সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারত রৌমারী সীমান্তের পুনরাবৃত্তি ঘটালো লাদাখে


মো আবু রায়হানঃ বেশিদিন আগের কথা নয় । ২০০১ সালের ১৮ই এপ্রিল। বাংলাদেশ আর ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল ১৮ জন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছিল কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ৪৫ কি.মি. দূরে রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ীতে।রৌমারী উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ পূর্ব দিকে ১০ কি.মি. দূরে বড়াইবাড়ী গ্রাম।আসাম সীমান্তের কাছাকাছি ২২৬ একর জমি নিয়ে বড়াইবাড়ী গ্রাম। যার আন্তর্জাতিক পিলার নম্বর ১০৬৭/৪ এস।
তৎকালীন বিডিআর-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এএলএম ফজলুর রহমানের জানতে পারেন যে ভারতীয় বিএসএফ নোম্যান্স ল্যান্ডের উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে বাংলাদেশের এলাকা সিলেটের পদুয়াকে কানেক্ট করছে এবং পদুয়াতে অস্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প করেছে। বিডি’আরের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিবাদ করার পরও ভারতীয় পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা করা হলোনা এমনকি ফ্ল্যাগ মিটিং-এও রাজি হলো না তারা। বাংলাদেশের সার্বভৌম এলাকার উপরে এই রকম আচরণে এপ্রিলের ১৫-১৬ তারিখ রাতে মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানের নির্দেশে চার শ’র মতো ফোর্স পদুয়াতে মুভ করে পদুয়ায় ভারতীয় বিএসএফ ক্যাম্প ঘেরাও করে ফেলে।বিএসএফের ওখানে প্রায় ৭০ জনের মতো সৈন্য ছিল। মাত্র ছয়টা ফায়ার করার পরেই বিএসএফ সৈন্যরা সেখানে সারেন্ডার করে। বিডি’আর পদুয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ১৬ তারিখে নেগসিয়েশন শুরু হলো ইন্ডিয়ার সঙ্গে।কথা ছিল নেগোসিয়েশন চলাকালিন কোন পক্ষই সামরিক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকবে। এই নেগসিয়েশন যখন সিলেটের ডাহুকীতে চলছিল- তখন ভারত বিশ্বাসঘাতকতা করে বাংলাদেশের অজান্তে ১৮ এপ্রিল ভোরের আলো ফোটার আগেই, পাদুয়া থেকে প্রায় দুশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী এলাকার বিডিআর ক্যাম্প ও ঐ এলাকাকে দখলে নিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিএসএফের সমন্বয়য়ে গঠিত প্রায় ৫০০ ফোর্স বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢোকে।

১৭ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বড়াইবাড়ী বিওপিতে ডিউটিতে ছিলেন মাত্র ১০ জন বিডিআর সদস্য। ভোর ৫টার দিকে সীমান্তের ওপার থেকে আসা ভারী অস্ত্রে সুসজ্জিত বিএসএফ বাহিনী কোন প্রকার কারণ ছাড়াই অতর্কিতে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের ভূখন্ডে। ১০৬৭/৩ পিলার অতিক্রম করে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্পের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে।বিএসএফ স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক লালমিয়াকে সামনে পেয়ে বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্পের কথা জানতে চাইলে সুচতুর লাল মিয়া ক্যাম্পের পরিবর্তে ক্যাম্পের মতো একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে দেয়। বিএসএফ সদস্যরা বিডিআর ক্যাম্প ভেবে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগুতে থাকে সেদিকে। এরমধ্যে লাল মিয়া দৌড়ে গিয়ে বড়াইবাড়ী ক্যাম্পের বিডিআর জোয়ানদের খবর দেয়।বিডিআর জোয়ানও গ্রামবাসী তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্পসহ আশপাশের গ্রাম তাদের দখলে নিতে এ বর্বরোচিত আক্রমণ মিশন পরিচালনা করে। ভোররাত থেকে ছয়ঘন্টা টানা সংঘর্ষ চলার সময় দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে জরুরী কথাবার্তা চলছিল। কিন্তু তাতেও সংঘর্ষ থামেনি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বহু সদস্য নিহত হওয়ার পরই কেবল তারা পিছু হটে।বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানায় ফেলে যায় ১৮টা মৃতদেহ ।বিএসএফ এর তাণ্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯টি বাড়ি ঘর। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ টাকা। যুদ্ধে বিডিআর এর ৩ জন সৈন্য শহিদ এবং ৫ জন আহত হন।শহীদ হন ৩৩-রাইফেল ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান ও ২৬-রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহী আব্দুল কাদের। এ ঘটনায় আহত ৫ বিডিআর সদস্য হলেন হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহী হাবিবুর রহমান ও সিপাহী জাহিদ নবী। অপরদিকে ভারতের ১৮ জন বিএসএফ সদস্য নিহত এবং ২ জন আত্মসর্মপণ করে। পরে কামালপুর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ ও গ্রেফতারকৃতদের ফেরত দেয়া হয়। ২১ এপ্রিল বড়াইবাড়িতে ১০৬৭নং পিলারের নিকট পতাকা বৈঠকের জন্য বিডিআর চিঠি দেয় বিএসএফকে। পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল শায়রুজ্জামান।সেদিনের
বীরদের জাতি মনে রাখবে- নায়েব সুবেদার আবদুল্লাহ, হাবিলদার নজরুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক ফজলুল হক, ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহি মোয়াজ্জেম হোসেন, ইদ্রিস আলী, আবদুল হামিদ, লিটন মিয়া, বদরুজ্জামান, এফএসের নায়েক জালালউদ্দিন মিয়া ও সিপাহি ইছহাক আর তাদের যোগ্য নেতা মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানকে।পরবর্তীতে বিডিআরের সেই ১০ জন অফিসারদের বীরসেনানী সম্মাননা দেওয়া হয়।শহিদ ৩ বিডিআর সদস্যের স্মৃতি স্তম্ভ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে বড়াইবাড়ী ক্যাম্পে উদ্বোধন করা হয়।১৮ এপ্রিল ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
স্মৃতি সৌধ


বাংলাদেশের ইতিহাসে ভারতের সঙ্গে সীমান্তে এরকম সংঘর্ষের নজির আর নেই। বিডিআর –বিএসএফ-এর সেই সংঘর্ষের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক শীতলতা তৈরী হয়। সীমান্ত জুড়ে এক অস্থিরতা তৈরী হয়। ভারত পাল্টা আক্রমন করতে পারে – এমন আশংকা ছিল সীমান্তবর্তী বাংলাদেশীদের মধ্যে। ধারণা করা হয় ১৬ এপ্রিল সিলেটের পাদুয়া অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে দখল করতে গিয়ে বিডিআর জোয়ানদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে শোচনীয় পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই তারা এ আক্রমণ চালায়।সিলেটের পাদুয়া গ্রামের কাছাকাছি একখন্ড ছোট ভূমি যার পরিমাণ ২৩০ একর। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। ১৯৭১ সালে জায়গাটি ভারতীয় সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ব্যবহার করত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভারত এই ভূমি তাদের বলে দাবি করে কিন্তু ১৯৭১ সালেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এখানে একটি ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। সেই সময়ে বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছিল ও ভারতের ভেতর বাংলাদেশের ৫০টি ছিটমহল ছিল। পাদুয়া গ্রামটি ভারতীয় অধ্যুষিত ছিল, কিন্তু আইনত এটি ছিল বাংলাদেশের মালিকানাধীন ভূখন্ড (নতুন সীমান্ত চুক্তি ও জনসংখ্যা বিনিময়ের পূর্ব পর্যন্ত)। জাতিগতভাবে খাসিয়ারা এখানে বসবাস করত।২০০১ সালের ১৫ এবং ১৬ এপ্রিল সিলেট সীমান্তে পদুয়ায়, ১৮ এপ্রিল কুড়িগ্রামের রৌমারী এবং ১৯ এপ্রিল পুনরায় পদুয়া সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের সাথে বিডিআরের সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়। এই তিনটি যুদ্ধেই বাংলাদেশের সে সময়ের বিডিআরের সেনারা বিজয় অর্জন করে।
লাদাখে যা ঘটেছিল-
পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে এক কর্নেল-সহ ২০ জওয়ানের মৃত্যুর খবর আগেই নিশ্চিত করেছিল ভারতীয় সেনা।হাতাহাতি, পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি থেকে শুরু করে, রড, লাঠি, ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। মধ্যরাতের পর তা থেমে যায়।অনেক দেহ নদী থেকে টেনে তোলা হয়।অনেকে এতটাই আহত ছিল যে, সকালে মারা যায়।ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার রাতে গালওয়ান ভ্যালির লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ভারত-চিন সীমান্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় একটি নির্দিষ্ট সময় পর পিছিয়ে যাবে চিনের সেনা। এক ঘণ্টা পর ৫০-৬০ জন ভারতীয় সেনাকে নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বের হয় কর্নেল সন্তোষ বাবু। সেই সময় চিনা সেনার তৈরি করা তাবু ভাঙতে ভাঙতে এগোতে থাকে তাঁরা। ভাঙা পড়ে চিনা সেনার একটি নজরদারি পোস্টও।জানা যায়, এরপরই প্রায় ২৫০ চিনা সেনা ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালায়। দু’পক্ষে শুরু হয়ে যায় তুমুল হাতাহাতি।এই সংঘর্ষে কর্নেল সন্তোষ বাবু সহ ২৪ জন সৈন্যের মৃত্যু হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...