সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভুটানে কোনো মসজিদ নেই


মো.আবু রায়হানঃসার্কের একটি সদস্য রাষ্ট্র এবং মালদ্বীপের পর দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ ভুটান।দেশটি ভারতীয় উপমহাদেশে হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটানের উত্তরে চীনের তিব্বত অঞ্চল, পশ্চিমে ভারতের সিকিম ও তিব্বতের চুম্বি উপত্যকা, পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ এবং দক্ষিণে আসাম ও উত্তরবঙ্গ দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভুটানের আনুষ্ঠানিক নাম কিংডম অব ভুটান।ভুটানের আয়তন ৪৬,৫০০ বর্গকিলোমিটার। থিম্পু এর রাজধানী শহর এবং এটি দেশের মধ্য-পশ্চিম অংশে অবস্থিত। ভুটান হল রাজতন্ত্র বিশিষ্ট দেশ। এখানে বর্তমানে রাজতন্ত্র বিদ্যমান। ভূটানে অতীতে একটি পরম রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। ভূটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা জংখা ভাষায় দ্রুক ইয়ুল বা বজ্র ড্রাগনের দেশ নামে ডাকে।আবার কেউ বলে অক্সিজেনের দেশ। কেউ বলে সুখী মানুষের দেশ। কেউ কেউ বলে রাজার দেশ। স্থলবেষ্টিত দেশ ভূটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি সুইজারল্যান্ডের সদৃশ বলে দেশটিকে অনেক সময় এশিয়ার সুইজারল্যান্ড নামে ডাকা হয়। ১৯৭১ সালে ভুটান জাতিসংঘের সদস্য হয়। ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র ।
Bhutan is the only country in the world that has Mahayana Buddhism as its official religion. ভূটানের অধিবাসীরা ভূটানি নামে পরিচিত। ২০০৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভূটানে ৬,৭২,৪২৫ জনের বাস। প্রতি বছর জনসংখ্যা ২% হারে বাড়ছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫ জন। ভূটানে দ্রুপকা জাতির লোক প্রায় ৫০%। এর পরেই আছে নেপালি (৩৫%) এবং অন্যান্য আদিবাসী বা অভিবাসী জাতি। দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ লোক লামাবাদী বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী। বাকীরা ভারত ও নেপালি ধারার হিন্দু ধর্ম পালন করে।ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তির সংখ্যা নগণ্য। The origin of the people of Bhutan can be traced back to Nepal, Northern Burma, Northeast India and Tibet. The majority of the people are Buddhist and 5% are Muslim. Other minority religions include Hinduism and Christianity.( Muslims in Bhutan )২০১০ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টার কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী ভুটানের প্রায় ১% লোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী।সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক দাবি করে য়ে ভূটানে মোট জনসংখ্যার ০.১% এরও কম মুসলমান রয়েছে ।২০১০ সালের এক হিসাব অনুযায়ী ভুটানের ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় সাত হাজার, যা ২০৩০ সালে ২৯% বেড়ে নয় হাজারে দাঁড়াবে।Islam is banned (has no recognition) and the government record does not know any presence of Muslim in Bhutan. But many estimates there are more than thousands of Muslims in Bhutan. থিম্পুতে ৯টি গির্জা আছে। অথচ কোনো মসজিদ নেই। এখানে প্রকাশ্যে নামাজ পড়া নিষেধ। বিশ্বের প্রায় সব দেশের রাজধানীতেই মসজিদ আছে। অথচ ব্যতিক্রম ভুটান। পুরো দেশের কোথাও নামাজের জায়গা নেই। কেন মসিজদ নির্মাণ করতে দেয়া হচ্ছে না। স্থানীয় ভুটানিদের মতে, মসজিদ নির্মাণ হলে তা হবে ইসলামের একটি সেন্টার। এতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভুটানিরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যাবে। এ আতঙ্কেই মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয়া।Islam has no recognition in Bhutan and is practised by just 2,000 people, where the constitution establishes the "Chhoe-sid-nyi" (dual system of religion and politics) of Bhutan as unified in the person of the King who, as a Buddhist, is the upholder of the Chhoe-sid (religion and politics; temporal and secular) and the protector of all religions in Bhutan. In 2009, the Pew Research Center estimated based on 2005 data that 0.5% of the population, or 2,750 people, were Muslims.( Wikipedia the free encyclopedia)সাধারণ শ্রমিকের কাজও করে না ভুটানিরা। এই শ্রমিক ভারতের। ভুটানে কাজ করা ভারতীয় শ্রমিকদের ৯০ শতাংশই মুসলমান। ভুটানে প্রাণী জবাই করা নিষেধ। ফলে কোরবানি দেয়ার জন্য ভারতীয় মুসলমানেরা চলে যান তাদের দেশে। অবশ্য ভুটানে গরু, ছাগল, মহিষ জবাই নিষিদ্ধ হলেও এর গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই। তাই ভারত থেকে জবাই করা এসব প্রাণীর গোশত আমদানি করা হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...