সাংবিধানিকভাবে ঘোষিত ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দেশগুলো


মুসলিম প্রধান দেশসমূহে ধর্মীয় অবস্থা বিবেচনা করে দেশগুলোকে চারটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে।ক. ইসলামি রাষ্ট্র-রাষ্ট্রীয় কার্যে ইসলামকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ।খ.দেশ ধর্ম-ধর্মীয় সংগঠন বা ধর্ম বিশ্বাস রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন।গ. ধর্মনিরপেক্ষ-রাষ্ট্র-রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় বিষয়সমূহে নিরপেক্ষতা ঘোষণা নেই। ঘ. আনুষ্ঠানিক বা সরকারিভাবে কোন বক্তব্য নেই।বিশ্বে সাংবিধানিকভাবে ঘোষিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র দেশ চারটি-
১. ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তান
২. ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান
৩. ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান
৪. ইসলামিক রিপাবলিক অব মৌরিতানিয়া
এসব দেশে ইসলামি আইন পুরোপুরি বলবদ নেই বললেই চলে। শিয়া অধ্যুষিত ইরানে কিছুটা ইসলামি আইন চালু আছে।পাকিস্তানে খুবই নগণ্য।বাকি দেশ আলঙ্কারিক ইসলামি প্রজাতন্ত্র।The classical sharia system is exemplified by Saudi Arabia and some other Gulf states. Iran shares many of the same features, but also possesses characteristics of mixed legal systems, such as a parliament and codified laws.
আফগানিস্তান
আফগানিস্তান যার সরকারি নাম  Islamic Republic of Afghanistan.দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। দেশটি ইরান, পাকিস্তান, চিন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যস্থলে একটি ভূ-বেষ্টিত মালভূমির উপর অবস্থিত। আফগানিস্তানকে অনেক সময় দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অংশ হিসেবেও গণ্য করা হয়। আফগানিস্তানের পূর্বে ও দক্ষিণে পাকিস্তান পশ্চিমে ইরান, উত্তরে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান এবং উত্তর-পূর্বে গণচীন।ভূমিবেষ্টিত সুউচ্চ পর্বতময় এবং উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্তে সমভূমিবেষ্টিত আফগানিস্তানের আয়তন ৬,৫২,২৩০ বর্গ কিমি আয়তন। দেশটি পৃথিবীর ৪১তম বৃহত্তম দেশ।আফগানিস্তান শব্দটির অর্থ আফগান (তথা পশতুন) জাতির দেশ।আফগানিস্তানের বর্তমান সীমারেখা ১৮শ শতকের শেষ দিকে দেশটিকে রুশ ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী "বাফার" অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হয়। এই কৃত্রিম সীমান্ত বহু জাতির ঐতিহ্যবাহী বাসস্থলকে ভাগ করে ফেলে, যাদের মধ্যে আছে পশতু, তাজিক ও উজবেক। বহু যুদ্ধ আফগানিস্তানে জাতিগত বিদ্বেষ জিইয়ে রাখে। এমনকি এখনও আফগানিস্তানে অনেকে জাতি ও আত্মীয়তার বন্ধন রাষ্ট্রীয় বন্ধনের চেয়ে বড় হিসেবে গণ্য করেন।আফগানিস্তানে এ পর্যন্ত একটিমাত্র সরকারি আদমশুমারি সম্পন্ন হয়েছে, ১৯৭৯ সালে। সেটি অনুযায়ী আফগানিস্তানের জনসংখ্যা ছিল প্রায় দেড় কোটি। ২০০৬ সালে এই জনসংখ্যা ৩ কোটি ১০ লক্ষে গিয়ে পৌঁছেছে বলে ধারণা করে হয়।আফগানিস্তানে বহু বিচিত্র জাতির বসবাস। এদের প্রায় সবাই মুসলিম।Criminal law in Afghanistan continues to be governed in large part by Islamic law. The 1976 Criminal Code introduced a quasi-secular system for all tazir offenses, but provided for application of hududqisas and diya according to the principles of Hanafi jurisprudence. In practice, as of 2003, the 1976 code was not widely applied, and virtually all courts, including the Supreme Court of Afghanistan, relied on Islamic law directly.মধ্য এশিয়া, চীন, ভারতীয় উপমহাদেশ ও ইরান-এই চার সাংস্কৃতিক অঞ্চলের মিলন ঘটেছে এখানে। ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল ভাষাগত ও জাতিগত বৈচিত্র্য।আফগানিস্তানের মানুষ ইরান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান,মঙ্গোলিয়া,চীন, আরব উপদ্বীপ ও আরও বহু জায়গা থেকে এসেছেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের চলাচল, রাজনৈতিক বিপ্লব, আক্রমণ, রাজ্যবিজয় ও যুদ্ধ বহু মানুষকে এই অঞ্চলে নিয়ে আসে। এদেরই কেউ কেউ আফগানিস্তানকে নিজের মাতৃভূমি বানিয়ে নেয়। রাজনৈতিক দল ও জাতিসত্তার ধারণা বহু পরে এই বিচিত্র জাতি-সমাহারের ওপর অনেকটা চাপিয়ে দেয়া হয়।
