সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সাইয়েদ জামাল উদ্দিন আফগানি



#মো. আবু রায়হান
সাইয়েদ জামাল উদ্দিন আফগানি (১৮৩৮/১৮৩৯ – ৯ মার্চ ১৮৯৭) ছিলেন উনিশ শতকের একজন ইসলামি আদর্শবাদী, ইসলামি আধুনিকতাবাদের অন্যতম জনক ও প্যান ইসলামিক ঐক্যের একজন প্রবক্তা। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হামেদান শহরের অদূরে আসাদাবাদে তাঁর জন্ম হয়েছিল।যদিও তিনি নিজেকে আফগানিস্থানের অধিবাসি বলে দাবি করতেন। তিনি নিজেকে সুন্নি বলে জাহির করতেন কিন্তু তিনি একজন শিয়া । আফগানি ইরানে আসাদাবাদি বলে পরিচিত। দর্শন, ধর্ম, মহাকাশ-বিদ্যা ও ইতিহাসে অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল তাঁর। আরবী, ফার্সি, তুর্কি, ইংরেজি, ফরাসি ও রাশিয়ার কয়েকটি ভাষায়ও পারদর্শী ছিলেন সাইয়্যেদ জামাল।ধর্মতত্ত্বের চেয়ে পাশ্চাত্য চাপের প্রতিক্রিয়ায় মুসলিমদের রাজনৈতিক ঐক্যের দিকেই তার ঝোক বেশি ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
প্যান ইসলামিজম বা সর্ব-ইসলামবাদ হল মুসলিমদের ঐক্যকেন্দ্রিক একটি রাজনৈতিক আন্দোলন।আরবিতে বলা হয়— আল-ওহদাতুল ইসলামিয়া ।সারা পৃথিবীর মুসলিমরা একটি একক রাষ্ট্র বা খেলাফতের অধীনে থাকবে, এটাই হলো মূলকথা । আধুনিক কালে এটাকে একটু ভিন্নমাত্রায় সংজ্ঞায়িত করে বলা হয়— রাষ্ট্র অনেকগুলো হোক, কিন্তু তাদের সবার সম্মিলিত একটি স্বেচ্ছাসেবী ইসলামি যোদ্ধাদল থাকবে, যেনো তারা বিশ্বের সর্বত্র থেকে মুসলিমদের প্রয়োজনে লড়াইয়ে যোগ দিতে পারে।একটি একক ইসলামি রাষ্ট্র তথা খিলাফত বা আন্তর্জাতিক সংগঠক যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের মত ইসলামি আদর্শ অনুযায়ী হয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ঐক্য এই আন্দোলনের মূল। এটি একটি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ।আধুনিক যুগে জামালউদ্দিন আফগানি মুসলিম বিশ্বে ঔপনিবেশিক আধিপত্য প্রতিরোধের জন্য প্যান ইসলামিজমের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। আফগানি সাংবিধানিক সরকারের পক্ষে অবস্থা নেননি। তার চিন্তা ছিল বিদেশি শক্তির আজ্ঞাবাহী শাসকদের উৎখাত করে তাদের স্থলে যোগ্য দেশপ্রেমিক শাসক নিযুক্ত করা। তার জীবনীকারের ভাষ্যমতে তার প্যারিস ভিত্তিক সংবাদপত্রে রাজনৈতিক গণতন্ত্র বা সংসদ সংক্রান্ত কোনো ব্যবস্থার কথা তিনি অনুকূল ধরেননি।জামালউদ্দিন আফগানি ইসলামি আইন ও ধর্মতত্ত্বের চেয়ে রাজনৈতিক দিককেই বেশি আলোকপাত করেছেন। তবে পরবর্তীতে উত্তর ঔপনিবেশিক সময়ে এসব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। নেতৃস্থানীয় ইসলামি নেতা যেমন সাইয়েদ কুতুব, আবুল আলা মওদুদি ও আয়াতুল্লাহ খোমেনি সবাই ঐতিহ্যবাহী শরিয়া আইনে ফেরার মাধ্যমে মুসলিমদের ঐক্যের ব্যাপারে বিশ্বাস করতেন।
জামাল উদ্দীন আফগানির জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে হলে সে সময়কে বোঝা দরকার। তিনি এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেন যখন ভারতীয় উপমহাদেশ ইংরেজদের পদানত হয়ে গেছে, ১৭৫৭ সাল থেকে শুরু করে ১৮৫৭ সালের দিকে। যখন ভারত উপমহাদেশে সিপাহী বিদ্রোহ অর্থাৎ স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি সতের-আঠারো বছরের যুবক। তখনই ভারতের রাজত্ব কেড়ে নেয় ব্রিটেন (ইংরেজরা) দখলদাররা। জামাল উদ্দীন আফগানি সাম্রাজ্যবাদের উত্থানের ঠিক সে সময়ই জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন।ইরানে তার জন্ম হলেও তিনি হিন্দুস্থানে আসেন। তৎকালীনর সময়ে গোটা মুসলিম বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশই ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করত। এর মধ্যে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে বেশি এবং মধ্যভাগে বিক্ষিপ্তভাবে মুসলিমরা বাস করত।পবিত্র হজব্রত পালন করে তিনি সফর করেন ইস্তাম্বুল। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর ফিরে আসেন ইরানে। তারপর কয়েক বছর কাবুলের আমির দোস্ত মুহাম্মাদ খানের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী আফগান শাসক শের আলি খান তাঁকে বহিষ্কার করলে এবার তিনি ইসলামী জাগরণের মিশন নিয়ে যান মিশরে। সেখানে তিনি বেশ সমাদৃত হন এবং প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও নেতা শেখ মুহাম্মাদ আবদুহ ছিলেন তাঁর ছাত্র। (মুহাম্মদ আবদুহ একজন মিশরীয় আইনজ্ঞ, ধর্মীয় পন্ডিত এবং একজন সংস্কারক, যাকে 'ইসলামিক আধুনিকতা'র প্রবর্তক বিবেচনা করা হয়)।এক পর্যায়ে মিশরও ত্যাগ করতে বাধ্য হন প্যান-ইসলামিক আন্দোলনের এই মহান নেতা। এরপর সাইয়্যেদ জামাল সফর করেন প্যারিস, লন্ডন, মিউনিখ, মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গসহ প্রায় পুরো ইউরোপ। মুফতি আবদুহু’ই তার চিন্তাধারাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার চিন্তা করেন। কাজেই তিনি প্রথম মিসরকেন্দ্রিক সাংবাদিকতা শুরু করেন মুফতি আবদুহু’র সহায়তায়।তিনি ফ্রান্সে ‘আল উরওয়াতুল-উছকা’ বা শক্ত রজ্জু নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। ব্রিটেন থেকে প্রকাশ করেছিলেন জিয়া আল খাফেলিন।জামাল উদ্দীন আফগানি তখন তার লেখায় মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রীয় সমস্যাগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি তার যুগকে সামনে রেখেই কথা বলেছেন। যেমন আমরা আমাদের যুগকে সামনে রেখে কথা বলে থাকি। তিনি দুটি বিষয়ের প্রধান অভাববোধ করেন।
ডারউনের মতবাদ খন্ডন-
“ঊনিশ শতকের একজন ইংরেজ জীববিজ্ঞানী। তিনিই প্রথম প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিবর্তনবাদের ধারণা দেন। তিনিই সর্বপ্রথম অনুধাবন করেন যে সকল প্রকার প্রজাতিই কিছু সাধারণ পূর্বপুরুষ হতে উদ্ভূত হয়েছেএবং তার এ পর্যবেক্ষণটি সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন।বিবর্তনের এই নানান শাখা-প্রশাখায় ভাগ হবার বিন্যাসকে তিনি প্রাকৃতিক নির্বাচন হিসাবে অভিহিত করেন। তার জীবদ্দশাতেই বিবর্তনবাদ একটি তত্ত্ব হিসাবে বিজ্ঞানী সমাজ ও অধিকাংশ সাধারণ মানুষের কাছে স্বীকৃতি লাভ করে, তবে ১৯৩০ থেকে ১৯৫০ এর মধ্যে বিকশিত আধুনিক বিবর্তনিক সংশ্লেষের মাধ্যমে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক নির্বাচনের গুরুত্ব পূর্ণরূপে অনুধাবন করা সম্ভব হয়। পরিবর্তিত রূপে ডারউইনের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ছিল জীববিজ্ঞানের একত্রীকরণ তত্ত্ব, যা জীববৈচিত্রের ব্যাখ্যা প্রদান করেন”।তিনি এই বিভ্রান্তি ও মিথ্যা মতবাদ খন্ডন করেন।এসম্পর্কে কলম লিখেন।তার জ্ঞান ও রচনা দ্বারা জড়বাদ ও নাস্তিক্যবাদের মুখোশ উন্মোচন করেন।
সাহিত্যকর্ম-
১।তিনি আফগানিস্থানের ইতিহাসের উপর “আতিমমাতুলবাপন” নামে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস গ্রন্থ লিখেন।
২।রাদ্দে দাহেরিয়ান নামে একটি গ্রন্থ লিখেন যার দ্বারা ডারউইনের মতবাদ খন্ডন করা হয়।এটি প্রথমে ফার্সী ভাষায় রচিত হয় । পরবপর্তীতে আরবি সংস্করণ বের হয় আর রাদদু আলা দাহরিয়ান নামে।
সাইয়্যেদ জামাল মুসলমানদের মুক্তি ও সংস্কারের জন্য নীচের যেসব কর্মসূচি বা কৌশল নিয়েছিলেন তা ছিল খুবই জোরালো ও যৌক্তিক:
এক. ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে সুসমন্বয় এবং এর যে কোনো একটির নামে অন্যটির অপব্যবহার রোধ করা।
দুই. আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত হওয়া, কিন্তু পশ্চিমা সংস্কৃতি ও আদর্শ পরিত্যাগ করা এবং ইসলামী বিশ্বাসের ভিত্তিতেই উন্নত মুসলিম সভ্যতা গড়ে তোলা।
তিন. কুসংস্কার ও অস্পষ্টতামুক্ত খাঁটি ইসলামের ধারায় ফিরে যাওয়া। কুরআনের পাশাপাশি নবী (সা.)’র সুন্নাতকেও প্রাধান্য দেয়া। সৎ কাজের নির্দেশ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধসহ ইসলামের আবশ্যকীয় কর্মসূচিগুলোর ওপর জোর দেয়া এবং দর্শন ও যুক্তি-ভিত্তিক তৌহিদি চেতনার বিস্তার। ইত্যাদি।
চার. মুসলমানদেরকে ইসলামী আদর্শের খাঁটি অনুসারী হিসেবে গড়ে তুলে মুসলিম বিশ্বের স্বৈরশাসক এবং বিজাতীয় উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম।
পাঁচ. অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রসহ উপনিবেশবাদের সব দিকের বিরুদ্ধে লড়াই। বিশেষ করে ব্রিটেন যে ক্রুসেডের চেতনা নিয়ে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে শত্রুতা অব্যাহত রেখেছে তা তিনি নিজ লেখনীতে তুলে ধরেছেন। (বায়তুল মোকাদ্দাস দখলে ইসরাইলকে সহায়তার মাধ্যমে ব্রিটেন তা পরবর্তীকালে প্রমাণ করেছে।) ব্রিটিশরা মুসলমানদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ, গোত্রবাদ, ভৌগলিক বা ভাষাগত ভেদাভেদ ও মাজহাবি দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র যে অব্যাহত রেখেছে তাও তিনি উল্লেখ করেছিলেন তাঁর দূরদর্শী বক্তব্য ও লেখায়।
ছয়. মুসলমানদের মুক্তির জন্য বৃহত্তর ঐক্য ও জিহাদের অপরিহার্যতা তুলে ধরা। ব্রিটেনকে অপরাজেয় না ভাবা, বরং হতাশা ভুলে গিয়ে মুসলমানরা যে আবারো সব কিছুতে শ্রেষ্ঠ হতে পারবে সে আত্ম-বিশ্বাস পোষণ করা।
তিনি বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, প্রথম সমস্যা ঐক্য আর দ্বিতীয় সমস্যা হলো নেতৃত্ব দেয়ার লোক না থাকার কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে পরাধীনতার শৃঙ্খল পরানো হয়েছে। এছাড়াও তিনি শিক্ষার জ্ঞানের কথা বলেছেন, ভ্রাতৃত্বের ও বীরত্বের কথা বলেছেন।জামাল উদ্দীন আফগানির এসব কথা আজকের মুসলিম জাতির জন্যও প্রযোজ্য।
৯ই মার্চ ১৮৯৭ সালে ৫৮-৫৯ বছর বয়সে বর্তমান তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মারা যান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...