সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মরিস বুকাইলি ও ফেরাউনের লাশ



ডঃ মরিস বুকাইলি ফ্রান্সের একজন নামকরা বিজ্ঞানী ছিলেন । একই সাথেই ছিলেন মিশরতত্ত্ব এর ফরাসি সোসাইটির সদস্য এবং একজন লেখক। তিনি ফেরাউনের মমির উপর ফরাসি অধ্যয়নের সিনিয়র সার্জন ছিলেন।তিনি একবার ফারাও (ফেরাউন) এর মমি নিয়ে গবেষণা করছিলেন, তার মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার জন্য। বুকাইলি একজন ক্যাথলিক খ্রিস্টান ছিলেন এবং বাইবেলে উল্লেখ আছে যে ফারাও ডুবে মারা যায়নি । স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছিল । ডাঃ মরিস বুকাইলি যখন ফিরাউনের অভিশপ্ত দেহ নিয়ে গবেষণা করেন তখন তিনি সামুদ্রিক লবণ খুঁজে পান যা ফেরাউনের ডুবে যাওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং চিহ্ন। গবেষণার সময় কেউ একজন বুকাইলিকে বলেছিলেন যে কোরআনে উল্লেখ আছে যে কীভাবে ফারাও (ফেরাউন)পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিল এবং এছাড়াও তার দেহ মানুষকে দেখানোর জন্য সুরক্ষিত থাকবে তা উল্লেখ ছিল । যেমন আল্লাহ বলেন,

“সুতরাং আজ আমরা তোমার দেহটি রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর নিশ্চয় মানুষের মধ্যে অনেকেই আমাদের নিদর্শন সম্বন্ধে গাফিল।“ ( সুরা ইউনুস, আয়াত ৯২)
ডাঃ মরিস যখন এই কথা শুনেছিলেন তখন তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং বিস্মিত হয়েছিলেন এবং প্রশ্ন করতে লাগলেন, এটা কিভাবে সম্ভব? এই মমি পাওয়া গিয়েছে ১৮৯৮ সালে, আর কোরআন
নাজিল হয়েছে আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে!অভিশপ্ত মমির মৃত্যুর ২০০০ বছর পরে নাজিল হওয়া পবিত্র কোরআন কীভাবে ফারাউয়ের মৃত্যু হয়েছিল তা থাকতে পারে ।
আর প্রাচীন আরবেরা তো মমি করার পদ্ধতিই জানতো না, মাত্র কয়েক দশক আগে যা আমাদের হাতে আবিস্কৃত হয়। ড.বুকাইলি ফেরাউনের
লাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে গভীরভাবে ভাবছিলেন
যে, মুসলিমদের কুরআনে কিভাবে ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণের
কথা এসেছে?
তিনি বাইবেলে ফেরাউনের লাশ সম্পর্কে
জানতে চাইলেন।তিনি দেখলেন,
বাইবেলে ফেরাউন কর্তৃক মুসার পিছু নেয়ার কথা বলা আছে কিন্তু
ফেরাউনের লাশের পরিনতি সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা নাই। তিনি
নিজেকেই প্রশ্ন করছিলেন আর ভাবতে ছিলেন যে, এটা
কিভাবে ধারণা করা যায় যে, এই মমি যার সে মুসার (আ.)-এর পিছু
নিয়েছিল? আর এটা কেমন করে সম্ভব যে, মুহাম্মদ (সা.) ১৪০০
বছর আগেই এটা সম্পর্কে জানতেন?
পবিত্র কোরআনে ফেরাউনের নিদর্শন বর্ণনা করা হয়েছে এবং আজ গবেষণার মাধ্যমে সব নিদর্শন প্রমাণিত হয়েছে। ডাঃ মরিস বই লিখেন “The Bible, The Quran And Science” এই বইয়ে তিনি প্রমাণ করেন যে, বাইবেলে অনেক সায়েন্টিফিক ভুল-ত্রুটি আছে, কিন্তু কোরআনে কোন সায়েন্টিফিক অসংগতি নেই।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...