সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুধু কি মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন হচ্ছে?

 





মাদ্রাসায় কোনো ঘটনা ঘটলে যতটা না মার্কেটিং হয় অন্য ঘটনায় সেটি দেখা যায় না। অপরাধকে স্থান কাল পাত্রভেদে অপরাধ হিসেবেই সাব্যস্ত করা উচিত। কোন ঘটনা ঘটলেই মাদ্রাসাকে নিয়ে যেভাবে তুলকালামকান্ড ঘটে তা নজিরবিহীন। শুধু কি এসব ঘটনা মাদ্রাসায় ঘটে? মাদ্রাসা বন্ধ করার হুমকি দেন, হুজুরদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেন। রাজধানীর ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাস্টারমাইন্ডের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন ওরফে শাহনূরীকে ধর্ষণের পর আপনারা কতটুকু প্রতিবাদে সরব হয়েছেন?
বাংলাদেশে পারিবারিকভাবেও অনেক শিশু নির্যাতনের শিকার। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এক থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৮৯ শতাংশ সমীক্ষা চলাকালীন আগের এক মাসে অন্তত একবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। (প্রথম আলো) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ‘শিশু পরিস্থিতি রিপোর্ট মতে, ২০২০ সালে একহাজার ৫২১টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে মেয়ে শিশু ১০৮৮ আর ছেলে শিশুর সংখ্যা ৪৩৩। নির্যাতনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ৬২৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে মেয়ে শিশুর সংখ্যা ৬১৬ এবং ছেলে শিশুর ১০টি। নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে ১৪ শিশু। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী গত বছর (২০২০) সারাদেশে এক হাজার ৭৪১টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১২৫টি শিশু।২০১৩ সালে ইউনিসেফের একটি জরিপে প্রতি ১০ জন শিশুর মধ্যে ৯ জন জানিয়েছে, তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার। আর প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন শিশু জানায়, তারা বাড়িতে অভিভাবকদের হাতে শারীরিক শাস্তি পায়।ইউনিসেফ বলছে, ২০১০ সাল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতকরা ৯১ ভাগ এবং বাড়িতে শতকরা ৭১ ভাগ শিশু শারীরিক শাস্তির শিকার হয়েছে। জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে বেত বা লাঠির ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে এবং ৮৭ দশমিক ৬ শতাংশ ছাত্র এই বেত বা লাঠির শিকার হয়।
করোনাকালে শিশুদের প্রতি ৩০ শতাংশ নির্যাতন বেড়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে দুই হাজার ১৭১ জন ও জুন মাসে দুই হাজার ৮৯৬ শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। একইসাথে বেড়েছে বাল্যবিবাহের সংখ্যা।
শিশু ও নারীর প্রতি নির্যাতন নিয়ে জুন মাসে এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। এসব পরিসংখ্যান কি আপনাদের চোখে পড়ে না? দিনশেষে অপরাধকে অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে স্কুল কলেজ মাদ্রাসা দেখে নয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...