যুদ্ধ বিরতি নয় ইসরায়েলের দম ফেলানোর সুযোগ

 

শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে ইসরায়েল হামাসের যুদ্ধ যুদ্ধবিরতি। এর মধ্য দিয়ে ১১ দিনের সহিংসতার আপাতত অবসান হলো, যাতে অন্তত ২৪৩ জন মারা গেছে এবং তাদের বেশির ভাগই মারা গেছেন গাযায়।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে এ সহিংসতায় গাযায় প্রায় একশ নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ২৩২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।ইসরায়েলে দুটি শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়েছে।আর আহত হয়েছে অন্তত ৩৩০ জন।ইসরায়েলের দাবি গাযা থেকে তার ভূখণ্ড লক্ষ্য করে অন্তত চার হাজার রকেট ছুড়েছে হামাস।ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে এবারের সংঘাতকে বলা হচ্ছে ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। ২০১৪ সালের ওই সংঘাতে দুই হাজার ২৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরাইলের পক্ষে প্রাণহানি ছিল ৭৪, যাদের অধিকাংশই সেনাসদস্য।
ইসরায়েল বলছে তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে সর্বসম্মতভাবেই। আর নজিরবিহীন সামরিক সাফল্য দাবি করে টুইট করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
অন্যদিকে হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছে, ইসরায়েল যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, সেটি ফিলিস্তিনের মানুষের কাছে জয়ের মতো এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু'র একটি পরাজয়।গাযার মসজিদগুলোতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধ জয়ের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক হামাস কাউন্সিলের বাসেম নায়েম এ যুদ্ধবিরতি কতটা স্থায়ী হয় তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "ফিলিস্তিনের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত না করে বা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না করে এ যুদ্ধবিরতি হবে ভঙ্গুর,"।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।আল-জাজিরা জানিয়েছে, জুমার নামাজের পর সেখানে অবস্থারত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানো হয়। নামাজের পর সেখানে ফিলিস্তিনিরা নেচে-গেয়ে যুদ্ধবিরতি উদযাপন করছিলেন। এসময় পাশে থাকা ইসরায়েলি বাহিনীর একটি কন্টিনজেন্ট তাদের ওপর হামলা চালায়।
ফিলিস্তিনিদের ছত্রভঙ্গ করতে তারা সাউন্ড গ্রেনেড, স্মোক বোম্ব এবং টিয়ারশেল ব্যবহার করে। একপর্যায়ে তাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায় বলে জানায় আল-জাজিরা।
আসলে যুদ্ধ বিরতি মানে ইসরায়েলকে আরেকটি দম ফেলানোর সুযোগ করে দেয়া। নতুন করে সামরিক কৌশল গ্রহণের অবকাশ দেয়া। এই যুদ্ধ বিরতি ইসরায়েলের যেখানে শেষ, ফিলিস্তিনিদের সেখানে নতুন করে ধ্বংসস্তূপ থেকে শুরু। কখনো তাদের কাছে এ যুদ্ধ শেষ এবং যুদ্ধ বিরতি পজেটিভ কোনো বার্তা দেবে না। ফিলিস্তিনিরা আবার একটু শির উচুঁ করে দাঁড়াতে চাইলেই ইসরায়েল তাদের শির নত করে দিতে প্রস্তুত।এভাবে যুগের পর যুগ চলছে। চলবে। যতদিন না তাদের বোধোদয় না হবে। এজন্য ফিলিস্তিনিদের শেষ ভরসা মরণ কামড়। যেটি ইসরায়েলকে ক্ষতবিক্ষত করে ছাড়বে।
হামাস কি কোনো সফলতা দাবি করতে পারে?
২০০৮ সালে প্রতি ১ জন ইসরায়েলির পরিবর্তে মারা গেছে ৮৯ জন ফিলিস্তিনি। ২০১২ সালে এই অনুপাত ছিল ১:৮০। ২০১৪ সালে ছিল ১:৩৪। আর এবার এই অনুপাত মাত্র ১:২১।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল