সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফিলিপাইনে ইসলাম ও বাংসামরোর স্বায়ত্তশাসন

মো.আবু রায়হানঃফিলিপাইন সরকারীভাবে ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্র। ফিলিপাইন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত হাজার ১০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। সমুদ্রবেষ্ঠিত এই দেশটির আয়তন দুই লাখ ৯৯ হাজার ৪০০ বর্গ কিলোমিটার। ফিলিপাইনের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৯৮ লাখ। পারস্য উপসাগর, দক্ষিণ ভারত এবং অন্যান্য মুসলিম সালতানাত থেকে আগত মুসলিম বণিকদের মাধ্যমে ১৪'শ শতকে ফিলিপাইনে ইসলাম ধর্মের আগমন ঘটে।দেশটিতে ইসলামের প্রথম আগমন ১৩১০ সালে। আরবের ব্যবসায়ী এবং সুফি সাধকের মাধ্যমে ফিলিপাইনের সুলু ও জুলু দ্বীপে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটে। এ ক্ষেত্রে ‘তুয়ান মাশায়েখের’ নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সুলু দ্বীপে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং এখানকার গোত্রপ্রধানের কন্যাকে বিয়ে করেন। ফলে সমাজে তার প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়।তিনি ছেলেমেয়েদের ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেন। তারা মিলে ইসলামের কাজে আত্মনিয়োগ করায় ধীরে ধীরে সুলুতে ইসলামের প্রসার ঘটে। ক্রমে জুলুসহ অন্যান্য দ্বীপেও ইসলামের বিস্তার ঘটে।১৩৪০ সালে মালয় থেকে করিমুল মাখদুম নামের এক দরবেশ সুলু দ্বীপে আগমন করেন। তার উদ্যোগে মিন্দানওয়ের সুলুতে প্রথম মসজিদ নির্মিত হয়। এটি ফিলিপাইনের ও প্রথম মসজিদ। চতুর্দশ শতাব্দীতে সুমাত্রা দ্বীপ থেকে রাজা রাগুইন্দারের নেতৃত্বে একটি নৌবহর জুলু দ্বীপে আগমন করে এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তিনি অল্প দিনের মধ্যেই নিজেকে সুলুর মুসলমানদের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।ক্রমেই সুলুতে ইসলামের ব্যাপক বিস্তার ঘটে এবং সেখানে সুলু সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম দিকে মিন্দানাও দ্বীপেও ইসলামের প্রসার ঘটে। পরবর্তীকালে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভারত ও পারস্য থেকে মুসলমানরা ফিলিপাইনে গমন করেন। এভাবে ফিলিপাইনে ইসলাম একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।জনসংখ্যার প্রায় ৮১ শতাংশ রোমান ক্যাথলিক। মুসলিম জনসংখ্যা মাত্র ১১ শতাংশ হলেও ইসলাম দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। ফিলিপাইনের একটি সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর নাম মরো। ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ মিন্দানাও দ্বীপপুঞ্জে এদের বাস।মরো শব্দটি স্পেনীয়দের উদ্ভাবন। অতীতে মুসলিম স্পেন ও পর্তুগালের মুসলমানদের মুর বলা হতো। সেখান থেকে স্থানীয় বিভিন্ন মুসলিম গোষ্ঠীকে একত্রে মরো জনগোষ্ঠী হিসেবে সম্বোধন করা হয়।মিন্দানাও দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ এবং এর আয়তন ৯৭ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটার। এর রাজধানীর নাম সুলু। জনসংখ্যা দুই কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার (২০১৮)। জনসংখ্যার ৯৮ ভাগই মুসলমান।মুসলমানদের দ্রুত উত্থান দুশমনদের কাছে অসহ্য বলে মনে হলো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫৯৬ সালে মিন্দানাওয়ের স্পেনীয় শাসক মুসলমানদের হাতে নিহত হয়। পরবর্তীকালে ডাচ ও স্পেনীয় শাসকরা যৌথভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফলে ১৬৩৭ সালে মিন্দানাও এবং ১৬৩৮ সালে সুলুর পতন ঘটে।ষোড়শ শতক থেকে উনাবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত স্পেনীয় ঔপনিবেশিক শাসনামলে তারা স্পেনীয় কায়দায় স্থানীয় অধিকাংশ জনগণকে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করে। ফিলিপিনে স্পেনীয় উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দমন ও নির্যাতনের মাধ্যমে এ অঞ্চল থেকে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা হয়।১৯৪৯ সালে ফিলিপাইন স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পরপরই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্রের দাবি ওঠে। ফলে ম্যানিলা সরকারের সাথে মুসলমানদের সঙ্ঘাত শুরু হয় এবং পরবর্তীকালে তা সশস্ত্র আন্দোলনের রূপ নেয়।
এসময় দক্ষিণের মিন্দানাও দ্বীপপুঞ্জের লোকেরা নিজেদের ধর্ম ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণে দীর্ঘ সংগ্রামে লিপ্ত হয়। ১৯৭০ সালের গোড়ার দিকে মরো মুসলমানরা স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৭২ সালে উচ্চশিক্ষিত নেতা নূর মিশৌরির নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘মরো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’। এরপর মরো মুসলিম আন্দোলন ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। সরকারও মুসলমানদের দমন করার জন্য চালায় অত্যাচারের স্টিমরোলার। ফলে এ পর্যন্ত লক্ষাধিক মুসলমানের মৃত্যু ঘটে। সরকার স্বাধীনতাকামীদের দমন করার জন্য নানা কৌশল গ্রহণ করে। সরকারের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতির কারণে স্বাধীনতাকামীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষাপটে ১৯৮১ সালে হাশিম সালামাতের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট।’ ১৯৯৬ সালে নূর মিশৌরি ম্যানিলা সরকারের সাথে এক শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেন। ফলে মিন্দানওয়ের চারটি অঞ্চলে মুসলমানদের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। নূর মিশৌরি সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মরো মুসলমানদের দ্বিতীয় সশস্ত্র গ্রুপ ‘মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট’ নূর মিশৌরির সাথে একমত না হয়ে সশস্ত্র লড়াই অব্যাহত রাখে। এমআইএলএফের সৈন্যসংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ হাজার। মিন্দানাওয়ের এই স্বায়ত্তশাসন প্রক্রিয়ায় ‘মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট’-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।সম্প্রতি মরো মুসলমানদের আইনগত ও ভৌগলিক স্বায়ত্তশাসন দিয়ে আইন পাস করেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। ইতোমধ্যে ‘বাংসোমোরো অর্গানিক আইন’ অনুমোদনের যাবতীয় কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে। দুতার্তে এই আইনে স্বাক্ষর করায় মিন্দানাও দ্বীপে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৫০ বছর মিন্দানাওয়ে সঙ্ঘাতের ফলে এক লাখ ৫০ হাজার মুসলমান নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। মাল-সম্পদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। ‘বাংসোমোরো অর্গানিক আইন’-এর বাস্তবায়ন সম্ভব হলে প্রকৃত অর্থে সেখানকার মানুষের দীর্ঘ সংগ্রামের বিজয় সাধিত হবে।বাংসামরো পূর্ব এশিয়ার ফিলিস্তিন নামে সমধিক পরিচিত। লাখো মানুষ জীবনদানের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫০ বছরের স্বাধীনতা আন্দোলন সংগ্রামে বিজয়ী হয়েছে মরো জাতি। মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়া বাংসামরো’র দিকে নজর দেয়নি ফিলিপাইন সরকার। যে কারণে বাংসামরো জনপদটি একেবারেই অনুন্নত।
বাংসামরো’ ফিলিপাইনি শব্দ। এর অর্থ ‘নেশন অব দ্য মরো’ বা ‘মরো জাতির দেশ।’ মিন্দানাওয়ের মুসলমানরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিল খ্রিষ্টান ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের সাথে। সরকার এতদিন ধরে মিন্দানাওকে নামমাত্র স্বায়ত্তশাসন দিয়ে রেখেছিল। দ্বীপ শাসন করত কেন্দ্র থেকে। মুসলমানরা তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। এই আইনের ফলে শান্তিচুক্তির ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শর্ত বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন স্বায়ত্তশাসন আইন বাস্তবায়িত হলে ‘বাংসোমোরো’ সরকার নিজেরাই একটি সংসদ বা পার্লামেন্ট চালাতে পারবে। সরকার তার স্থানীয় রাজস্ব থেকে বড় অংশ তার এলাকার উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবে। তবে রাজস্বের একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে নিয়মিত প্রদান করতে হবে। তা ছাড়া মিন্দানাও অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ তার নিজস্ব কর্তৃত্বে থাকবে। ‘বাংসোমোরো’ সরকার এই অঞ্চলের বিচারব্যবস্থায় ইসলামি আইনের প্রয়োগও করার ক্ষমতা লাভ করবে। বাংসামরো প্রাকৃতিক ও খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ।নতুন এলাকা গঠিত হলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে বলে আশা মরোদের।স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গঠিত হলে পার্শ্ববর্তী দেশ ব্রুনাই দারুস সালাম, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও বাংসামরোকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দেবে। পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস মরো নেতাদের।২০১৯ সালে ২১ জানুয়ারি ভোটাররা বাংসামোরো অঞ্চল গঠনের পক্ষে ভোট দেয়। গণভোটে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোটার ‘হ্যাঁ’ এর পক্ষে মত দেন। এর পরই বাংসামোরোর দায়িত্ব তাদের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি ‘বাংসামোরো’র দায়িত্ব নেন মুসলিম নেতারা। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তে মোরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের (Moro Islamic Liberation Front, সংক্ষেপে MILF) চেয়ারম্যান মুরাদ ইবরাহীমের হাতে দায়িত্ব তুলে দেন। এর আগে বাংসামোরো অঞ্চলের নেতারা প্রশাসক হিসেবে শপথ নেন। নতুন শপথ নেওয়া এই ৮০ জন প্রশাসক ও সরকারের ৪০ প্রতিনিধি ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংসামারোর সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন।ভোটারদের রায় স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে হওয়ায় আগামী তিন বছরের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২০২২ সাল নাগাদ ‘বাংসামোরোতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের লোকজন নিজস্ব পার্লামেন্ট ও মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...