গিনি
গিনি প্রজাতন্ত্র পশ্চিম আফ্রিকার একটি
রাষ্ট্র। পূর্বে দেশটি ফরাসি গিনি নামে পরিচিত ছিল।গিনি নামে আরো দুটি দেশ আছে।
একটি হলো গিনি বিসাও এবং অন্যটি ইকুয়াটোরিয়াল গিনি। এ দুটি দেশ থেকে পৃথক করার
জন্য গিনিকে গিনি-কোনাক্রি নামেও অভিহিত করা হয়।গিনি অঞ্চলের নামানুসারেই তিনটি
দেশের নামকরণ করা হয়। এটি একটি পুর্তগীজ শব্দ।
রাজধানী ও বৃহত্তম শহর: কোনাক্রি।
আয়তন: ২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৩৬ বর্গকিলোমিটার।
জনসংখ্যা: ১ কোটি ২০ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৩ জন।
জাতিগোষ্ঠী : ফুলা ৪২%, মানদিনকা ৩১%, সুসু ১৩%,
কিসি ৫%, কেপেলে ৫%, অন্যান্য ৪%।
প্রধান ধর্ম: ইসলাম।
সরকারি ভাষা: ফরাসি।
মুদ্রা: গিনিয়ান ফ্রাঙ্ক।
স্বাধীনতা ঘোষণা: ২ অক্টোবর, ১৯৫৮(ফ্রান্স থেকে)।
জাতিসংঘে যোগদান: ১২ ডিসেম্বর, ১৯৫৮।
সরকার
গিনি একটি প্রজাতন্ত্র। জনগণের প্রত্যক্ষ
ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। এটি মুসলিমপ্রধান দেশ। দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষই
মুসলমান।
গিনিতে ইসলাম
ইসলাম আরব উপদ্বীপ থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত
ছড়িয়ে পড়ে। সুনীতিটা কেইটা ( ১২১৭ –১২৫৫) মালি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা (যা
বর্তমান গিনির পাশাপাশি অন্যান্য আধুনিক দেশগুলির অন্তর্ভুক্ত ছিল) যিনি মুসলমান
ছিলেন না। তবে ১৩০০ সাল নাগাদ তাঁর উত্তরসূরীরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । সাম্রাজ্যের
দশম শাসক মুসা প্রথম (১২৮০ – ১৩৩৭) ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসাবে মর্যাদা
দিয়েছিলেন।গিনির একটি উঁচু অঞ্চল ফুটা জাললনে ১৭ শতাব্দীর শেষের দিক থেকে ইসলামের
একটি দুর্গ গড়ে উঠে।
অবশেষে,
বর্তমান
গিনির অঞ্চলটি উপনিবেশিক শাসনের অধীনে চলে আসে এবং ফরাসী গিনি ১৮৯১ সালে
প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তবে ধর্মের প্রসারণে এর খুব কম প্রভাব
পড়েছিল।
গিনি ১৯৫৮ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে
স্বাধীনতা অর্জনের পরে, এর মার্ক্সবাদী প্রথম রাষ্ট্রপতি আহমেদ
সাকৌ ট্যুর ইসলামের প্রভাব হ্রাস করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে, ১৯৯০-এর দশকে তিনি তাঁর শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য মুসলিম প্রতিষ্ঠানগুলিকে
সহযোগিতা করার পক্ষে কাজ করেছিলেন।ট্যুরে সৌদি রাজা ফাহাদের অর্থায়নে রাজধানী
কোনাক্রি শহরে গ্র্যান্ড মসজিদ নির্মিত হয়েছিল;
এটি ১৯৮২
সালে খোলা হয়েছিল। এটি পশ্চিম আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ।
দেশটি প্রধানত কৃষিনির্ভর।
খনিজ সম্পদ
খনিজ সম্পদেও সমৃদ্ধ। বিশ্বে বক্সাইটের
দ্বিতীয় বৃহত্তমমজুদ গিনিতে।এছাড়া হীরা ও স্বর্ণের মজুদও রয়েছে। আফ্রিকার সমৃদ্ধ
রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এটি একটি।
তবে দরিদ্রসীমার নিচে বাস করা লোক ও
নেহায়েত কম নয়। সম্পদ একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির হাতে আটকে আছে। দেশটিতে মানবাধিকার
পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়।নারী ও শিশুরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ব্যাপক নির্যাতনের
শিকার হয়। রাজনৈতিকভাবেও দেশটি অস্থিতিশীল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন