গান্ধীর হত্যাকারী ভারতে পূজিত

সারা বিশ্বে অহিংসা ও সত্যাগ্রহের পথিকৃৎ এবং ভারতের জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।সম্প্রতি খানিকটা দায়সারা করেই শেষ হয়েছে এই জাতির জনকের দেড়শো বছর পূর্তি উৎসব - অন্যদিকে ভারতে গান্ধীর আততায়ী নাথুরাম গোডসের পূজা ও প্রশস্তি চলছে প্রকাশ্যেই।বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী শক্তি, এমন কী বিজেপি-র এমপিরাও গোডসে-বন্দনায় সামিল হচ্ছেন। গান্ধী-হত্যার ষড়যন্ত্রকারীরা যে সংগঠনের সদস্য ছিলেন, সেই হিন্দু মহাসভা মধ্য ভারতের গোয়ালিয়রে এখনও বেশ সক্রিয়। ওই অঞ্চলে তাদের বেশ প্রভাবও রয়েছে।বছর তিনেক আগে গোয়ালিয়রে সেই অফিসেই তার আততায়ী নাথুরাম গোডসের মূর্তি স্থাপনা করে চলছিল পূজাপাঠ ও আরতি।১৯৪৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি দিল্লির 'বিড়লা হাউস'-এ বিকেলের প্রার্থনায় যাওয়ার সময়ে মি. গান্ধীকে সামনে থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন নাথুরাম গডসে।

১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর আম্বালা সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি হয়েছিল গান্ধী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত নারায়ণ আপ্তে ও নাথুরাম গোডসের।ওই দিনটিকে হিন্দু মহাসভা প্রতি বছরই 'বলিদান দিবস' হিসেবে পালন করে থাকে - সেবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল মন্দির স্থাপনা। দুধ-ঘি ঢেলে ধুইয়ে দেওয়া হচ্ছিল ওই দুজন মারাঠি সন্তানের মূর্তি।গোডসের প্রশস্তি ভারতে কোনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ না-হলেও জাতির জনকের হত্যাকারীকে এভাবে প্রকাশ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন ভারতে বছরকয়েক আগেও অকল্পনীয় ছিল।২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে হিন্দু মহাসভার জাতীয় সভাপতি পূজা শকুন পান্ডে। এদিন গান্ধীর কুশপুত্তলিকায় গুলি করেন পূজা।
গডসে পরিবারের কাছে গডসের অস্থি একটা রুপোর কলসে রাখা রয়েছে নাথুরামের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী।
গডসে পরিবার প্রতিবছর ১৫ই নভেম্বর সেই ইচ্ছাপত্র পড়ে শোনান সবাইকে, যেখানে লেখা আছে, 'শরীরের কিছুটা অংশ যত্ন করে রেখে দিও আর যখন সিন্ধু নদ আবারও স্বাধীন ভারতে অন্তর্ভুক্ত হবে আর অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন সিন্ধু নদে আমার অস্থি বিসর্জন দিও। এই কাজে দুই-চার প্রজন্ম লাগলেও সমস্যা নেই।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল