সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ঘুমন্ত জাতি

 

ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর আক্রমণের ঘটনা তো প্রতিনিয়ত ঘটছে। এর বাইরে পবিত্র রমজান মাসে ইসরায়েলের আগ্রাসনের মাত্রা বেড়ে যায়। এ মাসে ইহুদিবাদি সেনারা ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর সবচেয়ে বেশি আক্রমণ চালিয়ে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। এমন কোনো রমজান নেই যে রমজানে মুসলমানদের রক্তে গাজা, পশ্চিম তীর এবং আল আকসার পবিত্র অঙ্গন রঞ্জিত হয়নি। প্রশ্ন হলো রমজানে কেন তারা এতোটা বেপরোয়া?
ইহুদিরা মুসলমানদের শক্তি সামর্থ্য পরীক্ষা করে, দেখে রোজা রেখে বদরে যুদ্ধ লড়াকু মুসলমানদের উত্তরসূরীরা ঈমানী শক্তিতে কতোটা আজও বলীয়ান না নিস্তেজ! রমজান মাসে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয়ীর অনুসারীরা নিথর না সদা জাগ্রত? তারা বাতিলের বিরুদ্ধে এখনো শার্দুল কি না।
ইসরায়েলের বর্বর হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু এবং নারী। শিশু ও নারী কেন টার্গেট করা হয় জানেন? যাতে ফিলিস্তিনি নারীর গর্ভে সালাউদ্দীন, তারিক, মুহাম্মাদ বিন কাশেমের মতো অকুতোভয় বীর সিপাহসালার না জন্মায় এবং তাদের আবির্ভাবে পুনরায় আল আকসা হাতছাড়া হয়ে না যায়। এই জন্যে তাদের প্রতিটি দিন কাটে আতঙ্ক আর ভয়ে। সেই আতঙ্ক আর ভয় থেকে ইসরায়েলের সেনা ও নাগরিকেরা মানসিকভাবে অসুস্থ। যার বহিঃপ্রকাশ ফিলিস্তিনি অবুঝ শিশু , অবলা নারী আর বেসামরিক মানুষকে নির্বিচারে খুন গুম ও অপহরণের ঘটনা।
ফিলিস্তিনি শিশুরা কেন টার্গেট? যাতে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সেনাদের সামনে ভবিষ্যতে বুক চেঁতিয়ে কোনো ফিলিস্তিনি সাহসী সন্তান না দাঁড়াতে পারে। ফিলিস্তিনে একটি ভীরু, সাহসহীন, অথর্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে তারা শিশুদের হত্যা করে এবং অন্য শিশুদের ভয় দেখিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে দমন করতে চায়।ইহুদিবাদীরা সুযোগ মতো ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে নিজেদের দখলদারিত্ব ও আধিপত্য সম্প্রসারিত করার সুযোগ খোঁজে ।
ইহুদিবাদীদের সব অপকর্মই মুসলিম নেতাদের জানা। জেনে শুনেও তারা চুপচাপ। ঘুমের ঘোরে। কারণ তাদের অবৈধ ক্ষমতা হারানোর ভয়।
২১ আগস্ট ১৯৬৯ উগ্র ইহুদিবাদীরা আগুন ধরিয়ে দেয় মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান ও প্রথম কেবলা আল আকসা মসজিদে।এই ঘটনার পর সেসময়ের জারজ দখলদার ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের চতুর্থ
সেই সঙ্গে বিশ্বের চতুর্থ মহিলা প্রধানমন্ত্রী গোল্ডামায়ার( ১৮৯৮ -১৯৭৮)কি বলেছিলেন জানেন ?
"I did not sleep the whole night. I was afraid the Arabs may enter Israel in groups from all directions. But, when the sun rose the following day, I realized we can do whatever we want because the Arabs are a sleeping nation."
ফররুখ আহমেদের কন্ঠে বলতে হয়।
"ওকি বাতাসের হাহাকার,- ও কি
রোনাজারি ক্ষুধিতের!
ও কি দরিয়ার গর্জন,- ও কি বেদনা মজলুমের!
ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী।
পাঞ্জেরি!
জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি,
জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি!
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!!"

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...