হিটলার কেন ইহুদি নিধনে মেতে উঠেন?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৬০ লক্ষ ইহুদী হত্যা করেছিলেন এডলফ হিটলার। ইতিহাসে এটি ‘হলোকস্ট’ নামে পরিচিত। হিটলার চেয়েছিল পৃথিবী থেকে ইহুদীদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে। তাই তিনি এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিলেন। ধারণা করা যায় ইহুদীদের প্রতি হিটলারের অতিমাত্রায় ক্ষোভ এবং ঘৃণাই ছিল এই হত্যাকান্ডের মুল কারণ ।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন এমন বিভৎস ক্ষোভ আর নির্মম ঘৃণা জন্ম নিয়েছিল জার্মান এই রাষ্ট্র প্রধানের মনে ?
ইহুদীদের প্রতি হিটলারের এমন ভয়াবহ ঘৃণার সঠিক কারন বের করা অসম্ভব। হিটলার নিজেও সরাসরি কোন কারণ বলে যান নি। ইতিহাসবিদেরাও
সঠিক কোন কারন বের করতে পারেনি। তবে কয়েকটি কারন অনুমান করা হয়, যা হিটলারের মনে ইহুদী বিদ্বেষের জন্ম দিয়েছিল।
এডলফ হিটলার জার্মানির নাৎসি নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন। হিটলারের ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার কারণ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য ইহুদিদের দায়ী করার কথা বলা হয়। যদিও এটা একটা ধারণা মাত্র।
হিটলারের ইহুদি হত্যার আসল কারণ হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মুহূর্তে ইহুদি নেতারা বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহুদিরা ওই সময় পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদের দেশত্যাগ প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ইহুদি ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিল না।
তখন ইহুদি নেতারা হিটলারের সাথে এক গোপন ইহুদি হত্যা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যাতে করে বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের মধ্যে ভয় ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যায় এবং তারা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৫০ হাজার ইহুদির মধ্যে মাত্র ৭ হাজারকে ইসরাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং অবশিষ্টদের হত্যার নীলনকশা করা হয়। হিটলার ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে জড়ো করে গ্যাস বোমা মেরে হত্যা করে।
এরপরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইহুদিরা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি নেতারা বিশ্বের সর্বত্র ইহুদি হত্যার গোপন পরিকল্পনা হাতে নেয়। যাতে করে তাদের মধ্যে ভয়ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। ইহুদিরা ইসরাইলের হাইফা বন্দরে এসেও জাহাজ থেকে নামতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি বোঝাই জাহাজটিকে তাদের নেতা ডেভিড গুরিওন বোমা মেরে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহর ঘোষণা সত্যে পরিণত হয়। ( ড. মুহামমদ নুরুল ইসলাম, ইসলাম ও অন্যান্য মতবাদ : পৃ. ৮৪)।
এতদসম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আরো স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় বনি ইসরাইলের ওপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদের নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে। (সূরা আরাফ, ১৬৭)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন