জাতি ধর্ম বর্ণ সবার জন্য ইসলামের ন্যায়বিচার

 

একবার এক ইহুদি ও এক নামধারী মুসলিম মুনাফিক ব্যক্তির মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। তখন ইহুদি প্রস্তাব দেয় মুহাম্মদ (সা:)-এর কাছে এর ন্যায়বিচার করার। কিন্তু বিশর নামের এই মুনাফিক চাইছিল না রাসূলের কাছে এই বিষয় নিয়ে যেতে। কারণ, ইহুদির দাবি ছিল ন্যায়সঙ্গত এবং বিশর নামক লোকটি অন্যায়ভাবে ঝগড়া করছিল।এক পর্যায়ে তারা রাসুল( সা)'র কাছে যান। স্বাভাবিক ভাবেই রাসূল (সা) সব শোনে বিচারের রায় দেন। সেই রায় ইহুদি ব্যক্তির পক্ষে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা)'র সামনে তারা উভয়েই রায় মেনে নিল। কিন্তু সেখান থেকে বের হয়ে এসে মুনাফিক বিশর ইহুদিকে বললো যে, তার নাকি বিচারের রায় মনঃপুত হয়নি। নাউযুবিল্লাহ!তাই বিশর ওমর (রা:) এর কাছে যান পুনরায় বিচারের জন্য।সে মনে করেছিল, হযরত ওমর (রা) তিনি কাফিরদের বিরুদ্ধে কঠোর। তিনি হয়তো ইহুদির বিপক্ষে রায় দিবেন। সেখানে ইহুদি ব্যক্তিটি সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন এবং মুহাম্মদ (সা:) -এর বিচার ও রায়ের কথাও উল্লেখ করেন। সমস্ত শুনে ওমর (রা) বিশরকে জিজ্ঞাসা করেন কথা গুলো সত্য কিনা। বিশর স্বীকার করল।ঘটনা শুনে হযরত ওমর (রা) তিনি বললেন, তোমরা বসো, আমি ফায়সালা করে দিচ্ছি। এটা বলে তিনি তার বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে বেশ কয়েকটি তরবারির মধ্যে থেকে সবচাইতে ধারালো তরবারিটি নিয়ে এসে মুসলমান নামধারী সেই মুনাফিককে এক কোপে দু’টুকরা করে বললেন, এটাই হচ্ছে তোমার একমাত্র ন্যায্য বিচার।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়। ( সুরা নিসা আয়াত -৬৫)
আল্লাহর রাসূলের আদেশ-নিষেধ নিদ্বিধায় মেনে নেয়া শুধু আচার অনুষ্ঠান কিংবা অধিকারের সাথেই সম্পৃক্ত নয়; আকীদা এবং অপরাপর বৈষয়িক বিষয়েও ব্যাপক। অতএব, কোন সময় কোন বিষয়ে পারস্পারিক মতবিরোধ দেখা দিলে বিবাদ পরিহার করে উভয় পক্ষকে রাসূল (সা)'র নিকট এবং তাঁর অবর্তমানে তার প্রবর্তিত শরীআতের আশ্রয়ে গিয়ে মীমাংসা অন্বেষণ করা প্রতিটি মুসলিমের উপর ফরয।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল