সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফিকহশাস্ত্রের উদ্ভাবক আবু হানিফা (রহ)


আবু হানিফা আল-নোমান ইবনে সাবিত ইবনে যুতা ইবনে মারযুবান উপনাম ইমাম আবু হানিফা নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। ফিকহশাস্ত্রের একজন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ এবং হিজরী প্রথম শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব। ইসলামী ফিকহের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও পরিচিত চারটি "সুন্নি মাযহাবের" একটি “হানাফি মাযহাব”-এর প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। কিছু অনুসারী তাকে সুন্নি ইসলামে আল-ইমাম আল-আজম ("সর্বশ্রেষ্ঠ ইমাম") এবং সিরাজ আল-আ'ইম্মা ("ইমামদের বাতি") বলে অভিহিত করেন। মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যে তাঁর জন্মই সর্বপ্রথম। বংশ হিসেবে তিনি ইরানি ও পারস্য দেশের অধিবাসী ছিলেন। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের রাজত্বকালে ইমাম আবু হানিফা জন্মগ্রহণ করেন।
হিজরি ৮০ সনে, মোতাবেক ৭০০ খ্রিস্টাব্দে কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ছয় বছর বয়সে আবদুল মালিক মৃত্যুবরণ করেন। ষোল বছর বয়সে তিনি পিতার সাথে হজ্জে গিয়েছিলেন। তার পিতা সাবিত বিন যুতী কাবুল, আফগানিস্তানের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।তাঁর বাবা বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আলী (রা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে তাঁর দোয়া লাভ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। প্রথমত তিনি কুফা শহরেই ইলমে কালাম শিক্ষা করেন।একসময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একান্ত খাদেম ও প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আনাস (রা.) কুফায় আগমন করলে তিনি অল্প বয়সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তৎকালীন কুফায় প্রথানুযায়ী ২০ বছরের আগে হাদিস বর্ণনার সুযোগ না থাকায় ইমাম আবু হানিফা তাঁর কাছ থেকে কোনো হাদিস বর্ণনা করতে পারেননি। তবে তাঁকে দেখে বাল্য বয়সেই তাবেয়ি হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে জ্ঞানার্জনে আত্মনিযোগ করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ইলমে কালামে পূর্ণ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।

উম্মতের সর্বসম্মতিক্রমে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) একজন তাবেই ছিলেন।তিনি একাধিকবার প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.)-এর সাক্ষাৎ লাভ করেন। সুতরাং তিনি তাবেয়ি। তাঁর সময় চারজন সাহাবি জীবিত ছিলেন। যথা—হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.), হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) ও আবু তুফায়েল আমের ইবনে ওয়াসেলা (রা)।
ইলমে আদব ও ইলমে কালাম শেখার পর তিনি ইলমে ফিকহ অর্জনের জন্য সমকালীন ফকিহ ইমাম হাম্মাদ (রহ.)-এর শিক্ষাগারে অংশগ্রহণ করেন। ইমাম হাম্মাদ (রহ.) ছিলেন তাঁর বিশেষ ওস্তাদ। তিনি ছাড়াও তাঁর গুরুজনের সংখ্যা ছিল প্রায় চার হাজার।আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী (রহ.) বলেন, 'ইমাম আবু হানিফা (রহ.) নিম্নে উল্লেখিত সাহাবিদের সাক্ষাৎ লাভ করেন :হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) (ওফাত: ৯৩ হিজরি), আবদুল্লাহ ইবনে আবী আওফা (রা.) (ওফাত: ৮৭ হিজরি), সহল ইবনে সা'আদ (রা.) (ওফাত: ৮৮ হিজরি), আবু তোফায়েল (রা.) (ওফাত: ১১০ হিজরি), আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়দি (রা.) (ওফাত: ৯৯ হিজরি), জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) (ওফাত: ৯৪ হিজরি) এবং ওয়াসেনা ইবনুল আসকা (রা.) (ওফাত: ৮৫ হিজরি)। '
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ফিকহ শাস্ত্রের আবিষ্কারক ছিলেন। ফিকহ ও ইসলামী আইন সংকলন ও সম্পাদনার জন্য তিনি ৪০ জন ফকিহ নিয়ে এক আইনজ্ঞ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। ওই যুগে যেসব মাসয়ালা-মাসায়িল সংকলন হয়েছিল, তার সংখ্যা ১২ লাখ ৭০ হাজারের ঊর্ধ্বে।ফিকহশাস্ত্র প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে এ বিশেষ বোর্ডের অবদান সবচেয়ে বেশি। যখন বোর্ডের সামনে কোনো একটি মাসয়ালা পেশ করা হতো। অতঃপর সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা লিপিবদ্ধ করা হতো।ইমাম আবু হানিফার (রহ.) নামযুক্ত মাসয়ালাগুলো ও মাযহাব দ্রুত সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) হাদিস শাস্ত্রে অতুলনীয় জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি চার হাজার শায়খ থেকে হাদিস সংগ্রহ করেছেন। ইমাম বোখারির অন্যতম ওস্তাদ মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.), যাঁর সনদে ইমাম বুখারি (রহ.) বেশির ভাগ 'সুলাসিয়াত' হাদিস বর্ণনা করেছেন। এই মক্কী বিন ইব্রাহীম ইমাম হানিফা (রহ.)-এর ছাত্র। তিনি ইমাম আবু হানিফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন, 'আবু হানিফা তাঁর সময়কালের শ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন। ' (মানাকেবে ইমাম আজম রহ.) । আবিদ ইবনি সালিহ বলেন, 'ইমাম আবু হানিফা (রহ.) হাদিসের নাসিখ ও মানসুখ নির্ণয়ের ব্যাপারে খুব সতর্ক ছিলেন। ' ইমাম আবু হানিফা (রহ.) তাঁর শহরে যেসব হাদিস পৌঁছেছে তার মধ্যে রাসুল (সা.)-এর তিরোধানের সময়কার সর্বশেষ আমল কী ছিল সেসব তাঁর মুখস্থ ছিল।ইয়াহিয়া ইবনে নাসর বলেন, 'একদিন আমি ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ঘরে প্রবেশ করি। সেখানে তাঁর কিতাব ভরপুর ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এগুলো কী? তিনি বললেন, এগুলো সব হাদিসের কিতাব, যার মধ্যে আমি সামান্য কিছু বর্ণনা করেছি, সেগুলো ফলপ্রদ। ইমাম শাফিঈ -র মতে: যে ব্যক্তি ফেকাহর জ্ঞান অর্জন করতে চায়, সে যেন ইমাম আবু হানিফা এবং তার ছাত্রদের সান্নিধ্য লাভ করে। কারণ ফেকাহর ব্যাপারে সকলেই আবু হানিফা-র মুখাপেক্ষী।ইমাম আবু ইউসুফ বলেন, ইমাম আবু হানিফা কেবলমাত্র কারাগারে বসেই ১২ লক্ষ ৯০ হাজারের অধিক মাসয়ালা লিপিবদ্ধ করেছেন'।

লিখিত বই- আল-ফিকাহুল আকবর, আল-ফিকাহুল আবসাত, কিতাব আল আলিম অয়াল মুতাআল্লিম, আল-অসিয়া, আর-রিসালা , মুসনাদে আবি হানিফা, অসিয়া ইলা ইবনিহি হাম্মাদ,অসিয়া ইলা তিল মিজিহি ইউসুফ ইবনে খালিদ,অসিয়া ইলা তিল মিজিহি আল কাজী আবি ইউসুফ,রিসালা ইলা উসমান আল বাত্তি,আল কাসিদা আল কাফিয়া (আননুমানিয়া),মুজাদালা লি আহাদিদ দাহ রিন,মারিফাতুল মাজাহিব,আল জাওয়াবিত আস সালাসা,রিসালা ফিল ফারাইয,দুআউ আবি হানিফা,মুখাতাবাতু আবি হানিফা মাআ জাফর ইবনে মুহাম্মদ,বাআজ ফতোয়া আবি হানিফা,কিতাবের মাক সুদ ফিস সারফ,কিতাবু মাখারিজ ফিল হিয়াল।

তাঁর সম্পর্কে মনীষীরা বিভিন্ন উক্তি করেছেন। যেমন— ফিকহ শাস্ত্রে তাঁর অবদানের ব্যাপারে ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, 'ফিকহ শাস্ত্রের সব মানুষ ছিলেন আবু হানিফার (রহ.) পরিবারভুক্ত। তিনি অন্যত্র বলেন, যে ব্যক্তি ফিকহশাস্ত্র শিখতে চায় সে যেন ইমাম আবু হানিফা (র.)-এর ছাত্রদের আঁকড়ে ধরে।ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, 'আবু হানিফা (রহ.) এমন এক ব্যক্তি, তিনি যদি ইচ্ছা করতেন, এই স্তম্ভটিকে সোনা প্রমাণিত করবেন, তবে নিঃসন্দেহে তিনি তা করতে সক্ষম। ইবনে মুবারক (রহ.) বলেন, ‘মানুষের মাঝে সবচেয়ে বড় ফিকহবিশারদ হলেন ইমাম আবু হানিফা (রহ.), আমি ফিকহশাস্ত্রে তাঁর ন্যায় যোগ্য কাউকে দেখিনি। ’ হজরত ইবনে মুঈন বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) হাদিসে সিকাহ (বিশ্বস্ত) ছিলেন। হজরত সুলায়মান ইবনে আবু শায়ক বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) একজন বুজুর্গ ও দাতা ছিলেন। আবু নুয়াইম বলেন, তিনি মাসয়ালায় গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।

আব্বাসীয় বংশের আল-মনসুর আবু হানিফাকে রাজ্যের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেন কিন্তু স্বাধীনভাবে থাকার জন্য তিনি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তার পরিবর্তে তার ছাত্র আবু ইউসুফকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রস্তাব প্রত্যাখানের ব্যাপারে আবু ইউসুফ আল মনসুরকে ব্যাখা দেন তিনি নিজেকে এই পদের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না। আল-মনসুরের এই পদ প্রস্তাব দেওয়ার পেছেনে তার নিজস্ব কারণ ছিল, আবু হানিফা প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর মনসুর তাকে মিথ্যাবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করেন। এই অভিযোগের ব্যাখ্যায় আবু হানিফা বলেন, “আমি যদি মিথ্যাবাদী হই তাহলে প্রস্তাব প্রত্যাখান করার ব্যাপারে আমার মতামত সঠিক, কারণ কিভাবে আপনি প্রধান বিচারপতির পদে একজন মিথ্যাবাদীকে বসাবেন।” এই ব্যাখ্যার উত্তরে আল-মনসুর আবু হানিফাকে গ্রেফতার করেন ও তাকে নির্যাতন করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। এমনকি বিচারকরা সিদ্ধান্ত নিতেন কে তার সাথে দেখা করতে পারবে।খলিফা মনসুর ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-কে ১৪৬ হিজরিতে জেলখানায় আবদ্ধ করে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা করে।

তথ্যসূত্র -ইন্টারনেট

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...