মেন্দেরেসের পরিণতির দিকে কী এরদোয়ান ?




৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৬ বর্গ কিলোমিটারের দেশ আজকের তুরস্ক, যা বাংলাদেশের দেশের প্রায় ছয় গুণ বড়। জনসংখ্যা প্রায় আট কোটি।একসময় ইউরোপ, আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়ার বিশাল অংশ নিয়ে ছিল তাদের বিশাল ওসমানীয় সাম্রাজ্য। ইসলামের সব পবিত্র স্থাপনাসহ আধুনিক সৌদি আরবও এই সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল।১২৮৮-১৯২৪ সাল পর্যন্ত ৩৭ জন সুলতান ৬৩৬ বছরব্যাপী ওসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন। প্রথম ৩০০ বছর সুলতানদের যোগ্যতার কারণে জয়জয়কার অবস্থা ছিল। শেষের ৩০০ বছরে যোগ্য শাসক ছিল মাত্র কয়েকজন। অপর শাসকরা ছিলেন অযোগ্য। ছিল না তাঁদের চারিত্রিক গুণাবলি। এমনই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাম্রাজ্যের বহু অংশ হাত ছাড়া হয়ে যায়। তুরস্কের নাজুক পরিস্থিতিতে ১৮৮১ সালে জন্মগ্রহণকারী সামরিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশা তুরস্কের হাল ধরতে পর্যায়ক্রমে এগিয়ে আসতে থাকেন। ১৯২১ সালে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন কামাল পাশা। ১৯২৩ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর ইস্তাম্বুল থেকে আঙ্কারায় সরিয়ে নেন রাজধানী।
খেলাফত উচ্ছেদ করে কামাল পাশা প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। কামাল পাশা সৈন্যবাহিনীও ছিল ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শে বিশ্বাসী।কামাল পাশা আরবির পরিবর্তে তুর্কি ভাষায় আজানের প্রবর্তন করেন।আজান, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, মাদ্রাসা শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরবির ব্যবহার সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়। সালতানাত প্রতিষ্ঠার পূর্বে তুর্কি হরফে তুর্কি ভাষা লিখা হত কিন্তু তুর্কি সালতানাত প্রতিষ্ঠার পর সুলতানেরা আরবি হরফে তুর্কি ভাষা লেখার নিয়ম প্রবর্তন করেছিলেন। কিন্তু কামাল আতাতুর্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর রোমান হরফে তুর্কি ভাষা লেখার প্রথা প্রবর্তন করেন।পর্দা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছিলেন। তিনি মেয়েদের ঢিলেঢালা আচ্ছাদন আবৃত হয়ে চলার পরিবর্তে ইউরোপীয় মিনি স্কার্ট পরার প্রথা চালু করেছিলেন।কামাল পাশা সরকারি চাকরিজীবীদের মাথায় ক্যাপ, গলায় টাই পরতে আইন পাস করেন।রাষ্ট্রীয় সাল গণনায় চাঁদের বছর ব্যবহার পরিহার করে ১৯২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে খ্রিস্টাব্দ বা ইংরেজি সাল ব্যবহার চালু করেন। তিনি শুক্রবারের পরিবর্তে রবিবারকে সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করেন।
এবার আসি আদনান মেন্দেরেসের কথায়। আদনান মেন্দেরেস (১৮৯৯ –১৯৬১) ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন। তিনি তুরস্কের ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। আদনান মেন্দেরেস ১৮৯৯ সালে আইদিন প্রদেশের কোচারলিতে একটি ক্রিমিয়ান তাতার বংশোদ্ভূত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি ইজমিরের আমেরিকান কলেজে লেখাপড়া করেন। তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি গ্রীকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এজন্য তাকে পদক প্রদান করা হয়। আদনান মেন্দেরেস আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক হন। ১৯৩০ সালে তিনি আইদিনে লিবারেল রিপাবলিকান পার্টির একটি শাখা সংগঠিত করেন। দলটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক‌ তাকে রিপাবলিকান পিপল'স পার্টিতে আমন্ত্রণ জানান এবং ১৯৩১ সালে দলের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক তাকে আইদিনের ডেপুটি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৪৫ সালে ইসমত ইনোনুর জাতীয়করণ নীতি নিয়ে দলের মধ্যে বিরোধিতার কারণে আদনান মেন্দেরেস ও তার দুই সহকর্মী‌কে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৪৬ সালের ৭ জানুয়ারি আদনান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী জালাল বায়ার ডেমোক্রেটিক পার্টি গঠন করেন। আদনান মেন্দেরেস ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে কুতাহিয়ার ডেপুটি নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালের ১৪ মে তুরস্কের প্রথম স্বাধীন নির্বাচনে তাদের দল ৫২% ভোট পায়। এরপর আদনান মেন্দেরেস প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৫৫ সালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও গ্রহণ করেন। ১৯৫৪ ও ১৯৫৭ সালের নির্বা‌চনেও আদনান মেন্দেরেস জয়ী হন। তার ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীত্ব কালে তুরস্কের অর্থনীতি বার্ষিক ৯% হারে বৃদ্ধি পায়।এসময় তুরস্ক ন্যাটোতে যোগ দেয়। মার্শাল পরিকল্পনার মাধ্যমে মার্কিন আর্থিক সমর্থনে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়; যোগাযোগ, শক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ইনসুরেন্স ও ব্যাংকিং খাতে উন্নতি হয়। ১৯৫৫ সালে সংঘটিত গ্রীক বিরোধী ইস্তানবুলের দাঙ্গার জন্য বিরোধী দল তার সরকারকে দায়ী করেছিল।এসময় ইস্তানবুলের অনেক গ্রীক দোকান, বাড়িঘর ধ্বংস হয়।
ইস্তানবুল থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় ১৯৫৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদনান মেন্দেরেস ও সরকারি কর্মকর্তাদের বহনকারী তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয় এবং এতে আগুন ধরে যায়। এতে ৫ জন যাত্রী ও ৮ জন ক্রু নিহত হন। তবে আদনান মেন্দেরেস এতে অনেকটা অলৌকিকভাবে অক্ষত ছিলেন।দুর্ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
কামাল পাশা ও তার দলের তুলনায় আদনান মেন্দেরেস ঐতিহ্যবাহী জীবনপদ্ধতি এবং ইসলাম চর্চার প্রতি সহনশীল ছিলেন। ১৯৫০ সালের নির্বাচনের সময় তিনি আরবি ভাষায় আজান দেয়ার অনুমতি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইতোপূর্বে কামাল পাশা তুরস্কে আরবিতে আজান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তিনি পূর্বে বন্ধ করা কয়েক হাজার মসজিদ পুনরায় চালু করেন। এজন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে দোষারোপ করে। পূর্বসূরিদের চেয়ে আদনান মেন্দেরেস মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে তৎপর ছিলেন। তার অর্থনৈতিক নীতির কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে তিনি জনপ্রিয় হয়েছিলেন।
১৯৬০ সালের ২৭ মে তুরস্কে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং আদনান মেন্দেরেসকে দলের অন্যান্য নেতাদের সাথে গ্রেপ্তার করা হয়। ইয়াসিয়াদা দ্বীপে স্থাপিত সামরিক আদালতে তাদের বিচার অনুষ্ঠিত হয়। তাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের সংবিধান লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়।
ইসলামিকরণের অভিযোগে আদনান মেন্দেরেসের ফাঁসি হয়, যদিও তার পার্টি ইসলামিক পার্টি ছিল না। তার মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাতিন রুশদি ও অর্থমন্ত্রী হাসান বেলাতকানকেও ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। দেশে বিদেশে বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯৬১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইমরালি দ্বীপে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্ক প্রজাতন্ত্রে নাজিমউদ্দিন
এরবাকান প্রথম ইসলামিক নামে ইসলামিক ওয়েলফেয়ার পার্টি গঠন করেন। ওয়েলফেয়ার পার্টি ক্ষমতায়ও গিয়েছিল।এরবাকান ক্ষমতায় থাকা কালে বাংলাদেশসহ সাতটি উন্নয়নশীল মুসলিম দেশ নিয়ে ডি-৮ আন্তঃরাষ্ট্রীয় পারস্পারিক সহযোগী সমবায় গঠন করেন। গাজায় বিশেষভাবে সাহায্যকারী আলোচিত তুর্কি এনজিও আইএইচএইচ এর প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন এরবাকানকে বন্দুকের নলের মাথায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। উত্তর আধুনিক সামরিক অভ্যুত্থান নামে পরিচিত এই অবৈধ ক্ষমতা দখলে প্রত্যক্ষ সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করছিল তখনকার গণমাধ্যম, এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো। তুর্কি সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রনীতিতে ইসলামপন্থী প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে তুর্কি সংসদ তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এরবাকান মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ইসলামিক ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতারা পরবর্তীতে ভার্চু পার্টি গঠন করেছিলেন। আবার এক পর্যায়ে তারাই পার্টির নাম পরিবর্তন করেন। এখন ওই পার্টির নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি। বর্তমান এ দলটিই তুরস্কের ক্ষমতায়।১৯৯৪ সালে তিনি ইসলামিক ওয়েলফেয়ার পার্টি থেকে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে একটি ভাষণের কারণে তিনি চার মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি মধ্যপন্থী লক্ষণশীল একেপি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে নির্বাচনে জয়লাভ করে এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৩-১৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালে এসে রাষ্ট্রপতি হন। শাসনতন্ত্র সংশোধন এবং তাঁর অনুকূলে ভোট দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন।
এরদোগান ক্ষমতায় আসার পূর্বে যেসব মেয়েরা বিকিনি পরিধান করে অর্ধনগ্ন হয়ে চলাচল করত সেই সব মহিলাদের অধিকাংশই আজ পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে রাস্তায় বের হন, এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পূর্বে তুরস্কের সমস্ত সরকারী প্রতিষ্টানে হিজাব নিষিদ্ধ ছিল, সেনাবাহিনীতে নামাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল, তিনি এক এক করে সেই সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন, বর্তমানে তুরস্কে হিজাবের বিপ্লব চলছে, যা দুই দশক আগে স্বপ্নেও কল্পনাও করা যেত না। এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পূর্বে তুরস্কের অবস্থা কেমন ছিল তা একটি ঘটনা বললেই পরিস্কার বুঝতে পারবেন-২০০৩ সালে যখন এরদোয়ান প্রথম ক্ষমতায় আসেন তখন উনার স্ত্রী হিজাব পরিধান করে একটি অনুষ্টানে আসার কারনে তুরস্কের তৎকালীন সেনাপ্রধান প্রকাশ্যে এরদোয়ানের বিরোধীতা করে সেই অনুষ্টান বর্জন করেছিলেন। তিনি তুরস্কে প্রায় ৮হাজার মাসজিদ নির্মান করেছেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশে তুরস্কের সরকারী টাকায় মসজিদ নির্মান করে দিয়েছেন, তাদের বেতন ও তুরস্ক সরকার বহন করে থাকে, তার সময়ে তুরস্কের সমস্ত কলেজ ভার্সিটি ও স্কুলে মসজিদ নির্মান করা হয়েছে, তিনি প্রত্যেক স্কুল কলেজ ও ভার্সিটিতে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতা মূলক করেছেন। জেরুজালেম ইস্যুতে সবচেয়ে সোচ্চার ভুমিকা পালন করছেন তিনি, বাইতুল মুকাদ্দাসকে রক্ষার জন্য ৫৭ টি মুসলিম দেশকে নিয়ে ইসলামী সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন মুসলিম দেশগুলোর কাছে, ৩০লাখ সিরীয় মুসলিম শরনার্থীকে তার দেশে আশ্রয় তো দিয়েছেন সাথে তাদের উচ্চ শিক্ষাও নিশ্চিত করছেন!, পৃথিবীর নির্যাতিত মুসলিমদের দান খয়রাতে নজির সৃস্টি করেছেন, এই মুহুর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে দানশীল দেশ তুরস্ক, এছাড়াও রোহিংগা ইস্যু সহ মুসলিমদের প্রায় সব ইস্যুতে তিনি সোচ্চার রয়েছেন। এরদোয়ান ক্ষমতায় এসেই একসাথে এতকিছু করেননি, বরং ধীর স্থীরভাবে ঠান্ডা মাথায় কাজ করছেন কারণ কাজ ও করতে হবে টিকেও থাকতে হবে, সর্ব প্রথম তিনি প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকে কব্জা করেছেন, দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন, সেকুলারদের লেবাস পড়ে তিনি কৌশলে তুরস্ককে আগাগুড়া ইসলামীকরনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন যা বোঝার জন্য স্বাভাবিক জ্ঞান থাকা বিদ্যমান, এই কাজগুলো করা তার জন্য নয় যেকারো জন্যেই এত সহজ ছিল না, কারন তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি। সময়ে সময়ে সময়ে তাকে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে, তুরস্কে সেকুলারদের অভাব নেই, একটু ভুল করলেই ক্ষমতা নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে, তাই উনাকে খুব কৌশল করে এগুতে হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই ২০১৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হন এরদোয়ান। আমেরিকায় বসবাসকারী এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফতেহুল্লাহ গুলেন, তুরস্কসহ বিশ্বের অনেক দেশে তাঁর দল, সংগঠনের ব্যাপক কর্মতৎপরতা আছে। ফতেহুল্লাহ গুলেনকে সঙ্গে নিয়ে আমেরিকা ব্যর্থ অভ্যুত্থান ঘটায় বলে বিশ্বে বহুল প্রচারিত।এরদোয়ানও তার উনিশ বছরের শাসনামলে অনেকবার সামরিক অভ্যুত্থানের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। কখনো মোকাবেলা করেছেন রাজনৈতিক চালে আবার কখনও বা আইনের মাধ্যমে। আর সব শেষ ২০১৬ সালের সামরিক অভ্যুত্থান মোকাবেলা করলেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।
আদনান মেন্দেরেস, নাজিমউদ্দিন এরবাকান, এরদোয়ানরা যখনই আমেরিকার স্বার্থের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছেন, আমেরিকার আজ্ঞাবহ গোলামীর জিঞ্জির‌ ভেঙে বেড়িয়ে যেতে চেয়েছেন, দেশকে সাবলম্বী করার চেষ্টা করছেন তখনই সামরিক বাহিনীক লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।কখনো গণতন্ত্রের বুলি আওড়িয়ে, কখনো মানবাধিকারের মুগুর দেখিয়ে, কখনো সমকামী স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে, কখনো মুক্ত বাণিজ্যের বেড়াজালে আবদ্ধ করে, তুরস্ককে গণতন্ত্রহীন করেছে ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল