সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মসজিদ চেরামন জুমা মসজিদ



ইসলামপূর্ব প্রাচীনকাল থেকে ভারতের মালাবার উপকূ্লের সঙ্গে আরবের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল।মালাবার ভারত মহাসাগর ও আরব উপসাগরের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় আরবদের এতদাঞ্চলে যাতায়াত বেশি ছিল।মালাবার উপকূল দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের দীর্ঘ, সরু এক উপকূলীয় সমভূমি এলাকা।এটি উত্তরে গোয়া থেকে দক্ষিণে কুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ।।হাজার হাজার বছর ধরেই ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমের এই উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর সাথে আরবের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রায় ৩,০০০ বছর আগে হযরত সোলায়মান (আ) এর সময় থেকেই মিসরীয়দের মশলা ক্রয়ের জন্য এই এলাকায় আসার ইতিহাস পাওয়া যায়। আরবীয় বণিকরা মৌসুমী বায়ু প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে ভারতে আসত, এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য শেষ করে পরবর্তী ঋতুতে বিপরীত দিকের বায়ুপ্রবাহের জন্য অপেক্ষা করত এবং এরপর সেই বায়ুপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে আবার ফেরত যেতো। আরব বণিকরাএ দেশে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এসেছেন এবং এ দেশের সঙ্গে তাঁরা মিশেও গিয়েছিলেন।এই মালাবার অঞ্চল বহু প্রাচীন কাল থেকেই গোলমরিচের দেশ বলে খ্যাত। দুই হাজার বছর ধরে এখানকার বণিকরা মসলাপাতি, বস্ত্র, মণিমুক্তা, গজদন্ত চন্দন কাঠ প্রভৃতি পণ্যে জাহাজ বোঝাই করে নিয়ে লোহিত সাগর ও পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বাণিজ্য করে আসছে। মুসলমানরা ভারতবর্ষ জয় করে প্রথমে অষ্টম শতকে মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে এবং পরবর্তীতে দশম শতকে সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে। কিন্তু তারও অনেক আগে, সপ্তম শতকের প্রথম ভাগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর জীবদ্দশাতেই, আরবরা যখন নব ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করে, তারা তাদের এই নব ধর্ম ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অনেকটা নীরবে-নিভৃতে আরব ব্যবসায়ীদের হাত ধরে প্রবেশ করে।
মিহরাব

তাই বলা যায়, সপ্তম শতকের প্রথম ভাগে আরব বণিক সম্প্রদায়ের ভারতে আগমনের সূত্র ধরে ভারতবাসী ইসলাম সম্পর্কে অবহিত হন।এছাড়া সরাসরি সাহাবি (রা.)-দের জামাত বাংলাদেশ-ভারতে এসেছে, আবার এখানকার মানুষও মক্কা-মদিনায় গিয়ে সরাসরি মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর পরবর্তী যুগে খলিফাদের হাতে বাইয়াত হয়ে মুসলিম হয়েছেন। সে সুবাদে তখন ভারতবর্ষে মসজিদ ও ইবাদতখানা নির্মিত হয়। ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠিত প্রথম মসজিদ হচ্ছে—ভারতের কেরালা রাজ্যের ত্রিসুর অঞ্চলের কুদুঙ্গালুর তালুক শহরের মিথালা নামক গ্রামে অবস্থিত চেরামান জামে মসজিদ।The Cheramaan Juma Mosque is a mosque in Methala, Kodungallur Taluk, Thrissur District in the Indian state of Kerala. A legend claims that it was built in 629 AD, which makes it the oldest mosque in the Indian subcontinent which is still in use.মসজিদটির সম্মুখভাগে স্থাপিত শিলালিপির ভাষ্যানুযায়ী পঞ্চম হিজরি মোতাবেক ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে সাহাবি হযরত মালিক বিন দিনার (রা.) (মৃত্যু : ১২৭/১৩০ হিজরি) মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় মুসলমানরা এটিকে চেরামান জুমা মসজিদ ও বলে থাকে। প্রাচীন ভারতীয় পাণ্ডুলিপিতে আছে, কেরালার রাজা চেরামান পেরুমল আরব বণিকদের কাছে ইসলামের অনুপম সাম্য ও সম্প্রীতি দেখে ভীষণ আকৃষ্ট ও প্রীত হন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরব মুসলিম বণিকদের সঙ্গে মক্কা নগরীতে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তাজউদ্দিন নাম ধারণ করেন।বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ মুসতাদরাকে হাকিম-এ হযরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘রাসুল (সা.)-এর কাছে ভারতবর্ষের রাজা আদাভর্তি একটি কলসি উপহার পাঠান। রাসুল (সা.) প্রত্যেককে এক টুকরা করে খেতে দেন। আমাকেও এক টুকরা দিয়েছিলেন।লন্ডনভিত্তিক ভারতীয় এনসাইক্লোপিডিয়ার বরাতে ব্রিটিশ ও ভারতীয় ইতিহাসবেত্তারা দাবি করেন, হাদিসে উল্লিখিত ভারতীয় রাজা হলেন কেরালার রাজা চেরামান পেরুমল।
মসজিদের পুকুর

একটি ঐতিহাসিক তথ্য মতে এবং কেরালার মুসলমানদের কাছে জনশ্রুতি রয়েছে যে, ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূলে, বর্তমান কেরলা রাজ্যে এক হিন্দু রাজা ছিলেন। যার নাম ছিল চেরামন পেরুমল। কথিত আছে, রাজা চেরামান পেরুমল ১৭ রজব ৬১৭ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হতে দেখেন।দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রাজা তার সভার বিদ্ব্যজ্জনদের কাছ থেকে স্বপ্নের অর্থ জানতে চাইলে কেউ সদুত্তর দিতে পারেনি। রাজার মনে অস্বস্তি থেকেই যায়। তখন ভারতের সঙ্গে আরবের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক ছিল। আরব দেশীয় বণিকরা সমুদ্রপথে ভারতে এসে বাণিজ্য করত। রাজার স্বপ্নের কিছুদিন পরেই একদল আরব মুসলমান বণিক, রাজা চেরামনের সমুদ্র বন্দরে এসে পৌঁছায়। এই বণিকদের কাছ থেকে রাজ্যে এই নতুন ধর্ম ইসলাম এবং নবী হযরত মুহম্মদ (সা) এর প্রশংসা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একটা সময় মহানবীর আঙুলের ইশারায় চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করার কাহিনীও রাজার কানে আসে। রাজা বণিকদেরকে ডেকে তাদের কথা শোনেন এবং বুঝতে পারেন যে, তার স্বপ্নে তিনি এই ঘটনাটিরই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। তখন তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং বণিকদলের সঙ্গে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি হযরত মুহম্মদ (সা) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন এবং তাজউদ্দিন' নাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর চেরামান পেরুমল ১৪ জনের একটি কাফেলা নিয়ে কেরালার উদ্দেশে রওনা হন। তাঁর সে কাফেলায় সাহাবি মালিক ইবনে দিনার (রা.) ও হাবিব ইবনে মালিক (রা.) ছিলেন। কিন্তু ওমানের ঝিফার (সালালাহ্) অঞ্চলে পৌঁছার পর তিনি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগে তিনি তার আরব সঙ্গীদেরকে ভারতে গিয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য অনুরোধ করেন। মৃত্যু অত্যাসন্ন বুঝে মালিক ইবনে দিনার মারফত তাঁর রাজ্যের সভাসদদের উদ্দেশ্যে একখানা পত্র লিখে অসিয়ত করেন, তারা যেন এ কাফেলাটির যথাসম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করে।



সেই চিঠিতে তিনি নিজের রাজ্যে একটি মসজিদ স্থাপনের ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করেন।বণিকদল রাজার চিঠি নিয়ে আবারও কেরলায় আসে। কেরালার শাসকবর্গ কাফেলাটিকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে বরণ করে এবং ইসলাম প্রচারের সুবিধার্থে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দেয়। রাজার নির্দেশ অনুযায়ী তারা ৬২৯ সালে মসজিদ নির্মাণ করে।রাজা চেরামনের নাম অনুসারে মসজিদের নাম রাখা হয় চেরামন জুমা মসজিদ। স্থানীয় স্থাপত্য অনুযায়ী তৈরি এই মসজিদটি দেখতে অনেকটাই হিন্দুদের মন্দিরের মতো।চেরামান মসজিদটিই হচ্ছে ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠিত প্রথম মসজিদ। হযরত মালিক ইবনে দিনার ছিলেন এই মসজিদের প্রথম ইমাম ও তত্ত্বাবধায়ক। তাঁর পরে হযরত হাবিব ইবনে মালিক ইমাম তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হন।কেরলের স্থানীয় ইতিহাসবিদ রাজন গুরুক্কল মনে করেন, মসজিদটি হয়তো একাদশ অথবা দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয়ে থাকতে পারে।মসজিদের ভেতরে অবস্থিত একটি ফলকে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাকাল হিসেবে ৬২৯ সাল লেখা আছে। ইতিহাসবিদরা মসজিদটির প্রতিষ্ঠাকাল সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না পারলেও, মুসলমান বণিকরা যে কাছাকাছি সময়ে ওই অঞ্চলে এসেছিল সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে খুব একটা দ্বিমত নেই।

প্রদীপ

মসজিদটির ভেতরে একটি প্রাচীন তেল প্রদীপ আছে, যেটি সর্বদা প্রজ্বল্যমান। ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ১,০০০ বছর ধরে জ্বলছে। শুধু মুসলমান না, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এই প্রদীপের জন্য তেল সরবরাহ করে। কেরালার অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের মতো এই মসজিদটিও সকল ধর্মবিশ্বাসীদের প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত। অমুসলমানরাও এই প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদটিতে তাদের সন্তানদের হাতেখড়ি দিয়ে থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে ধর্মনিরপক্ষে চরিত্রের কেরালার এই মসজিদটিতে দিনের কিছু কিছু সময় হিন্দুরাও প্রার্থনা করে থাকে।২০১৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মসজিদটির একটি সোনার রেপ্লিকা সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদকে উপহার দেন।চেরামন জুমা মসজিদ একাদশ শতাব্দীতে মসজিদটির সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হয়। ক্রমান্বয়ে মুসল্লি বৃদ্ধির ফলে ১৯৭৪, ১৯৯৪ ও ২০০১ সালে মসজিদের সামনের অংশ ভেঙে আয়তন সম্প্রসারিত করা হয়। প্রাচীন মসজিদের অভ্যন্তরীণ অংশ, মিহরাব ও মিনার এখনো আগের মতো অক্ষত রয়েছে। মসজিদের বহির্ভাগ কংক্রিট দিয়ে তৈরি হয়। অজু করার জন্য তখনকার নির্মিত পুকুর এখনো আগের মতো আছে। মসজিদের পাশঘেঁষা খালি জায়গায় দুটি কবর বিদ্যমান। মনে করা হয়, একটি হাবিব ইবনে মালিকের, অন্যটি তাঁর স্ত্রী হুমায়রার। রমজান মাসে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগির উদ্দেশ্যে এ মসজিদে আগমন করে থাকেন।
গ্রন্থনায় -মো. আবু রায়হান


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...