ইয়ারমুকের যুদ্ধ ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম উদাহরণ
আধুনিক কালের ইয়ারমুক |
#মো.আবু রায়হান
ইয়ারমুকের যুদ্ধ ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দে রাশিদুন খিলাফত ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘটিত হয়। ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে ইয়ারমুক নদীর তীরে ছয়দিনব্যপী এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জর্দান নদী ও ইয়ারমুক নদীর মিলনস্থলে ইয়ারমুক প্রান্তর অবস্থিত। বর্তমানের সিরিয়া, জর্দান ও ফিলিস্তিনের সীমান্তবর্তী এই উপত্যকার তিনদিকে ছিলো ওয়াদী আল রুক্কাদ, ওয়াদী আল ইয়ারমুক, ওয়াদী আল আলান এর খাড়া পাহাড় বেষ্টিত সরু গিরিপথ। এই যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের ফলে সিরিয়ায় বাইজেন্টাইন শাসনের অবসান ঘটে। সামরিক ইতিহাসে এই যুদ্ধ অন্যতম ফলাফল নির্ধারণকারী যুদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়। মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর এই যুদ্ধ জয় মুসলিম বিজয়ের প্রথম বৃহৎ বিজয় হিসেবে দেখা হয়। এর ফলে খ্রিষ্টান লেভান্টে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
৬৩৬ সালের জানুয়ারি মাস নাগাদ মুসলিম বাহিনী সিরিয়ার প্রতিটি লড়াইয়ে রোমানদের হারাতে হারাতে পশ্চিম সিরিয়ার হিমস শহর দখল করে নেয়। পুরো সিরিয়ান ফ্রন্টে কেবল আলেপ্পো তখন রোমানদের একমাত্র শক্তিশালী ঘাঁটি, যা হারালে রোমানদের সিরিয়াতে দাঁড়ানোর মত আর জায়গা থাকবে না। এমন কঠিন অবস্থায় রোমান কায়সার হেরাক্লিয়াস দু’টো সিদ্ধান্ত নিলেন। এক, মুসলমানদের পরাজিত করতে চিরশত্রু পারসিক সাসানীয় সাম্রাজ্যের সাথে ঐক্যজোট গড়ে তোলেন। ঐক্যজোটকে মজবুত করার লক্ষ্যে নিজের মেয়ে মানিয়ানের সাথে তরুণ কিসরা ইয়াজদিগার্দের বিয়ে দিলেন তিনি।দুই, মুসলমানদের উপর চূড়ান্ত হামলা চালানোর জন্য রোমান, আর্মেনীয়, স্লাভ, জর্জিয়ান, ফ্রেঞ্চ এবং আরব খ্রিস্টান যোদ্ধাদের একত্রিত করে বিশাল এক বাহিনী তৈরী করলেন । আরব এবং পশ্চিমা ঐতিহাসিকদের মতে এই যুদ্ধের জন্য হেরাক্লিয়াস প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি যোদ্ধাকে একত্রিত করেন। এই বিশাল বাহিনীর নেতৃত্ব দেয়া হয় থিওডর ট্রিথিরিয়াসকে। চূড়ান্ত এই লড়াইয়ের জন্য বৃদ্ধ থিওডরের সহযোগী হিসেবে আর্মেনিয় বংশোদ্ভূত দুর্ধর্ষ রোমান কমান্ডার ভাহানকে নিযুক্ত করা হয়।অপরদিকে সিরিয়া ফ্রন্টে অবস্থিত মুসলিম বাহিনী তখন চার ভাগে বিভক্ত। আমর ইবনে আসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা বর্তমান ফিলিস্তিনে, ইকরিমা ইবনে আবু জাহলের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দামেস্ক, শুরাহবিল ইবনে হাসানের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা বর্তমান জর্দান এবং আবু উবায়দা-খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা হিমসে অবস্থান করছিলেন। মুসলিম বাহিনীর দুর্ধর্ষ গোয়েন্দারা খ্রিস্টান বাহিনীর যুদ্ধকৌশল উদ্ধার করতে সক্ষম হন। হেরাক্লিয়াস এবং ভাহানের লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব মুসলিম বাহিনীর মূল ইউনিটকে (আবু উবায়দা-খালিদ বিন ওয়ালিদের ইউনিট) হঠাৎ আক্রমণের মাধ্যমে পরাজিত করা। হেরাক্লিয়াস কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় লড়ার বদলে বিভিন্ন স্থানে বিভক্ত মুসলিম বাহিনীগুলোকে আলাদাভাবে আক্রমণ করে পরাজিত করতে চাইছিলেন।