সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলিমবিশ্ব ও ইসরায়েল সম্পর্ক

 


মো.আবু রায়হানঃইসরায়েলের সাথে সম্পর্কের প্রশ্নে মুসলিম বিশ্বে একটা নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দেখা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি আরব দেশ যেন ইসরায়েলের ব্যাপারে তাদের বৈরি অবস্থান নমনীয় করছে।সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার আলোকে সাংবাদিক-বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব মোকাবিলা করতে বেশ কিছু মধ্যপন্থী সুন্নি আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠছে।ইরানের উত্থান, উপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত পুরো অঞ্চল জুড়ে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি, এবং তাদের পারমাণবিক কর্মসুচিতে বিশেষ করে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে সৌদি আরব, মিশর এবং জর্ডন।এ পরিস্থিতির চাপে মধ্যপন্থী সুন্নি আরব কিছু দেশ ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে।ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কয়েক মাস আগেই লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, 'ইরানের আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য' তারা মধ্যপন্থী সুন্নি দেশগুলোর সাথে একটা 'কার্যকর জোট' গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন।তার মতে, আরব দেশগুলোর ইসরায়েলের প্রতি মনোভাবও নরম হচ্ছে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৬৪টি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।এগুলোর মধ্যে আমেরিকা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশ রয়েছে, যারা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২৯ টি রাষ্ট্র (মূলত মুসলমান অধ্যুষিত) এখনও ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়নি এবং দেশটির সাথে তাদের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।আলজেরিয়া, ক্যামেরুন, জিবুতি, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, তিউনিসিয়া,মালি, নাইজার, ইয়েমেন,দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় মুসলিম রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ।এরমধ্যে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তরা। এছাড়া তিনটি অমুসলিম দেশ (ভুটান, কিউবা ও উত্তর কোরিয়া) এখনো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না।মধ্য এশিয়ার কয়েকটি মুসলিম দেশ-কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও আজারবাইজান ইসরাইলের সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কতিপয় আফ্রিকান অনারব মুসলিম রাষ্ট্র (চাদ, নাইজেরিয়া, গিনি, গিনি–বিসাউ, গাম্বিয়া, সেনেগাল, বার্কিনা ফাসো, আইভরি কোস্ট ও সিয়েরা লিয়ন), ২টি ইউরোপীয় মুসলিম রাষ্ট্র (আলবেনিয়া ও বসনিয়া–হার্জেগোভিনা) ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। এর পাশাপাশি 'ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা'র সদস্য কিন্তু মুসলিম–সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় এমন রাষ্ট্রগুলোও (বেনিন, ক্যামেরুন, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, টোগো, মোজাম্বিক, উগান্ডা, সুরিনাম ও গায়ানা) ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তদুপরি, আরো বেশকিছু মুসলিম রাষ্ট্রের (যেমন: সৌদি আরব,মরক্কো, নাইজার, মালি, সুদান, মৌরিতানিয়া প্রভৃতি) সঙ্গে ইসরায়েলের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে এবং এগুলোও ভবিষ্যতে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৯৪৮ সালে অবৈধ দখলদার ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পরের বছর মার্চ মাসে মুসলিম বিশ্বের প্রথম দেশ- তুরস্ক ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়।তাদের এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ভিত্তি ছিল সামরিক ও কূটনৈতিক। এখন তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে, দুদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতাও আছে অনেক ক্ষেত্রে। তুরস্কের পর ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বপ্রথম কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী দেশ ইরান। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের মিত্রতা শত্রুতায় রূপ নিয়েছে, সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষিত হলে প্রতিবেশী চারটি আরব দেশ মিসর, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক একযোগে ইসরায়েলকে আক্রমণ করে। সেই যুদ্ধে আরবেরা পরাজিত হয় এবং ইসরায়েল জাতিসংঘ পরিকল্পনায় তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের ৫৬ শতাংশের জায়গায় মোট ৭৭ শতাংশ দখল করে নেয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তনকে ফিলিস্তিনরা তাদের জন্য একটি 'বিপর্যয়' মনে করে। যে জায়গাটিতে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখান থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সে জায়গায় তারা আর কখনো ফিরে আসতে পারেনি।আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমাগত তিক্ততা এবং সীমান্তে ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ শুরু হয়।পাঁচদিনের যুদ্ধে মিশর, সিরিয়া এবং জর্ডানের সেনাবাহিনী ইসরায়েলের কাছে পরাস্ত হয়। ইসরায়েল গাজা উপত্যকা, মিশরের সিনান মরুভূমি, সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে।এ প্রথমবারের মতো ইহুদিদের জন্য পবিত্র জেরুজালেম ইসরায়েলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। সেখান থেকে বহু ফিলিস্তিনীকে বিতাড়িত করা হয়। সে যুদ্ধের পর আরবদের কাছে ইসরায়েলের পরিচিত গড়ে উঠে 'দখলদার' হিসেবে। নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণ শুরু করে ইসরায়েলে।১৯৬৭ সালে ৬ দিনের যুদ্ধে আরব দেশগুলো ইসরায়েল কর্তৃক যেসকল ভূমি হারিয়েছিল, সেগুলোর ফিরে পেতে ১৯৭৩ সালে অক্টোবর মাসে মিশর ও সিরিয়া একত্রে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই যুদ্ধের ফলাফল হিসেবে ১৯৭৮ সালে মিসরকে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি সাক্ষরে বাধ্য করে, প্রায় বারো দিনের গোপন আলোচনার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির বিশ্রাম স্থান হিসেবে পরিচিত মিশরের রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী মেনাখেম বেগিন ক্যাম্প ডেভিডে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন যা ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি নামে পরিচিতি পায়।এ চুক্তির ফলে ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডান ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তখন পর্যন্ত জর্ডান ছিল দ্বিতীয় আরবদেশ মিশরের পর ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেছে।প্রথম উপসাগরীয় দেশ হিসেবে এক মাসে আগে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। মৌরিতানিয়া ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল।যদিও পরবর্তীতে মৌরিতানিয়া স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এক মাস না পেরোতেই উপসাগরীয় দ্বিতীয় দেশ এবং মিসর, জর্ডান ও আমিরাতের পর আরব বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দিল বাহরাইন।মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের আপেক্ষিক বিচ্ছিন্নতা আরও শিথিল করতে এবং এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পেতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের বিস্তৃত কূটনৈতিক চাপের অংশ হিসেবে বাহরাইন এটি করতে সম্মত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এপি।এই রাষ্ট্রগুলোর বাইরে একটি আরব রাষ্ট্র রয়েছে, যেটির সঙ্গে এখনো ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, কিন্তু রাষ্ট্রটি ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে গোপনে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। রাষ্ট্রটি হচ্ছে উত্তর আফ্রিকার আরব–বার্বার অধ্যুষিত মরক্কো। ৪,৪৬,৫৫০ বর্গ কি.মি. আয়তনবিশিষ্ট এবং প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লক্ষ জনসংখ্যা–অধ্যুষিত আরব লীগের সদস্য এই রাষ্ট্রটি ১৯৫৬ সালের ৭ এপ্রিল ফ্রান্স ও স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।মরক্কোর জনসাধারণ ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধী ছিল। মরক্কোতে অতি প্রাচীনকাল থেকে ইহুদিদের বসবাস ছিল এবং ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণাকালে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের মধ্যে মরক্কোয় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইহুদি বসবাস করত। এ সময় মরক্কোতে বসবাসকারী ইহুদিদের সংখ্যা ছিল ২,৫০,০০০ থেকে ৩,৫০,০০০।১৯৫৬ সালে মরক্কো স্বাধীনতা লাভ করে এবং তখন থেকে আলাউয়ি রাজবংশ মরক্কোর শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। স্বাধীন মরক্কোতে সরকারিভাবে কোনো ইহুদিবিরোধী নীতি গ্রহণ করা হয়নি। রাজা পঞ্চম মোহাম্মেদ ইহুদিবিদ্বেষী ছিলেন না এবং মরক্কো স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রটির আইনসভায় ৩ জন ইহুদি সদস্য ছিল। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত মরোক্কান ইহুদিদের দেশত্যাগ নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু এ সময় বেআইনিভাবে মরোক্কান ইহুদিদের দেশত্যাগ অব্যাহত থাকে। ১৯৬১ সালে মরক্কো ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হয় এবং চুক্তি অনুযায়ী মরক্কোর সরকার দেশটির ইহুদিদের ইসরায়েলে গমনের অনুমতি প্রদান করে। বিনিময়ে দেশত্যাগকারী প্রত্যেক ইহুদির জন্য ইসরায়েল মরক্কোকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়।১৯৬১ সালে রাজা মোহাম্মেদের মৃত্যুর পর তার ছেলে দ্বিতীয় হাসান মরক্কোর নতুন রাজা হন। মরক্কোর ইতিহাসে হাসান একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব।মরক্কো সামরিক শক্তিবলে পশ্চিম সাহারা দখল করে নেয়। সর্বোপরি, হাসান আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান, কিন্তু গোপনে ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।১৯৬৭ সালের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলের পরিপূর্ণ বিজয়ে মরক্কোর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি আলোচনা চলাকালে মরক্কো তাদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।এভাবে ১৯৭৮ সালে স্বাক্ষরিত মিসর–ইসরায়েল শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে মরক্কো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।১৯৮৬ সালের ২৩ জুলাই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী শিমন পেরেজ মরক্কো সফর করেন এবং রাজা হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মরোক্কান সরকার এই সফরের বিষয়টি জনসাধারণের কাছ থেকে গোপন রাখার চেষ্টা করলেও ইসরায়েলি প্রচারমাধ্যমে এই তথ্যটি প্রকাশিত হয় এবং এর ফলে ইসরায়েলবিরোধী আরব রাষ্ট্রগুলো মরক্কোর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। সিরিয়া সাময়িকভাবে মরক্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। কিন্তু মরক্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক বজায় থাকে এবং ১৯৯০–এর দশকে জর্দান ও 'ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা'র ('Palestine Liberation Organization', PLO) সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রেও মরক্কো মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা গ্রহণ করে। ১৯৯৪ সালে পিএলও এবং ইসরায়েলের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মরক্কো ও ইসরায়েলের মধ্যে নিম্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।মরক্কো ও ইসরায়েলের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু তার মাত্রা খুব বেশি নয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মরক্কো ও ইসরায়েলের মধ্যে প্রায় ১৪ কোটি ৯০ লক্ষ (বা ১৯৪ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার সমমূল্যের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়েছে। রাষ্ট্র দুইটির মধ্যে অর্থনীতির যে খাতটি ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে সেটি হলো পর্যটন খাত। ইসরায়েলি পাসপোর্ট নিয়ে মরক্কোয় প্রবেশ করা যায়। ২০১৯ সালে প্রায় ৪৫,০০০ ইসরায়েলি পর্যটক মরক্কো ভ্রমণ করেছে, অন্যদিকে প্রায় ৩,০০০ মরোক্কান পর্যটক ইসরায়েল ভ্রমণ করেছে।বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এজন্য বলা যায়, ইসরায়েলের সঙ্গে মরক্কোর সম্পর্কের 'স্বাভাবিকীকরণ' এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।মালদ্বীপ-ইসরায়েল সম্পর্ক বলতে মালদ্বীপ ও ইসরায়েল এর মধ্যে গড়ে উঠা বৈদেশিক কুটনৈতিক সম্পর্ককেই বুঝায়। ১৯৭৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এই দুই দেশের মাঝে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিলনা। ২০০৮ এ মালদ্বীপের নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অধিবেশনে তার নিজ বক্তৃতায় ইসরায়েল এর সাথে মালদ্বীপের কুটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মুসলিম দেশ হিসাবে আভ্যন্তরীণভাবে এই মতের যথেষ্ট বিরোধিতা এসেছিল তবে সব ধরনের প্রতিকূলতা পেরিয়ে ২০০৯ এর ২৫শে সেপ্টেম্বর ইসরায়েল এর সাথে মালদ্বীপের কুটনৈতিক সম্পর্ক এর পত্তন ঘটে।ইউরোপের মুসলিম অধ্যুষিত কসোভাও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যে তারাও দখলদার ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে এবং একই সঙ্গে তারা ইসরায়েলের স্বীকৃতির পর জেরুজালেম আল কুদসে তাদের নিজস্ব দূতাবাস স্থাপন করবে।২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এককভাবে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। একই সঙ্গে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
ইসরায়েল থেকে সৌদি আরবের আকাশসীমার ওপর দিয়ে আবুধাবিতে উড়ে এলেন প্লেন ভর্তি মার্কিন সিনেটর, কংগ্রেসম্যান আর ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতারা। সৌদি আরব ঘোষণা দিয়েছে, এখন থেকে ইসরায়েলের জন্য তাদের আকাশসীমা উন্মুক্ত। এর আগে ইসরায়েলের নির্বাচনে নেতানিয়াহুর বিজয় নিশ্চি'ত করতে সৌদি আরব অর্থ ঢেলেছে বলে সংবাদ প্রকা'শিত হয়েছিল। সৌদি আরব তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ কখনো অস্বীকার করেনি।ওমান এবং সুদানও ইসরায়েলকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আরব লীগের সদস্য হওয়ায় ওমান ইসরাইলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি বটে তবে কয়েক বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে।ইসরায়েল এবং সুদানের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নেই, কিন্তু ইসরায়েলের আঞ্চলিক সহযোগিতা মন্ত্রী আইয়ুব কারার মতে, তারা গোপন সম্পর্ক বজায় রাখছে।২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম ঘান্দোর বলেছিলেন,যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তারা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে।২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সুদানের সভারেইনটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান উগান্ডায় মিলিত হন, যেখানে তারা উভয়েই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হন। ঐ মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলি বিমান সুদানের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।এছাড়া এ অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী দেশ সৌদি আরবও এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হতে পারে।সৌদি আরবও অলিখিত একটা সম্পর্ক তৈরি করেছে, এমন কথা শোনা যায়।
আমিরাত-ইসরায়েল শান্তি চুক্তির সময় ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী দ্য প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) একে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছিল, এটা ফিলিস্তিনের মানুষের পিঠে ছুরিকাঘাত। পিএলও এখন বলছে, বাহরাইন-ইসরায়েল চুক্তি ফিলিস্তিনিদের ওপর আরেকটি বিশ্বাসঘাতকতার ছুরিকাঘাত।
তবে চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে এর আগে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকারী তিন আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর এবং জর্ডান। আমিরাত বলছে, ইসরায়েল-বাহরাইন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে শান্তি ও পারস্পরিক সহযোহিতা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে তাদের বিশ্বাস। তবে আরব বিশ্বের মোড়ল এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব বাহরাইন-ইসরায়েল চুক্তি নিয়ে কোনো মন্তব্যই করেনি। আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মাত্র দুই দিন পর ইসরায়েল-বাহরাইন চুক্তির ঘোষণা আসলো। ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাহরাইনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফিলিস্তিনের অধিকার রক্ষার চেষ্টায় এটা এক নতুন আঘাত। ফিলিস্তিনে আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়া এবং ফিলিস্তিনের ভূমি দখল স্থায়ী করতে ইসরায়েলে অবৈধ প্রচেষ্টাকে এটি আরও উৎসাহিত করবে।চুক্তির পরপরই ইরান এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, বাহরাইন এখন থেকে ইসরায়েলের অপরাধের অংশীদার হয়ে গেল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘বাহরাইনের শাসকরা এখন থেকে এই অঞ্চল ও ইসলামের সুরক্ষার নিয়মিত হুমকি হিসেবে ইহুদিবাদী একটি সরকারের অপরাধের অংশীদার হবেন।’ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের বিবেকবান মানুষ এবং মুসলমানেরা কখনোই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকে মেনে নেবে না। পারস্য উপসাগরে ইসরায়েল কোনো অনিরাপত্তা সৃষ্টি করলে এর সম্পূর্ণ দায় বাহরাইনসহ ইসরায়েলের সহযোগী দেশগুলোকে বহন করতে হবে।
ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রই এখনো জোরালো সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি বিরোধে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট। ফিলিস্তিনিদের স্বতন্ত্র-স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশ বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়েছে একেবারে শুরু থেকেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শুরুর দিকে যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল, তারমধ্যে ছিল ইসরায়েল।১৯৭২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল।তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল।সেই অবস্থানের পিছনে মূল বিষয় ছিল ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সমর্থন।৫০ বছর পরেও ইসরায়েল প্রশ্নে বাংলাদেশের সেই অবস্থানে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের বিশ্বের একটি দেশেই যাওয়া নিষেধ, সেটি ইসরায়েল। পাসপোর্টে সেটি স্পষ্ট করে লেখা আছে। ৭০ এর শেষে এবং ৮০র দশকে বাংলাদেশের অনেক তরুণ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও গিয়েছিল।বাংলাদেশের এই অবস্থানে যে অদূর ভবিষ্যতেও কোন পরিবর্তন আসবে, তেমন সম্ভাবনা একেবারেই দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এর কারণ যতটা না আন্তর্জাতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি বাংলাদেশের জনমত এবং আভ্যন্তরীণ রাজনীতি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...