আফগানিস্তান প্রশাসনিকভাবে ৩৪টি প্রদেশ বা ওয়েলায়েত-এ বিভক্ত। প্রতি প্রদেশের নিজস্ব রাজধানী আছে। প্রদেশগুলি আবার জেলায় বিভক্ত। একেকটি জেলা সাধারণত একটি করে শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নিয়ে গঠিত।নিচে আফগানিস্তানের সবগুলি প্রদেশের নাম দেয়া হল- ১. বাদাখশান, ২. বাদগিস, ৩. বাগলান, ৪. বাল্‌খ, ৫. বামিয়ান, ৬. দাইকুন্ডি, ৭. ফারাহ, ৮. ফারিয়াব, ৯. গজনি, ১০. ঘাওর, ১১. হেলমান্দ, ১২. হেরাত, ১৩. জোওয্‌জান, ১৪. কাবুল, ১৫. কান্দাহার, ১৬. কাপিসা, ১৭. খোস্ত, ১৮. কুনার, ১৯. কুন্দুজ, ২০. লাগমান, ২১. লোওগার, ২২. নানকারহার, ২৩. নিমরুজ, ২৪. নুরেস্তান, ২৫. ওরুজ্‌গান, ২৬. পাক্‌তিয়া, ২৭. পাক্তিকা, ২৮. পাঞ্জশির, ২৯. পারভান, ৩০. সামাংগান, ৩১. সারে বোল, ৩২. তাখার, ৩৩. ওয়ার্দাক, ৩৪. জাবুল।
১৯৭৯ সালের সোভিয়েত আক্রমণের ফলে অনেক আফগান দেশের বাইরে উদ্বাস্তু হিসেবে পাড়ি জমান। এদের মধ্যে ৩০ লক্ষ যান পাকিস্তানে, এবং প্রায় ১৫ লক্ষ চলে যান ইরানে। এছাড়া প্রায় দেড় লাখ আফগান স্থায়ীভাবে বিদেশে পাড়ি জমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে বসতি স্থাপন করেন। ২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর অনেক উদ্বাস্তু দেশে ফেরত আসতে থাকেন। ২০০২ সাল নাগাদ প্রায় ১৫ লক্ষ উদ্বাস্তু পাকিস্তান থেকে এবং প্রায় ৪ লক্ষ উদ্বাস্তু ইরান থেকে ফেরত আসেন। তবে এদের সঠিক পুনর্বাসন আফগান সরকারের জন্য সংকটের সৃষ্টি করেছে। বহু উদ্বাস্তু স্থলমাইন-সঙ্কুল, বিমান-আক্রমণে বিধ্বস্ত ও পানির অভাবগ্রস্ত খরা এলাকায় বাস করছেন।
পাকিস্তান
পাকিস্তান সরকারীভাবে Islamic Republic of Pakistan।দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র।আয়তন ৮ লাখ ৮১ হাজার ৯১৩ বর্গ কিমি এবং আয়তনের দিক থেকে ৩৩তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। ২১,২৭,৪২,৬৩১ এর অধিক জনসংখ্যা নিয়ে এটি জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র।পাকিস্তানের দক্ষিণে আরব সাগর এবং ওমান উপসাগরীয় উপকূলে ১০৪৬ কিলোমিটার ।উপকূল রয়েছে এবং এটি পূর্ব দিকে ভারতের দিকে, আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমে, ইরান দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চীন সীমান্তে অবস্থিত।এটি উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোরের দ্বারা তাজিকিস্তান থেকে সংকীর্ণভাবে বিভক্ত এবং ওমানের সাথে সমুদ্রের সীমান্ত ভাগ করে। ফার্সি ও উর্দু ভাষায় পাকিস্তান অর্থ- পবিত্র স্থান বা এলাকা। ফার্সি ও পশতু শব্দ পাক অর্থ- পবিত্র।আর শব্দাংশ ـستان (-স্তান) একটি তৎসম-ফার্সি শব্দ যার অর্থ স্থান বা এলাকা।চৌধুরী রহমত আলী Now or Never পুস্তকে এ নামটির প্রস্তাব দেন।আরবি ভাষায় এর অর্থ মদিনা-এ-তৈয়্যাবা বা পবিত্র স্থান, মদিনা শব্দের অর্থ এলাকা এবং তৈয়্যাবা অর্থ পবিত্র।Until 1978 Islamic law was largely restricted to personal status issues. Zia ul Haq introduced Sharia courts and made far reaching changes in the criminal justice system. Articles 203a to 203j of the constitution establish a sharia court with the power to judge any law or government actions to be against Islam, and to review court cases for adherence to Islamic law.The penal code includes elements of sharia. Under article 5, section 2 of the Ordinance No. VII of 1979, whoever is guilty of zina, "if he or she is a muhsan, be stoned to death at a public place; or if he or she is not a muhsan, be punished, at a public place, with whipping numbering one hundred stripes".Under a 2006 law, rape cases can be heard under civil as well as Islamic law.
২০১৭ সালের আদমশুমারীর প্রদেশের তথ্য অনুসারে, বর্তমান জনসংখ্যা ২০.৭৮ কোটি যা গত ১৯ বছরে ৫৭% বৃদ্ধি পেয়েছে যা পৃথিবীর জনসংখ্যায় ২.৬% অবদান রেখেছে।১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ব্রটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর ভারতীয় উপমহাদেশ বিভাজনের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান এ' দুটি দেশের জ‌ন্ম হয়। তারমধ্যে ছিল পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)।তারপর পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) এর সাথে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে যুদ্ধ শুরু হয়ে টানা নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান পরাজিত হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডটি কয়েকটি প্রশাসনিক অঞ্চলেবিভক্ত।যথা-পাঞ্জাব,সিন্ধ্,খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান,ফেডারেল শাসিত উপজাতীয় এলাকা ,পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর,গিলগিত-বালতিস্তান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল।পাকিস্তানের প্রশাসনিক এককসমূহ ৪টি প্রদেশ, ১টি কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা, ২টি স্বশাসিত ও বিতর্কিত এলাকা এবং কেন্দ্র শাসিত একটি উপজাতীয় গোষ্ঠী এলাকা দ্বারা গঠিত। পাকিস্তানে ৩৪টি বিভাগ, ১৪৯টি জেলা (জিলা), ৫৮৮টি উপজেলা (তহশিল) এবং কয়েক হাজার ইউনিয়ন কাউন্সিল (শেরওয়ান) এর সমন্বয়ে ৩টি নিম্ন স্তরের সরকার রয়েছে।
ইরান
ইরান যার সাংবিধানিক নাম Islamic Republic of Iran.দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। সৌদি আরবের পর ইরান মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ।দেশটির মোট আয়তন ১৬,৪৮,০০০ বর্গকিলোমিটার।ইরান ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সম্পর্কিত অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্যের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত। এর উত্তরে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, কাস্পিয়ান সাগর ও তুর্কমেনিস্তান; পূর্বে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান; দক্ষিণে ওমান উপসাগর, হরমুজ প্রণালী ও পারস্য উপসাগর, এবং পশ্চিমে ইরাক ও তুরষ্ক। তেহরান ইরানের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী; শহরটি ইরানের উত্তর অঞ্চলে অবস্থিত।ইরান বিশ্বের সবচেয়ে পর্বতময় দেশগুলির একটি; এখানে হিমালয়ের পরেই এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দামভান্দ অবস্থিত। দেশটির জনগণ জাতিগত ও ভাষাগতভাবে বিচিত্র হলেও এরা প্রায় সবাই মুসলিম। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলটি ইসলামের শিয়া মতাবলম্বীদের কেন্দ্র।ইরানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার আছে। পারস্য উপসাগরের অন্যান্য তেলসমৃদ্ধ দেশের মতো ইরানেও তেল রপ্তানি ২০শ শতকের শুরু থেকে দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে বর্তমান ইরান ছিল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্য পারস্যের কেন্দ্র। প্রায় ২০০০ বছর ধরে এ অঞ্চলের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে ইরান নামে ডাকত। ইরান নামটি এই এলাকায় বসতি স্থাপনকারী আর্য গোত্রের নাম থেকে নেয়া। কিন্তু গ্রিকরা এই অঞ্চলকে পার্সিস (বর্তমান ইরানের ফার্স প্রদেশ) বলে ডাকত, এবং সেখান থেকে ইউরোপীয় ভাষায় এর নাম হয় পার্সিয়া ,যা বাংলায় লিপ্যন্তর করা হয় পারস্য হিসেবে। ১৯৩৫ সালে ইরানের শাসক দেশটিকে কেবল "ইরান" বলে ডাকার অনুরোধ জানানোর পর থেকে এখন এই নামেই সারা বিশ্বে দেশটি পরিচিত। ১৫০১ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত রাজতন্ত্রী ইরান হয় শাহ কিংবা রাজারা শাসন করতেন। ১৯৭৯ সালে ইরানী বিপ্লব গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় এবং ইরানে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্থাপন করে।Article 167 of the constitution states that all judicial rulings must be based upon "authoritative Islamic sources and authentic fatwa". Book 2 of the Islamic Penal Code of Iran is entirely devoted to hudud punishments. Iranian application of sharia has been seen by scholars as highly flexible and directly contradicting traditional interpretations of the sharia.
ইরান একটি বহু-সাংস্কৃতিক দেশ যেখানে অনেক উপজাতীয় এবং ভাষাগত দল রয়েছে।২০০৬ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ইরানের জনসংখ্যা ৭,০০,৪৯,২৬২। এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশের বয়স ১৫ বছর বা তার কম। ইরান জাতিগতভাবে ও ভাষাগতভাবে বিচিত্র এক দেশ। কিছু কিছু শহরে, যেমন তেহরানে, বিভিন্ন জাতির লোকের সহাবস্থান পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও ইরানের বাইরে প্রবাসে আরও প্রায় ৪০ লক্ষ ইরানি নাগরিক বসবাস করেন। এরা মূলত উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, তুরস্ক, পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহ এবং অস্ট্রেলিয়াতে বাস করেন। সিআইএ ফ্যাক্টবুক অনুসারে ইরানের জাতিগুলি এরকম: পারসিক জাতি ৫১%, আজেরি জাতি ২৪%, গিলাকি জাতি ও মাজান্দারানি জাতি ৮%, কুর্দি জাতি ৭%,আরব জাতি ৩%, লুর জাতি ২%, বেলুচি জাতি ২%, তুর্কমেন জাতি ২% এবং অন্যান্য ১% ।ইরানে মূলত তিনটি ভাষাপরিবারের ভাষা প্রচলিত: ইরানীয় ভাষাসমূহ, তুর্কীয় ভাষাসমূহ এবং সেমিটীয় ভাষাসমূহ।সবচেয়ে বেশি ভাষাভাষীবিশিষ্ট ও ভৌগোলিকভাবে সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত হল ইরানীয় ভাষাপরিবারের সদস্য ভাষাগুলি। এদের মধ্যে ফার্সি ভাষা প্রধানতম ভাষা। ফার্সি ইরানের জাতীয় ভাষা। ইরানের ফার্স প্রদেশে প্রচলিত ভাষা থেকে এর উৎপত্তি এবং এর লিখিত ভাষার ইতিহাস ১০০০ বছরেরও বেশি পুরনো।আধুনিক ফার্সি ইরানের সরকারি ভাষা। ফার্সি একটি প্রাচীন সাহিত্যিক ভাষা। ৭ম শতাব্দীতে আরবদের আক্রমণের আগে এটি পাহলভী লিপিতে লেখা হত। ৯ম ও ১০ম শতাব্দীতে ভাষাটি আরবি লিপি ব্যবহার করতে শুরু করে। ১৯৫০ সাল পর্যন্তও কথ্য ফার্সির অনেকগুলি স্বতন্ত্র উপভাষা ছিল, তবে এর পর সরকারি শিক্ষা ও গণমাধ্যমের প্রসারের ফলে একটি মান্য কথ্য ফার্সির উদ্ভব ঘটেছে। এছাড়া কিছু সংখ্যালঘু ভাষাভাষী আছে যাদের নিজস্ব প্রচার মাধ্যম ও প্রকাশনা আছে।এদের মধ্যে তুর্কী ভাষা আজেরি,কুর্দী, আরবি ও আর্মেনীয় প্রধান।
মৌরিতানিয়া
মৌরিতানিয়া সরকারিভাবে যা  Islamic Republic of Mauritania. মৌরিতানিয়া মাগরেব অঞ্চলের দেশ।মাগরেব উত্তর আফ্রিকার একটি অঞ্চল। বর্তমানে মাগরেব বলে মরক্কো, আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়ার সমগ্র অঞ্চলকে বোঝানো হয়। ব্যাপক অর্থে লিবিয়া ও মোরিতানিয়াকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অতীতে আরবি ভাষায় মাগরেব বলতে অবশ্য দেশ তিনটির যেসব অংশ সুউচ্চ অ্যাটলাস পর্বতমালার উত্তরে ও ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত ছিল, সেগুলোকে বোঝানো হতো। আফ্রিকার একাদশতম বৃহত্তর রাষ্ট্র এটি।
এর পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তরে পশ্চিম সাহারা, উত্তর-পূর্বে আলজেরিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে মালি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে সেনেগাল।আয়তন এক লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার।জনসংখ্যা চার লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৪।জন ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩.৪ জন।প্রাচীন রাজ্য মৌরিতানিয়া থেকে দেশটির নামকরণ। প্রাচীন দেশটির স্থিতি ছিল খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় থেকে সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত, যা আজকের মৌরিতানিয়া থেকে অনেক উত্তরে। ওই অঞ্চলে বর্তমানে মরক্কো ও আলজেরিয়ার অবস্থান। মৌরিতানিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ ভূমিই সাহারার মধ্যে। দক্ষিণের দিকে বেশি ঘনবসতি। একসময় ফরাসি উপনিবেশ ছিল। দেশটির প্রায় শত ভাগ লোকই মুসলমান।The Penal Code contains Sharia crimes such as heresy, apostasy, atheism, refusal to pray, adultery and alcohol consumption. Punishments include lapidation, amputation and flagellation.১৯৪৬ সালে মোরিতানিয়াকে ফ্রান্সের একটি বহিঃস্থ প্রশাসনিক অঞ্চল বানানো হয়। ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলে মোরিতানিয়াতে দাসপ্রথা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়।১৯৫৮ সালের ২৮শে নভেম্বর মৌরিতানিয়া নিজেকে ফরাসি ৫ম প্রজাতন্ত্রের অধীনস্থ একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে। ঠিক দুই বছর পরে ১৯৬০ সালের ২৮শে নভেম্বর এটি সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৬১ সালে দেশটি জাতিসংঘে যোগদান করে।
গাম্বিয়া
গাম্বিয়ার রাষ্ট্রীয় নাম  Republic of The Gambia। পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। এটি আফ্রিকা মহাদেশের মূল ভূখন্ডের ক্ষুদ্রতম দেশ। এটি উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে সেনেগাল দ্বারা পরিবেষ্টিত। পশ্চিমে রয়েছে আটলান্টিক মহাসাগর। গাম্বিয়া নদী দেশটির মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হয়েছে। গাম্বিয়া সাগর উপকূল থেকে প্রায় মহাদেশের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার অভ্যন্তর পর্যন্ত চলে গেছে। তবে এর সর্বোচ্চ প্রস্থ মাত্র ৫০ কিলোমিটার। বন্দর শহর বাঞ্জুল দেশটির রাজধানী।সেরেকুন্দা দেশের বৃহত্তম শহর। গাম্বিয়া একসময় ছিল পর্তুগিজ উপনিবেশ। ১৯ শতকে ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৯৬৫ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে।
স্বাধীনতার পর দেশটি একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গণ্য হয়। ১৯৯৪ সালে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হয় এবং সামরিক নেতা ইয়াহইয়া জাম্মেহ তাঁর স্থান নেন। জাম্মেহ পরবর্তীকালে গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী হন। ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর দেশটিকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।Following the proclamation of a republic in 1970, the long-form name of the country became Republic of The Gambia. The administration of Yahya Jammeh changed the long-form name to Islamic Republic of The Gambia in December 2015.দেশের মোট আয়তন ১০ হাজার ৩৮০ বর্গকিলোমিটার, যেখানে বাস করে ২০ লাখ ৯২ হাজার ৭৩১ জন মানুষ। (ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক) এখানকার ৯৫.৭ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী দেশটির অধিকাংশ মানুষ সুন্নী মুসলমান। তারা মূলত মালেকী মাযহাবের অনুসারী। তবে কিছু শিয়া মতালম্বীও রয়েছে।Article 7 of the constitution identifies sharia as source of law in matters of personal status and inheritance among members of communities to which it applies.গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে জাতিসংঘে সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আইসিজে-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। এই অভিযোগে গাম্বিয়া বলেছে, রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালানোর মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে গৃহীত জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমার। দেশটি বলছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ৫৭ জাতির সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স বা ওআইসি'র পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত ওআইসি'র ১৪তম সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আইসিজে-এ তুলে ধরার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য ওআইসি'র এড-হক মিনিস্ট্রিয়াল কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়। গাম্বিয়া এ কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে।একটি রায়ও প্রদান করা হয়েছে।
গ্রন্থনায়-মো.আবু রায়হান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল