সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ


#মো.আবু রায়হান
উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ।

পটভূমি
হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কারণে জনগণ আমিরুল মু’মিনিনের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করে। এ সময় কেউ কেউ দৃশ্যত হিতাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আলী (রা.)কে প্রস্তাব দেন, শাসনক্ষমতাকে সুসংহত করার জন্য আগে প্রশাসনের লোকদের সহযোগিতা গ্রহণ করুন, তারপর তাদের দুর্নীতির বিচার করবেন। কিন্তু এ প্রস্তাবের জবাবে তিনি বলেন, তোমরা কি আমাকে ক্ষমতার জন্য জালেম হওয়ার প্রস্তাব করছ? রাজনীতির জন্য আমাকে ইসলামের আহকাম বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকতে বলছ? আল্লাহর পবিত্র সত্ত্বার শপথ, আমার দ্বারা কখনোই এটা সম্ভব হবে না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আমি কোনো ধরনের আপোষ করব না।এভাবে হযরত আলী (রা.) রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য কর্মকর্তাদের সরিয়ে যোগ্য ও ঈমানদার ব্যক্তিদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেন। তিনি নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে বলেন, তারা যেন ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ারে পরিণত করার পরিবর্তে একে আমানত হিসেবে গ্রহণ করে এবং জনগণের সেবক হিসেবে নিজেদের যোগ্যতার পরিচয় দেয়। তারা যেন সাদাসিধে জীবন যাপন করে, সমালোচনা গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হয় এবং মোসাহেবদের থেকে দূরে থাকে।তিনি কর্মকর্তাদের আরো বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে হবে এবং কথা বলার পরিবর্তে কাজ করতে হবে। নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং জালেমদের যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করতে হবে। আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, বিচার করার সময় সত্যের পক্ষে রায় দিতে হবে এবং কোনো ধরনের বৈষম্য করা যাবে না। হযরত আলী (রা.) নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আরো বলেন, আপনারা কখনো কারো বিরুদ্ধে আগে যুদ্ধ শুরু করবেন না। আগ্রাসনের শিকার হলে আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা যাবে না। যুদ্ধে জয়ী হলে বন্দিদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে। পলায়নরত ও আহত ব্যক্তিদের ধাওয়া করা যাবে না।তৃতীয় খলিফার শাসনামলে স্বজনপ্রীতির কারণে যেসব গভর্নর ও শাসক ইসলামের এই নীতিমালা থেকে দূরে সরে গিয়েছিল তাদের কাছে হযরত আলী (রা.)-এর এই নির্দেশাবলী ভালো লাগেনি। তারা আমিরুল মুমিনিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব ব্যাপারে নমনীয় হওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু তারা যখন দেখতে পায়, হযরত আলী (রা.) ইসলামের দিকনির্দেশনা থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটবেন না তখন তারা তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আঁটতে থাকে। অদূরদর্শী ঈমানদার ব্যক্তিরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। আলী (রা.)-এর বিরোধিতাকারীদের এই দলে অনেক সাহাবী ছিলেন বলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আমিরুল মুমিনিনের পক্ষে সহজ ছিল না। কিন্তু তারপরও তিনি যুদ্ধ এড়াতে পারেননি। প্রথমেই সংঘটিত হয় জঙ্গে জামাল বা উষ্ট্রের যুদ্ধ। তৃতীয় খলিফা নিহত হওয়ার পর হযরত আলী (রা.)-এর বিরোধিতাকারীরা ওসমান হত্যাকারীদের বিচারের অজুহাতে আমিরুল মুমিনিদের বিরুদ্ধে সেনা সমাবেশ ঘটায়। আলী (রা.) ওসমান (রা.) হত্যার বিচারের জন্য হযরত তালহা, জুবাইর এমনকি হযরত আয়েশা (রা.)-এর কাছ থেকে চাপের মুখে পড়েন। কিন্তু দেশজুড়ে বিদ্রোহ থাকায় সে সময় এ দাবি মানা সম্ভব ছিল না। ফলে গৃহযুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। হযরত জুবাইর ও তালহা আলী (রা.)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে সংঘাত দানা বেঁধে ওঠে। মহানবী (সা.)-এর কনিষ্ঠ পত্নী হযরত আয়েশা (রা.) এ সংঘাতে জুবাইর ও তালহার পক্ষাবলম্বন করেন। হযরত আলী যুদ্ধ এড়াতে আপসের চেষ্টা চালান। দুই পক্ষের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীনে আসার পর হযরত ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।
আকস্মিক যুদ্ধ
এ আপসে আঁতকে ওঠে ওসমান (রা.)-এর হত্যার সঙ্গে জড়িত কুচক্রীরা এদের মধ্যে একজন ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা নামের এক নেতা। আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা আগে একজন ইয়েমেনি ইহুদী ছিলেন। পরে ইসলাম গ্রহণ করেন (তবে সুন্নি ও শিয়ারা তাকে মুনাফিক বলে থাকেন)। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে আমরা শান্তিপ্রস্তাবে তার অনাস্থাজ্ঞাপন সম্পর্কে জানতে পারি। তাবারির গ্রন্থ অনুযায়ী, ইবনে সাবা আলী (রা) এর একনিষ্ঠ ভক্ত হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন এবং তিনি ও তাঁর অনুসারীরাই প্রথম আলীর ঐশ্বরিক গুণ এবং অন্যান্য নতুন বিশ্বাস প্রচলন করেন, যা বর্তমানে শিয়ারা বিশ্বাস করে থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই ইবনে সাবা’র প্রভাব শিয়াগণ অস্বীকার করে থাকেন এবং বলে থাকেন যে আলী (রা) ইবনে সাবা-কে হত্যা করেন যখন তিনি প্রচার করা শুরু করেন যে আলী (রা)-ই হলেন ঈশ্বর। তবে অনেক ইতিহাসবেত্তা উটের যুদ্ধে ইবনে সাবা’র প্রভাব বর্ণনা করেছেন, আবার কেউ কেউ অস্বীকার করেছেন। মোট কথা শিয়া ও সুন্নি উভয় মতবাদেই ইবনে সাবা-কে নিকৃষ্ট মনে করা হয়। রাতের আঁধারে আশতার ও নাখয়ি ইবনে শাওদার নেতৃত্বে উভয় শিবিরে হামলা চালিয়ে আলী (রা.)-এর সমর্থক এবং জুবাইর (রা.) ও তালহা (রা.)-এর সমর্থকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়। তৃতীয় পক্ষ আক্রমন করার ফলে দুই পক্ষের মধ্যেই ভুল বোঝাবুঝি হয়। তাদের আঁধারে আক্রমণ হলে ভোর হতেই দুই দলের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আর এটাই সর্বপ্রথম মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানের অস্ত্র ধারণ। দুই দলের মধ্যে তুমুলভাবে যুদ্ধ চললেও কোন দলই এই যুদ্ধ চায়নি। বরঞ্চ এটি ছিল তৃতীয় পক্ষের ষড়যন্ত্রের ফলে একটি ভুল বোঝাবুঝি।এই যুদ্ধ চলাকালীন সময়েই পুনরায় আলী তালহা ও জুবায়েরকে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান ও যুদ্ধ বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। তারা আলী এর কথা মেনে নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্র ত্যাগ করে ফেরত যাওয়ার পথে উভয়ই হত্যার স্বীকার হন। যুবায়ের কে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে আমর বিন জুরমূয। আর তালহা জনৈক ব্যক্তির তীরের আঘাতে নিহত হয়। (আল-বিদায়াহ ৭/২৪৭)। ফলে যুদ্ধ সমাপ্ত ঘটে না যুদ্ধ পুনরায় আবারো আয়েশার নেতৃত্বে পুরোদমে চলতে থাকে। এই যুদ্ধে আয়েশা উটের উপরে থেকে পরিচালনা করছিলেন বিধায় এই যুদ্ধ উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধে উষ্ট্রের বাহিনী পরাজিত হয় এবং দুঃখজনকভাবে ভ্রাতৃঘাতী এই যুদ্ধে উভয় পক্ষ থেকে ৫ হাজার করে মোট ১০ হাজার মুসলিম এ যুদ্ধে মারা যান। যুদ্ধ শেষে হযরত আলী শাশুড়ি হযরত আয়েশা (রা.)-কে সসম্মানে ভাই মুহাম্মদ বিন আবু বকরের সঙ্গে মদিনায় পাঠিয়ে দেন ।
তাৎপর্য
ইসলামের প্রথম গৃহ যুদ্ধ হিসাবে এই যুদ্ধের তাৎপর্যতা অনেক বেশি। ঐতিহাসিক মুর বলেন, এই যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজারের মত মুসলিম প্রান হারান। এটাই প্রথম যুদ্ধ যেখানে মুসলমান মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে। এর মাধ্যমেই ইসলামের প্রথম গৃহ যুদ্ধ বা ইসলামের প্রথম ফিতনা শুরু হয়। ঐতিহাসিক পি.কে হিট্টি বলেন, এই যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী ফলাফল হিসাবে এই যুদ্ধ মুসলমানদের খিলাফতকে দুর্বল করে দিয়েছিল। এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে উসমান হত্যার বিচারের মধ্য দিয়ে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...