আজ ফিলিস্তিনিদের বিপর্যয়ের দিন
ফিলিস্তিনিরা ১৯৪৮ সাল থেকে নাকাবা দিবস পালন করে আসছে। নাকাবা অর্থ বিপর্যয়।ইহুদিদের হাতে ওই সময়ে ফিলিস্তিনিদের বিপর্যয় ঘটেছিল।প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্যের পতন হলে ফিলিস্তিন নামক ভূখণ্ডটি ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিন থেকে চলে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে ইহুদিদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের দাবিতে ইউরোপে জায়নবাদী আন্দোলন শুরু হওয়ায় ১৮৮০ সালের দিক থেকেই ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনে এসে বসতি গাড়তে শুরু করে। অবশেষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয় ইহুদিদের স্বপ্ন বাস্তবে নেমে আসে। ইহুদিদের যেখানে স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু ফিলিস্তিনিদের জন্য সেখানে বিপর্যয়ের খুঁটি পোঁতা হয়।
নাকাবা দিবসের উৎপত্তি ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে শুরু হওয়া আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ থেকে।তার একদিন আগে, ১৪ই মে ইসরায়েল নিজেদের ঘোষণা করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে।সেসময় ওই এলাকা ছিল ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে।
ফিলিস্তিন-ইসরাইলের দ্বন্দ্ব ১৯১৭ সালের, যখন ব্রিটিশ সরকার বালফোর ঘোষণায় ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি জাতীয় বসতি প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছিল।যে এলাকায় ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী সেখান থেকে বেশিরভাগ আরবকে বহিষ্কার করে, কিম্বা তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।১৯৪৮-১৯৪৯ এই দু'বছরের আরব- ইসরায়েল যুদ্ধের সময় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে।ওই সময়ে সশস্ত্র ইহুদি গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। এতে ৮ লাখ পরিবার গৃহহারা এবং ৫৩১টি আরব গ্রাম ধ্বংস হয়েছিল।
পরে ১৯৬৭ সালের জুন মাসে আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে আবারও যুদ্ধ হয় এবং সেসময় জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ড থেকে আরো হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ ফিলিস্তিনি জাতিসংঘে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত। তাদের বেশিরভাগই বাস করে জর্ডান, গাজা ভূখণ্ড পশ্চিম তীর, সিরিয়া, লেবানন এবং পূর্ব জেরুসালেমে।
তাদের এক তৃতীয়াংশ বসবাস করে শরণার্থী শিবিরগুলোতে। প্রতিবছরই ফিলিস্তিনিরা এই নাকাবা দিবসে প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে। দিবসটি উপলক্ষে তারা জড়ো হয় ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে। এবং দিনটিকে ঘিরে ইসরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনিদের তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফিলিস্তিনিদের প্রধান দাবি- তাদের জমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার। এই দাবির ভিত্তি হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৯৪৮ সালে গৃহীত এক প্রস্তাব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন