ইহুদিদের বাটপারী

তাওরাত গ্রন্থে আল্লাহ তায়ালা ইহুদিদের ওপর সুদ হারাম করেন। তারা আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহর বাণীর বিকৃতি সাধন করে মনগড়া ব্যাখ্যা স্থির করে। তারা যুক্তি দেয় সুদ হারাম শুধু ইহুদিদের পরস্পরের মাঝে সুদী লেনদেন করা। অন্য ধর্মের লোকদের সঙ্গে সুদী কারবার করতে কোনো বাধা নেই। এভাবে এরা আল্লাহর বাণী নিজেদের মতো পরিবর্তন করে নেয়। এরা যে কত বড় সুদখোর শেকসপিয়রের দ্য মার্চেন্ট অব ভেনিস ( The Merchant of Venice) কমেডি নাটক তার বড় প্রমাণ।

হজরত দাউদ (আ.)-এর সময়ে বনি ইসরাইলের একটি জনপদ ছিল সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি লোহিত সাগরের তীরবর্তী আইলাহ অঞ্চলে। এখানকার ইহুদিদের প্রধান পেশা ছিল মৎস্যশিকার। পুরো সপ্তাহ তারা মাছ শিকার করত আর শনিবার ছিল ইবাদতের দিন। সেদিন দাউদ (আ.) আসমানি কিতাব জাবুর পাঠ করতেন। অনেক সৃষ্টিজীব মুগ্ধ হয়ে তার জাবুর পাঠ শ্রবণ করত। শনিবার দিন নদী ও সমুদ্রতীরে অনেক বেশি মাছ আসত। যেহেতু একটি পবিত্র উদ্দেশ্যে এসব প্রাণী একত্র হতো, তাই আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত দাউদ (আ.) সে দিন মাছ শিকার নিষিদ্ধের ঘোষণা তার উম্মত বনি ইসরাইলকে জানিয়ে দেন। যেহেতু শনিবারেই সমস্ত মাছ নদীর কিনারে চলে আসতো এবং লাফ ঝাঁপ দিতো। অন্য দিনে মাছ তেমন একটা দেখা যেত না। কিছু দিন ঐসব লোক নিরব থাকে এবং শনিবার মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে।একদিন ওদের মধ্য থেকে এক লোক একটি ফন্দি বা কৌশল বের করে যে, শনিবার দিন মাছ ধরে জালে আটকিয়ে তীরের কোনো জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন মাছগুলো শিকার করে এবং মাছগুলো রান্না করে খায়। মাছ রান্নার সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, আমি তো আজ রোববার মাছ শিকার করেছি। অবশেষে তাদের কাছে এ ফন্দি বা কৌশলের রহস্য বেরিয়ে আসে। লোকেরাও আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে এ কৌশল পছন্দ করে এবং মাছ শিকার শুরু করে। কেউ কেউ শনিবার নদীর তীরে গর্ত করে পানির সংযোগ দিয়ে রাখতো। মাছ গর্তে এসে ভর্তি হলে তারা গর্তের মুখ বন্ধ করে দিতো। পরে রোববার মাছ শিকার করে খেতো। যা ছিল আল্লাহর নির্দেশের সরাসরি লঙ্ঘন।যার ফলশ্রুতিতে এ সীমা লঙ্ঘনকারীদেরকে আল্লাহ তাআলা বানরে পরিণত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, যুবকদেরকে বানর আর বুড়োদেরকে শুকরে পরিণত করেছিলেন। দেখা যায় সেসব পরিবারের সব নারী-পুরুষ-শিশু বানরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। তাদের লেজও গজিয়েছে। তাদের সবাইকে চেনা যাচ্ছিল, সে অমুক পুরুষ, সে অমুক নারী এবং এ অমুক শিশু ইত্যাদি। (তাফসিরে কুরতুবি : ১/৪৭৯; তাফসিরে তাবারি : ২/১৬৭, ১৩/৮০-৮১)।আল্লাহ তাআলা এ ঘটনাকে দৃষ্টান্তস্বরূপ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, ‘অতঃপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি। (সুরা বাক্বারা আয়াত ৬৬)
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, ইহুদিরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে (অবৈধ) হালালরূপে (বৈধ) গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীর (আল্লাহর হুকুমের) ক্ষেত্রে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাকো।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল