কুরআন নাজিলের মাসে আজ এক কলঙ্কের দিন

মো. আবু রায়হান
আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীতে মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন,সৃষ্টি করেই মানুষকে এমনি এমনি ছেড়ে দেননি বরং তাদের সঠিক পথের দিশা দিতে, অন্ধকার থেকে আলোর পথে আনার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন।তাদের দিয়েছেন আসমানি কিতাব।সর্বশেষ আসমানি কিতাব আল কুরআন যা রাসুল (সা) এর ওপর নাযিল হয়, সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দিশারি হিসেবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, "আর আমি আপনার উপর এই কিতাব নাযিল করেছি শুধু এজন্য যে, যে বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে, তা তাদের জন্য আপনি স্পষ্ট করে দিবেন এবং (এটি) হিদায়াত ও রহমত সেই কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।"(সূরা আন নাহল আয়াত-৬৪)। পবিত্র কুরআনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ নিয়ে চিন্তা–ভাবনা করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।"(সূরা ছোয়াদ আয়াত-২৯)। কিন্তু কুরআনের মর্মার্থ বুঝতে অক্ষম হয়েছে এক শ্রেণির মানুষ ।যেকারণে কুরআনের বিরুদ্ধে যুগেযুগে হয়েছে অসংখ্য ষড়যন্ত্র । ভারতের দুইজন উগ্র সাম্প্রদায়িক নাগরিক পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কুরআনের সকল আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করে। ১৯৮৫ সালের ২৯শে মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশনটি দাখিল করে। তাদের বক্তব্য ছিল যে কুরআনের প্রকাশনা ভারতীয় দণ্ডবিধির অনুচ্ছেদ ১৫৩এ এবং ২৯৫এ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। কারণ কুরআন “হিংসায় ইন্ধন দেয়, সার্বজনীন শান্তিভঙ্গ করে, আপন ধর্মমতের কারণে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা এবং বিদ্বেষের বাতাবরণ সৃষ্টি করে, এবং ভারতের অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়কে অপমান করে।” ফৌজদারী কার্যবিধির অনুচ্ছেদ ৯৫ অনুযায়ী, তারা আদালতের কাছে দাবি করে যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কারণ দর্শাতে বলা হোক যে কেন কুরআনের মুদ্রিত প্রত্যেকটি প্রতিলিপি, তা মূল আরবী ভাষাতেই মুদ্রিত হোক বা অন্য যে কোন ভাষাতেই হোক, বাজেয়াপ্ত করা হবে না।বিচারক মিসেস পদ্মা খাস্তগীর ন্যাক্কারজনক এই মামলা গ্রহণ করে এ বিষয়ে ৩ সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায় গোটা ভারতে মুসলমানদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশ এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।এই রিটের আগে কলকাতার এক নাগরিক হিমাংশু কিশোর চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিবকে ১৯৮৪ সালের ২০ই জুলাই একটি চিঠি লেখেন এবং সেই চিঠিতে তিনি দৃষ্টিপাত করেন কুরআনের কিছু সূরার প্রতি যার কারণে কুরআনের প্রকাশনা ভারতীয় দণ্ডবিধির অনুচ্ছেদ ১৫৩এ এবং ২৯৫এ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হওয়া উচিত বলে মনে করেন। তাঁর চিঠির তিনটি পরিশিষ্ট অংশ ছিল যেখানে তিনি কুরআনের কিছু সূরাকে উদ্ধৃত করেন। ৩৭টি সূরাতে নিষ্ঠুরতার, হিংসার এবং সার্বজনীন শান্তিভঙ্গের ইন্ধন, ১৭টিতে ধর্মমতের কারণে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা এবং বিদ্বেষের বাতাবরণ সৃষ্টির প্রয়াস, এবং ৩১টিতে অন্যান্য ধর্মমতকে এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপের দাবি ছিল। তিনি বলেন যে মূল আরবি সহ যে কোন ভাষায় প্রকাশিত কুরআনের সমস্ত প্রতিলিপিকে ফৌজদারী কার্যবিধির অনুচ্ছেদ ৯৫ এর আওতায় বাজেয়াপ্ত করার জন্য।পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কুরআনের সূরা বাকারার ১৯১নং আয়াত ও সূরা তওবার ৩১ নং আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে মামলা দায়ের করেছিল।
কলকাতা হাইকোর্ট
সুরা বাকারা ১৯১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তাদেরকে হত্যা কর যেখানে তাদেরকে পাও এবং তাদেরকে বের করে দাও যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে বের করেছিল। আর ফিতনা হত্যার চেয়ে কঠিনতর এবং তোমরা মাসজিদুল হারামের নিকট তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো না, যতক্ষণ না তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সেখানে লড়াই করে। অতঃপর তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তবে তাদেরকে হত্যা কর। এটাই কাফিরদের প্রতিদান।(সুরা বাকারাহ আয়াত-১৯১)।কুরআনের মর্মার্থ অনুধাবন না করেই তারা এই মিথ্যা মামলা , উদ্ধত আচরণ ও আস্ফালন করে।“তাদেরকে যেখানে পাবে হত্যা করবে”- তারা কুরআনের এ বাণীর ভুল ব্যাখ্যা করে ইসলামকে জঙ্গিবাদের প্রেরণাদায়ক ,মুসলমানদের জঙ্গি বলে অপবাদ দেয়। মূলতঃ তারা এ আয়াতের অর্থই বুঝতে পারেনি। কারণ, এই আয়াতে “তাদেরকে” দ্বা্রা ঐ সমস্ত কাফেরদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদের বর্ণনা পূর্ববতী ও পরবর্তী আয়াতে দেয়া হয়েছে। কেননা, পূর্ববতী আয়াতে কাফেরদের হত্যা করার জন্য শর্ত দেয়া হয়েছে দু'টি – এক. তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধকারী সম্প্রদায় হবে। দুই. তোমরা যদি এসব যুদ্ধবাজ কাফেরদের সাথে যুদ্ধ কর, তবুও তোমরা যেহেতু মানবতার জন্য রহমতস্বরূপ সেহেতু হত্যা করতে সীমালংঘন করো না। যুদ্ধরত কাফেরদের ছাড়া অন্যান্য সাধারণ কাফেরদের হত্যা করার মাধ্যমে আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লংঘন করোনা। যেমন, শিশু, অসুস্থ আঘাতপ্রাপ্ত, নারী এ জাতীয়দের হত্যা করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।এই আয়াতের পরবর্তী আয়াতসমূহে আরও কিছু শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিন. যদি যুদ্ধবাজ কাফেররা যুদ্ধ করা থেকে বিরত হয় তবে তোমরা তৎক্ষণাত যুদ্ধ ত্যাগ কর। চার. তোমাদের উপর যতটুকু আক্রমণ হবে তোমরা ততটুকুই শুধু আক্রমণ করবে।পাঁচ. তোমাদের যুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- ক) ফিতনা তথা যাবতীয় বিপর্যয়, শান্তিভংগ, ঘর-বাড়ি থেকে বহিস্কার, যুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন, শিরক , অসৎপথ ইত্যাদি থেকে মানুষকে উদ্ধার করা। খ) তোমাদের ইবাদাত তথা আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে যেন তারা বাধা হয়ে না দাঁড়ায় । গ) তারা যেন তোমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করতে পারে। ঘ) তোমরা যে হক বা সত্যের অনুসারী, তার প্রচার ও প্রসারে সহায়তা করা। এ পথের বাধা দূর করা।ইসলাম সর্বপ্রকার নরহত্যা নিকৃষ্ট কর্ম বলে অভিহিত করেছে। আল কুরআন বলে, পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের নিকট আমার রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর পৃথিবীতে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্গনকারী। (সুরাহ মায়েদা, আয়াত-৩২) এসব আয়াত ও কুরআনের বাণী ওই সব আহম্মকদের নজরে পড়ে না । মক্কার কাফেরদের কুফরী ও শিরকের উপর অটল থাকা এবং মুসলিমদেরকে উমরাহ ও হজের মত ইবাদাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা অতি গুরুতর ও কঠিন অপরাধ। এরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার কারণেই তাদেরকে হত্যা করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।মসজিদে হারাম সীমানায় যুদ্ধ করা নিষেধ। কিন্তু কাফেররা যদি হারাম-এর মর্যাদার খেয়াল না রাখে, তাহলে তোমাদেরও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি রয়েছে। এসব কথা হলো উপরে আলোচিত আয়াতের সহজ ব্যাখ্যা। যাদের আল কুরআনের উপরিউক্ত আয়াত নিয়ে এতো এলার্জি ।
কলকাতা হাইকোর্টে উক্ত মামলা দায়ের এর পর মুসলমানদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।সারা বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশ এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। ভারতের কাশ্মীরে বিশাল প্রতিবাদ মিছিলের সময় একজন ব্যক্তি নিহত ও অনেকে আহত হয়।বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।১৯৮৫ সালে ১০ মে জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার হাজার মুসলমান মিছিল ও সমাবেশে মিলিত হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরের দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় যা ঘটেছিল।সারাদেশের মত চাঁপাইনবাব গঞ্জে ১১ মে ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এক প্রতিবাদ সমাবেশ। হঠাৎ করে তৎকালীন পুলিশ সুপার আওলাদ হোসেন এবং ম্যাজিষ্ট্রেট মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করে । উপস্থিত তৌহিদী জনতা শুধু দোয়া করার অনুমতি চাইলে তা না দিয়ে জনতার উপর পুলিশ গুলি বর্ষণ করে।