যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনে দিল্লির শাহিনবাগের প্রতিবাদী বিলকিস
মার্কিন টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে ২৪ জন বিশ্ব নেতাসহ পৃথিবীর ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে জায়গা করে নিলেন দিল্লির শাহিনবাগের সেই প্রতিবাদী বিলকিস দাদি। ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় রয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কমলা হ্যারিস, জো বাইডেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোও আছেন।এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, বলিউড অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানাও তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। গত বছর নয়াদিল্লিতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছিলেন সামনে আসে দিল্লির শাহিনবাগের সেই প্রতিবাদী বিলকিস। তাঁবু খাটিয়ে নীরব প্রতিবাদে শামিল হওয়া কয়েকশ নারী , মুখে একগাল হাসি আর কাঁধে শাল জড়িয়ে সেই নারীদের ভিড়ে ছিলেন ৮২ বছরের বিলকিসও। নারীর মধ্যে নজর কাড়েন তিনিও। সেই থেকেই ‘শাহিনবাগের দাদি’ নামেই বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তিনি। ধীরে ধীরে আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। সেই প্রতিবাদী অশীতিপর বিলকিস এবার মার্কিন টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে দুনিয়ার ১০০ জন সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে জায়গা করে নিলেন।দিল্লির শাহিনবাগে আন্দোলন চলে ১০১ দিন পর্যন্ত। কিন্তু করোনার কারণে ২৪ মার্চ দিল্লি পুলিশ তাদের অবস্থান তুলে দেয়। জানুয়ারি মাসে যখন শাহিনবাগের আন্দোলনের কথা দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।ওই সময় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিলকিস বলেছিলেন, ‘আমাদের বয়স হয়েছে। কিন্তু এই আন্দোলন আমরা নিজেদের জন্য করছি না। বরং আমাদের সন্তানদের জন্য করছি। না হলে কেন এত ঠাণ্ডার মধ্যে আমরা দিনরাত এক করে আন্দোলন চালাব?’ফেব্রুয়ারি মাসে যখন শাহিনবাগের আন্দোলনস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে এক দুষ্কৃত গুলি চালায় তখনও ভয় পাননি বিলকিস। বলেছিলেন, ‘বুলেটকে ভয় পাই না আমরা। আন্দোলন চালিয়ে যাব।’টাইম ম্যাগাজিনের হয়ে সাংবাদিক রানা আইয়ুব কলম ধরেছিলেন বিলকিসের জন্য। তিনি নিজের কলামে লিখেছেন, “প্রান্তিক মানুষদের আওয়াজ হয়ে উঠেছিলেন বিলকিস। যখন দেশে মোদি জামানায় সংখ্যাগুরুর রাজনীতির চাপে নারী ও সংখ্যালঘুদের আওয়াজ দাবিয়ে রাখা হচ্ছিল। তখন প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে বিলকিসদের মতো মানুষরা।”তার সম্পর্কে লেখা হয়, ‘‘প্রথম যে দিন বিলকিসকে দেখি, কমবয়সীদের ভিড়ে বসেছিলেন তিনি। এক হাতে তসবি, অন্য হাতে জাতীয় পতাকা। দেশের প্রান্তিক মানুষের প্রতিবাদী স্বরের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।’’
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন