সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশ কী ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে ?



মো.আবু রায়হানঃইসরায়েলের সাথে সম্পর্কের প্রশ্নে মুসলিম বিশ্বে একটা নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দেখা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি আরব দেশ যেন ইসরায়েলের ব্যাপারে তাদের বৈরি অবস্থান নমনীয় করছে।সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার আলোকে সাংবাদিক-বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব মোকাবিলা করতে বেশ কিছু মধ্যপন্থী সুন্নি আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠছে।ইরানের উত্থান, উপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত পুরো অঞ্চল জুড়ে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি, এবং তাদের পারমাণবিক কর্মসুচিতে বিশেষ করে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে সৌদি আরব, মিশর এবং জর্ডন।এ পরিস্থিতির চাপে মধ্যপন্থী সুন্নি আরব কিছু দেশ ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে।ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কয়েক মাস আগেই লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, 'ইরানের আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য' তারা মধ্যপন্থী সুন্নি দেশগুলোর সাথে একটা 'কার্যকর জোট' গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন।তার মতে, আরব দেশগুলোর ইসরায়েলের প্রতি মনোভাবও নরম হচ্ছে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৬৪টি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।এগুলোর মধ্যে আমেরিকা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশ রয়েছে, যারা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২৯ টি রাষ্ট্র (মূলত মুসলমান অধ্যুষিত) এখনও ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়নি এবং দেশটির সাথে তাদের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।আলজেরিয়া, ক্যামেরুন, জিবুতি, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালি, নাইজার, পাকিস্তান ও তিনটি অমুসলিম দেশ (ভুটান, কিউবা ও উত্তর কোরিয়া) এখনো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না।মধ্য এশিয়ার কয়েকটি মুসলিম দেশ-কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও আজারবাইজান ইসরাইলের সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে বাহরাইনের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন বা বিদ্যমান অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি আঁচ করা যাচ্ছিল কয়েক সপ্তাহ ধরে। বিশেষ করে সরকারি বিবৃতি ও সফর বিনিময় থেকে তা স্পষ্ট। গত ১৩ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ইসরায়েল-বাহরাইন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা এসেছে।ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীক'রণের চুক্তি বা সমঝোতা করা আরবদেশগুলোর মধ্যে বাহরাইন চতুর্থ। এর আগে মিসর ও জর্দানও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও এর অধিকার প্রতিষ্ঠার আগেই আরবদেশগুলো যেভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা শুরু করেছে তাতে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাচ্ছে। এর কমবেশি প্রভা'ব পড়তে পারে অন্য অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোর ওপরও।উল্লেখ্য, এ মাসের শুরুতেই সৌদি আরব তার আকাশসীমা ইসরায়েলের ফ্লাইটগুলোকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার এক বিশ্লেষণে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, উপসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্র সৌদি আরব কিছুটা সময় নিলেও আগামী দিনগুলোতে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পথে হাঁটতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরব বিরোধিতা করলে বাহরাইন কখনোই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারত না।
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি বিরোধে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট। ফিলিস্তিনিদের স্বতন্ত্র-স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশ বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়েছে একেবারে শুরু থেকেই।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আরব রাষ্ট্রগুলো যখন পাকিস্তানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে তখনও কিন্তু বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরবদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে পিছপা হয়নি। ৭১ সালের ২ জুলাই ইসরায়েলের পার্লামেন্ট বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বেপরোয়া ধ্বংসলীলায় নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়। এমনকি ইসরাইল রেডক্রস বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা, শরণার্থীদের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঔষধ কাপড় ও খাবার পাঠায়।১৯৭১ সালে বাংলাদেশিদের পাকিস্তানি শোষণ থেকে বাঁচাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেইর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে খাদ্য সামগ্রী ও অস্ত্র পাঠান মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়ার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শুরুর দিকে যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল, তারমধ্যে ছিল ইসরায়েল।১৯৭২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল।তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল।সেই অবস্থানের পিছনে মূল বিষয় ছিল ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সমর্থন।৫০ বছর পরেও ইসরায়েল প্রশ্নে বাংলাদেশের সেই অবস্থানে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের বিশ্বের একটি দেশেই যাওয়া নিষেধ, সেটি ইসরায়েল।

পাসপোর্টে সেটি স্পষ্ট করে লেখা আছে।২০০৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশী সাংবাদিক সালেহ চৌধুরীকে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টার দায়ে ৭ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।তবে এর পরও কয়েক বছর ধরেই এ বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েলে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ইসরায়েলে ২২ হাজার ৪৩৫ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এর আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয় আট হাজার ৩৬৪ ডলারের পণ্য। অবশ্য গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছে ২০১০-১১ অর্থবছরে। সে বছর রপ্তানি হয় ৩০ হাজার ৫৪৫ ডলারের পণ্য। আর এর আগের অর্থবছরে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৮৬১ ডলার।বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে মূলত বিভিন্ন ধরনের পোশাকই ইসরায়েলে রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শার্ট, টি-শার্ট, জার্সি এবং ট্রাওজার্স। এর বাইরে অল্প কিছু সিরামিক পণ্যও ইসরায়েলে রপ্তানি হয়েছে।ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের ওয়েবসাইট থেকেও এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে। এতে দেখা যায় যে ২০১২ সালে বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েল ১৭ হাজার ৫৭১ ডলার ও ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ৫৫৮ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।
৭০ এর শেষে এবং ৮০র দশকে বাংলাদেশের অনেক তরুণ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও গিয়েছিল।১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে মেডিক্যাল টিম ও ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সহায়তা করে।বাংলাদেশের এই অবস্থানে যে অদূর ভবিষ্যতেও কোন পরিবর্তন আসবে, তেমন সম্ভাবনা একেবারেই দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এর কারণ যতটা না আন্তর্জাতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি বাংলাদেশের জনমত এবং আভ্যন্তরীণ রাজনীতি।সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ''ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে বাংলাদেশের ওপর খুব একটা চাপ আসবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে পরো'ক্ষ চা'প তো সব সময় আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য না করার মাধ্যমে আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউওটিও) শর্ত ভঙ্গ করছি, এমন অভিযোগও একবার উঠেছিল। পরে তা সামাল দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে আমাদের ওপর বড় কোনো চা'প সৃষ্টি হবে না। কারণ সৌদি আরব এই মুহূর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে না। যদিও সৌদি আরব ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এর পরও আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরব তা করবে না। সৌদি আরব যখন ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করবে তখন বাংলাদেশের ওপর চাপ আসার ভালোই আশঙ্কা আছে। তখন তো আমাদের বি'চ্ছি'ন্ন হয়ে থাকার কোনো কারণও থাকবে না।আরব দেশগুলো নিজেরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে; কিন্তু অন্যদের নিরুৎসাহিত করে—এমন দ্বিমুখী অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, তাদের সব সময় এই অবস্থান ছিল। তাদের যুক্তি হলো, ইসরায়েল তাদের প্রতিবেশী। তাদের অনেক সম'স্যা আছে। যেমন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ছাড়া জর্দানের সামনে আর কোনো উপায় ছিল না। বিশেষ করে মিসর সম্পর্ক স্থাপন করার পরে। জর্দানকে পানি কিনতে হয় ইসরায়েল থেকে।তিনি বলেন, যাদের সীমান্ত আছে, মানুষে মানুষে যোগাযোগ আছে তাদের সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু অন্যরা অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখত। বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে তো বহুদিন ধরে তাদের (ইসরায়েল) অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক আছে। ওমানের সঙ্গে আছে। সৌদি আরবের সঙ্গেও প্রচুর সম্পর্ক তাদের। কিন্তু তারা সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে না বা সামনে আনে না। যত দিন সৌদি আরব সামনের দিকে সম্পর্ক না নিয়ে আসছে তত দিন পর্যন্ত আমাদের ওপর চাপটা খুব বেশি থাকবে না।তুরস্ক সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম আনাদুলো এজেন্সিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা চাই, ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের ভূমির অধিকার ফিরে পাক। আমরা দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধানে বিশ্বাসী। ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি জেরুজালেমকে রাজধানী করে অবশ্যই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হতে হবে। আর এটাই আমাদের মূল ও নীতিগত অবস্থান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...