সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গায়ানায় ইসলাম ও মুসলমানদের অবস্থা



মো.আবু রায়হানঃ গায়ানা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তর উপকূলে অবস্থিত একটি দেশ। দেশটির পূর্ণ সরকারি নাম গায়ানা সহযোগিতামূলক প্রজাতন্ত্র (Cooperative Republic of Guyana)। গায়ানা একটি আদিবাসী আমেরিকান শব্দ, যার অর্থ পানির দেশ। নামটা ব্রিটিশ গায়ানা হলেও এটা একটি স্বাধীন দেশ। এর অল্প দুরত্বের মধ্যেই আরেকটি গায়ানা রয়েছে বলে এটা ব্রিটিশ গায়ানা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অন্যটি ফ্রেঞ্চ গায়ানা। গায়ানা বিষুবরেখার উত্তরে, আটলান্টীক মহাসাগরের উপকূলে ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এর পশ্চিমে ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ব্রাজিল এবং পূর্বে সুরিনাম। পূর্ব ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলির মত গায়ানাতেও স্পেনীয় ও পর্তুগিজেরা বসতি স্থাপন করেনি। গায়ানা প্রথমে একটি ওলন্দাজ উপনিবেশ ছিল। পরবর্তীতে ১৮শ শতকের শেষ দিকে এটি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে আসেএবং তখন এর নাম ছিল ব্রিটিশ গায়ানা। ২৬ মে ১৯৬৬ সালে ১৫০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন শেষে ব্রিটিশ গায়ানা স্বাধীনতা লাভ করে এবং গায়ানা নাম নেয় ।গায়ানা ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে কমনওয়েলথের সদস্য অবশিষ্ট একটি প্রজাতন্ত্র হয়ে ওঠে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র ইংরেজি ভাষী রাষ্ট্র। গায়ানার রাজধানীর নাম জর্জটাউন।

আয়তন দুই লাখ ১৪ হাজার ৯৬৯ বর্গ কিলোমিটার । গায়ানার জনসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ৮৪ হাজার।৬৫ শতাংশের বেশি বিভিন্ন মতবাদের খ্রিষ্টান, হিন্দু ২৪.৮ শতাংশ, মুসলমান ৬.৮ শতাংশ, কিছু ইহুদিও রয়েছে। জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫০ হাজার ৬০০ জন মুসলমান।গায়ানায় ইসলাম খ্রিস্টান ও হিন্দু ধর্মের পরে যথাক্রমে তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম। ২০০২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, দেশের ৭.৩% মুসলিম।তবে, ২০১০ সালের পিউ রিসার্চ সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে যে দেশের ৬.৪% মুসলিম।২০১২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, জনসংখ্যার প্রায় ৬.৮ শতাংশ মুসলমান(মোট ৫০,৫৭২ জন মুসলমান)।জনসংখ্যার ৩৯ .৮ শতাংশ ভারত ও পাকিস্তানের বংশোদ্ভত। এদের পূর্ব ভারতীয় বলা হয়ে থাকে।ইন্ডিয়ানদের মধ্যে হিন্দু ৬৫ শতাংশ, মুসলমান ২০ শতাংশ, খ্রিষ্টান ১৫ শতাংশ।Islam was first introduced to Guyana via slaves from West Africa, but was suppressed on plantations. Thus, the religion gained a foothold after the mid 19th century when indentured servants and slaves from South Asia were brought to the country. আফ্রিকান দাসদের মধ্যে যাদের গায়ানাতে আনা হয়েছিল এদের মধ্যেও কিছু মুসলমান ছিল। পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ম্যানডিঙ্গো ও ফুলানি মুসলমানদের এখানে আনা হয়েছিল আখ চাষের জন্য। ধারণা করা হয় যে ১৭৬৩ সালে গায়ানিজদের অধিকার আদায় আন্দোলনের নেতা ‘কুফি’ ছিলেন মুসলমান। তার নামটার মধ্যে আরবি আরবি ভাব আছে। তখনকার সময়ে তিনি ছিলেন গায়ানার জাতীয় নেতা। ওই সময় গায়ানা ছিল ডাচদের (দ্য ন্যাদারল্যান্ডস) দখলে। গায়ানায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে কুফি পরিচালিত আন্দোলনের যে দাবি ও শর্ত তা আরবিতে লেখা ছিল। এ দলিলটি ডাচদের কাছে ছিল। এতে আরো প্রমাণ করে যে কুফি নিজেও মুসলমান ছিলেন এবং তার আন্দোলনেও মুসলমানরা ছিলেন।কুফির আন্দোলন দমানোর জন্য ডাচরা নিষ্ঠুর দমননীতি পরিচালনা করে বলে আধুনিক ইতিহাসেই লেখা রয়েছে। ওই দমনের পর গায়ানার মুসলিম জনসংখ্যা কমে আসে এবং আন্দোলনও স্তিমিত হয়ে আসে। ফল স্বরূপ ইসলামও মানুষের মন থেকে মুছে যায় অথবা মুছিয়ে দেয়া হয় জোর পূর্বক। এরপর চলে যায় দীর্ঘদিন। গায়ানার মালিকানা ডাচদের থেকে ব্রিটিশদের কাছে হস্তান্তরিত হয়।

