সুরমা আসলে কী ?
সুরমা একটি খণিজ দ্রব্য। এর সঙ্গে তুর পাহাড়ের কোনো সম্পর্ক নেই। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয়, অ্যান্টিমনি। অ্যান্টিমনি হলো একটি মৌলিক পদার্থ। এটি একটি চকচকে ধূসর ধাতুকল্প, এটি প্রকৃতিতে মূলত সালফাইড খনিজ স্টিবনেট হিসেবে পাওয়া যায়। অ্যান্টিমনি যৌগগুলো প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত ছিল এবং গুঁড়া করে চিকিৎসাক্ষেত্রে ও প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হতো। এটিকে প্রায়ই আরবি কাজল নামে ডাকা হতো। এর সাথে তুর পাহাড়ের কোনো সম্পর্ক নেই। মুসা (আ.) এর আল্লাহকে দেখার ইচ্ছা ও তুর পাহাড়ের মূল ঘটনাটি সত্য। কোরআন মাজিদের সূরা আরাফের পূর্ণ বিবরণ রয়েছে। কিন্তু কোথাও এই ঘটনার সাথে সুরমাকে জড়িয়ে দেয়ার কথাটি উল্লেখ নেই। অতএব এই ধরনের কথা পরিহার করা জরুরি।
চোখের যত্নে রাসুলুল্লাহ (সা( সুরমাকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে সাহাবায়ে কেরামকে তিনি এটি লাগানোর ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো এবং তা দিয়ে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও। কেননা তা তোমাদের উত্তম পোশাক। আর তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ‘ইসমিদ’ সুরমা। কারণ তা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাপড়ি গজায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৭৮)
ইবনে আব্বাস (রা.) আরো বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর একটি সুরমাদানি ছিল। প্রত্যেক রাতে (ঘুমানোর আগে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন।’ (সুনানুল কুবর লিল ইমাম বাইহাকী , হাদিস : ৮৫১৬)
সুরমা ব্যবহারের উপকারিতা বিজ্ঞানের গবেষণায়ও প্রমাণিত।
(১) সুরমা চোখের জন্য ছোঁয়াচে সব ধরনের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে।
(২) চোখের প্রবেশকৃত ধূলা ও ক্ষতিকর পদার্থগুলো নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
(৩) চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধক জীবাণুকে ধ্বংস করে।
(৪) চোখে জ্বালাপোড়া নিরাময় করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন