ইনশাআল্লাহ কখন বলবেন ?








ইনশাআল্লাহ বলা নিয়ে অনেকের মধ্যে ভুল পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। কোথায় ইনশাআল্লাহ, কোথায় আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয় তা নিয়ে অনেকে কনফিউশনে ভুগি। যেমন কাউকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছেন? তিনি বলে ফেললেন ইনশাআল্লাহ ভালো আছি। এটি ভুল। সঠিক হবে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতে হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোনো বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নত। যেমন- ইনশাআল্লাহ, আমি আগামীকাল আপনার কাজটি করে দেবো। পবিত্র কোরআনে কারিমে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন।আল্লাহ বলেন, তুমি কখনো কোনো বিষয়ে এ কথা বলো না যে আমি এটি আগামীকাল করব—‘ইনশাআল্লাহ’ কথাটি না বলে। যদি (কথাটি বলতে) ভুলে যাও, তাহলে (যখনই তোমার মনে আসবে) তোমার রবকে স্মরণ করো এবং বলো, সম্ভবত আমার রব আমাকে এর (গুহাবাসীর বিবরণ) চেয়ে সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করবেন। (সুরা কাহফ আয়াত ২৩-২৪ )। যখন মহানবী (সা.)-কে মক্কার কাফিররা আসহাবে কাহফ ও জুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল, তখন তিনি প্রশ্নের জবাব আগামীকাল দেবেন বলে এক ধরনের ওয়াদা করে ফেলেন। আশা ছিল, এর আগেই অহির মাধ্যমে এ ব্যাপারে অবগত হয়ে যাবেন এবং তাদের উত্তর প্রদানে সক্ষম হবেন। কিন্তু ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে ভুলে যান। ফলে পরের দিন অহি আসেনি। একাধারে কয়েক দিন অহি বন্ধ থাকে। অবশেষে অহি নাজিল হয়। প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কথার সঙ্গে ‘ইনশাআল্লাহ’ যোগ করার প্রতি স্বতন্ত্র নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে এ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে প্রত্যেক মুসলমানের ইনশাআল্লাহ বলতে অভ্যস্ত হওয়া উচিত। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে- হযরত ইয়াকুব (আ.), শোয়াইব (আ.), খিজির (আ.) ও ইসমাইল (আ.) কথা বলার সময় ‘ইনশাআল্লাহ’ পরিভাষা ব্যবহার করেছেন।
হযরত সুলায়মান (আ.) ইনশাআল্লাহ না বলায় পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন।একবার হযরত সুলায়মান (আ.) মনোভাব ব্যক্ত করলেন যে, রাত্রিতে আমি (আমার ৯০ বা ১০০) সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। যাতে প্রত্যেকের গর্ভ থেকে একটি করে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে ও পরে তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। কিন্তু এ সময় তিনি ইনশাআল্লাহ ( যদি আল্লাহ চান) বলতে ভুলে গেলেন। নবীর এ ত্রুটি আল্লাহ পছন্দ করলেন না। ফলে মাত্র একজন স্ত্রীর গর্ভ থেকে একটি অপূর্ণাঙ্গ ও মৃত শিশু ভূমিষ্ট হল। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত -৫৭২০) মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমরা সুলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং রেখে দিলাম তার সিংহাসনের উপর একটি নিষ্প্রাণ দেহ। অতঃপর সে রুজু হ’ল’ (সূরা সোয়াদ আয়াত-৩৪)। একটি গল্প বলে শেষ করি। এক লোক হাটে যাচ্ছিল গরু কিনতে। একজন পথচারী জিজ্ঞেস করল কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন? লোকটি বলল, হাটে গরু কিনবো। পথচারী লোকটি বলল ইনশাআল্লাহ বলেন, তখন লোকটি বলল দূর মিয়া পকেটে টাকা, বাজারে গরু কিসের ইনশাআল্লাহ? এরপর লোকটি হাটে গেল। কিন্তু ফিরে এলো খালি হাতে। ফেরার পথে আবার ঐ পথচারীর সঙ্গে দেখা। জিজ্ঞেস করল ভাই গরু কোথায়? লোকটি বলল ইনশাআল্লাহ পকেটমার টাকা মেরে দিছে।ইনশাআল্লাহ টাকা ছিনতাই হয়েছে। জাস্ট গল্পটি এজন্য বলা যে সময়মত সঠিকভাবে সঠিক ক্ষেত্রে যেন ইনশাআল্লাহ বলতে পারি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল