সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লেবানন দেউলিয়া, শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হবার পথে

 

রাষ্ট্র হিসেবে লেবাননকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী সাদেহ আল-সামি এ ঘোষণা দেন।২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে লেবানন একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের মুদ্রার অবমূল্যায়ন, জ্বালানি ও চিকিৎসাসেবা ঘাটতি।জনগণের খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসহ মৌলিক পণ্য গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।ঋণের কারণে লেবানন এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় পতিত হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির মুদ্রা তার ৯০ শতাংশ মূল্যমান হারিয়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র্যের হার দেশটিকে আরো ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির দিকে চালিত করছে। অথচ একসময় দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত ছিল।
সামগ্রিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় ও কর কর্তনের কারণে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ কমে যাওয়া, চীনের কাছ থেকে নেওয়া বড় অংকের ঋণ এবং কয়েক দশকের মধ্যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছানো শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া করার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশি ঋণ ও বিদেশি বন্ডের টাকা শোধ করতে সরকার যেভাবে টাকা ছাপিয়েছে তার ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। শ্রীলঙ্কান রুপির বৈদেশিক মান কিছুদিন আগেও ছিল ১ ডলারে ১৯০ রুপি, গত এক মাসে সেটা বেড়ে ২৩০ রুপিতে পৌঁছে গেছে।
চীনই শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক অংশীদার। তাদের কাছে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ রয়েছে শ্রীলঙ্কার। এখানেই শেষ নয়, দেশের আর্থিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে আরও ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধার করতে হয়েছে পরে। এই বিপুল অঙ্কের ঋণ এখন রাজাপক্ষে সরকারের অন্যতম মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে। কেবল চীনই নয়, সেদেশের বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।২০১৪ সাল থেকেই ঋণের বোঝা বাড়তে শুরু করে কলম্বোর। সেই সঙ্গে ক্রমেই মুখ থুবড়ে পড়ে জিডিপি। ২০১৯ সালে তা পৌঁছে যায় ৪২.৮ শতাংশে। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে এবছর সব মিলিয়ে অন্তত ৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার শোধ করতেই হবে রাজাপক্ষে প্রশাসনকে। যা ক্রমেই অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।
২০২২ সালে দেউলিয়া হতে পারে শ্রীলঙ্কাা। রেকর্ড মাত্রায় মূল্যস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দাম এবং কোষাগার শূন্য হয়ে পড়ায় এমন আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে দেশটির জন্য। সোমবার (৩ জানুয়ারি) ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক খবরে একথা জানানো হয়েছে।বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, করোনা মহামারি দেখা দেওয়া পর শ্রীলঙ্কার ৫ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করতে শুরু করেছে।গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ১১.১ শতাংশে পৌঁছেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম এতোটা বেশি যে সচ্ছল মানুষের পক্ষে তাদের পরিবারকে ঠিক মতো ভরণপোষণ করা কঠিন থেকে কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

M

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...