সাবরা ও শাতিলা গণহত্যা



বর্বর ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের হাতে সাবরা ও শাতিলা নামক ফিলিস্তিনিদের দু’টি শরণার্থী শিবিরে গণহত্যার ৪০ তম বার্ষিকী ছিল গতকাল।১৯৮২ সালের ১৬ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লেবাননের দুই শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি সেনাদের পাশবিক গণহত্যা অভিযানে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন।সাবেক ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারন ওই সময় ইসরাইলের ভারপ্রাপ্ত যুদ্ধমন্ত্রী ও লেবাননে মোতায়েন ইহুদিবাদী বাহিনীর কমান্ডার ছিল। শ্যারন লেবাননের সামির জাজা ও ইয়ালি হাবিকের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী খ্রিস্টান ফ্যালাঞ্জিস্ট আধা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবির দু’টিতে গণহত্যা চালিয়েছিল। সে সময় ওই দুই শরণার্থী শিবিরে প্রায় ২০ হাজার অধিবাসী ছিল । পরপর তিনদিন ধরে চালানো ওই গণহত্যায় বহু ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয় যাদের বেশিরভাগই ছিল নিরীহ নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ।তারা শিবিরের শরনার্থীদের নির্বিচার হত্যা, পরিবারের সামনে নারীদের ধর্ষণ ও গর্ভবতী মহিলাদের লাঞ্ছিত করে।নিহতদের মধ্যে তৎকালীন যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননের অনেক নাগরিকও ছিল।

ওই গণহত্যার পর তৎকালীন যুদ্ধমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন মানুষের কাছে সাবরা ও শাতিলার কষাই হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করে। অবশ্য ওই গণহত্যার ঘটনা ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রথম কিংবা শেষ অপরাধযজ্ঞ ছিল না।লেবাননের সাবরা ও শাতিলা ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে মাত্র তিনদিনে প্রায় ৫০০০ লোককে হত্যা করা হলেও এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিশ্বের সাধারণ জনগণ। জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ সমাবেশের পরিপ্রেক্ষিতে পাশ্চাত্যসহ বিভিন্ন দেশের আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবিরে গণহত্যার জন্য তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দায়ী করে। প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করে বলা হয় এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।আন্তর্জাতিক সমাজ ইসরাইল ও তার অনুচরদের শাস্তির দাবি জানালেও আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বা পাশ্চাত্যের দেশগুলো আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে দখলদার ইসরাইল আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং ফিলিস্তিনসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি করে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল