আল্লাহ বলেন,অতঃপর আমরা তাদের উপর তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত বিস্তারিত নিদর্শন হিসেবে প্রেরণ করি। এরপরও তারা অহংকার করল। আর তারা ছিল এক অপরাধী সম্প্রদায়।( সুরা আরাফ আয়াত- ১৩৩)।ফেরাউনের জাদুকরদের সাথে সংঘটিত সে ঐতিহাসিক ঘটনার পরও মূসা (আ.)- দীর্ঘ দিন যাবৎ মিসরে অবস্থান করে সেখানকার অধিবাসীদেরকে আল্লাহর বাণী শুনান এবং সত্য ও সরল পথের দিকে আহবান করতে থাকেন। এ সময়ে আল্লাহ্ তায়ালা মূসা (আ.)-কে নয়টি নিদর্শন বা মোজেজা দান করেছিলেন। লাঠি , প্রদীপ্ত হস্ততালু , দুর্ভিক্ষ ,তূফান , পঙ্গপাল , উকুন, ব্যাঙ , রক্ত, প্লেগ, সাগরডুবি। এগুলোর উদ্দেশ্য ছিল ফেরআউনের সম্প্রদায়কে সতর্ক করে সত্য পথে আনা। আলোচ্য আয়াতে এই এসব নিদর্শন সম্পর্কেই বলা হয়েছে। এসব আযাব ধারাবাহিক ভাবে মিসরীয়দের উপর নাযিল হয়। রক্তের আযাব উঠিয়ে নেবার পরও যখন ওরা ঈমান আনলো না, তখন আল্লাহ ওদের উপরে প্লেগ মহামারী প্রেরণ করেন । অনেকে এটাকে ‘বসন্ত’ রোগ বলেছেন। যাতে অল্প দিনেই তাদের ৭০ হাজার লোক মারা যায়। অথচ বনু ইসরাইলীরা ভালো থাকে। আল্লাহর আযাবের সাথে সাথে এগুলি ছিল মূসা (আ.) এর মোজেজা এবং নবুয়তের নিদর্শন। কিন্তু জাহিল ও অহংকারী নেতারা একে জাদু বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করত।প্লেগের মহামারির ফলে ব্যাপক প্রাণহানিতে ভীত হয়ে তারা আবার এসে মূসা (আ.) এর নিকটে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে লাগল। মূসা (আ.) আবারও তাদের জন্য দোয়া করলেন। ফলে আযাব চলে গেল। কিন্তু তারা পূর্বের ন্যায় আবারো ওয়াদা ভঙ্গ করল। ফলে তাদের চূড়ান্ত ধ্বংস অবধারিত হয়ে গেল। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই যাদের উপরে তোমার প্রভুর আদেশ নির্ধারিত হয়ে গেছে, তারা কখনো বিশ্বাস আনয়ন করে না, যদিও সব রকমের নিদর্শনাবলী তাদের নিকটে পৌছে যায়, এমনকি তারা মর্মান্তিক আযাব প্রত্যক্ষ করে।’(সুরা ইউনুস আয়াত ৯৬-৯৭)।
গ্রন্থনায়-মো আবু রায়হান

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন