সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কবর থেকে হাশর মুমিনের প্রশ্ন ব্যাংক


প্রতিটি প্রাণীর জন্য মৃত্যু অবধারিত। মৃত্যু থেকে পালানোর কোনো পথ নেই। মহান আল্লাহু তায়ালা বলেন, ‘কুল্লু নাফসিন যা-ইকাতুল মাওত’ অর্থাৎ প্রতিটি প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে)। (সুরা আল ইমরান আয়াত- ১৮৫ )।মৃত্যুর পরে আমাদের পরবর্তী ঠিকানা কবর । কবর হলো তৃতীয় জগৎ। আখেরাতের প্রথম মনজিল।কবরকে আমরা ওয়েটিং রুম হিসেবে বুঝে নিতে পারি। ওয়েটিং রুমে যেমন মানুষ তার পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে, আরামের হবে কিংবা কষ্টের হবে। আরামের হলে হেসেখেলে সময় পার করে। কষ্টের হলে এক ঘণ্টা এক বছরের মতো মনে হয় তারপরও সময় যেতে চায় না। অনুরূপ প্রত্যেকের কবরে কবরবাসীকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে সে জান্নাতি না জাহান্নামি। জান্নাতি হলে সে বড় আরামে সময় পার করবে। আর জাহান্নামি হলে বড় কষ্টে সময় অতিবাহিত করবে। এ কবর এমন এক ঘাঁটি যেখানে সাহায্যের বা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন বলতে কেউই থাকবে না। শুধুই নেক আমল হবে তার সাথী। দুনিয়ার হায়াতে নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, কুরআন তেলাওয়াতসহ ইত্যাদি নেক আমল তাকে আজাব থেকে রক্ষা করবে। নবী করিম (সা) বলেন, বান্দাকে যখন কবরে রেখে তার সঙ্গীরা বিদায় নিয়ে চলে যায়, সে তাদের পায়ের জুতা বা স্যান্ডেলের আওয়াজও শুনতে পায়। মুনকির-নকির ফেরেস্তার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে কবর উত্তম ঘাঁটি হবে। আর উত্তর দিতে না পারলে ভয়াবহ ঘাঁটি। কবরের ওই সময়েই মুখোমুখি হতে হবে তিনটি প্রশ্নের। যা ‘সওয়াল জওয়াব’ নামে পরিচিত। কবরে শায়িত করার পর দুজন ফেরেস্তা মুনকির-নকির এসে তাকে বসিয়ে দেবেন। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আল্লাহ বলেন,আল্লাহ ঈমানদারদের ইহকাল ও পরকালে দৃঢ় বাক্য (কালেমা তায়্যিবা) দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। আর যারা জালিম, আল্লাহ তাদের বিভ্রান্তিতে রাখেন। আল্লাহ যা ইচ্ছা, তা-ই করেন। (সুরা ইবরাহিম, আয়াত -২৭)। মহান আল্লাহ পরকালে ঈমানদারদের অবিচল রাখেন’—এর ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা উল্লেখ করেছেন, এখানে কবরের প্রশ্ন-উত্তরের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ কবরে সবাইকে বিশেষ তিনটি প্রশ্ন করা হবে। কবরে সবাইকে জিজ্ঞেস করা হবে রব বা প্রতিপালক সম্পর্কে। জিজ্ঞেস করা হবে ধর্ম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে। সে সময় খাঁটি ঈমানদাররা অনায়াসেই সেই প্রশ্নের জবাব দিতে সক্ষম হবেন। হযরত বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানকে যখন কবরে প্রশ্ন করা হয়, তখন সে সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল। এটাই সুরা ইবরাহিমের ২৭ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।’ (বুখারি ও মুসলিম)। প্রশ্ন তিনটি হলো-
১.মান রাব্বুকা (তোমার প্রতিপালক কে?) মুমিন হলে উওর-রাব্বি আল্লাহ্ (আমার প্রতিপালক আল্লাহ)।
২.মান দীনুকা (তোমার ধর্ম কী ছিল) মুমিন হলে উত্তর- দীনি আল ইসলাম (আমার দীন ইসলাম)।
৩. মহানবী (স.) কে দেখিয়ে বলা হবে ‘মান হাযার রাজুল? (এ ব্যক্তিটি কে?) মুমিন হলে- উত্তর: হাযা রাসুলুল্লাহ্ (তিনি আল্লাহর রাসুল)।হযরত বারা ইবনে আজেব (রা) বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা) এর সঙ্গে জানাযায় বের হই। এতে বর্ণিত হয় যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘কবরবাসীর নিকট দু’জন ফেরেশতা আসবেন। অতঃপর তাকে উঠিয়ে বসানো হবে এবং জিজ্ঞাসা করবেন, তোমার রব কে? তখন সে (মুমিন হলে) বলবে, আমার রব আল্লাহ।
আবার জিজ্ঞাসা করবেন, তোমার দ্বীন কি? উত্তরে সে (মুমিন হলে) বলবে, আমার দ্বীন ইসলাম। তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাদের নিকট প্রেরিত এ ব্যক্তিটি কে ছিলেন? উত্তরে সে (মুমিন হলে) বলবে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা)।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)।ফেরেশ্তারা জিজ্ঞেস করবে এ লোকটি অর্থাৎ মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে তোমার ধারণা কী? মুমিন ব্যক্তি বলে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তাকে বলা হয়, তাকিয়ে দেখো, ওই যে জাহান্নামে তোমার আসনটা, সেটার পরিবর্তে আল্লাহ তোমাকে জান্নাতের আসন বরাদ্দ করে দিয়েছেন। উভয় আসনই সে দেখতে পাবে। মুনাফিক বা কাফেরকে প্রশ্ন করা হবে তুমি কি বলতে পারো এ লোকটা সম্পর্কে? সে বলবে, আমি তো কিছু জানি না। লোকেরা যা বলত, আমিও তাই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি তো জানতে চাওনি, অনুসরণও করনি। আর ওই মুহূর্তেই বিশাল এক লৌহ হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হবে। আঘাতের ফলে সে বিকট স্বরে আর্তচিৎকার করে উঠবে, যা তার আশপাশে জিন, ইনসান এ দুই সৃষ্টি ছাড়া আর সবাই শুনতে পাবে। (বুখারি শরিফ)।
কবরে তিনটি নয় মোট পাঁচটি প্রশ্ন করা হবে।যারা পূর্বের তিনটি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারবেন তাদের জন্য চতুর্থ প্রশ্ন করবেন ফেরেশতাদ্বয় - তারা এবার তাকে জিজ্ঞাসা করবে এই উত্তরগুলো তুমি কীভাবে জানলে? সে বলবে আমি আল্লাহর কিতাব থেকে জেনেছি এবং তাঁর ওপর ইমান এনেছি। তখনই আসমান থেকে এক ঘোষণাকারী ডাক দিয়ে বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। সুতরাং তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার দিকে জান্নাতের দরজা খুলে দাও। তখন তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তার কাছে জান্নাতের শান্তি ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে। কবরকে তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।কবরে চারটি প্রশ্ন মৌখিক হবে আর একটি হবে সাইকোলজিক্যাল।হযরত উসমান (রা.) যখন কোনো কবরের পাশে দাঁড়াতেন তখন এমনভাবে কাঁদতেন যে, নিজের দাড়ি মোবারক ভিজে যেত। একবার হজরতকে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনি জান্নাত ও জাহান্নাম স্মরণ করে এত কাঁদেন না, যতটুকু কাঁদেন কবর দেখে, এর কারণ কী? তিনি বললেন, রসুল (সা.) বলেছেন, কবর হচ্ছে আখেরাতের প্রথম ঘাঁটি। এখানে যদি কেউ রক্ষা পেয়ে যায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য সহজ হয়ে যায়। আর এখানে কেউ যদি রক্ষা না পায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। তিনি আরও বললেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, মেরাজের রজনীতে আমি যত ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছি তার মধ্যে কবরের আজাবই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস নং-২৩০৮)।
দুনিয়ার ক্ষণিকের জীবনের পরেই আসবে আখিরাতের অনন্তকালের জীবন। এবং শেষ বিচারের দিন মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে বিচারক হিসেবে খারাপ কাজের শাস্তি ও ভালো কাজের পুরস্কার দেবেন। হাশরের মাঠে সবাই একত্রিত হবে। এটি মানুষের চতুর্থ জগৎ। হাশর অর্থ একত্র হওয়া, জড়ো হওয়া ইত্যাদি। তবে হাশরের দিনের বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন- ইয়াউমুল হিসাব বা হিসাবের দিবস, ইয়াউমুল জাযা বা প্রতিদান দিবস, ইয়াওমুল মিয়াদ বা প্রতিশ্রুত দিবস, ইয়াওমুল জামেই বা একত্র হওয়ার দিবস, ইয়াওমুল মাহশার বা সমাবেশ দিবস ইত্যাদি। সুরা ফাতেহায় একে ইয়াউমুদ দীন বা বিচার দিবসও বলা হয়েছে। ( Last Judgment, Final Judgment, Day of Judgment, Judgment Day)। যে মাঠে সমাবেশ ঘটবে, তাকে বলা হয় ময়দানে মাহশার বা সমাবেশের স্থল। পরকালে বিচারের জন্য কবর থেকে উত্থিত হয়ে সব প্রাণী এ মাঠে দণ্ডায়মান থাকবে।
হাদিসের ভাষ্য মতে, পৃথিবীর উপরিভাগে একটি চাদর রয়েছে, একে পার্শ্ব ধরে টান দেওয়া হবে। ফলে গাছপালা, পাহাড়-পর্বত সাগরে পতিত হবে। অতঃপর সমতল হয়ে যাবে। আল্লাহর বাণী—আর আমি জমিনের উপরিভাগকে (বিচার দিবসে) উদ্ভিদশূন্য মাটিতে পরিণত করে দেব। (সুরা কাহাফ, আয়াত - ৮)। ‘প্রত্যেক ব্যক্তি হাশরের মাঠে ভয়ে বলতে থাকবে—আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান। একমাত্র মুহাম্মদ (সা.) উম্মত নিয়ে চিন্তা করবেন।’ (বুখারি, হাদিস - ২৭১২)।কিয়ামতের বিভীষিকাময় ময়দানে কেউ কারো হবে না। সবাই ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি করতে থাকবে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘সেদিন মানুষ নিজের ভাই, নিজের মা, নিজের পিতা, নিজের স্ত্রী ও সন্তানাদি থেকে পালাবে। তাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর সেদিন এমন সময় এসে পড়বে, সে নিজেকে ছাড়া আর কারো প্রতি লক্ষ করার মতো অবস্থা থাকবে না।’ (সুরা আবাসা, আয়াত -৩৪-৩৭)। হাশরের ময়দানের কঠিন অবস্থার মধ্যেও সাত শ্রেণির মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়াপ্রাপ্ত হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ সাত শ্রেণির মানুষকে হাশরের দিন তাঁর আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন। যে দিন তাঁর ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তাঁরা হলেন : ১. ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ, ২. ওই যুবক, যে নিজের যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত করেছে, ৩. ওই ব্যক্তি, যার অন্তর সর্বদা মসজিদের সঙ্গে যুক্ত থাকে, যখন মসজিদ থেকে বের হয়, আর যতক্ষণ না আবার মসজিদে ফিরে আসে, ৪. আর ওই দুই ব্যক্তি, যারা পরস্পরকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসে, উভয়ে তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য একত্র হয় এবং তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য পৃথক হয়, ৫. আর যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে, আর দুই চোখ দিয়ে অশ্রু বিসর্জন করে, ৬. ওই ব্যক্তি, যাকে কোনো সম্ভ্রান্ত ও সুন্দরী নারী কুপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য আহ্বান করে, আর তখন সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি এবং ৭. ওই ব্যক্তি, যে দান করে সঙ্গোপনে, এমনকি তার বাঁ হাতও জানে না, তার ডান হাত কী দান করে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
বিচারের মাঠে আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রতিটি বান্দাকে ৫টি প্রশ্ন করবেন। হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা) বলেছেন, হাশরের ময়দানে মানুষের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না চাই সে নবী হোক কিংবা অলী হোক।যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে।১. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? ২. যৌবনের শক্তি-সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে? ৩. ধনসম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে? ৪. কোথায় তা ব্যয় করেছে? ৫ এবং সে (দীনের) যতটুকু জ্ঞানার্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (তিরমিজি)। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা) ইরশাদ ফরমান, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মহিলাদের নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। দ্বিতীয় প্রশ্ন করা হবে, স্বামী সম্পর্কে, তার সঙ্গে কী রকম ব্যবহার করা হয়েছে। (কানজুল উম্মাল)।

গ্রন্থনায়- মো. আবু রায়হান

কবরের প্রশ্ন নিয়ে কয়েকটি ভিডিও লিংক
1.https://youtu.be/r1Brf8bVA_M
2.https://youtu.be/rWUthny1498
3.https://youtu.be/iw-AXIh9eZc
4.https://youtu.be/b9IXDN6fLFs

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...