সুলায়মান (আঃ) ও ইনশাআল্লাহ
হযরত দাঊদ (আঃ)-এর
মৃত্যুর পর সুযোগ্য পুত্র সুলায়মান তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। সুলায়মান (আঃ) ছিলেন মহান
আল্লাহর প্রেরিত একজন নবী। এ ছাড়া তাঁর আরেকটি পরিচয় আছে। তিনি ছিলেন অদ্বিতীয় ও
অনুপম সাম্রাজ্যের অধিকারী। মহান আল্লাহ তাঁকে শুধু সমগ্র পৃথিবীর নয়, বরং
জিন জাতি, পক্ষীকুল ও বায়ুর ওপরও আধিপত্য দান করেছিলেন।
ইমাম বাগাভী
ইতিহাসবিদগণের বরাতে বলেন, সুলায়মান (আঃ)-এর মোট বয়স
হয়েছিল ৫৩ বছর। তের বছর বয়সে রাজকার্য হাতে নেন এবং শাসনের চতুর্থ বছরে বায়তুল
মুক্বাদ্দাসের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তিনি ৪০ বছর কাল রাজত্ব করেন (মাযহারী,
কুরতুবী)। তবে তিনি কত বছর বয়সে নবী হয়েছিলেন সে বিষয়ে কিছু জানা
যায় না। শাম ও ইরাক অঞ্চলে পিতার রেখে যাওয়া রাজ্যের তিনি বাদশাহ ছিলেন। তাঁর
রাজ্য তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী ও শক্তিশালী রাজ্য ছিল। কুরআনে তাঁর সম্পর্কে
৭টি সূরায় ৫১টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
একবার হযরত সুলায়মান (আঃ) এ মনোভাব ব্যক্ত করলেন যে, রাত্রিতে আমি (আমার ৯০ বা ১০০) সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। যাতে
প্রত্যেকের গর্ভ থেকে একটি করে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে ও পরে তারা আল্লাহর পথে
ঘোড় সওয়ার হয়ে জিহাদ করবে। কিন্তু এ সময় তিনি ‘ইনশাআল্লাহ’
(অর্থঃ ‘যদি আল্লাহ চান’) বলতে ভুলে গেলেন। নবীর এ ত্রুটি আল্লাহ পসন্দ করলেন না। ফলে মাত্র একজন
স্ত্রীর গর্ভ থেকে একটি অপূর্ণাঙ্গ ও মৃত শিশু ভূমিষ্ট হ’ল’।এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, সুলায়মান বিশ্বের
সর্বাধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বাদশাহ হ’লেও এবং জিন, বায়ু, পক্ষীকুল ও সকল জীবজন্তু তাঁর হুকুম
বরদার হ’লেও আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তার কিছুই করার ক্ষমতা
ছিল না। অতএব তাঁর ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে
ভুলে যাওয়াটা ছোটখাট কোন অপরাধ নয়। এ ঘটনায় এটাও স্পষ্ট হয় যে, যারা যত বড় পদাধিকারী হবেন, তাদের ততবেশী
আল্লাহর অনুগত হ’তে হবে এবং সর্বাবস্থায় সকল কাজে আল্লাহর
সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। সর্বদা বিনীত হয়ে চলতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই অহংকার
করা চলবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন