পরকীয়া কি কেন ও ইসলাম কি বলে ?



#মো. আবু রায়হান
স্ত্রী হলো স্বামীর আমানত স্বরুপ। যে স্ত্রী স্বামীর ঘরে থাকাবস্থায় আরেকটি পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করে অতঃপর প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় পুরুষের কাছে গেল সুষ্পষ্টভাবে সে আমানতের খেয়ানত ও বিশ্বাস ভঙ্গ করল। এটির উদাহরণ পরজীবী প্রাণীর মতো যে অন্যের দেহে বসবাস করে আশ্রয়দাতাকে খেয়ে পুষ্ট হয়। ইসলাম নারীকে তালাকের অধিকার দেয়নি, কিন্তু তালাকের যে মূল উদ্দেশ্য বিবাহবিচ্ছেদ, তার অধিকার দিয়েছে। অর্থাৎ কোনো কারণে নারী চাইলে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। ইসলামে নারীদের আটকে রাখা হয়নি, বরং তারাও প্রয়োজনে যথাবিহিত নিয়মে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারে। স্বামী নপুংসক, পাগল, অস্বাভাবিক ক্রোধসম্পন্ন হলে কোনোক্রমেই মনের মিল না হলে বা নিখোঁজ হয়ে গেলে অথবা যেকোনো কঠিন সমস্যায় পতিত হলে স্ত্রী বিচারকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারবে। (শরহুস সগির, দরদির : ২/৭৪৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৬/২৫২)। কিন্তু স্বামীর ঘরে থেকে পরপুরুষে আসক্তি, পরকীয়া কখনো কাম্য হতে পারে না। স্বামীর সঙ্গে জটিল কোনো সমস্যা হলে তাকে তালাক দিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে সমস্যা নেই। কিন্তু স্বামীকে ঠকিয়ে, প্রতারণা করে অন্য পুরুষের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা, ফোনে কথা, ডেট করা হারাম।

গবেষণা-পরিসংখ্যান বলছে ৮৭ শতাংশ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে পরকীয়ার জেরে। কোনো ক্ষেত্রে স্বামীর পরকীয়া, কোনো ক্ষেত্রে স্ত্রীর। এ ছাড়া তথ্য-প্রযুক্তির প্রভাব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আধুনিক সংস্কৃতির কারণেও সংসার ভাঙছে। বর্তমানে মেয়েরা বিদেশি চ্যানেল ও বিভিন্ন ধরনের সিরিয়াল দেখে সাংস্কৃতিক দিক থেকে প্রভাবিত হচ্ছে।’
পুণ্যবতী নারীর অন্যতম পরিচয় স্বামীর আনুগত্য। নারীকে তার নিজ স্বার্থে স্বামীর আনুগত্য করতে হবে। নচেৎ পারস্পরিক সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। মুসনাদে আহমাদ বর্ণিত হাদিসে আছে, যে মহিলা যথারীতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজান মাসের রোজা রাখে, নিজের সতীত্ব রক্ষা করে চলে এবং স্বামীর পূর্ণ আনুগত্য করে, তার ইচ্ছা, সে জান্নাতের (আটটি দরজার) যে কোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।শু’আবুল ইমান লিল বাইহাকি বর্ণিত হাদিসে আছে, তিন প্রকারের লোকের নামাজও কবুল হবে না এবং কোনো নেকিও উপরে উঠবে না। ১. পালিয়ে যাওয়া গোলাম; যে পর্যন্ত মনিবের হাতে ফিরে না আসে। ২. ওই মহিলা যার ওপর স্বীয় স্বামী নারাজ হয়ে যায়। ৩. ওই শরাব পানকারী মাতাল; যে পর্যন্ত তার শরাবের ক্রিয়া শেষ না হয়। হাদিসে আছে, মহান আল্ল­াহ ওই মহিলার দিকে তাকান না, যে মহিলা তার স্বামীর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, অথচ সে তার দিকে মুখাপেক্ষী।ইবনে মাজাহ্ শরিফে বর্ণিত অপর এক হাদিসে আছে, জনৈক সাহাবি মহানবী (সা) কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসুলুল্লা­হ। সর্বাপেক্ষা উত্তম স্ত্রী কে? প্রিয় নবীজী (সা) জবাবে বললেন, যে স্ত্রীকে দেখলে নয়ন জুড়ায়, যে স্ত্রী স্বামীর সম্পূর্ণ অনুগত ও তাঁর মতের বাইরে কোনো কাজ করে না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল