সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাল্টিক রাষ্ট্রে ইসলাম ও মুসলমান


মো আবু রায়হানঃবাল্টিক রাষ্ট্র বলতে উত্তর ইউরোপে বাল্টিক সাগরের তীরে অবস্থিত রাষ্ট্রসমূহকে বুঝায়।তবে ফিনল্যান্ড থেকে পোল্যান্ডের মাঝের তিনটি দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্টিক প্রজাতন্ত্র বলে স্বীকৃত।শব্দটি সাংস্কৃতিক অঞ্চল, জাতীয় পরিচয় বা ভাষার প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয় না, কারণ লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়ায় বেশিরভাগ লোক বাল্টিক মানুষ হলেও এস্তোনিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ফিনিশ। তিনটি দেশ একটি সরকারী ইউনিয়ন গঠন করে না, তবে আন্তঃসরকার এবং সংসদীয় সহযোগিতায় জড়িত। তিন দেশের মধ্যে সহযোগিতার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং পরিবহন।তিনটি দেশই ন্যাটো, ইউরো জোন, ওইসিডি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।২০২০-২০২১ সালে এস্তোনিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের একটি স্থায়ী সদস্য হয়। তিনটিই বিশ্বব্যাংক উচ্চ-আয়ের অর্থনীতি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ এবং একটি খুব উচ্চ মানব উন্নয়ন সূচক বজায় রাখে। জনসংখ্যা ৬.১৩৫ মিলিয়ন।

লাটভিয়া উত্তর-পূর্ব ইউরোপে বাল্টিক সাগরের পূর্ব তীরে লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়ার মধ্যস্থলে অবস্থিত রাষ্ট্র।১৩শ শতক থেকে লাটভিয়া ক্রমান্বয়ে জার্মানি, পোল্যান্ড ও রুশদের দ্বারা শাসিত হয়। ১৯১৮ সালে প্রতিবেশী এস্তোনিয়া ও লিথুয়ানিয়ার সাথে এটিও স্বাধীনতা লাভ করে। রাষ্ট্র তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র নামে পরিচিত লাভ করে। ১৯৪০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন বলপূর্বক বাল্টিক রাষ্ট্রগুলিকে ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করে।১৯৯১ সালে লাটভিয়া পুনরায় স্বাধীনতা লাভ করে এবং একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করে। রাজধানীর নাম রিগা।ছোট দেশটিতে ২০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল রয়েছে। দেশটি ২৬টি জেলায় বিভক্ত। রয়েছে সাতটি শহর।দেশটি বেশ সফলভাবে সোভিয়েত আমলের কেন্দ্রশাসিত অর্থনীতি থেকে পশ্চিমা বাজারভিত্তিক অর্থনীতিতে উত্তরণ ঘটায়। লাটভিয়ার এই সাফল্য ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেশটির পূর্ণ সদস্যপদ প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখে।লাটভীয় ভাষা লাটভিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা; ১৯৯৯ সালে আইন করে একে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তবে সংখ্যালঘু ভাষাভাষীদের তাদের নিজস্ব ভাষা ও স্বকীয়তা রক্ষার অধিকার আছে। লাটভীয় সরকার আটটি ভিন্ন ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে।
লাটভিয়ার আয়তন ৬৪ হাজার ৫ শত ৮৯ বর্গকিলোমিটার।দেশটির জনসংখ্যা ২৩ লাখ। লাটভিয়ায় প্রায় ১০০০ মুসলিম রয়েছে। ২০০৯ সালে লাটভিয়ায় মোট মুসলিম জনসংখ্যা পিও ফোরামের দ্বারা অনুমান করা হয়েছিল প্রায় ২,০০০ জন ।কার্যত লাটভিয়ার সমস্ত মুসলমানই সুন্নি, তবে আহমাদীদেরও সক্রিয় উপস্থিতি আছে।
আঠারো শতকের শেষ দিকে লাটভিয়ায় মুসলমানদের যাতায়াত শুরু হয়। লাটভিয়ার মুসলমানদের বেশিরভাগই তাতার ও তুর্কি বংশোদ্ভুত।মুসলিম গোষ্ঠীগুলি সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব সক্রিয়, এবং সুন্নি (হানফি এবং সালাফি) এবং শিয়া নিয়ে গঠিত যারা কোনও বিরোধ ছাড়াই একসাথে কাজ করে। দেশে ১৫ টি মুসলিম এনজিও রয়েছে।সংস্থাগুলি তাদের কার্যক্রম, সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং সহায়তামূলক কাজের জন্য বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে। এই এনজিওগুলি দেশের দুটি মুসলিম কবরস্থানের পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও পরিচালনা করে। এর বাইরে শপিংমলের সামনে পরিচালিত বইয়ের উপস্থাপনা এবং বিতরণ কার্যক্রমগুলিও এই এনজিওগুলির রুটিন কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। বেসরকারী সংস্থাগুলির এধরণের কাজগুলি অমুসলিম লাটভিয়ানরাও উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়। ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি এবং নির্বাচিত মুফতি জুফার জায়নুলিন, সাংবাদিক রবার্ট আহমেট ক্লেমোভিয় (পূর্বে ক্যাথলিক) এবং ইমাম ওলেগ ইমরান পেট্রোভ (পূর্বে অর্থোডক্স) দেশের প্রায় সবাই জানেন। লাত্ভিয়ান টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদপত্রগুলি তাদের প্রায়শই কভারেজ দেয়, যখন তাদের উপস্থাপনা, ব্যাখ্যা এবং ধর্মান্তরকরণের ক্রিয়াকলাপ অনুসরণ করা হয়। লাটভিয়ায় মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগির জন্য রাজধানী রিগায় একটি মাত্র মসজিদ রয়েছে। মদিনা মসজিদ নামের এই কমপ্লেক্সকে ঘিরেই হাজারখানেক মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়াদি সম্পন্ন হয়। পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে লাটভিয়ানরা সাধারণত রঙিন জমকালো পোশাক পরিধান করেন।
লিথুয়ানিয়া উত্তর-পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। উত্তরের লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ার সাথে লিথুয়ানিয়াও একটি বাল্টিক রাষ্ট্র এবং তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্রের মধ্যে বৃহত্তম। ভিল্‌নিয়ুস দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী এবং এটি বেলারুশের সাথে সীমান্তে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত।লিথুয়ালিনয়া বাল্টিক সাগরের পূর্ব উপকূলে সুইডেনের বিপরীত তীরে অবস্থিত। এর উত্তর সীমান্তে লাটভিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণে বেলারুশ, দক্ষিণ-পশ্চিমে পোল্যান্ড ও কালিনিনগ্রাদ ওবলাস্ত নামক রুশ ছিটমহল।লিথুয়ানিয়া একসময় অনেক বড় একটি দেশ ছিল। বর্তমান বেলারুশ ও ইউক্রেনের অধিকাংশ এলাকা এর অধীনে ছিল।১৯১৮ সালে এটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময় লিথুয়ানিয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলে আসে। পরবর্তী সময়ে তারা জার্মানির কাছে এর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। একপর্যায়ে জার্মান বাহিনীও লিথুয়ানিয়া ছেড়ে যায়। আবার এটি সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯৯০ সালের ১১ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় লিথুয়ানিয়া। তারাই প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসা প্রজাতন্ত্র।আয়তন ৬৩ হাজার ৩০০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ২৮ লাখ ২১ হাজার ৬৭৪ জন। লিথুয়ানিয়ায় ৭০০০ মুসলিম রয়েছে।লিথুয়ানীয় ৮৬.৭%, পোলেস ৫.৬%, রুশ ৪.৮%, বেলারুশীয় ১.৩%, ইহুদি .১% অন্যান্য .৫%।
জনসংখ্যার বেশির ভাগই জাতিগতভাবে লিথুয়ানীয় ও রোমান ক্যাথলিক গির্জার সদস্য।লিথুয়ানিয়ায় মুসলমানদের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ৬৩০ বছর আগে ক্রিমিয়ান খানদের সহায়তার জন্য প্রেরণ করা একদল সেনা ও গভর্নরের মধ্য দিয়ে। যুবরাজ ভাইটাউটাস ক্রিমিয়ান তুর্কিদের জমির আদেশ দিয়েছিলেন এবং তাদের প্রশংসা করেছিলেন যারা ইউরোপ থেকে আগত শত্রুদের বিরুদ্ধে দেশকে সুরক্ষা দিয়েছিল এবং সেই জমিতে স্থায়ী বন্দোবস্ত সুরক্ষিত করেছিল। তাতাররা বহু শতাব্দী ধরে লিথুয়ানিয়ায় বাস করেছে এবং দেশটির সেবা করার সময় স্থানীয় মানুষের সাথে সামাজিকীকরণ করেছে। লিথুয়ানিয়ায় আজও কয়েকটি তাতার গ্রাম রয়েছে। লিথুয়ানিয়ার জনগণ এবং এর কর্তৃপক্ষ সর্বদা তাতারদের প্রতি সহানুভূতি ছিল এবং লিথুয়ানিয়া তাদের ঐতিহ্য এবং জীবনযাত্রায় হস্তক্ষেপ করেনি।তাদের বেশিরভাগ হানাফি সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত স্থানীয় তাতার।
এস্তোনিয়া উত্তর-পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। সরকারিভাবে এর নাম এস্তোনিয়া প্রজাতন্ত্র। উত্তরে ফিনল্যান্ড উপসাগর, পশ্চিমে বাল্টিক সাগর, দক্ষিণে লাটভিয়া এবং পূর্বে পাইপাস হ্রদ ও রাশিয়া। এস্তোনিয়ায় টিউটনিক, ড্যানিশ ও সুইডিশ উপনিবেশ ছিল। ১৯১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটি রুশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবারও সোভিয়েত ইউনিয়ন দেশটি দখল করে। এক বছর পর জার্মানির হাতে চলে যায়। ১৯৪৪ সালে আবারও সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর স্বাধীনতা পুনরুদ্ধাদের জন্য দীর্ঘ চেষ্টা করতে হয় দেশটিকে। ১৯৯১ সালের ২০ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে তারা। দেশটি ন্যাটোর সদস্য। আয়তন ৪৫ হাজার ৩৩৯ বর্গকিলোমিটার।জনসংখ্যা ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৪৪। জাতিগোষ্ঠীর এস্তোনিয়ানস্ক ৬৮.৮%, রুশ ২৫.১%, ইউক্রেনীয় ১.৮%, বেলারুশীয় .৯, ফিন .৬%, লাটভীয় .২%, ইহুদি .২%, অন্যান্য ২.৪%।এস্তোনিয়াতে ইউরোপের ক্ষুদ্রতম একটি মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে।২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, এস্তোনিয়ায় মুসলমানের সংখ্যা ১,৫০৮ জন।
জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ নিজেকে এস্তোনিয়ার ২০১২ সালের আদমশুমারিতে নাস্তিক হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এই সরকারী হারটি বিশ্বের নাস্তিকদের সর্বোচ্চ হার।এস্তোনিয়ার লোকেরা, যেখানে পৌত্তলিকতা প্রচলিত ছিল, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ক্রুসেডের সংস্পর্শে আসে। ক্যাথলিক টিউটোনিক নাইটদের দ্বারা চাপানো চরম সহিংসতা খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য স্মরণ করা হয়। জার্মানি, ডেনমার্ক এবং সুইডেনের নাইটরা, ক্যাথলিক খ্রিস্টান তারা জোর করে এই ভূখণ্ডে নিয়ে এসেছিল এবং এর প্রভাব স্কুলগুলিতে ইতিহাসের ক্লাসে শেখানো হয়। জারজিস্ট রাশিয়ার অধীনে অর্থোডক্স গির্জার দ্বারা আরোপিত ভারী কর, স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অক্ষমতা এবং গণজাগরণের সহিংস নিপীড়নের কারণে এস্তোনিয়ানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। ১৯৪০-১৯৯৯ সালের মধ্যে সোভিয়েত দখলের সময় একটি সম্পূর্ণ নাস্তিকতাবাদ বাস্তবায়িত হয়েছিল এবং মানুষ সকল ধরণের ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে দূরে ছিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...