সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চীনে মুসলমানদের আগমন ও প্রথম মসজিদ


মো.আবু রায়হানঃ ইসলামের আবির্ভাবের শুরুতে যে সব স্থানে প্রথম ইসলামের বাণী প্রচারিত হয় সেসব স্থানের মধ্য চীন অন্যতম।বর্তমানে মুসলিমরা চীনা জনসংখ্যার ১.৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক আদমশুমারি থেকে জানা যায়, চীনে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মুসলিম রয়েছে। এদের অধিকাংশই হুই, উইঘুর, কাযাখ ও তাতার জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। মুসলিমরা চীনের একটি অন্যতম সংখ্যালঘু গোষ্ঠী।তারা তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠী।কম-বেশি চীনের সবখানেই মুসলমান রয়েছে। হুই মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও জিনজিয়াং প্রদেশে রাষ্ট্রের দমন ও নিপীড়নমূলক কার্যক্রমের শিকার উইঘুর জনগোষ্ঠী মুসলিম জনসংখ্যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে।হুই,উইঘুর, কাজাক, উজবেক, তাজিক, তাতার, কিরগিজ, ডোংসিয়াং, সালার, বোনান প্রভৃতি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেশি।জিংজিয়াং, গানচু, নিংজিয়া, ইউনান, হেনান ও কুনমিং অঞ্চলে মুসলমানরা সংখ্যাধিক্য। চীনের সরকারিভাবে স্বীকৃত ৫৫টি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে দশটি গোষ্ঠীই প্রধানত সুন্নি মুসলিম।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের আর্থিক সংস্থার সহায়তায় চীনে ২০১৪ সালে একটি অত্যাধুনিক শিল্পকলা, কারুকার্যমণ্ডিত ও বেশ ব্যতিক্রমধর্মী একটি বৃহৎ মসজিদ নির্মিত হয়।এখানে একসঙ্গে ছয় হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী চীনে ৩০ হাজারের বেশি মসজিদ রয়েছে।এসব মসজিদে ইমামের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। Today there are over 39,000 mosques in China, 25,000 of these are in Xinjiang, a north-west autonomous region.চীনের গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী গুয়াংজু। গুয়াংজুর পুরনো নাম ক্যান্টন। এটি চীনের প্রসিদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র গুলোর অন্যতম। অন্য দুটি হলো কুনমিং ও সাংহাই।৭৪,৩৪৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গুয়াংজুতে জনসংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ। মূল জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ। এর মধ্যে মুসলমান কত তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। গুয়াংজুর রয়েছে ২২০০ বছরের সমৃদ্ধ অতীত।গুয়াংজু ইসলামের প্রবেশদ্বার। ইসলাম-পূর্ব আরবের বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং পর্যটকরা ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে এই গুয়াংজু দিয়ে চীনে প্রবেশ করেন এবং তাদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল প্রাচীনকাল থেকে।
আরব সাগরের উপকূলের ব্যবসায়ীদের ইসলামে ধর্মান্তরিত হবার পর এই বাণিজ্য সমৃদ্ধ হয়। সপ্তম শতক থেকেই চীনের মানুষ নতুন ভাবধারায়,নতুন চিন্তাচেতনায় উজ্জীবিত হন।মুসলমান হয়ে নিজেদের ভাবধারাকে সত্য, সুন্দরের পথে চালিত করেন। ফলে ধর্মীয় ক্ষেত্রেও লেগেছে পরিবর্তনের সুবাতাস।তখন চীনে তাং বংশের শাসনামল (৬১৮-৯০৭) ছিল।আরব বণিকরা গুয়াংজুতে প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী আবাস গড়ে তোলে এবং মালামাল চীন থেকে আরব, আরব থেকে চীনে আমদানি ও রপ্তানির ব্যবস্থা করে।


ব্যবসায়িক কারণে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আরবদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং অনেকে চীনা মেয়েদের পাণিগ্রহণ করে গুয়াংজুতে স্থায়ী হয়ে যান।সপ্তম শতাব্দী শুরুতে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) চীনে আসেন ।চীনে ইসলাম আগমনের সঠিক সময় নিয়ে কয়েকটি মত পাওয়া যায়।প্রথমতঃ ৬১৭ খ্রিষ্টাব্দের দিকে হাবশায় হিজরতকারী একটি সাহাবি দল ইসলাম প্রচার ও ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে চীন পর্যন্ত যান। তাদের নেতার নাম ছিল সাহাবি আবি ওয়াক্কাস মালিক ইবনে ওহাব (রা.) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর মামা ছিলেন। হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) এর সঙ্গে ছিলেন সাহাবি হযরত কায়েস ইবনে হুজায়ফা (রা.), হযরত ওরয়াহ ইবনে আসাসা (রা.) এবং হযরত আবু কায়েস ইবনুল হারেস (রা.)।Islam was introduced into China as early as 615 AD, when a group of four companions (sahaba) of the prophet Muhammad visited China to trade and to preach the new faith. দলনেতা হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.)।তিনি সাদ বিন আবু ওয়াক্কাসের পিতা আবি ওয়াক্কাস।হুই কিংবদন্তি অনুসারে চীনে ৬১৬/১৭ সালে সাহাবিদের চীন ভ্রমণের মাধ্যমেই চীনে ইসলামের সূচনা ঘটে। তাং রাজবংশের (৬১৮-৯০৭ খ্রিষ্টাব্দ) বর্ষবিবরণে তাশি শিরোনামের অধীনে প্রথম কোন চৈনিক লিখিত দলিলে আরবদের সম্পর্কে জানা যায়। তাশি বা দাশি হচ্ছে তাজি এর চৈনিক শব্দ, পারস্যের লোকেরা আরবদেরকে তাজি নামে সূচিত করতেন। ৭১৩ সালের একটি তথ্যে দাশি দূতদের আসার কথা জানা যায়। চীনে মুসলিমদের প্রথম প্রধান উপনিবেশে আরব ও পারস্যের বণিকগণ ছিলেন।

দ্বিতীয়তঃ ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে চীনে ইসলাম প্রবেশ করে। আবার কোনো কোনো গবেষকের মতে, হিজরি ষষ্ঠ সনে প্রিয়নবী (সা.) একটি প্রতিনিধিদল চীনে পাঠান। বলা হয়ে থাকে, ওই সাহাবির নাম ছিল ওহাব ইবনে আবি কাবশা (রা.)। তৎকালীন সম্রাট তাদের সাদরে গ্রহণ করেন এবং মসজিদ নির্মাণ ও ইসলাম প্রচারের অনুমতি দেন। সেখানে তাকে বিপুল সম্বর্ধনা দেয়া হয় এবং সম্রাটের পক্ষ থেকে তাঁকে এবং তাঁর সব সফরসঙ্গীকে চীনে ইসলাম প্রচারের প্রকাশ্যে অনুমতি দেয়া হয়। তারা সেখানে চার বছর অবস্থান করেন এবং ইসলাম প্রচার করার পর মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু তারা যখন মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকাল (৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ) হয়ে গিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের খবরে ওহাব ইবনে আবি কাবশা (রা.) এর মন ভেঙে যায় এবং কিছুদিন মদিনায় অবস্থানের পর তিনি আবার ক্যান্টনে চলে যেতে মনস্থ করেন। ক্যান্টনে পৌঁছার পর ওহাব ইবনে আবি কাবশা বেশি দিন জীবিত ছিলেন না। অসুস্থ হয়ে সেখানেই ইন্তেকাল করেন। ওহাব ইবনে আবি কাবশা মহানবী (সা.)-এর মামা ছিলেন বলে বিখ্যাত লেখক আর্লন্ড উল্লেখ করেছেন। চীনা লেখক চ্যংশন লং-ওই সাহাবীর নাম ইবনে হামজা উল্লেখ করেছেন। ওহাব ইবনে আবু কাবশার নাম বিভ্রাটের কারণে চীনে মুসলমানদের প্রথম আগমনকারীদের বিষয়টি দারুণভাবে বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। ৬১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চীনে গমনকারী সাহাবী আবি ওয়াক্কাস ও মালিক ইবনে ওহাব অভিন্ন ব্যক্তি।মালিক ইবনে ওহাব এর উপনাম আবি ওয়াক্কাস।যার পুত্র সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস।

তৃতীয়তঃ নবীজীর (সা.) মৃত্যুর ২০ বছর পর ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা.) এর কুটনৈতিক মিশনের মধ্য দিয়ে চীনে ইসলাম আগমন করে। সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.) ছিলেন প্রথম সারির একজন সাহাবি ও নবীজী (সা.) এর আত্মীয়। অনেকে সাহাবি আবি ওয়াক্কাস (রা.) ও সাহাবি হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.)-কে একই ব্যক্তি মনে করেন। হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) হলেন হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর বাবা। হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) আদৌ চীনে গেছেন কি না, নাকি গিয়ে ফিরে এসেছেন, সমসাময়িক ইতিহাসগ্রন্থে এ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

এটা ব্যাপক গবেষণার ব্যাপার এবং প্রমাণসাপেক্ষ। হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর কবর আছে মদিনার জান্নাতুল বাকিতে। হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) নির্মিত গুয়াংজুর হুয়াইশেং মসজিদ চীনের প্রথম ও বিশ্বের প্রাচীনতম মসজিদগুলোর অন্যতম। মসজিদটি ৬৫০ সালে এটি নির্মিত হয়।তাং সম্রাট ইয়াং উই পছন্দ করেন এই সাহাবির বয়ে আনা বার্তা। তিনি দেখলেন যে ইসলামের বার্তা সে সময়কার সনাতনী কনফুসিয়াসের মতবাদের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় হুয়াইশেং শহরে মসজিদটি বানানো হয়। চীনের প্রথম এই মসজিদটি বানানো হয় চীনা সনাতন পদ্ধতির বৌদ্ধ প্যাগোডার কায়দায়। মসজিদটি প্রায় ১৪০০ বছরের প্রাচীন। চীনা ভাষায় হুয়াইশেং অর্থ পবিত্রতাকে স্মরণ করুন। এ জন্য মসজিদটিকে স্মরণী মসজিদ বা Memorial Mosqueবলা হয়। মসজিদটি নূর টাওয়ার মসজিদ নামেও সুপরিচিত। কেননা প্রাচীনকালে এ মসজিদের সুউচ্চ মিনারে স্থাপিত বাতি বা ফানুস দেখে পার্শ্ববর্তী ঝুজিয়াং নদীতে চলাচলকারী নাবিকরা নৌপথের নির্দেশনা পেতেন।এ জন্য মসজিদটিকে বাতিঘর মসজিদ বা লাইটহাউজও বলা হয়।The Huaisheng Mosque also known as the Lighthouse Mosque and the Great Mosque of Canton.৩৬ মিটার উচ্চতার সরু মিনারটি যেটিকে মসজিদের আলোক বুরুজও বলা হয়। এটি এমন একটি স্থাপনা, যা সিলিন্ডারের আকৃতির; এতে পাথর ও চুন-সুরকির সুনিপুণ কাজ রয়েছে।বুরুজের ভেতরে রয়েছে সিঁড়িপথ।এ রকম স্থাপত্যশৈলীর মিনার চীনে আর নেই।

অগ্নিকাণ্ডসহ নানা বিপর্যয়ে হুয়াইশেং মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১৩৫০ ও ১৬৯৫ সালে এটিকে পুনর্নির্মাণ করা হয়। তবে মসজিদের প্রাচীন মিনারটি এখনো অক্ষত আছে।মসজিদের অভ্যন্তরভাগে ৫০০ মুসল্লির নামাজ আদায় করার মতো জায়গা আছে। এরিয়া অনেক বড়। ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের কক্ষ, কালচারাল সেন্টার, গ্যালারি, পবিত্র কোরআন চর্চাকেন্দ্র মসজিদটির বৈশিষ্ট্য। মসজিদ কমপ্লেক্সে বেশ কিছু বড়-ছোট বৃক্ষ রয়েছে।কয়েক একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) মসজিদ কমপ্লেক্স।হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর মাজার, ঈদগাহ, কবরস্থান, অজুখানা, শৌচাগার, অফিস কক্ষ, অতিথিশালা।চীনের গুয়াংজুতে অবস্থিত হযরত আবি ওয়াক্কাস (রা.) মসজিদ কমপ্লেক্সে আরো কিছু সমাধি রয়েছে, যাঁরা তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে এ দেশে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আসেন। মসজিদের বাইরে দেয়ালে লেখা আছে Making a beautiful mosque being an excellent Muslim. অর্থাৎ চমৎকার মুসলমানরাই সুন্দর মসজিদ বানায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...