আমেরিকায় ইসলামের আগমন ও বর্তমান অবস্থা
মো.আবু রায়হানঃ আমেরিকা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র।আমেরিকার সরকারি নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা ( United States of America )সংক্ষেপে ইউ.এস ।প্রচলিত নামগুলি হল the U.S., the USA, ও America. মার্কিন নাগরিকেরা বাংলা ভাষায় মার্কিনী নামে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সংক্রান্ত বিশেষণ হিসেবে মার্কিন শব্দটি ব্যবহার করা ।১৫০৭ সালে জার্মান মানচিত্রকর মার্টিন ওয়াল্ডসিম্যুলার বিশ্বের একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন। এই মানচিত্রে তিনি ইতালীয় আবিষ্কারক ও মানচিত্রকর আমেরিগো ভেসপুচির নামানুসারে পশ্চিম গোলার্ধের নামকরণ করেন আমেরিকা। ১৪৯২ সালে ইতালীয় নাবিক কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেন। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নামানুসারে কলম্বিয়া নামটি এককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হত।ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া নামের মধ্যে এই নামটির আজও অস্তিত্ব রয়েছে।আমেরিকা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত।দেশটির পশ্চিম দিকে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগর এবং পূর্ব দিকে রয়েছে আটলান্টিক মহাসাগর। উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত কানাডার সাথে এবং দক্ষিনাঞ্চলে রয়েছে মেক্সিকো।ইহা উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত ৫০ রাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্র।বহুদেশ থেকে বিভিন্ন জাতির মানুষের অভিবাসনের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজ একটি বহুসংস্কৃতির দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। প্রাথমিক পর্যায়ে আটলান্টিক মহাসাগর তীরস্থ উত্তর আমেরিকার ১৩টি ব্রিটিশ উপনিবেশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই এই উপনিবেশগুলি একটি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করে।এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে উপনিবেশগুলি তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ঘোষণা করে এবং একটি সমবায় সংঘের প্রতিষ্ঠা করে। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বিদ্রোহী রাজ্যগুলি গ্রেট ব্রিটেনকে পরাস্ত করে। এই যুদ্ধ ছিল ঔপনিবেশিকতার ইতিহাসে প্রথম সফল ঔপনিবেশিক স্বাধীনতা যুদ্ধ।১৭৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ক্যালিফোর্নিয়া কনভেনশন বর্তমান মার্কিন সংবিধানটি গ্রহণ করে। পরের বছর এই সংবিধান সাক্ষরিত হলে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার সহ একক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ১৭৯১ সালে সাক্ষরিত এবং দশটি সংবিধান সংশোধনী সম্বলিত বিল অফ রাইটস একাধিক মৌলিক নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করে। ১৮৭০-এর দশকেই মার্কিন অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির শিরোপা পায়। স্পেন-মার্কিন যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সামরিক শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা দান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দেশ প্রথম পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। ঠান্ডা যুদ্ধের শেষভাগে এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের দুই-পঞ্চমাংশ খরচ করে এই দেশ। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিধর রাষ্ট্র। আমেরিকা বিশ্বের ২য় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। প্রতি ৪ বছর পরপর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান।আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট । নিম্নকক্ষের নাম হাউজ অভ রিপ্রেজেন্টেটিভ্স এবং এর সদস্যসংখ্যা ৪৩৫। উচ্চকক্ষের নাম সিনেট এবং এর সদস্যসংখ্যা ১০০। আমেরিকার রাজধানীর নাম ওয়াশিংটন ডিসি এবং সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্ক। দেশটির প্রধান ভাষা ইংরেজি। ১৯ শতক থেকেই আমেরিকায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক অর্থনীতি রয়েছে যাতে আছে বিশেষত কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং চিকিৎসা সেবা, মহাকাশ, এবং সামরিক সরঞ্জাম ইত্যাদি।মাইক্রোসফট, আইবিএম, গুগল,অ্যাপল, ফেসবুক, টুইটার, অ্যামাজন, ইন্টেল, টেসলা ইত্যাদি বড় বড় টেক জায়ান্টরা আমেরিকার অধীনেই। যার কেন্দ্র হল সিলিকন ভ্যালি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তন প্রায় ৯৮.৩ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। সামগ্রিক আয়তনের হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় আবার স্থলভূমির আয়তন ও জনসংখ্যার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৩১৮,৮৮১,৯৯২ জন। অপরদিকে বিশ্বের ২০০টি দেশে জন্মগ্রহণকারী ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ অভিবাসী হিসেবে বাস করছে আমেরিকায়, যা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।আমেরিকার জনসংখ্যার প্রায় ৭০.৬% ই খ্রিস্টান।খ্রিস্টানদের পরে জনসংখ্যার দিক দিয়ে আমেরিকার ২য় সর্বোচ্চ ধর্মালম্বী হল ইহুদী ২.১%। বাকিদের মধ্যে আছে ইসলাম ধর্ম ০.৮%, হিন্দু ধর্ম ০.৮%, বৌদ্ধধর্ম ০.৭% এবং অন্যান্য। ২০১৬ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায় প্রায় ১৯% আমেরিকান কোন ধর্মেই বিশ্বাস করে না। আমেরিকায়ও ইসলাম দ্রুত বিকাশমান ধর্ম। ইসলাম ধর্মের জনপ্রিয়তা ও দ্রুত বিকাশে সুদিনের স্বপ্ন দেখছে আমেরিকার মুসলিম সমাজ। বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.১ শতাংশ তথা ৩৫ লাখ মুসলিম। ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর হিসাবে তারা তৃতীয় বৃহত্তম। পিউ রিসার্চ সেন্টার মুসলিম সম্প্রদায়কে তিনটি উপ-বিভাগে ভাগ করেছে, যথা: সুন্নি ৬৫%, শিয়া ১১% এবং অন্যান্য মুসলমান ২৪%।গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ তাদের এক জরিপের ফলাফলে জানিয়েছে, ২০০৭ সালে আমেরিকায় মুসলমানের সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ৫০ হাজার। ২০১১ সালে যা বেড়ে হয় ২৭ লাখ ৫০ হাজার।২০১৭ সালের হিসাব মতে আমেরিকায় মুসলমানের সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১.১ শতাংশ মুসলমান। অন্য ধর্মাবলম্বীরা অধিক হারে ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ায় ২০৪০ সালের মধ্যেই ইহুদিদের টপকে আমেরিকার দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হবে ইসলাম। আর ২০৫০ সালে আমেরিকায় মুসলমানের আনুমানিক সংখ্যা দাঁড়াবে অন্তত ৮১ লাখ। বর্তমানের চেয়ে যা দ্বিগুণেরও বেশি। তখন মোট জনসংখ্যার ২.১ শতাংশ থাকবে মুসলমান।সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০৪০ সালে মুসলিমরা হবে আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠী। বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস মুসলিমদের বেশির ভাগ অভিবাসী। তাদের ১৬ শতাংশই আরব। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর) নামে ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি অ্যাডভোকেসি সংগঠন দাবি করে, আমেরিকায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ মুসলিম বসবাস করছেন। প্রকৃতপক্ষে প্রতি বছর গড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসলাম ধর্মের মহানুভবতা, সহনশীলতা ও শৃঙ্খলাপরায়নতা খ্রীষ্টান ও ইহুদিদের ইসলাম ধর্মের প্রতি বেশি করে আকৃষ্ট করছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। আমেরিকান মুসলমানরা বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসে । ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিসির করা ২০১৭ সমীক্ষায় দেখা গেছে, “আমেরিকান মুসলমানরা একমাত্র বিশ্বাসি সম্প্রদায়, যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি নেই, ২৫ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ২৪ শতাংশ সাদা, ১৮ শতাংশ পূর্ব এশীয়, ১৮ শতাংশ আরব, ৭ শতাংশ মিশ্র জাতি এবং ৫ শতাংশ রয়েছে হিস্পানিক। এছাড়াও, ৫০ শতাংশ মুসলমান আদিবাসী এবং অন্য ৫০ শতাংশ বিদেশী এবং ৮৬ শতাংশ নাগরিক। অনেক জন্মগত আমেরিকান মুসলিম হলেন আফ্রিকান আমেরিকান যারা মোট মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ। তাদের অনেকেই গত ৭০ বছর ধরে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বড় শহরগুলিতে ইসলামে রূপান্তর বছরের পর বছর ধরে এর বিকাশের পাশাপাশি কৃষ্ণ সংস্কৃতি এবং হিপ-হপ সংগীতে ও অবদান রেখেছে।
দাস হিসেবে আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে মুসলিমদের আমেরিকায় ধরে আনা হয় চাষাবাদ করার জন্য। বিশেষত স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান হলে বহু মুসলমান দাসত্ববরণে বাধ্য হয় এবং তাদের আমেরিকায় নির্বাসন দেওয়া হয়। তাদের হার ছিল আগত দাসদের প্রায় ২০ শতাংশ। রিচার্ড ব্র্যান্ট টার্নারের গবেষণা অনুযায়ী, সে সময়ে মুসলিম দাসের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ হাজার। তাদের মধ্যে অনেকেই আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন। তাদের নাম, পোশাক, আচার ও খাদ্যাভ্যাস মুসলিমদের আলাদা পরিচয় তুলে ধরেছিল।আমেরিকায় মুসলিম ইতিহাস জুড়ে রয়েছে দুটি বেদনাদায়ক বিষয়। আফ্রিকান মুসলিমদের দাসত্বে বাধ্য করা এবং মালিক কর্তৃক তাদের ধর্মান্তরে বাধ্য করা। এর বিপরীতে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ‘ব্ল্যাক মুসলিম মুভমেন্ট’ (১৯১৩) আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এই আন্দোলনের মূল প্রতিবাদ্য ছিল আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমদের আত্মপরিচয় (মুসলিম পরিচয়) ফিরিয়ে দেওয়া এবং শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের ভয়াবহতা থেকে আত্মরক্ষা করা। তখন অনেক কৃষ্ণাঙ্গ জানতে পেরেছিল যে তাদের পূর্বপুরুষরা মুসলিম ছিল। উনিশ শতকের শেষের আগে উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ নথিভুক্ত দাসত্ব না করা মুসলমান ছিলেন ব্যবসায়ী, ভ্রমণকারী এবং নাবিক। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত কয়েক হাজার মুসলিম অটোমান সাম্রাজ্য এবং ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ জন্মের হার দ্বারা পরিচালিত। বেশিরভাগ বর্ধনের সাথে, বিংশশতাব্দীতে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকান, দক্ষিণএশীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় বংশোদ্ভূত অভিবাসী সম্প্রদায়। আমেরিকান মুসলমানদের প্রায় ৭২ শতাংশ অভিবাসী বা দ্বিতীয় প্রজন্ম।২০০৫ সালে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির বেশি লোক আইনীগত ভাবে স্থায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক হয়েছিল - এটি আগের দুই দশকের তুলনায় অন্য কোনও বছরের তুলনায় প্রায় ৯৬,০০০ জন বেশি।২০০৯ সালে, ১১৫,০০০ এরও বেশি মুসলিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ বাসিন্দা হয়েছিলেন। ১৭৭৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি স্বাধীন জাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশটি ছিল মরক্কো । সুলতানাতের শাসক মোহাম্মদ বেন আবদুল্লাহ আমেরিকার প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের সাথে পত্র যোগাযোগ বজায় রেখেছিলেন। ১৮০৫ সালের ৯ ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি টমাস জেফারসন তিউনিসের রাষ্ট্রদূত সিডি সোলিমান মেলিমেলির জন্য হোয়াইট হাউসে ইফতারের নৈশভোজ করেছিলেন।
১১৭৮ সালে শাং শাসনামলের সারকা নামক একজন চায়নিজ রচিত একটি দলিল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, যা সুং দলিল (Sung Document) নামে বহুল পরিচিত। এ দলিল থেকে জানা যায়, ১১৭৮ সালে চীন থেকে যাত্রা করে একদল মুসলিম নাবিক Mu-Lan-Pi বা বর্তমান আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া এলাকায় পৌঁছে যান। এতে প্রমাণিত হয় যে কলম্বাসের আগেই মুসলমানরা আমেরিকায় পা রেখেছিলেন। ২০১৪ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান দাবি করেন ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ৩০০ বছর আগেই মুসলিমরা আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন । তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ল্যাতিন আমেরিকার মুসলিম নেতাদের এক সম্মেলনে এরদোয়ান এ দাবি করেন।এ বিষয়ে তিনি কলম্বাসের একটি ডায়েরির কথা উল্লেখ করেন, যেখানে কিউবার একটি পাহাড়ের উপর একটি মসজিদের কথা উল্লেখ করেছিলেন কলম্বাস।এরদোগান বলেছেন, “১১৭৮ সালে মুসলিম নাবিকরা আমেরিকা পৌঁছেছিলেন।”কিউবায় কলম্বাসের সনাক্ত করা ওই পাহাড়ে তিনি একটি মসজিদ নির্মাণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।ভারতের পৌঁছানোর জলপথ বের করার চেষ্টা করতে গিয়ে ১৪৯২ সালে কলম্বাস বর্তমানে আমেরিকা নামে পরিচিত মহাদেশে গিয়ে পৌঁছান, এটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু ১৯৯৬ সালে ইতিহাসবিদ ইউসেফ মিরাওয়ে’র প্রকাশিত এক প্রবন্ধে দাবি করেন, কলম্বাসের উল্লেখ প্রমাণ করে মুসলিমরাই প্রথম আমেরিকায় গিয়েছিল।ব্রিটিশ নৌ ইতিহাস গবেষক গ্যাভিন মানজিস (Gavin Manzies) তাঁর ‘১৪২১’ শিরোনামের গ্রন্থে লিখেছেন, ১৪২১ সালে ঝেং হি নামের একজন চায়নিজ মুসলিম নাবিক কলম্বাসের ৭১ বছর আগেই আমেরিকায় গিয়েছিলেন।ষোড়শ শতাব্দীতে আমেরিকায় মুসলমানের অস্তিত্বের প্রমাণ এস্তেফানিকো নামের এক ব্যক্তি। তাঁর মূল নাম মুস্তফা আজ-জামুরি। ১৫৩৯-এর দিকে তিনি মারা যান। মরক্কোর অধিবাসী মুস্তফা আজ-জামুরিকে ১৫২৭-এ আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আনা হয়। তাঁকে দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি করা হয়। একজন মুসলিম চিকিৎসক ও ওষুধবিশারদ মুস্তফা আজ-জামুরি ইসলাম প্রচার ও ঈমান রক্ষার সংগ্রামে আমৃত্যু সচেষ্ট ছিলেন।১৬১৯ সালে ৩০ জন আফ্রিকান নাগরিককে অপহরণ করে একটি ডাচ জাহাজে করে আমেরিকার ভার্জিনিয়া প্রদেশে নিয়ে আসা হয়। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল থেকে তারা কৃষ্ণাঙ্গদের অপহরণ শুরু করে এবং তাদের আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে দাসকাজে বাধ্য করা হয়।অষ্টাদশ শতাব্দীতে অসংখ্য মানুষকে অপহরণ করে আমেরিকায় আনা হয় দাসবৃত্তির জন্য। এদের ১০ শতাংশ ছিল মুসলমান। তাদের অনেকেই বেশ শিক্ষিত ছিল। ১৭৩১-এ গাম্বিয়া থেকে অপহরণ করে আনা হয় আইয়ুব বিন সোলাইমানকে। তিনি ছিলেন অধিকারসচেতন, বিচক্ষণ ও শিক্ষিত। অনেক ত্যাগ-সংগ্রামের পর তিনি দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে ১৭৩৪-এ নিজ দেশে ফিরে যান। থমাস ব্লুয়েট নামের একজন আইনজীবী বিন সোলাইমান সম্পর্কে বলেন, “...তিনি ‘আল্লাহ’ ও মুহাম্মদ শব্দ উচ্চারণ করলেন। তিনি এক গ্লাস মদ গ্রহণে অস্বীকার করলেন, যা আমরা দিয়েছিলাম। আমরা বুঝলাম, তিনি সাধারণ কেউ নন; বরং তিনি ‘মুহাম্মাডান’।বিলালি মুহাম্মদ ছিলেন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মুসলমান। জর্জিয়ার স্যাপেলো দ্বীপে আঠারো শতকে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয় বিলালি মুহাম্মদকে। তিনি ১৭৭০-এ সিয়েরা লিওনের এক শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে কিশোর বয়সে অপহরণ করা হয়। তিনি পবিত্র কোরআন ও ইসলাম বিষয়ে অগাধ পাণ্ডিত্বের অধিকারী ছিলেন। বিলালি মুহাম্মদের প্রভু ছিলেন উদার ও সহিষ্ণু, তিনিও দাসপ্রথা বিলুপ্তির জন্য কাজ করেন। দাসত্বের মধ্যে থেকেও বিলালি মুহাম্মদ আমেরিকায় ইসলাম প্রচারে অবদান রাখেন। ইসলামী আইন-কানুন তিনি সংকলন করেন। বর্তমানে এগুলো বিলালি দলিল নামে খ্যাত। তাঁর মৃত্যুর পর ১৩ পৃষ্ঠার একটি আরবি পাণ্ডুলিপি তাঁর ঘরে পাওয়া যায়। জাদুঘরে সংরক্ষিত এ অমূল্য সম্পদে ইসলামী শরিয়ার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। এ জন্যই বিশেষজ্ঞরা বিলালি দলিল-কে প্রথম ফিকহ বা মুসলিম আইনগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।১৭৯০ সালে সাউথ ক্যারোলাইনার legislative body মরক্কোর একটি সম্প্রদায়ের জন্য সর্বপ্রথম বিশেষ আইনগত মর্যাদা Special legal status অনুমোদন করে। পরবর্তী সময়ে ১৭৯৬ সালে Moors sundry acts স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে বলা হয়, The United states had no character of enmity against the laws, religion or tranquility of Musalman. (মুসলমানদের আইন, ধর্ম ও প্রশান্তির বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো বিরুদ্ধবাদী চরিত্র যুক্তরাষ্ট্রের নেই)।ঐতিহাসিকদের মতে, এডওয়ার্ড উইলমোট ব্লাইডেন আধুনিককালের অন্যতম ধর্মান্তরিত মুসলিম। নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ব্লাইডেন ১৮৮৯ সালে ধর্মান্তরিত হন। তাঁর জ্ঞান ও দক্ষতার কারণে তিনি লাইবেরিয়ার ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী মনোনীত হন।ব্লাইডেনের ইসলামে দীক্ষা লাভের পর ১৮৮৮ সালে মুহাম্মদ আলেকজান্ডার রাসেল ওয়েব ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেন। অত্যন্ত সুদক্ষ এই নওমুসলিম ছিলেন লেখক, প্রকাশক ও স্বনামধন্য সাংবাদিক। তিনি আমৃত্যু ইসলামের জন্য নিবেদিত ছিলেন। তাঁরই প্রচেষ্টায় গঠিত হয় আমেরিকায় মুসলমানদের মুখপাত্র ও সংগঠন American Muslim Brotherhood।উনিশ শতকের প্রথম দিকে আমেরিকায় অভিবাসন আইন ছিল না। ৫০ সেন্টের বিনিময়ে পাওয়া যেত নাগরিকত্ব। তখন থেকেই আমেরিকার মুসলমানরা নিজস্ব কমিউনিটি গড়ে তোলে। ১৮৯৯ সালে হাসান জুমআর নেতৃত্বে আরবের বিভিন্ন দেশের অভিবাসী ত্রিশটি পরিবারের সমন্বয়ে নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যে একটি কমিউনিটি গঠিত হয়। তাদের প্রচেষ্টায় একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এটি আমেরিকার অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। যদিও এর আগেই লেবানন, জর্দান, সিরিয়াসহ বিভিন্ন আরব দেশের অভিবাসীদের প্রচেষ্টায় ১৯০৮ সালে আমেরিকায় প্রথম মসজিদ নির্মিত হয়। এভাবেই আলবেনিয়া, তুরস্কসহ অন্যান্য দেশ থেকে অভিবাসী মুসলমানরা আমেরিকায় মসজিদ নির্মাণ ও ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করে। ১৯৫৫ সালে শেখ দাউদ আহমদ ফয়সাল নিউইয়র্কে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।১৯৬৫ সালে The immigration and Nationality act-এর মাধ্যমে আমেরিকায় কোটাভিত্তিক অভিবাসনপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন থেকে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের আমেরিকা গমনের ধারা শুরু হয়। সেটি এখনো অব্যাহত আছে।
বর্তমানে আমেরিকায় ৩ হাজারের উপর মসজিদ রয়েছে। আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স কাউন্সিল প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকায় ২০০০ সালে মসজিদের সংখ্যা ছিল ১,২০৯টি। ২০১১ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২,১০৬ টিতে, আর ২০১৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ৩ হাজার ছুঁয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অনেক মসজিদ আবার অফিস বা দোকানের নামাজ পড়ার জায়গার চেয়ে তেমন বড় নয়। ইতিহাসবিদ শেলি হাওয়েলের তথ্য মতে, আমেরিকার প্রথম মসজিদটি স্থাপিত হয়েছিল ১৮৯৩ সালে শিকাগোতে। মিসরের কায়রোতে অবস্থিত সুলতান কায়েত বি মসজিদের আদলে তৈরি হয় ওই মসজিদটি। নতুন এই মসজিদ স্থাপনের মধ্য দিয়ে নতুন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন আমেরিকানরা। শিকাগোতে বসবাসকারী মুসলিমরা এই মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। এ ছাড়া অসংখ্য অমুসলিম আমেরিকানও মসজিদটি দেখতে যেতেন এবং অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতেন এর গঠনশৈলীর দিকে। মসজিদের মিনার থেকে যখন আজান ভেসে আসত, তারা আরও কৌতূহলী হয়ে উঠতেন নতুন ধর্মটি সম্পর্কে।শেলি হাওয়েল জানান, আমেরিকার দ্বিতীয় মসজিদটি স্থাপিত হয় প্রথম মসজিদ স্থাপনের প্রায় তিন দশক পর ১৯২১ সালে। মিশিগান রাজ্যের হাইল্যান্ড পার্কে ওই মসজিদটি স্থাপন করেন কিছু মুসলিম অভিবাসী। শিকাগোর কায়রো স্ট্রিটের মসজিদের আদলেই নির্মিত হয় ওই মসজিদ।মুসলমানরা আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে তারা বিরোধিতার মুখে অসহায় হয়ে পড়ে।নিউ ইয়র্কেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২৫৭টি মসজিদ। এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়াতে ২৫০টি। টেক্সাসে মোট মসজিদ ১৬৬টি। ফ্লোরিডায় মসজিদের সংখ্যা ১১৮। নিউ জার্সিতেও রয়েছে ১১০টি মসজিদ। হার্টফোর্ডের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আমেরিকায় এখন প্রতি ১৫৬২ জন মুসলমানের জন্য একটি মসজিদ রয়েছে। পাশাপাশি ৫২৪ জন খ্রিস্টানের জন্য রয়েছে একটি গীর্জা। পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় বলা হয়েছে এই ইতিবাচকতা সত্তে¡ও মুসলিম আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনা প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে।২০০১ সালে আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ও পেন্টাগনের হামলার পর থেকেই মুসলিম আমেরিকানদের ওপর আক্রমণাত্মক ঘটনা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ সালে দেশটিতে মোট ৩০৭টি মুসলিম বিরোধী অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। যা ২০১৫ সালের তুলনায় ১৯ শতাংশেরও বেশি। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ বলেন, ‘ ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং গুটি কয়েক চরমপন্থির কার্যকলাপের জন্য সকল মুসলমানকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’ তাছাড়া এক বক্তৃতায় হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘আমাদের শত্রু হচ্ছে জিহাদবাদ, ইসলাম নয়।’২০১৫ সালের শেষ দিকে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, মুসলমানদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ জনগণের মতামত ইতিবাচক। প্রতি ১০ জন মার্কিনির মধ্যে ৩ জন অন্তত একজন মুসলমানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখেন।
আজকের আধুনিক আমেরিকাকে বাস উপযোগী ও সভ্য করে তোলার পেছনে মুসলিমদের অবদান কম নয়। আমেরিকার মুসলমানগণ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তারা এই দেশটির অর্থনীতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে এই মহান জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। শিকাগোতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন উইলস হ্যানকক টাওয়ার। এর ডিজাইন তৈরি করেন একজন আমেরিকান মুসলিম। আমেরিকার মুসলিমরাই কেমোথেরাপির মেশিনের উন্নয়ন সাধন করেছেন। বর্তমানে এই যন্ত্রটি ব্রেইন টিউমার চিকিত্সায় ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হচ্ছে। তারা দেশের মূল চিত্রশিল্প জাজের ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন করেছেন। তারা শিক্ষক, আইনপ্রণেতা, ক্রীড়াবিদ ও সৈনিক হিসেবে সেবামূলক খাতের উন্নতি সাধন করছেন। কংগ্রেসে মুসলিম দু’জন সদস্য আছেন।মুসলিমরা বিভিন্ন শহরের মেয়র, জজ ও অঙ্গরাজ্যে আইনসভার সদস্য হিসেবে বিশাল দায়িত্ব পালন করছেন।আমেরিকার ইসলামী সংস্থা গুলো-বৃহত্তম বৃহত্তম ইসলামী সংস্থা হল ইসলামিক সোসাইটি অফ উত্তর আমেরিকা(the Islamic Society of North America -ISNA), দ্বিতীয় বৃহত্তম হল আমেরিকান সোসাইটি অব মুসলিম্স (the American Society of Muslims ),তৃতীয় বৃহত্তম সংস্থা ইসলামিক সার্কেল অফ উত্তর আমেরিকা (the Islamic Circle of North America -ICNA),আমেরিকা ইসলামিক সুপ্রিম কাউন্সিল (The Islamic Supreme Council of America -ISCA) ,ইসলামিক অ্যাসেম্বলি অফ উত্তর আমেরিকা (The Islamic Assembly of North America -IANA),মুসলিম ছাত্র সমিতি (The Muslim Students' Association -MSA),ইসলামিক তথ্য কেন্দ্র (The Islamic Information Center -IIC)
হ্যামট্রামক আমেরিকার একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর। মিশিগান অঙ্গরাজ্যের এই শহরটি আমেরিকায় মুসলমানদের শহর বলেই বেশি পরিচিত। বেশ কিছুদিন আগেও হ্যামট্রামকে বলা হতো দুই বর্গ কিলোমিটারের পৃথিবী আর এখন বলা হয় মুসলমানদের শহর। এক সময় শহরটিতে ৯০ শতাংশ পোলিশ ক্যাথলিক বসবাস করতেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এটি এখন মুসলিমদের শহরে রূপান্তরিত হয়েছে।কারণ এখানকার বাসিন্দাদের বেশিরভাগই মুসলমান এবং অভিবাসী। যারা এসেছেন বাংলাদেশ, ইয়েমেন ও বসনিয়ার মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে।হ্যামট্রামকের মোট বাসিন্দা ২৫ হাজারের মতো। আর শহরটিতে মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশই মুসলমান। সর্বশেষ আদমশুমারিতে দেখা গেছে, হ্যামট্রামকে আরবদের সংখ্যা ২৩ শতাংশ, বাংলাদেশি ১৯ শতাংশ এবং বসনিয়া ও অন্যান্য মুসলিম প্রায় নয় শতাংশ।হ্যামট্রামকে বেশ কয়েকটি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মসজিদ হলো, ঈমান ইসলামি কমপ্রেক্স, বায়তুল মোকাররম মসজিদ, মসজিদ আল ফালাহ, আল ইসলাহ জামে মসজিদ, মসজিদুন নুর, মসজিদ আল ফোরকান ও আবু বকর সিদ্দিক ইসলামিক সেন্টার। সিটি কাউন্সিলে মুসলমানদের সংখ্যাও বেশি। হ্যামট্রামকের মসজিদগুলোতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান ধ্বনিত হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন