যে যুদ্ধ থামিয়ে দিল মুসলমানদের ইউরোপ জয়
চার্লস মার্টেল হাতুরি হাতে |
মো.আবু রায়হানঃমহানবী (সা.) এর ওফাতের একশ বছরের মাথায় বিশ্ব ইতিহাসে ঘটল টুরসের যুদ্ধ।যা একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণকারী যুদ্ধ। যে যুদ্ধে পরাজয়ে থেমে গেল মুসলমানদের ইউরোপ জয়।বিশ্ব ইতিহাসে এই যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম।ঐতিহাসিক Godefroid Kurth বলেন, “must ever remain one of the great events in the history of the world, as upon its issue depended whether Christian Civilization should continue or Islam prevail throughout Europe.” টুরসের যুদ্ধ সম্পর্কে জানার আগে আসুন পটভূমি জেনে আসি। ইসলামের ইতিহাসে উমাইয়া আমলকে বলা হয় সম্প্রসারণের যুগ বা The age of expansion। মুসলমানরা একদিন বিশাল পারসিক সাম্রাজ্য পদানত করলো।ধীরে ধীরে অধিকৃত হল সিরিয়া, আর্মেনিয়া ও উত্তর আফ্রিকাসহ বাইজান্টাইনীয় সাম্রাজ্যের বৃহত্তর অংশও। ৭১১ সালে জিব্রাল্টারে তারিক বিন জিয়াদের অবতরণের মাধ্যমে আইবেরিয়ান উপদ্বীপে তথা স্পেনে মুসলিম আরবদের অভিযান শুরু। তারিক বিন জিয়াদ এবং মুসা ইবনে নুসাইরের স্পেন বিজয়ের পরপরই খলীফা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালিকের শাসনামলে ফ্রান্স তথা মধ্য ইউরোপ অভিমুখে মুসলমানদের বিজয়াভিযান শুরু হয়। ৭১১ ও ৭১৩ সালে সরবোর্ন ও লিয়নস এবং ৭১৪ সালে নরমান্ডী মুসলমানদের দখলে আসে। ৭১৯ সালে আল-আন্দালুসের গভর্নর আল-সাম ইবনে মালিক আল-খাওলানি সেপটিমানিয়া অধিকার করেন।৭৩১ সালে আন্দালুসিয়ার ( স্পেন)গর্ভনর আনবাসা ইবনে সাহেম নতুন করে বিজয়াভিযানের সূচনা করেন। কিন্তু এই অভিযানে তিনি নিহত হলে আবদুর রহমান ইবনে আবদুল্লাহ আল-গাফিকী আন্দালুসিয়ার গর্ভনর নিযুক্ত হন। নতুন করে মধ্য ইউরোপে অভিযানের জন্য তিনি প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।গ্রীষ্মেই আবদুর রহমান আল-গাফিকী পিরোনিজ অতিক্রম করেন। বোরদাউক্সের যুদ্ধে অডোকে পরাজিত করার বিহ্বলতায় তারা দ্রুতই চার্লসের পেতে রাখা ফাঁদে পা দেয়। আসলে রণনিপুণ চার্লস একটা উচু জায়গা চেয়েছিল, যেন উমাইয়ারা আক্রমণ করতে এলে পাহাড় বেয়ে আসতে হয়।সময়টা ৭৩২ সালের ১০ই অক্টোবর।সমগ্র দক্ষিণ ফ্রান্স পদানত করে আমির আবদুর রহমান উত্তর দিকে অগ্রসর হন এবং আধুনিক প্যারিসের নিকটে অবস্থিত টুরসের সমভূমিতে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। এখানে তিনি ফ্রাঙ্ক অধিপতি চার্লস মর্টেলের মুখোমুখি হন। মর্টেল ছিলেন উত্তর –পূর্ব ফ্রান্সের সামন্ত অধিপতি দ্বিতীয় পিপিনের অবৈধ পুত্র।ইউরোপের ভাগ্য নির্ধারনকারী এই যুদ্ধে মর্টেল তার আশেপাশের সকল সামন্ত অধিপতির সহায়তা লাভ করেন। ভারী হাতুরি ও গদা এবং লম্বা বর্শায় সজ্জ্বিত ফরাসী গথিকরা মুসলিম অশ্বারোহীদের মোকাবেলা করার জন্য টুরসের সমভূমির দিকে অগ্রসর হয়। সৈন্য সংখ্যা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও মুসলিমদের সংখ্যা বেশি ছিল বলেই দাবি করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ পল ডেভিসের মতে, মুসলিম সৈন্য সংখ্যা ৮০ হাজার এবং ফরাসি সৈন্য ৩০ হাজার। যদিও ভিক্টর ডি হ্যানসন উভয়পক্ষে সৈন্য সংখ্যা প্রায় সমান এবং তা ৩০ হাজারের কাছাকাছি বলে যৌক্তিকতা দেখাতে চেয়েছেন।
বর্তমান ফ্রান্সের পয়েটিয়ার্স ও টুরস শহরের মধ্যবর্তী মুসাইস লা বাটাইলি নামক গ্রাম। The battlefield cannot be exactly located, but it was fought somewhere between Tours and Poitiers, in what is now west-central France.টুরসে রয়েছে সেন্ট মার্টিনের কবর। গলজাতি তাঁকে তাদের এপসল (খৃস্ট ধর্ম প্রচারক গুরু) মনে করে। টুরস তাই ছিল গল জাতির খৃস্ট ধর্মীয় রাজধানী।এখানে রচিত হলো ইতিহাসের গতিমুখ বদলে দেয়া এক উপাখ্যান। আন্দালুসিয়ার আমিরের নেতৃত্বে আরব বাহিনীর সাথে ফ্রান্সের রাজা চার্লসের নেতৃত্বে ফ্রাঙ্কিশ ও বুরগুন্ডিয়ানদের মধ্যে সংঘর্ষ।রমজানে এই যুদ্ধ শুরু সংঘটিত হয়েছিল। কয়েকদিন ধরে উভয়পক্ষে হালকা সংঘর্ষ হল।এতে মুসলমানরাই জিতছিল। নবম দিনে দু'পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হলো। রাত্রির অন্ধকার নেমে এল। দু'পক্ষ পৃথক হয়ে গেল। পরদিন আবার যুদ্ধ শুরু হল। মুসলমানরা জিতছিল মুসলমানরা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিজয়ের সম্মুখীন।এক পর্যায়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ফরাসী বাহিনীর মুসলিম শিবিরে হামলা করার। এ সংবাদে অনেক মুসলিম সৈনিক নিজেদের পরিজন ও সম্পদের নিরাপত্তা সম্পর্কে চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং অনেকে যুদ্ধ ফেলে সেনাশিবিরের দিকে রওনা হয়। এতে পুরো বাহিনীতে এক বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। পশ্চাদপসরণ বন্ধ করতে আবদুর রহমান এগিয়ে এলে শত্রু দ্বারা ঘেরাও হয়ে যান গাফিকি বীরের মত যুদ্ধ করে শহীদ হলেন। তাকে একটা বল্লম বিদ্ধ করে।এই যুদ্ধ ফরাসীদের কাছে ব্যাটল অব টুরস নামে পরিচিতি পেলেও আরবদের কাছে মাআরাকাতে বালাতুশ শুহাদা বা শহীদী সৌধের যুদ্ধ হিসাবে স্বীকৃত হয়।The Battle of Tours also called the Battle of Poitiers and, by Arab sources, the Battle of the Highway of the Martyrs. এই যুদ্ধে মুসলিম শিবিরে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। শত্রুর সামনে প্রবল প্রতাপ প্রদর্শনের কারণে চার্লস মার্টেল বা হাতুরী উপাধি লাভ করেন।Encyclopedia Britannica এর ভাষ্য মতে, টুরসের যুদ্ধে উমাইয়াদের নিহত সৈন্য সংখ্যা ১০ হাজারের মত, যেখানে ফ্রাঙ্কিশ বাহিনীতে মাত্র ১ হাজার। বীরত্ব প্রকাশের জন্য দাবি করা হয়, ৩ লাখ ৭৫ হাজার আরবকে হত্যা করা হয়েছে, আদতে যা ভিত্তিহীন।মুসলিম নেতার শহীদ হওয়াতে সেনাদলের মনোবল ভেঙ্গে গেল। বিশৃঙ্খলা ও হতাশার মধ্যে রাতে ইয়েমেন, দামেস্ক, আফ্রিকা ও স্পেনের গোত্রসমূহ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে। অনেক সৈন্য পালিয়ে যায়। আমিরেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে।পরদিন ফরাসী বাহিনী আবার নতুন করে যুদ্ধ করার আশংকায় সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করে। কিন্তু প্রতিপক্ষ থেকে কোন আক্রমণ না হওয়ায় তারা মুসলিম শিবিরে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আবিস্কার করে, আগের দিন রাতের আঁধারেই তাবু রেখে মুসলমানরা যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেছে। মূলত বিশৃংখলার কারণে মুসলিম সেনাবাহিনীর সদস্যরা আর যুদ্ধ করতে সম্মত হয়নি এবং তারা যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করে। যদিও এই যুদ্ধে জয় পরাজয় কিছুই নির্ধারিত হয়নি, তথাপি বিশৃংখল বাহিনীর যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করাকে ইউরোপীয় ঐতিহাসিকরা মুসলিম শক্তির পরাজয় হিসেবে প্রচার করেন।সৈয়দ আমীর আলীর মতে, যুদ্ধটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আব্দুর রহমান গাফিকি আরবদের মোধার ও হিমায়ের গোত্রদ্বয়কে একত্র করতে সক্ষম ছিলেন। তাঁর পরে এ যোগ্যতা আর প্রভাব আর কারও ছিল না। টুরসের ময়দানে আরবরা বিশ্ব সাম্রাজ্য হারালো যা তাদের হাতের মুঠোতে প্রায় এসেছিল। দলপতির প্রতি আনুগত্যহীনতা, আর আন্তঃগোত্রীয় ঝগড়া বিবাদ এই বিপর্যয় সৃষ্টি করে।(হিসটরি অব দি সারাসেনস,পৃষ্ঠা-১৫১)।
যুদ্ধে ফ্রাংকরা জয়লাভ করার ফলে পশ্চিম ইউরোপে মুসলমানদের অগ্রযাত্রা ব্যহত হয়। এটি ছিল এক অর্থে ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রের বেশ কাছে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের এক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। অনেক ইতিহাসবিদ এই যুদ্ধের ফলাফলকে ইউরোপের খ্রিস্টানদের জন্য এক যুগান্তকারী ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে এই যুদ্ধে খ্রিস্টানরা পরাজিত হলে গোটা ইউরোপের ইসলামীকরণের সম্ভাবনা ছিল এবং তা হলে ইউরোপের ইতিহাসই পালটে যেত। ঐতিহাসিক এডওয়ার্ড গিবন বলেন,had the Muslims won, “Perhaps the interpretation of the Koran would now be taught in the schools of Oxford, and her pulpits might demonstrate to a circumcised people the sanctity and truth of the revelation of Mohammed.”( The History of the Decline and Fall of the Roman Empire)আবার কেউ কেউ মনে করেন মুসলমানরা ইউরোপের জন্য এত বড় হুমকি ছিল না এবং এই যুদ্ধের ফলাফল কেবল পশ্চিম ইউরোপের শক্তিশালী ক্যারোলঙ্গীয় ফ্রাংক রাজবংশের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি নির্দেশ করে। ।প্রকৃত অর্থেই ম্যারাথন থেকে ওয়াটারলু পর্যন্ত ইতিহাসের সিদ্ধান্ত মূলক যতগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, তার মধ্যে ৭৩২ সালে টুরসের যুদ্ধ অন্যতম। ইউরোপের ভবিষ্যতকেই শুধু না; পরবর্তীতে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের সম্পর্কের ধরণ কেমন হবে, তার ইঙ্গিত আসে এখান থেকেই। দীর্ঘদিন ধরে বিজয়ে অভ্যস্ত আরবদের ইউরোপের মাটিতে এই পরাজয় ছিল খুবই হৃদয় বিদারক।এই যুদ্ধে বিজয়ের পরে ফ্রাংকেরা মুসলমানদের ফ্রান্সের বাইরে আরও দক্ষিণে স্পেনে হটিয়ে দেয়।এডওয়ার্ড গিবন বলেন,এই যুদ্ধে চার্লস্ বিজয়ী না হলে উমাইয়া সৈন্যবাহিনী স্বচ্ছন্দে জাপান থেকে রাইন পর্যন্ত জয় করতে পারত, এমনকি ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে ইংল্যান্ড পর্যন্ত। রক অব জিব্রাল্টার থেকে লোয়ার নদীর তীর পর্যন্ত অগ্রযাত্রার এক হাজার মাইল দীর্ঘ রেখা। অনুরূপ লাইনের পুনরাবৃত্তি ঘটলে স্যারাসিনরা পৌঁছে যেত পোল্যান্ডের সীমান্ত ও স্কটল্যান্ডের উচুভূমিতে। নীল ও ফোরাতের চেয়ে রাইন বেশি অগম্য ছিল না। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ক্যারোলিনিয়ান সাম্রাজ্য (৭৫০-৮৮৮) প্রতিষ্ঠার পথ সহজ হয়। পরবর্তী কয়েক শতকের জন্য ইউরোপে মুখ্য হয়ে উঠে ফ্রান্সের আধিপত্য। পল ডেভিস মনে করেন,
পশ্চিম ইউরোপে ফ্রান্সের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা মহাদেশটার ভবিষ্যতকে আকৃতি দিয়েছে, আর সেই ক্ষমতাকে নিশ্চিত করেছে টুরসের যুদ্ধ।(100 Decisive Battles From ancient Times to the Present, 1999, California, Page: 106)।হিট্টি মনে করেন এ যুদ্ধ কিছুই প্রতিষ্ঠা করেনি। তিনি বলেন, আরব বার্বার জাতির যে ঢেউ এসেছিল তা এর ভিতর জিব্রাল্টার থেকে হাজার মাইল পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তা একটা স্বাভাবিক স্থবিরতায় পৌঁছে। এটা এর গতি হারিয়ে ফেলে। এর শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। আব্দুর রহমানের সেনাবাহিনীর ভিতর আরব ও বার্বার উপজাতির ভিতরে ছিল ঝগড়া-বিবাদ ও ঈর্ষা। যা সেনাবাহিনীর মনোবলে কুপ্রভাব ফেলে। উইলিয়াম ম্যুর তার “The caliphate, its decline and Fall” নামক গ্রন্থে লিখেন“খ্রিস্টান ধর্মের ভাগ্য সেদিন ফলাফলের উপর ঝুলছিলো। ইশ্বরের আশীর্বাদে খ্রিস্টধর্ম পতনের হাত থেকে রক্ষা পেল।” ৭৫০ সালে আব্বাসীয় বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে উমাইয়াদের নতুন করে ইউরোপে আর কোন অভিযান করা সম্ভব হয়নি। মূলত মুসলিম শাসনকেন্দ্র থেকে দূরবর্তী অবস্থান এবং অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহের অসুবিধার কারণে আর কোন অভিযান পরিচালনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
৭৩৫ সালে আল-আন্দালুসের নতুন গভর্নর উকবা বিন আল হাজ্জাজ টুরসের যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় অভিযান চালনা করেন। আরলেস ও এভিগনন দখল করেন। চার্লস ৭৩৬ এবং ৭৩৯ সালে দুইবার সেপটিমানিয়া আক্রমণ করলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। বস্তুত টুরসের যুদ্ধেরও ২৭ বছর পর পর্যন্ত নারবোনি ও সেপটিমানিয়া উমাইয়াদের অধীনে থাকে। ৭৫০ সালে জাবের যুদ্ধে উমাইয়া খেলাফতের পতন ও আব্বাসীয় খেলাফতের সূচনা ঘটে। এই ঘটনা ও বিচ্ছিন্নতার কারণে ৭৫৯ সালে পেপিন দ্যা শর্টের কাছে আত্মসমর্পন করে ফ্রাঙ্কিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে নারবোনি। টুরস বিজয়ী চার্লস মার্টেলের নাতি শার্লেমন পিরোনিজের উত্তরে নিরঙ্কুশ শাসক হিসাবে আবির্ভূত হন। উমাইয়া আমলে হারানো খ্রিষ্টান অঞ্চলসমূহ পুনরুদ্ধার করার জন্য রিকনকোয়েস্টা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। আর এজন্য উমাইয়াদের শত্রু আব্বাসীয়দের সাথে তার মিত্রতা প্রতিষ্ঠিত হয়। খলিফা হারুন অর রশিদ ও শার্লেমানের মধ্যকার সম্পর্ক ছিলো প্রবাদ প্রতীম। পরবর্তীতে উত্তর-পূর্ব স্পেনে ফ্রাঙ্কিশ সম্রাটেরা ৭৮৫ সালে গিরোনা ও ৮০১ সালে বার্সেলোনা দখল করে। মার্কা হিস্পানিকা নামে প্রতিষ্ঠিত এই রাজ্য বাফার জোন হিসাবে কাজ করতো। সেই সূত্র ধরেই পা পা করে এগিয়ে যেতে তারা। অবশেষে ১৪৯২ সালে গ্রানাডার পতনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় রিকনকোয়েস্টা আন্দোলন।
শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নয়, বিশ্বের ইতিহাসে টুরসের যুদ্ধ একটি সিদ্ধান্ত নির্ধারণকারী যুদ্ধ। বিশৃংখলতার জন্য মুসলিম সেনাবাহিনীর এই যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার প্রেক্ষিতে ইতিহাসের পাতায় ইউরোপের দরজা মুসলমানদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। খ্রিস্টীয় শক্তির হাতে ইউরোপের শাসনক্ষমতা থাকার নিশ্চয়তা এই যুদ্ধের মাধ্যমেই মূলত নির্ধারিত হয়ে যায়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন