সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দক্ষিণ এশিয়া

 


দক্ষিণ এশিয়া বা দক্ষিণাঞ্চলীয় এশিয়া বলতে এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত ভারতীয় উপমহাদেশ ও তার সন্নিকটস্থ অঞ্চলকে বোঝায়। এর পশ্চিমে পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তরে মধ্য এশিয়া, আর পূর্বে পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। আগে সাতটি দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে ধরা হতো। দেশগুলো হলোভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ । পরে আফগানিস্তানকেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে যুক্ত করা হয়। এই আটটি দেশই সার্কের (দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থ)সদস্য। অনেক সময় এই নামটি দিয়ে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত সমগ্র এশিয়াকেও বোঝানো হয়। দক্ষিণ এশিয়ার আয়তন ৫১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৪১ বর্গকিলোমিটার। ২০২০ সালের হিসেব মতে জনসংখ্যা ১৯৪ কোটি ৭৬ লক্ষ ২৮ হাজার ১০০ জন।

ধর্ম

দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১.৭৪৯ বিলিয়ন, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল করে তুলেছে।২০১০ সালে হিন্দু, জৈন এবং শিখ ধর্মের লোক বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ছিল, ৯০০ মিলিয়ন হিন্দু ,প্রায় ৫১০ মিলিয়ন মুসলমান, পাশাপাশি ৩৫ মিলিয়ন খ্রিস্টান এবং ২৫ মিলিয়ন বৌদ্ধ ছিল। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যার হিন্দুরা প্রায় ৬৮ শতাংশ ৩১ শতাংশ মুসলমান, বাকী অংশের বেশিরভাগ অংশ বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান এবং শিখ ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে গঠিত।হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এবং খ্রিস্টানরা ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং ভুটানে; আর মুসলমানরা আফগানিস্তান ৯৯%, বাংলাদেশ ৯০%, পাকিস্তান ৯৯% এবং মালদ্বীপে ১০০%।ভারতীয় ধর্মগুলির মধ্যে হিন্দু ধর্ম, জৈন ধর্ম, বৌদ্ধ এবং শিখ ধর্ম ভারতে উদ্ভূত ধর্ম। ভারতীয় ধর্মগুলি পৃথকভাবে পরিভাষা, বিশ্বাস, লক্ষ্য এবং ধারণাগুলি ভাগ করে নিয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। পরে সিন্ধু, বেলুচিস্তান এবং পাঞ্জাব অঞ্চলের কিছু অংশ পারস্য এবং মধ্য এশিয়া থেকে আগত মুসলমানদের সাথে আরব খলিফারা বিজয় লাভ করেছিল, যার ফলস্বরূপ দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে শিয়া ও সুন্নি ইসলাম উভয়ের বিস্তার ঘটেছিল। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মুসলমান দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা-

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা(South Asian Association for Regional Cooperation) বা সংক্ষেপে সার্কদক্ষিণ এশিয়ার একটি আঞ্চলিক সংস্থা।এর সদস্য দেশগুলো হলো -বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান এবং আফগানিস্তান। গণচীন ও জাপানকে সার্কের পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। সার্ক ১৯৮৫ সালের ৮ই ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।সার্কের প্রতিষ্টাতা সদস্য সমূহ হল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান এবং ২০০৭ সালে আফগানিস্তান সার্কের সদস্য পদ লাভ করে । রাষ্ট্রের শীর্ষ মিটিং সাধারণত বাৎসরিক ভিত্তিতে নির্ধারিত এবং পররাষ্ট্র সচিবদের সভা দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু সার্কের সদর দফতর অবস্থিত।এ অঞ্চলের নেতারা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক,অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার লক্ষ্যে এক রাজকীয় সনদপত্রে আবদ্ধ হন।এটি অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নের যৌথ আত্মনির্ভরশীলতা জোর নিবেদিত।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...