Mandingo and Fulani Muslims were brought from West Africa to work as slaves in Guyana's sugar plantations. However, the oppressive conditions of slavery in the colony led the practice of Islam to essentially disappear until 1838 when 240,000 South Asians were brought from modern-day India and Pakistan.গায়ানায় মুসলমানদের দ্বিতীয় পর্যায়ের আগমন ঘটে যখন ১৮৩৮ সালে ব্রিটেন এখানে তাদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে। এসময় ভারত থেকে ব্রিটিশরা এখানে বিভিন্ন কাজে লোক সরবরাহ করার জন্য ভারতীয়দের নিয়ে আসে। পরবর্তী ৮০ বছরে ভারত থেকে প্রায় দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার লোকের আগমন ঘটে। এতে হিন্দুদের সংখ্যা বেশি ছিল। যাদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ ছিল হিন্দু এবং ১৬ শতাংশ উর্দু ভাষী ও শিক্ষিত কিছু মুসলমানও ছিল ।এই দলে । তাছাড়া এদের সাথে ভারত ও পাকিস্তানের মুসলমানদের যোগাযোগ কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি।কুফির আন্দোলন শেষ হয়ে গেলেও গায়ানার মুসলিমদের এখনো ফুলা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ফুলার মধ্যেই পশ্চিম আফ্রিকান মুসলমানদের ইতিহাস স্মরণ করে থাকে গায়ানিজ মুসলমানরা। মিরশিয়া এলিদার গবেষণা গ্রন্থে এ সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে- ‘১৮৩৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে পূর্ব ভারতীয় দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষকে গায়ানায় আনা হয়। এদের বেশির ভাগই উর্দুভাষী ছিল। এই উর্দু ভাষীদের বেশির ভাগই ছিল গ্রামে বাস করা মানুষ এবং অশিক্ষিত। এদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ ছিলেন হিন্দু এবং অবশিষ্টরা মুসলমান। মুসলমানদের প্রায় সকলেই ছিলেন সুন্নি। এ দলে কিছু শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমান এবং এমনকি কিছু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকও মিশে ছিল। আহমদিয়ানদের (কাদিয়ানি) সংখ্যা উল্লেখ করার মতো ছিল না, এখনো নেই কিন্তু অর্থ-বিত্তে প্রভাবশালী। গায়ানা ১৯৬৬ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরে, দেশটি মধ্যপ্রাচ্য এবং বৃহত্তর মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অংশের সাথে তার সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে। স্বাধীনতার পরে গায়ানা মিশর, ইরাক এবং লিবিয়ার মতো আরব দেশগুলির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে এইসব দেশ রাজধানী জর্জটাউনের দূতাবাস খোলে। কিছু মুসলিম যুবক ইসলামী ধর্মতত্ত্ব এবং আরবি ভাষা অধ্যয়ন করতে সৌদি আরব, মিশর এবং লিবিয়ায় গিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে গায়ানার রাষ্ট্রপতি চেদি জাগান সিরিয়া, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং লেবানন সফর করে মধ্যপ্রাচ্যের দূত নিযুক্ত হন। একই বছরে, গায়ানা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থায় (ওআইসি) একটি স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে গায়ানা ওআইসির ৫৬তম পূর্ণসদস্য দেশ হয়ে ওঠে।

গায়ানার কুইন্স টাউন জামে মসজিদ হলো গায়ানার অন্যতম পুরাতন একটি মসজিদ। আফগানরা সে মসজিদ নির্মাণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাও উল্লেখ রয়েছে রেকর্ডে। বর্তমানে গায়ানায় প্রায় ১৫০টির মত মসজিদের অবস্থান রয়েছে।রেকর্ডে খান নামের একজন কুরআনের হাফিজও ছিলেন বলে উল্লেখ আছে। মুসলমানদের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের রীতি-নীতি পুরোটা এখনো বিদ্যমান। যেমন সেখানে ঈদে এ মিলাদুন্নবী পালন হয়। এছাড়া ফাতিহা পাঠ করা, কাসিদা গাওয়া, দোয়া করা ইত্যাদি ঐতিহ্য উর্দুভাষী মুসলমানদের মধ্যে রয়েছে। এসব অভ্যাস ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বাস করেন এদের মধ্যে এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
The Central Islamic Organization of Guyana (CIOG) গায়ানার সবচেয়ে প্রাচীন ইসলামিক সংগঠন। তারা ত্রাণ কাজে এবং এতিমদের সহযোগিতায় জড়িত।গায়ানার সবচেয়ে বড় ইসলামী সংগঠনের নাম গায়ানা ইউনাইটেড সদর ইসলামিক আঞ্জুমান। গায়ানার দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের দ্বন্দ্ব আছে। যেমন ভারতে রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এ দুই জাতির মধ্যে এখনো মাঝে মাঝে ঝগড়া ও মারামারি লেগে যায় বলে গবেষণা পত্র এবং সংবাদ মাধ্যম বলছে। তবে নিজেদের মধ্যে একটি অলিখিত ও অনুক্ত চুক্তি রয়েছে। তাহলো- একে অপরের সদস্যদের ধর্মান্তরিত করা যাবে না। তবে গ্রামের দিকে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে বেশ মেলা-মেশা রয়েছে। তারা একে অপরের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকে। আদানিং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগগুলোতে গায়ানিজরা পড়তে আসছে এবং কুরআন ও হাদিসের বিশুদ্ধ জ্ঞান নিয়ে অনেকেই গায়ানায় ফিরে গিয়ে সেগুলো প্রয়োগ করা এবং অনুশীলন করার কারণেও কিছু দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে। According to Guyanese-American professor Raymond Chickrie, Hindus and Muslims in Guyana have always had "a cordial relationship among themselves. It would seem that these two groups had come to a mutual understanding of respecting each other's space while culturally and even linguistically identifying with each other."
১৯৭০ সাল পর্যন্ত মুসলমান ও হিন্দুদের পবিত্রতম দিনগুলোকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এরপর থেকে মুসলমান ও হিন্দুদের পবিত্রতম দিনগুলোতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমানদের ছুটির মধ্যে রয়েছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার উৎসব, নবি মুহাম্মদ (সা) এর জন্মদিনের ছুটিও দেয়া হয়। হিন্দুদের হলি, দিপাবলিতেও সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গায়ানার প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দলেই মুসলমানদের প্রাধান্য রয়েছে। এই দুইটা দলেই তারা সক্রিয়। এর একটা পিপুলস প্রগ্রেসিভ পার্টি (পিপিপি) এবং আরেকটি দ্য পিপুলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)। শুধু মুসলমান নয় হিন্দুরাও স্বাধীনতার আগে ভারত ও পাকিস্তানের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রাজনৈতিক শিকড়টাও দুই দেশে প্রোথিত ছিল। ১৯৬০ সাল পর্যন্ত মুসলমানদের নেতৃত্বে ভারত-পাকিস্তানীরাই ছিলেন। এদের বেশির ভাগই ভারত-পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই লেখাপড়া শিখে গেছেন। দেশটির দারিদ্র্য মুসলমাদের মধ্যেও প্রচুর রয়েছে। আগে মুসলমানরা আরবি, উর্দুতে লিখতে, পড়তে ও কথা বলতে পারলেও এখন অধিকাংশই পারেন না। কারণ দেশটির সরকারি ভাষা এখন ইংরেজি। কিছু মুসলমান নিজেদের চেষ্টায় পূর্ব পুরুষের ভাষা উর্দু ও কুরআনের ভাষা আরবি শিখে নিচ্ছেন। একটা সময় ধনী পরিবারের সন্তানরা লেখাপড়া শিখেতে আরব দেশগুলোকে প্রাধান্য দিতেন ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে। এখন অবশ্য এ প্রবণতা নেই আরব দেশগুলোতে যুদ্ধ লেগে যাওয়ার কারণে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...