নারী কন্ঠের পর্দা
নারীদের কথার আওয়াজকেও পর্দার অন্তর্ভুক্ত করে অপ্রয়োজনে পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।একান্ত প্রয়োজনে কথা বলতে হলেও সুরা আহযাবের ৩২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা পরপুরুষের সঙ্গে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। যাতে নারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোনো পুরুষ আকর্ষণবোধ না করেন। কন্ঠ দেখা যায় না। শোনা যায়, ভাবা যায়, অনুভব করা যায়। কথায় আছে 'কণ্ঠে জাদু আছে', একথা সর্বত সত্যি, যার কন্ঠে জাদু আছে, সে জগতকে মোহিত করে। কন্ঠে সুর, কণ্ঠে কথা আর তা দিয়েই প্রথম আকর্ষণ, প্রথম ভাল লাগা তৈরি হয়। নারীদের কন্ঠ কেন এতো সুরেলা? মেয়েদের দেহে অ্যান্ড্রোজন হরমোনের প্রভাব অনেক কম থাকায় স্বাভাবিক নিয়মে তাদের স্বরযন্ত্রের আকার ও গঠন পাল্টায় না। ছেলেদের স্বাভাবিক কথাবার্তার সময়ে কম্পাঙ্ক সেকেন্ড ১২০ বার হয় অথচ মেয়েদের কম্পাঙ্কের সংখ্যা পাওয়া যায় সেকেন্ড ২৫০ বার। গবেষকদের গবেষণায় প্রমানিত, এই জন্য মেয়েদের গলার স্বরের তীক্ষ্ণতা বেশি। কণ্ঠস্বরের কম্পাঙ্ক ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশি হয় বিধায় মেয়েদের গলার আওয়াজ চিকন,মিস্টি-মধুর ও সুরেলা শোনায়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
হে নবী-পত্নিগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর সুতরাং পর-পুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, কারণ এতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে প্ৰলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায়সংগত কথা বলবে।( সুরা আহযাব, আয়াত -৩২) নারীদের কণ্ঠেরও পর্দা আছে। বিশেষ প্রয়োজনে পর পুরুষের সাথে কথা বলার পদ্ধতি এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে শিক্ষা দিয়েছেন। প্রয়োজনে যদি কথা বল, তাহলে আকর্ষণহীন ভাষায় কাটাকাটা কথা বলবে। নরম ও ললিত ভাষায় কথা বলো না। এতে যেসব পুরুষের মনে রোগ আছে (পরনারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ার মত ব্যক্তিদের রোগী বলা হয়েছে) তারা অকারণেই ফেতনায় পতিত হতে পারে। যার দায় আকর্ষণকারীনী নারীকেও নিতে হবে। সুতরাং নারীর কণ্ঠও একরকম পর্দার আওতায় চলে এসেছে। নারীদের কণ্ঠস্বরেও প্রকৃতিগতভাবে মন কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা, কোমলতা ও মধুরতা রেখেছেন, যা পুরুষকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে থাকে। সুতরাং সেই কণ্ঠস্বর ব্যবহার করার ব্যাপারেও এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, পরপুরুষের সাথে বাক্যালাপের সময় ইচ্ছাপূর্বক এমন কণ্ঠ ব্যবহার করবে, যাতে কোমলতা ও মধুরতার পরিবর্তে সামান্য শক্ত ও কঠোরতা থাকে। যাতে ব্যাধিগ্রস্ত অন্তরবিশিষ্ট লোক কণ্ঠের কোমলতার কারণে তোমাদের দিকে আকৃষ্ট না হয়ে পড়ে এবং তাদের মনে কুপ্রবৃত্তি জাগ্রত না হয়।অর্থাৎ, এই কর্কশতা ও কঠোরতা শুধু কণ্ঠস্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, অর্থাৎ মুখে এমন বাক্য আনবে না, যা অসঙ্গত ও সচ্চরিত্রতার পরিপন্থী।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন