সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সংগ্রামী ও দৃঢ়চেতা খলিল আওয়াদেহ



ইসরাইলের ইহুদি বাহিনী ৪০ বছর বয়সী খলিল আওয়াদেহকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গ্রেপ্তার করে এবং তারপর থেকে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই তাকে আটকে রাখা হয়েছে। ইসরায়েল এটাকে বলে থাকে ‘প্রশাসনিক আটক।
আটকের প্রতিবাদে ১৭২ দিনেরও বেশি সময় ধরে অনশনে রয়েছেন তিনি। খলিল অনশনের শুরুর পর থেকো কোনো খাবার খাননি । শুধু পানি পান করে বেঁচে আছেন এবং এর মধ্যে শুধু ১০ দিন ভিটামিন ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে অনশনে থাকার কারণে তার শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ওজন হারিয়েছেন ৫০ কেজি। গেল সপ্তাহে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল, তার স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে তিনি যে কোনো মুহূর্তে মারা যেতে পারেন।
শুধু খলিলই নন, ইসরাইলি কারাগারে এভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছে শত শত ফিলিস্তিনি তরুণ ও যুবক। যা প্রশাসনিক আটক হিসাবে পরিচিত।
২০০০ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলের কারাগারে মোট ১২ বছর কাটিয়েছেন খলিল। এর মধ্যে পাঁচ বছরই প্রশাসনিক আটকে। গত বছরের ডিসেম্বরে আটক হওয়ার পর খলিল প্রথম পর্যায়ে ১১১ দিন অনশন-ধর্মঘট পালন করেন। সেসময় ইসরাইলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তির আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে তিনি অনশন-ধর্মঘটের অবসান ঘটান। কিন্তু ইসরাইলের কর্মকর্তারা কথা রাখেননি। আর তাই তিনি আবারও অনশন-ধর্মঘট শুরু করেন।
ইহুদিবাদী ইসরাইল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিনা বিচারে ও বিনা অভিযোগে আটকে রাখে। এসব বন্দির বিরুদ্ধে কোনো রায় কিংবা শাস্তি ঘোষণা করা হয় না। বর্তমানে ৪ হাজার ৪৫০ ফিলিস্তিনিকে কারাগারে আটকে রেখেছে ইসরাইল। এর মধ্যে ৬৭০ জন প্রশাসনিক আটকে রয়েছেন।
ইসরাইল কর্তৃপক্ষ খলিলের অনশনের মেয়াদ ১৮০ দিনের কাছাকাছি ও তার স্বাস্থ্যের অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় তাকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। অক্টোবরে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...