এতে স্কুল ছাত্র, কৃষক, রিক্সাওয়ালা ও রেল শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ জন শাহাদাত বরণ করেন। ঘটনার দিন বেলা ১১ টার সময় সমাবেশের আহবায়ক মাওলানা হোসাইন আহমদকে এসপি অফিসে ডেকে সমাবেশ বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়া হয়। কিন্তু ধর্মপরায়ণ তৌহিদী জনতা দলে দলে আসতে থাকে ঈদগাহ ময়দানে। ঈদগাহ ময়দানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। শুধুমাত্র দোয়া করে জনতাকে শান্ত করে চলে যাবো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সেই আবেদনও শুনেনি ম্যাজিষ্ট্রেট মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান । এসময় মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান সেই সুযোগ দেয়া হবে না বলে গালিগালাজ করতে থাকে। এক সময় তৌহিদী জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে ম্যাজিষ্ট্রেট মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান নির্দেশে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলী বর্ষণ করে।পুলিশের গুলিতে প্রথমেই মাটিতে লুটে পড়ে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল মতিন। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় শীষ মোহাম্মদ, রশিদুল হক, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র সেলিম, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিক্সা চালক মোক্তার হোসেন ও রেল শ্রমিক নজরুল ইসলাম শহীদ হন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক মানুষ। কুরআনের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যেখানে সকল মুসলমানের কর্তব্য সেখানে ইসলামী জনতার উপর গুলি বর্ষণ করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় রচনা করেছিল বাংলাদেশের কিছু মুসলমান নামধারী পুলিশ। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের নিদের্শদাতা ম্যাজিষ্ট্রেট মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান। ১৯৮৫ থেকে ২০১৪। ২৮ বছরের একটি দীর্ঘ সময়কাল। পুরো এই সময়টাই বাংলাদেশজুড়ে বেশ আলোচিত ছিলেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান।যার কর্মজীবনের শুরুটা হয়েছিল নানা বিতর্কের মধ্যে। শেষটাতেও বিতর্ক এড়াতে পারলেন না। লোভের আগুনে পুড়েছে তার সেবার মনন দেশ ও দশের চিন্তা না করেই তিনি নিজের চিন্তায় ছিলেন মশগুল। যার পরিণতিতে চাকুরী জীবনের শেষ বেলায় এসে তার সকল কর্মকান্ডে কেন্দ্রবিন্দুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রভাব এবং প্রতাপ, দুর্নীতি আর জালিয়াতি কোনটারই অভাব ছিল না তার। শুধু অভাব ছিল একজন মুক্তিযোদ্ধার খেতাব। সেই খেতাব অর্জন করতে গিয়ে তিনি ধরা খেলেন।১৯৮৫ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সেই আলোচিত-সমালোচিত ম্যাজিস্ট্রেট মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান দীর্ঘ ২৯ বছর পর ফের ২০১৪ সালে খবরের শিরোনাম হন। তবে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। ১৯৮৫ সালে মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন দেশের কুরআন প্রেমিক জনতার উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে। দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও বহাল তবিয়তেই ছিলেন তিনি।এক সময় বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করে প্রমাণ করে তিনি একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েই তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধা সেজে সনদ গ্রহণ করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও জনপ্রশাসনবিষয়ক মন্ত্রণালয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকার) বৈঠকে মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে। শুধু তাই নয় মুক্তিযোদ্ধা সনদের শুনানিতে যথাযথ যুক্তি ও প্রমাণ তুলে ধরতে না পারায় মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিল করা হয়। বিগত তিন দশকে বিভিন্ন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলো তাকে তিরস্কার না করে বিভিন্ন মেয়াদে পুরস্কৃত করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য এখনো আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষায় আছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার তিন যুগ হতে চলছে তারপও বর্বরোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়কদের শাস্তির দাবি থেকে সরে আসেনি নিহতদের স্বজনরা। শেষ করি কুরআনের আয়াত দিয়ে -" তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে। (সুরা তাওবা আয়াত-৩২)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ’ নাজিল করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। (সূরা আল হিজর আয়াত-৯)।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল