সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

উপমহাদেশের প্রথম হাদিসচর্চা কেন্দ্র সোনারগাঁয়

মো.আবু রায়হানঃ একটা সময় ছিল, যখন আমাদের দেশেই উচ্চশিক্ষার জন্য আসত দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা। তারা আসত হাদিসশাস্ত্রের উচ্চতর জ্ঞানার্জনের জন্য।কারণ, বঙ্গ ভুখন্ডে প্রথম স্থাপিত হয় উপমহাদেশের প্রথম হাদিসচর্চা কেন্দ্র। উপমহাদেশের হাদিস চর্চার সেই পাদপীঠ ছিল সোনারগাঁয়ে। প্রাচীন এই শিক্ষাকেন্দ্রটি গড়ে তুলেছিলেন শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা বুখারি আদ-দেহলভি আল হানাফিভ(রহ.)। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর থেকে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে যে সকল অলি-আউলিয়া, পীর-দরবেশ, সুফি-সাধক, ধর্ম-প্রচারক ও আধ্যাত্মিক সাধক এসেছেন তাদের মধ্যে শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ছিলেন অন্যতম।শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা একজন বিশিষ্ট আলেম, সূফী সাধক এবং ইসলামি আইনবিদ। সোনারগাঁয়ে আবু তওয়ামা খানকাহ ও একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে ইসলামি ধর্মতত্ত্ব ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষাদান করা হতো।ধারণা করা হয়, এটাই উপমহাদেশের সর্বপ্রথম হাদিস শিক্ষাদানের কেন্দ্র। শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা হাদিস এবং ইসলামি আইনশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি ভেষজশাস্ত্র, গণিত, ভূগোল শাস্ত্র এবং রসায়ন শাস্ত্রেও একজন পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। আবু তাওয়ামা বাংলায় ইসলামি শিক্ষা প্রসারে ছিলেন একজন পথিকৃৎ।
আবু তাওয়ামার জন্মস্থান নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। কারো মতে, তিনি মধ্য এশিয়ার বুখারা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। আর কারো মতে, তাঁর জন্মভূমি ইয়েমেন। হাদিস, ফিকহসহ অন্যান্য ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি ভূগোল, গণিত, রসায়ন ও যুক্তিবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন।হানাফী আইনশাস্ত্রজ্ঞ ও হাদিসবেত্তা হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন সোহরাওয়ার্দি তরিকার শায়েখ।দিল্লির সুলতান গিয়াসউদ্দীন বলবনের শাসনকালে (১২৬৬-৮৭) আবু তাওয়ামা দিল্লিতে পৌঁছেন দিল্লিতে আল্লাহর এ অলির আগমনে লোকজন খুবই আনন্দিত হয়। অগণিত মানুষ তাঁর দরবারে ভিড় জমাতে থাকে। এক পর্যায়ে তাঁর জনপ্রিয়তা বাদশাহর জনপ্রিয়তাকেও অতিক্রম করে। অবস্থা বেগতিক দেখে সুলতান গিয়াসউদ্দীন বলবন আবু তাওয়ামাকে বাংলায় পাঠিয়ে দেন।১২৮২ থেকে ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সময় তিনি বাংলায় আসেন বলে ধারণা করা হয়। তাঁর ছাত্র ও পরবর্তীকালে বিহারের সুফি সাধক শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরীও আবু তওয়ামার সঙ্গে ঢাকা থেকে ১৬ মাইল দূরে অবস্থিত তৎকালীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে এসেছিলেন। শরফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরী সোনারগাঁয়ে আবু তওয়ামার নিকট দীর্ঘ বাইশ বছরকাল শিক্ষালাভ করেন। একপর্যায়ে শায়েখ মানেরী তাঁর শায়েখের কন্যাকে বিবাহ করেন, সেখানে তাঁর তিনটি সন্তানও ছিল। শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা বোখারি ও মুসলিম শরিফ থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাদিসের কিতাবের পাঠ দিতে শুরু করেন। সম্ভবত এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ইতিহাসে বোখারি ও মুসলিম শরীফের পাঠদান সূচিত হয়।শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামাকে উপমহাদেশের ইমাম বুখারি বলা যায়।আবু তাওয়ামা সোনারগাঁয়ের বর্তমান মোগরাপাড়া দরগাবাড়ী প্রাঙ্গণে একটি বৃহৎ মাদ্রাসা ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী গড়ে তোলেন।উপমহাদেশের দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে জ্ঞানার্জনের জন্য ছুটে আসত। একসময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজারে। আবু তাওয়ামা দীর্ঘ ২৩ বছর এই সোনারগাঁ মাদ্রাসায় অধ্যাপনা করেন।প্রায় দুই শতাব্দী ধরে এই মাদ্রাসা জ্ঞান বিতরণ করে।বর্তমানে মাদ্রাসাটির কর্যক্রম নেই এবং এর অবকাঠামোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মোগরাপাড়ায় প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে কয়েকজন উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তার নাম পাওয়া যায়, যাদের প্রত্যেকের নামের শুরুতে পদবি হিসেবে মুহাদ্দিস (হাদিস বিশারদ) শব্দটি যুক্ত ছিল। ধারণা করা হয়, তাঁরা সবাই সরাসরি বা শিক্ষা পরম্পরায় শায়েখ আবু তাওয়ামার ছাত্র ছিলেন। প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি প্রত্যেকেই হয়তো মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও হাদিস শিক্ষাদানে নিযুক্ত ছিলেন।শায়খ আবু তাওয়ামার লেখা মনজিলে মাকামাত গ্রন্থটি সুফি দর্শনের ওপর প্রাচীন বংলায় লিখিত একটি উল্লেখযোগ্য ইসলামী দর্শন গ্রন্থ বলে মনে করা হয়। তবে এই গ্রন্থের কোন কপি পাওয়া যায় নি।ফারসি ভাষায় নাম-ই-হক শীর্ষক ফিকাহ শাস্ত্রীয় একটি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়।সোনারগাঁ বিদ্যাপীঠে অবস্থানকালে শায়খ আবু তাওয়ামা ছাত্রদের উদ্দেশে যে ফিকহ বিষয়ক বক্তৃতা দিতেন, এ বক্তৃতাগুলোর সংকলনগুলো নিয়ে ফার্সি ভাষায় রচিত নামে-ই-হক । তাঁর কোন অনুসারী কর্তৃক এটি সংকলিত। এতে ১৮০টি কবিতা রয়েছে। গ্রন্থটি ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই এবং ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে কানপুর থেকে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া তাঁর লিখিত পাণ্ডুলিপি ব্রিটিশ জাদুঘরের আর্কাইভ ভবনে রক্ষিত আছে বলে জানা যায়।সমসাময়িক লেখক শাহ শুয়াইব তাঁর মানাক্কিবুল আসফিয়া নামক গ্রন্থে আবু তওয়ামার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ভারতীয় উপমহাদেশ, আরব, ইরানসহ মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল।আবু তাওয়ামা (রহ.) ৭০০ হিজরি মোতাবেক ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে সোনারগাঁয়ে ইন্তেকাল করেন সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। তবে বর্তমানে সংরক্ষণের অভাবে উপমহাদেশের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্মৃতিচিহ্নগুলো আজ হারিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এখানে ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠটির ভবনের কিছু ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। ওই ভবনের দেয়ালগুলোতে বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্রাকার চতুষ্কোণবিশিষ্ট সেলফ লক্ষ্য করা যায়। ধারণা করা হয়, সেলফে হয়তো বই পুস্তক রাখা হতো। এ ভবনের পূর্ব পাশ দিয়ে একটি অপ্রশস্ত সিঁড়ি ভূগর্ভস্থ কুঠুরিতে চলে গেছে, বর্তমানে স্থানীয়রা তাকে 'আন্ধার কোঠা' নামে অভিহিত করে থাকে। জানা গেছে, শায়খ এই কুঠুরিতে বসে নির্জনে আল্লাহর জিকির ও ধ্যান করতেন। টিকে থাকা এ জীর্ণ ভবনটির সাথে অনেক ভবন ছিল, যা ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের অবহেলায় আমরা ধরে রাখতে পারিনি আমাদের গৌরবোজ্জল সোনালি ঐতিহ্যের নীরব সাক্ষী এই বিদ্যাপীঠকে।
ইতিহাস বিখ্যাত পর্যাটক, অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক, ইবনে বতুতা।তিনি ছিলেন মরক্কোর অধিবাসী। ইবনে বতুতা ১৩২৫ খ্রিস্টাব্দে একুশ বছর বয়সে বিশ্ব সফরে বের হন এবং আট বছরের মধ্যে সমগ্র উত্তর আফ্রিকা, আরব, পারস্য, ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরবর্তী অঞ্চল ও কনস্টান্টিনোপল পরিভ্রমণ করেন। এরপর তিনি ভারতে আসেন। বাংলায় আগমন করেন ১৩৪৫ সালে। তখন বাংলায় শাসন করতেন সুলতানরা। বাংলায় তখন ফখরুদ্দীন মোবারাক শাহের রাজত্ব। ইবনে বতুতা বাংলায় আগমন করে মুগ্ধ হন। অভিভূত হন।আল্লাহর অপার কুদরতের নিদর্শন দর্শন করেন। তিনি বাংলাকে 'দোজখ-ই-পুর নিয়ামত' অর্থাৎ প্রাচুর্যপূর্ণ নরক বলে অভিহিত করেন। প্রায় ৭০০ বছর হয়ে গেল। হঠাৎ গর্জে উঠল চেপে থাকা সেই ইতিহাস। গর্জে উঠল আবু তাওয়ামার ইতিহাসের প্রতীক্ষায়। সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ) অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামি দার্শনিক ও চিন্তাবিদ। মুসলিম উম্মাহ আজও তাকে স্মরণ করে শ্রদ্ধার সাথে।ইতিহাসবেত্তা ও ইতিহাস বিশ্লেষক হওয়ায় ইতিহাস সংক্রান্ত বই অধ্যয়ন ছিল তাঁর অভ্যাস। এ হিসেবে ইবনে বতুতার রেহালাও তার চোখের আড়ালে থাকেনি। শুরু করলেন অধ্যয়ন। হারিয়ে গেলেন সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যমলা বাংলার ভূমিতে। হঠাৎ তিনি যেন সন্ধান পেলেন এক অজানা ইতিহাসের। যা তাকে প্রতিষ্ঠিত করল একজন নুতন ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে। তিনি খুঁজে পেলেন রেহালায় বর্ণিত ঐ মাদরাসার কথা। আর অন্তরে অনুভব করলেন তার কদর। হারিয়ে গেলেন এক অজানা আলোর ভুবনে। অতঃপর তিনি সোচ্চার হলেন। এগিয়ে এলেন অনুসন্ধানে। আবু তাওয়ামা যেন তাঁকে আদর করে ডেকে পাঠালেন। নদভী (রহঃ) এলেন বাংলায়। ১৯৮৪ সালে নদভী (রহঃ) হিন্দুস্তান থেকে সোনারগাঁয়ে এসে আবু তাওয়ামার কবর জিয়ারত ও মুনাজাত করেন। এখানে এসে তিনি অশ্রুসংবরণ করতে পারলেন না। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া এ ঐতিহ্যের সঙ্গে এহেন অবিচার, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ অনুভব করে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন নদভী (রহঃ)। তাঁর অবেগ ও অবস্থার গভীরতা থেকে তিনি যেন বলে উঠেলেন- হযরত! আমরা দুঃখিত। অমরা ব্যথিত। আপনি আমাদের ক্ষমা করুন। মাজার থেকে অল্পদূরে ভাগলপুর এলাকায় তিনি শায়খ শরফুদ্দিনের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘মাদরাসাতুশ শরফ আল ইসলামিয়া’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন, যা এখনো সোনারগাঁয়ে হেরার জ্যোতি ছড়াচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

মো.আবু রায়হানঃ আজ ২০ রমজান ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের ১৪৩৩ তম বার্ষিকী।আজ থেকে ১৪৩৩ বছর আগে হিজরতের ৮ম বছরে ২০ রমজান তথা ৬৩০ খৃস্টাব্দে রাসুল (সা.) মক্কা বিজয় করেন। ইতিহাসে এই ঘটনা মক্কা বিজয় বা ফতেহ মক্কা নামে খ্যাত।২০ রমজান শুধু মক্কা বিজয়ই হয়নি বরং প্রিয় নবি স্বমহিমায় নিজ জন্মভূমিতে ফিরে এসেছিলেন।তাই ২০ রমজান ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যবহ ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে।শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব ইতিহাসে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার অধিকারী হলো মক্কা বিজয়ের এ ঘটনা। পৃথিবীর আরম্ভ থেকে আজ পর্যন্ত যত যুদ্ধ ,বিজয় অভিযান, হয়েছে এসব যুদ্ধ ও অভিযানে একদল বিজয়ী হয়েছে আরেক দল পরাজয়কে বরণ করেছে। এসব যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন দিগ্বিজয়ী ইতিহাসের মহানায়কেরা। তাদের মধ্যে হিটলার,আলেকজেন্ডার,আর নেপোলিয়ান বেনাপোর্টের বিজয় অভিযানগুলো ছিল রক্তপাতের ইতিহাস,মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত হবার ইতিহাস।একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়। ঐতিহাসিকদের মতে মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয় যদিও আল কুরআনে হুদাইবি য়ার সন্ধিকেই ফাতহুম মুবিন বা প্রকাশ্য বিজয় বলে উল্লেখ করা হয়েছ...