দেয়। খলিফা হারুন অর রশিদ ৭৮৬ সাল থেকে ৮০৯ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। বাগদাদে বিজ্ঞান, ধর্ম ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধি লাভ করায় তাঁর শাসনামলকে আব্বাসীয় খেলাফতের স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে। দক্ষতার সঙ্গে দীর্ঘ ২৩ বছর খেলাফতের শাসনকার্য পরিচালনার পর তিনি ৮০৯ সালে তুস নগরীতে মৃত্যুবরণ করেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন