সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মঙ্গোলদের ইসলাম গ্রহণ



একদিন খ্রিস্টানদের একটি প্রতিনিধি দল বাগদাদের দিকে রওনা হলো। প্রধান মঙ্গোলিয়ান নেতার খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিতের অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য। মঙ্গোল সাম্রাজ্য ১২শ শতকের শুরুতে মঙ্গোল সেনাপতি চেঙ্গিস খান কর্ত প্রতিষ্ঠিত একটি বিশালাকার সাম্রাজ্য। ১২শ শতকের শেষে এসে প্রায় সমস্ত পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং মধ্য ইউরোপ পর্যন্ত এটি বিস্তৃত ছিল। এটি ইতিহাসের সর্ববৃহৎ অবিচ্ছিন্ন স্থলসাম্রাজ্য হিসাবে বিবেচিত হয়।) মঙ্গোলিয়ান নেতার কাছে তার প্রিয় শিকারী কুকুর ছিল। একজন খ্রিস্টান তখন মঙ্গোলীয় নেতাকে তার বুদ্ধিমান সিদ্ধান্তের জন্য অভিনন্দন জানাতে শুরু করে এবং তারপরে আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূত পবিত্র চরিত্র (অনুমিতভাবে তাদের ইসলাম গ্রহণে নিরুৎসাহিত করার জন্য) নিয়ে কুৎসা রটনা শুরু করে।কুকুরটি তখন হিংস্র আচরণ শুরু করে এবং খ্রিস্টানটির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে মারাত্মকভাবে আঁচড় দেয়। কুকুরটিকে খ্রিস্টান লোকটি থেকে নিবৃত্ত করতে বেশ কিছু লোক চেষ্টা করে।

উপস্থিতিদের মধ্যে একজন খ্রিস্টান লোকটির দিকে ফিরে বললেন, কুকুরটি এমন করেছে কারণ আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে যা বলেছেন সেজন্য।
খ্রিস্টান লোকটি তা অস্বীকার করে এবং অহংকার করে বললেন, "না, কুকুরটির প্রতিক্রিয়ার কারণ এটি ছিল না। যখন আমি কথা বলছিলাম, আমি আমার হাত দিয়ে ইশারা করলাম এবং কুকুরটি ভেবেছিল যে আমি তাকে আঘাত করতে যাচ্ছি।
খ্রিস্টান ঘটনাটি দেখে অস্থির হয়ে উঠেছিল এবং মহানবী (সা.)-কে অপমান করতে থাকে। সেই সময় কুকুরটি রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে খ্রিস্টানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং লোকটির গলায় কামড় বসিয়ে দেয়। তার গলা ছিনিয়ে নেয় এবং লোকটি সাথে সাথে মারা যায়।
এই ঘটনাটি সেখানে উপস্থিত ৪০ হাজার মঙ্গোলকে তাদের ধর্ম ত্যাগ করে দীন আল-ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করেছিল!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...