হানাইল নোমানিয়া কামিল মাদ্রাসা



উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হানাইল নোমানিয়া কামিল মাদ্রাসা জয়পুরহাট জেলা সদরে অবস্থিত। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার দু'রকম ইতিহাস পাওয়া যায়।১৯১৭ সনের শেষের দিকে হাজী এনায়েতুল্লাহ সাহেব হানাইল ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে এক পরামর্শ সভা করলেন। কীভাবে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা যায়। পরামর্শ সভায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে হানাইল গ্রামের এনায়েতুল্লাহ মন্ডল. তাঁর ছেলে ইসাহাক আলী মন্ডল, হেলকুন্ডা গ্রামের হেদায়েতুল্লাহ,হানাইল গ্রামের মোঃ আজিম উদ্দীন ফকির, আলেফ উদ্দীন খান হাড়াইল গ্রামের মোনছের আলী সরদার, হিচমী গ্রামের ইজ্জতুল্লাহ মন্ডল, মুরারীপুর গ্রামের নেগার উদ্দীন মন্ডল উপস্থিত ছিলেন। অন্যভাবে জানা যায়,১৯১৮ খ্রি: পূর্ব বাংলার নোয়াখালী জেলা থেকে জনৈক শিক্ষাবিদ হযরত মাওলানা আব্দুর রহমান হানাইল গ্রামে পদার্পন করেন। তিনি এলাকার ধর্মানুরাগী ও বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯১৮ইং সনে মক্তবকে কেন্দ্র করে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী হানাইল নো’মানিয়া জুনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।৩৩ শতাংশ জমির উপর মাটির ঘর নির্মাণ করে মাদরাসার যাত্রা শুরু হয়েছিল ।১৯২৮ খ্রিঃ পর্যন্ত মাদ্রাসাটি কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা কারিকুলাম অনুসরণ করে জুনিয়র মাদ্রাসার হিসেবে পরিচালিত হয়। ১৯৫২ সালে দাখিল স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৫৪ সালে আলিম এবং ১৯৫৭ সালে ফাজিল স্বীকৃতি লাভ করে এবং ১৯৭৮ সালে কামিল স্তরে উন্নীত।১৯২৮ খ্রি: সেন্ট্রাল বোর্ড অব মাদ্রাসা ইকজামিনেশন্স নামে একটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হলে পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন ঘটে। সেই সময় মাদ্রাসাটি জুনিয়র হাই মাদ্রাসা (স্কুল) হিসেবে পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৪৭ খ্রি: ভারত বিভক্ত ও স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তানে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হলে বোর্ডের কারিকুলাম অনুযায়ী মাদ্রাসাটি পরিচালিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া এবং বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যাল, ঢাকা এর অধিন পরিচালিত হচ্ছে।শিশু শ্রেণি থেকে কামিল শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে দাখিল ও আলিমে সাধারণ ও বিজ্ঞান বিভাগ, ফাযিল শ্রেণি বিএ বিটিএস ও কামিল শ্রেণিতে হাদিছ, তাফসির, আদব ও ফিকাহ বিভাগ চালু আছে। প্রায় ৪ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত ছায়াঢাকা ক্যাম্পাস প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-ছাত্রী বর্তমান অধ্যয়নরত। শিক্ষকের সংখ্যা মোট ৩৬ জন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