খালিদ বিন ওয়ালিদ মুসলিম বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবু উবায়দাকে যুদ্ধকৌশল নিয়ে নিজের পরামর্শ দিলেন। সেই অনুযায়ী মুসলিম বাহিনীর সমস্ত ইউনিটকে দুই দফায় যার যার অবস্থান থেকে পেছনে সরে এসে ইয়ারমুক নদীর পার্শ্ববর্তী সমতল ভূমিতে অবস্থান নেয়ার জন্য নির্দেশ জারি করলেন আবু উবায়দা।যেহেতু মুসলিম বাহিনী অধিকৃত খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলো ত্যাগ করে পেছনে সরে যাচ্ছে, তাই খ্রিস্টান নাগরিকদের কাছ থেকে আদায়কৃত জিজিয়া কর ফেরত দেয়া শুরু হল। কথিত আছে, এ সময় অনেক শহরের খ্রিস্টান নাগরিকরা মুসলিম বাহিনীকে কাঁদতে কাঁদতে বিদায় জানায় এবং তাদেরকে বলে “আমরা আপনাদের আবার আগমনের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবো”। খ্রিস্টান নাগরিকদের কাছে তাদের টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার পর মুসলিম বাহিনীর সমস্ত ইউনিট দ্রুতগতিতে ইয়ারমুক প্রান্তরে এসে হাজির হল।
প্রাথমিক সূত্রগুলোতে মুসলিম সৈনিকের সংখ্যা ২৪,০০০ থেকে ৪০,০০০ এবং বাইজেন্টাইন সৈনিকের সংখ্যা ১,০০,০০০ থেকে ৪,০০,০০০ এর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। আধুনিক হিসাবে এই সংখ্যার তারতম্য ঘটে। বেশিরভাগ হিসাব মতে বাইজেন্টাইন বাহিনীতে ৮০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ সৈনিক ছিল। তবে কিছু হিসাবে তা ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে হিসাব অনুযায়ী রাশিদুন সেনাবাহিনীর সৈনিক সংখ্যা ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ এর মধ্যে। মূল হিসাব প্রধানত আরব সূত্রগুলোতে পাওয়া যায়। বাইজেন্টাইন ও তার মিত্রদের সৈন্য সংখ্যা মুসলিমদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল এই ব্যাপারে ঐকমত্য রয়েছে।
প্রথম দিন
৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট যুদ্ধ শুরু হয়।ভোরে এক মাইলের কম দূরত্বে দুই বাহিনী মুখোমুখি হয়। বাইজেন্টাইন বাহিনীর ডান ভাগের একজন কমান্ডার জর্জ যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে মুসলিমদের নিকটে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং মুসলিম পক্ষে যুদ্ধ করে নিহত হন বলে মুসলিম বিবরণগুলোতে উল্লেখ রয়েছে। মুসলিম মুবারিজুনদের সাথে দ্বন্দ্ব্বযুদ্ধের জন্য বাইজেন্টাইন বাহিনীর দ্বন্দ্ব্বযোদ্ধাদের প্রেরণের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হয়। মুবারিজুনরা ছিল বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত তলোয়ার ও বর্শাধারী সৈনিক। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের কমান্ডারদের হত্যা করে প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙে দেয়া তাদের দায়িত্ব ছিল। দ্বন্দ্ব্বযুদ্ধে কয়েকজন কমান্ডার নিহত হওয়ার পর দুপুরে ভাহান তার পদাতিক বাহিনীর এক তৃতীয়াংশকে পাঠান যাতে মুসলিম বাহিনীর শক্তি ও কৌশল জানা সম্ভব হয়। সৈন্যসংখ্যা ও উন্নত অস্ত্রের কারণে তারা মুসলিম সেনা বিন্যাসের দুর্বল স্থানগুলো ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। তবে বাইজেন্টাইন আক্রমণে লক্ষ্যের অভাব ছিল। রাজকীয় বাহিনীর অধিকাংশ সৈনিক মুসলিমদের বিরুদ্ধে সফল হতে পারেনি। কিছু ক্ষেত্রে তীব্র হলেও লড়াই মধ্যমরকমভাবে চলছিল। ভাহান রিজার্ভ হিসেবে রাখা তার দুই-তৃতীয়াংশ পদাতিকদের যুদ্ধে পাঠাননি। সূর্যাস্তের পর দুই বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে নিজ নিজ ক্যাম্পে ফিরে আসে।
দ্বিতীয় দিন
প্রথম পর্যায়: ১৬ আগস্ট ভাহান একটি যুদ্ধসভায় ভোরের ঠিক পূর্বে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন যাতে মুসলিমদের ফজরের নামাজের সময় অপ্রস্তুত অবস্থায় তাদের আক্রমণ করা যায়। তিনি তার বাহিনীর মধ্যভাগের দুইটি অংশকে মুসলিমদের মধ্যভাগের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন যাতে তাদের এদিকে নিয়োজিত রেখে মুসলিমদের পার্শ্বভাগের বিরুদ্ধে মূল আক্রমণ চালানো যায়। এভাবে মুসলিমদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বের করে দেয়া বা মধ্যভাগের দিকে কোণঠাসা করে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। যুদ্ধক্ষেত্র পর্যবেক্ষণের জন্য ভাহান আর্মেনীয় দেহরক্ষী দলের সাথে ডান ভাগে নির্মিত একটি প্যাভেলিয়নে অবস্থান নেন। তিনি আচমকা আক্রমণের জন্য বাহিনীকে প্রস্তুত হতে বলেন। বাইজেন্টাইনদের অজান্তে খালিদ আচমকা আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য রাতের বেলা সামনের দিকে সেনা মোতায়েন করেছিলেন। ফলে মুসলিমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময় পায়। বাইজেন্টাইনরা মধ্যভাগের আক্রমণে সফল হতে পারেনি। ফলে মধ্যভাগ সুরক্ষিত থাকে। তবে পার্শ্বভাগে অবস্থা ভিন্ন রকম ছিল। স্লাভদের নিয়ে গঠিত বাইজেন্টাইন বাম পার্শ্বের কমান্ডার কানাটির আক্রমণ করার পর মুসলিমদের ডান ভাগ পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুসলিমদের ডান ভাগের কমান্ডার আমর ইবনুল আস (রা.) তার অশ্বারোহী সৈনিকদের পাল্টা আক্রমণের নির্দেশ দেন ফলে বাইজেন্টাইনদের আক্রমণকে প্রতিহত করে কিছু সময় অবস্থা স্থিতিশীল করে তোলা সম্ভব হয়। তবে বাইজেন্টাইনদের সংখ্যাধিক্যের কারণে মুসলিমদেরকে পিছু হটতে হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়: পার্শ্বভাগের অবস্থা বিবেচনা করে খালিদ ডান ভাগের অশ্বারোহীদেরকে বাইজেন্টাইন বাম ভাগের উত্তর অংশকে আক্রমণের নির্দেশ দেন এবং নিজে বাম ভাগের দক্ষিণ অংশের উপর তার মোবাইল গার্ডদের নিয়ে আক্রমণ চালান; এসময় মুসলিমদের ডান ভাগের পদাতিকরা সামনের দিক থেকে আক্রমণ চালায়। এসকল সমন্বিত আক্রমণের ফলে বাইজেন্টাইনদের বাম ভাগ পিছু হটে এবং আমর পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থান ফিরে পান। মুসলিমদের বাম ভাগের নেতৃত্বে ছিলেন ইয়াজিদ ইবনে আবি সুফিয়ান। এই অংশের অবস্থা আরো খারাপ ছিল। ডান ভাগ মোবাইল গার্ডের সহায়তা পেলেও বাম ভাগ সহায়তা পায়নি এবং বাইজেন্টাইনদের সংখ্যাধিক্যের ফলে মুসলিমদের অবস্থা সংকটজনক হয়ে উঠে এবং সৈনিকদের পিছু হটতে হয়।এই স্থানে বাইজেন্টাইনরা সৈনিকদের সারি ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়। গ্রেগরির প্রয়োগ করা টেসটুডো ফর্মেশন ধীরে কাজ করলেও প্রতিরক্ষায় ভালো কাজ দেয়। ইয়াজিদ তার অশ্বারোহীদেরকে আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যবহার করেন। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পরও ইয়াজিদের সৈনিকরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ফলে কিছু সময়ের জন্য ভাহানের পরিকল্পনা সফল হয়। মুসলিমদের মধ্যভাগ অবরুদ্ধ হয় এবং পার্শ্বভাগ পিছু হটে। তবে ক্ষতি করা গেলেও উভয় পার্শ্ব ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি। পিছু হটতে থাকা মুসলিমরা শিবিরে ফেরার সময় রাগান্বিত মুসলিম মহিলাদের সম্মুখীন হয়।হিন্দ বিনতে উতবা তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তারা তাবুর খুটি তুলে নিয়ে পুরুষদের যুদ্ধে যেতে বাধ্য করেন। এসময় তারা উহুদের যুদ্ধের সময় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার গাওয়া একটি গান আবৃত্তি করেছিলেন।
তোমরা যারা সৎ নারীর কাছ থেকে পালাও
যার সৌন্দর্য ও গুণ দুটিই আছে;
এবং তাকে কাফিরদের কাছে ছেড়ে দাও,
ঘৃণ্য ও খারাপ কাফিরগণ,
অধিকার, অপমান ও ধ্বংসের জন্য।
এর ফলে পিছু হটতে থাকা মুসলিমদের মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং তারা পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে আসে।তৃতীয় পর্যায়: ডান ভাগের অবস্থান সংহত করার পর খালিদ মোবাইল গার্ডদের বাম ভাগের উপর নজর দেয়ার নির্দেশ দেন। তিনি দিরার ইবনুল আজওয়ারের অধীনে একটি বাহিনী পাঠান এবং তাকে বাইজেন্টাইন মধ্যবাম ভাগে দাইরজানের অংশের সামনে থেকে আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। বাকি অশ্বারোহীদের নিয়ে তিনি গ্রেগরির অংশকে আক্রমণ চালান। এখানে অগ্র ও পার্শ্বভাগ থেকে ক্রমাগত আক্রমণের জন্য বাইজেন্টাইনরা পিছু হটে। কিন্তু ফর্মেশন রক্ষা করার জন্য তাদের ধীরে পিছু হটতে হয়। সূর্যাস্তের পর উভয় বাহিনী নিজেদের মূল অবস্থানে ফিরে যায়। দাইরজানের মৃত্যু ও ভাহানের যুদ্ধ পরিকল্পনার ব্যর্থতার ফলে বাইজেন্টাইন বাহিনীর মনোবল তুলনামূলকভাবে হ্রাস পায়। অন্যদিকে সংখ্যা স্বল্পতা সত্ত্বেও খালিদের সফল আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মনোবল বৃদ্ধি পায়।
তৃতীয় দিন
৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট ভাহান আগের দিনে তার ব্যর্থতাগুলো পর্যালোচনা করেন। তার একজন কমান্ডারের মৃত্যু তাকে বেশি বিচলিত করে তোলে। এরপর বাইজেন্টাইনরা কম উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নেয়। ভাহান নির্দিষ্ট কিছু স্থানে মুসলিম বাহিনীকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। তুলনামূলকভাবে বেশি প্রকাশিত ডান ভাগের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেন। এখানে মুসলিম বাম ভাগের তুলনায় তার আরোহী সৈনিকদের চলাচলের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থা ছিল। সিদ্ধান্ত হয় যে মুসলিম মধ্যডান ও ডান ভাগের সংযোগস্থলে আক্রমণ করা হবে এবং তাদেরকে পৃথকভাবে লড়াই করতে বাধ্য করা হবে।
প্রথম পর্যায়: মুসলিমদের ডান ভাগ ও মধ্যডান ভাগে বাইজেন্টাইনদের হামলার মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হয়।প্রথমদিকে আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা গেলেও পরে প্রথমে মুসলিমদের ডান ভাগ ও এরপর মধ্যডান ভাগ পিছু হটে। মুসলিমরা এবারও পুনরায় মহিলাদের সম্মুখীন হয়েছিল বলা হয়ে থাকে। মুসলিমরা শিবির থেকে কিছু দূরে সংগঠিত হতে সক্ষম হয় এবং পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়: বাইজেন্টাইন বাহিনী মুসলিমদের ডান ভাগের উপর জোর দিচ্ছে বুঝতে পেরে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) মোবাইল গার্ড ও ডান ভাগের অশ্বারোহীদের নিয়ে আক্রমণ চালান। তিনি বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম ভাগের ডান অংশের উপর হামলা চালান এবং মুসলিম মধ্যডান ভাগের রিজার্ভ অশ্বারোহীরা মধ্যবাম ভাগের বাম অংশের উপর হামলা চালায়। এদিকে তিনি মুসলিম ডান ভাগের অশ্বারোহীদেরকে বাইজেন্টাইনদের বাম ভাগের উপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এই লড়াই শীঘ্রই রক্তস্নাত অবস্থার সৃষ্টি করে। দুই পক্ষের অনেকে নিহত হয়। খালিদের (রা.) সময়মত আক্রমণের ফলে সেদিনও মুসলিমদের অবস্থা সুরক্ষিত থাকে এবং সন্ধ্যা নাগাদ বাইজেন্টাইনরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময়কার তাদের মূল অবস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
চতুর্থ দিন
১৮ আগস্ট অর্থাৎ চতুর্থ দিন ফলাফল নির্ধারণে ভূমিকা রেখেছে।
প্রথম পর্যায়: ভাহান আগের দিন মুসলিমদের ডান ভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারায় যুদ্ধপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার চিন্তা করেন। কানাটির স্লাভদের দুইটি বাহিনীকে মুসলিমদের ডান ও মধ্যডান অংশের উপর আক্রমণ চালান। আর্মেনীয় ও জাবালার নেতৃত্বাধীন খ্রিষ্টান আরবরা এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে। মুসলিমদের এই অংশ পুনরায় পিছিয়ে পড়ে। খালিদ (রা.) পুনরায় তার মোবাইল গার্ডদের নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি পুরো যুদ্ধক্ষেত্রজুড়ে হামলার আশঙ্কা করেছিলেন তাই সতর্কতা হিসেবে আবু উবাইদা (রা.) ও ইয়াজিদকে যথাক্রমে মধ্যবাম ও বাম অংশের দায়িত্ব দেন এবং স্ব স্ব স্থানের সম্মুখে থাকা বাইজেন্টাইন বাহিনীকে আক্রমণের দায়িত্ব দেন। এই হামলার ফলে বাইজেন্টাইন বাহিনীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করা সম্ভব হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়: খালিদ (রা.) তার মোবাইল গার্ডদের দুইটি অংশে বিভক্ত করে বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম অংশের দুই দিক থেকে আক্রমণ করে। এসময় মুসলিমদের মধ্যডান অংশ সামনে থেকে আক্রমণ করে। এই তিনটি আক্রমণের মাধ্যমে বাইজেন্টাইনদের পিছিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ইতিমধ্যে মুসলিমদের ডান অংশ তাদের আক্রমণ পুনরায় শুরু করে; এতে পদাতিকরা সামনের দিক থেকে এবং অশ্বারোহীরা বাইজেন্টাইনদের বাম ভাগের উত্তর অংশে আক্রমণ চালায়। বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম অংশ পিছু হটার পর বাম অংশও পিছু হটে আসে।
খালিদ (রা.) ও তার মোবাইল গার্ডরা পুরো বিকেল জুড়ে আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অন্যত্র অবস্থা শোচনীয় হতে শুরু করে।বাইজেন্টাইন অশ্বারোহী তীরন্দাজরা যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান নিয়ে আবু উবাইদা (রা.) ও ইয়াজিদের বাহিনীর উপর তীব্রভাবে তীর নিক্ষেপ শুরু করে ফলে তারা বাইজেন্টাইনদের সারি ভেদ করতে সক্ষম হচ্ছিলেন না। তীরের আঘাতের কারণে অনেক মুসলিম সৈনিক দৃষ্টি হারায়। ফলে এই দিনের নাম পরে "হারানো চোখের দিন" হয়। [আবু সুফিয়ানও সেদিন তার এক চোখের দৃষ্টি হারান। ইকরিমা ইবনে আবি জাহল ছাড়া বাকি অংশগুলো পিছিয়ে আসে। এই অংশ আবু উবাইদার (রা.) সেনাদের বামে ছিল। বাইজেন্টাইন বাহিনীকে তার চারশত অশ্বারোহী সৈনিকদের নিয়ে বাধা দানের মাধ্যমে পিছিয়ে আসা মুসলিমদের আড়াল করে দেন। এসকল অন্যান্য অংশগুলো পাল্টা আক্রমণ ও হারানো স্থান উদ্ধারের জন্য সংগঠিত হতে থাকে। ইকরিমার সব সৈনিক মারাত্মক আহত বা নিহত হয়। খালিদের (রা.) বাল্যবন্ধু ইকরিমা নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হন এবং সেদিন সন্ধ্যায় মারা যান।
পঞ্চম দিন
পঞ্চম দিনে সেনা সমাবেশ। খালিদ তার অশ্বারোহীদের পার্শ্ব আক্রমণের জন্য সমবেত করেন।
চতুর্থ দিন ভাহানের সৈনিকরা মুসলিমদের ভেদ করতে ব্যর্থ হয় এবং মোবাইল গার্ডের আক্রমণের সময় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুদ্ধের পঞ্চম দিন ১৯ আগস্ট দিনের বেলায় ভাহান মুসলিম শিবিরে সন্ধির জন্য দূত পাঠান। সম্ভবত তিনি বাহিনীকে সংগঠিত করার জন্য সময় চাইছিলেন। কিন্তু খালিদ বিজয় নিকটবর্তী দেখতে পেয়ে সন্ধি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।[ এই পর্যন্ত মুসলিমরা প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান থেকে লড়াই করছিল। কিন্তু বাইজেন্টাইন বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসুক না জানার পর খালিদ আক্রমণাত্মক অবস্থানে আসার সিদ্ধান্ত নেন এবং মুসলিম বাহিনীকে সংগঠিত করা শুরু করেন। মোবাইল গার্ডদের কেন্দ্র করে সকল অশ্বারোহী সৈনিকদের নিয়ে তিনি একটি শক্তিশালী অশ্বারোহী বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনীতে এসময় প্রায় ৮,০০০ অশ্বারোহী সৈনিক ছিল। বাকি দিন তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাইজেন্টাইন বাহিনীর পালিয়ে যাওয়ার সকল পথ বন্ধ করে খালিদ তাদের ফাদে ফেলার পরিকল্পনা করেন। যুদ্ধক্ষেত্রের তিনটি গিরিসংকট ছিল এখানকার প্রাকৃতিক বাধা। এগুলো হল পশ্চিমে ওয়াদি-উর-রুক্কাদ, দক্ষিণে ওয়াদি-আল-ইয়ারমুক এবং পূর্বে ওয়াদি-আল-আল্লাহ। উত্তরের পথ মুসলিম অশ্বারোহীরা বন্ধ করে দেয়। পশ্চিমের ওয়াদি-আর-রুক্কাদে ২০০ মিটার (৬৬০ ফু) খাদের মধ্য দিয়ে কিছু পথ ছিল। তাদের মধ্যে আইন আল দাকারের একটি সেতু ছিল কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাতের বেলা খালিদ দিরারকে ৫০০ অশ্বারোহী সৈনিক দিয়ে সেতু রক্ষার জন্য পাঠান। দিরার বাইজেন্টাইন বাহিনীর উত্তরের পাশ দিয়ে গিয়ে সেতু দখল করে নেন।
ষষ্ঠ দিন
২০ আগস্ট ছিল যুদ্ধের চূড়ান্ত দিন। খালিদ (রা.) আক্রমণের সরল কিন্তু কার্যকরী পরিকল্পনা প্রয়োগ করেন। তার বৃহৎ অশ্বারোহী বাহিনীকে নিয়ে তিনি বাইজেন্টাইন অশ্বারোহীদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হন যাতে পদাতিকরা কোনো অশ্বারোহী সমর্থন না পায় এবং পার্শ্বভাগ ও পশ্চাদভাগ থেকে সহজে আক্রমণ করা যায়। একই সাথে তিনি বাইজেন্টাইন বাহিনীর বাম ভাগকে আক্রমণ করে পশ্চিমের গিরিসংকটের দিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন।[
প্রথম পর্যায়: বাইজেন্টাইন বাহিনীর সামনের অংশে আক্রমণের জন্য খালিদ নির্দেশ দেন এবং অশ্বারোহীদের নিয়ে তিনি বাম অংশের দিকে এগিয়ে যান। তাদের কিছু অংশ বাম অংশের অশ্বারোহীদের সাথে লড়াই করে এবং অবশিষ্টরা বাম অংশের পদাতিকদের উপর হামলা চালায়। ইতিমধ্যে মুসলিমদের ডান অংশ সামনে থেকে হামলা চালিয়েছিল। এই দুইটি হামলার ফলে বাইজেন্টাইনদের বাম অংশ পিছিয়ে যায় এবং বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম অংশে গিয়ে তাকে বিশৃঙ্খল করে ফেলে।বাকি মুসলিম অশ্বারোহীরা এরপর বাইজেন্টাইনদের বাম অংশের অশ্বারোহীদের পেছনের অংশে হামলা চালায়। এসময় বাইজেন্টাইনদের সামনেও মুসলিম অশ্বারোহীরা ছিল। তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রের উত্তরদিকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর মুসলিমদের ডান অংশের পদাতিকরা বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম অংশের বাম পাশে এবং মুসলিমদের মধ্যডান অংশ সামনের দিক থেকে আক্রমণ করে।
দ্বিতীয় পর্যায়: মুসলিম অশ্বারোহীদের তৎপরতা দেখতে পেয়ে ভাহান তার অশ্বারোহীদেরকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দেন। তবে তিনি কিছু করার আগে খালিদ (রা.) তাদের উপর আক্রমণ করেন। অবস্থান গ্রহণের সময় তাদের উপর অগ্রভাগ ও পার্শ্বভাগ থেকে হামলা চালানো হয়। অসংগঠিত ও বিশৃঙ্খল বাইজেন্টাইন অশ্বারোহীরা সহজেই বিতাড়িত হয় এবং উত্তরের দিকে বিক্ষিপ্ত হয়। এর ফলে পদাতিকরা একা হয়ে পড়ে।
তৃতীয় পর্যায়: বাইজেন্টাইন অশ্বারোহীদের তাড়িয়ে দেয়ার পর খালিদ (রা.) মধ্যবাম অংশের দিকে মনোনিবেশ করেন। ইতিমধ্যে তারা মুসলিমদের দুইটি আক্রমণের সম্মুখীন হয়। তাদেরকে খালিদের (রা.) অশ্বারোহীরা পেছনের দিক থেকে আক্রমণ করে এবং ভেদ করে ফেলতে সক্ষম হয়।
শেষ পর্যায়: বাইজেন্টাইনদের মধ্যবাম অংশের পিছু হটার পর বাইজেন্টাইনদের ব্যাপকভাবে পিছু হটা শুরু হয়। খালিদ (রা.) উত্তরের পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করার জন্য তার অশ্বারোহীদেরকে নিযুক্ত করেন। বাইজেন্টাইনরা পশ্চিমে ওয়াদি-উর-রুক্কাদের দিকে পিছু হটে। এখানে গিরিসংকট অতিক্রমের জন্য আইন আল দাকার সেতু ছিল।খালিদের (রা.) পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দিরার আগের রাতে সেতুটি দখল করে নিয়েছিলেন। এই অংশ বন্ধ করার জন্য ৫০০ অশ্বারোহী সৈনিকের দল পাঠানো হয়েছিল। খালিদ (রা.) চাইছিলেন যাতে বাইজেন্টাইনরা এই পথে পালায়। বাইজেন্টাইনরা এসময় সব দিক থেকে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাদের কেউ কেউ গভীর গিরিখাতের ভেতর পড়ে যায়, কেউ বা নদীপথে পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু নিচে পাথরের কারণে আঘাত পায় এবং মৃত্যুবরণ করে। তবে অনেক সৈনিক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দামেস্ক বিজয়ের সময় রাশিদুন সেনাবাহিনীর গ্রিক সংবাদাতা জোহান এই যুদ্ধে মারা যায়। এই যুদ্ধে মুসলিমরা কাউকে বন্দী করেনি। তবে পরবর্তীতে অগ্রসর হওয়ার সময় কেউ কেউ বন্দী হয়। থিওডোর ট্রাইথিরিয়াস যুদ্ধের সময় মারা যান। নিকেটাস পালিয়ে এমেসা চলে যেতে সক্ষম হন। জাবালা ইবনুল আইহাম পালিয়ে যান এবং পরে মুসলিমদের সাথে সন্ধিতে আসেন। কিন্তু শীঘ্রই পক্ষত্যাগ করে পুনরায় বাইজেন্টাইন পক্ষে চলে যান।
পৃথিবীবাসীকে অবাক করে সেই যুদ্ধে জয়লাভ করলেন। মুসলিমদের মাত্র ৩ হাজার মুজাহিদ শাহাদতবরণ করেন। আর রোমান সৈন্য নিহত হয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজারের মতো।
ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম উদাহরণ
যুদ্ধ শুরু হ'ল এবং প্রচণ্ড আকারধারণ করল। যুদ্ধের সময় হুযায়ফা (রা.) আহতদের মধ্যে তার চাচাতো ভাইকে খুঁজতে শুরু করলেন। তার সাথে ছিল সামান্য পানি। হুযায়ফার চাচাতো ভাইয়ের শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তার অবস্থা ছিল আশংকাজনক। হুযায়ফা (রা.) তাকে বললেন, তুমি কি পানি পান করবে? সে তার কথার কোন উত্তর দিতে সক্ষম না হয়ে হ্যাঁ সূচক ইঙ্গিত করল। আহত ব্যক্তি হুযায়ফার কাছ থেকে পানি পান করার জন্য হাতে নিতেই তার পাশে এক সৈন্যকে পানি পানি বলে চিত্কার করতে শুনল। পিপাসার্ত ঐ সৈনিকের বুকফাটা আর্তনাদ শুনে তার পূর্বে তাকে পানি পান করানোর জন্য হুযায়ফাকে ইঙ্গিত দিলেন। হুযায়ফা তার নিকট গিয়ে বললেন, আপনি কি পানি পান করতে চান? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি পান করার জন্য পাত্র ওপরে তুলে ধরতেই পানির জন্য অন্য একজন সৈন্যের চিত্কার শুনতে পেলেন। তিনি পানি পান না করে হুযায়ফাকে (রা.) বললেন, তার দিকে দ্রুত ছুটে যাও এবং সে পানি পান করার পর কিছু অবশিষ্ট থাকলে আমাকে দিয়ো। হুযায়ফা আহত সৈন্যটির কাছে গিয়ে দেখলেন সে শহীদ হয়েছে। অতঃপর দ্বিতীয় জনের কাছে এসে দেখলেন সেও শহীদ হয়েছে। অতঃপর চাচাতো ভাইয়ের কাছে ফিরে আসলে দেখেন তিনিও শাহাদতের অমীয় সুধা পান করে জান্নাতবাসী হয়েছেন। পানির পাত্রটি তখনও হুযায়ফার হাতে। এতটুকু পানি। অথচ তা পান করার মত এখন আর কেউ েঁবচে নেই। যাদের পানির প্রয়োজন ছিল তারা আরেক জনের পানির পিপাসা মেটানোর জন্য এতই পাগলপারা ছিলেন যে অবশেষে কেউ সে পানি পান করতে পারেননি। সবারই প্রাণ ছিল ওষ্ঠাগত। অসামান্য ভ্রাতৃত্ব ও মমত্ববোধের কারণে সবাই একে অপরের জন্য পানি ফিরিয়ে দিয়েছেন। কি অপূর্ব এ ভ্রাতৃত্ব! ( আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/৮-১১)
(উইকিপিডিয়া ও জাতীয় পত্রিকা অবলম্বনে )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন