সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

করোনা আসলেই ভাইরাস না চীনের তৈরী জৈব অস্ত্র?


মো.আবু রায়হান : ক্ষমতার লড়াইয়ে বিশ্বের শক্তিগুলো অনেকটা উন্মাদ ও অন্ধ হয়ে গেছে। চীন নিজেকে বিশ্বে সুপারপাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই জৈব মারণাস্ত্রের সাহায্য নিয়েছে বলে চারিদিকে চাউর হচ্ছে। শুধু যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে তা নয়। বিশ্বের অনেক দেশের মূলধারার কিছু কিছু সংবাদপত্রও এসব তত্ত্ব প্রচার করছে। ষড়যন্ত্র তত্ত্বের এসব তত্ত্বগুলো আসছে প্রধানত রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইরান থেকে।চীন এবং ইরানের ভেতর থেকে সন্দেহের তীর জোরালো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে।চীনের ভেতর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনারা অবিরত লিখছে এবং তা রীতিমতো শেয়ার করে জানিয়ে দিচ্ছে যে চীনকে শায়েস্তা করতে যুক্তরাষ্ট্র জীবাণু অস্ত্র হিসাবে চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়, একজন চীনা কূটনীতিক তার টুইটার অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রেের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, উহানে গত বছর অক্টোবর মাসে একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসা মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি দল এই ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে বলে তার দাবি। ইতোমধ্যে  চীনের ভেতর থেকে একাধিক বিজ্ঞানী বলার চেষ্টা করছেন করোনা ভাইরাসের মহামারি চীনে শুরু হলেও এই ভাইরাসের উৎপত্তি চীনে হয়নি।এদিকে রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদপত্রে এই ভাইরাস ছড়ানোর জন্য ব্রিটেনকেও দায়ী করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. চার্লস লিবারকে গ্রেফতার করা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কিছু গণমাধ্যমে এমন কথা উঠেছে যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাগারে করোনা ভাইরাস তৈরি করে চীনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। চীনের পর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর তার গ্রেফতার নিয়েও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হয়েছে। এসব বিতর্কের রেশ না কাটতেই জীবাণুু অস্ত্রের মাধ্যমে কারোনা ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগে  চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের একটি আদালতে ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই বিতর্কিত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন একদল বিজ্ঞানী মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে একটি বিবৃতি দিয়েছেন যেখানে তারা বলেছেন, "জীবজন্তুর শরীর থেকেই এই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শুধুই ভয়,গুজব এবং ঘৃণা ছড়াবে যাতে এই সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যাহত হবে।বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভাইরাসের যে জিন রহস্য (জীবনরহস্য), তা পর্যালোচনা করে বোঝা যাচ্ছে, এটি গবেষণাগারে তৈরি কোনো ভাইরাস নয়।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, এই ভাইরাস চীনের উহানের স্থানীয় পশুর মার্কেট থেকে ছড়িয়ে পড়েছে, এখন পর্যন্ত এটাই প্রমাণিত। এমনিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধে।  এরমধ্যে করোনা ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে নিশ্চল করে দিয়েছে। যদিও চীন তার সংকট মোকাবেলা করে বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্বের আসনে সমাসীন। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। কর্মহীন হওয়ার পরিমাণও ছিল তাদের গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বমিন্ম। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে, এখন বিপর্যস্ত অর্থনীতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সামরিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এই দেশটি। মার্কিন শ্রম দফতরের একটি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, করোনা মহামারীর আতঙ্কে এপ্রিলের শুরুতে ৬৬ লাখ মানুষ আবেদন করেছেন বেকার ভাতার জন্য। এর আগে গত সপ্তাহে ৩৩ লাখ মানুষের আবেদনের কথা জানানো হয়েছিল৷ ফলে প্রায় এক কোটি মানুষ কাজ হারানোর আতঙ্কে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের প্রতিটিই এখন করোনা আক্রান্ত।করোনার সঙ্গে তাই প্রতিটি রাজ্যেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকার ও কর্মহীন মানুষের সংখ্যা।

করোনা ভাইরাস জৈব অস্ত্র হিসেবে বিতর্কের সূচনা করে এমন এক সময় যখন করোনা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে চাইনিজ ভাইরাস বলে অভিহিত করেন।আজ অনেকের একটাই প্রশ্ন করোনা কি আদৌ পশুর দেহ থেকে ছড়িয়ে পড়া কোনো ভাইরাস নাকি চীনের উহানের গবেষণাগারেই তৈরি হয়েছে এই ভাইরাস? 

বছর দু'য়েক আগের চীনের স্থানীয় গণমাধ্যম পিপলস ডেইলি চায়নার একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছিল, ‘চিনের ভাইরোলজি ইন্সটিটিউট ইবোলার চেয়ে ভয়ংকর এক জীবাণু নিয়ে গবেষণা করছে। ৩০ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছিল এর জন্য। বণ্যপ্রাণীর বাজার থেকে মাত্র দশ মাইল দূরে তৈরি করা হয়েছিল এটি।এক সঙ্গে  ওয়াশিংটন টাইমস দাবি করে, করোনা ভাইরাসগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয় ওই গোপন পরীক্ষাগারে। সার্সধর্মী ভাইরাস নিয়ে গবেষণাও চীনের জৈব রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । বড় আকারের  এই গবেষণা কর্মসূচি  কয়েকটি পর্যায়ে সম্পূর্ণ করা হয়।ইবোলা, নিপা এবং ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরজিক ফিভার ভাইরাস নিয়ে গবেষণায় জড়িত ছিল উহান ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল বায়োসেফটির ওই ল্যাবটি। 
ইসরায়েলের একজন সামরিক গবেষক ড্যানি শোহাম দাবি করেছেন, চীনের এক গবেষণাগার থেকে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তার দাবি, ওই গবেষণাগারে গোপনে জৈব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করে বেইজিং।শোহাম জীবাণু ও রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলের কর্মসূচির উচ্চপদস্থ বিশেষজ্ঞ ছিলেন, একজন  লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার। তার দাবি, জৈব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির গোপন কর্মসূচি চলা একটি ইনস্টিটিউট থেকে প্রাণীবাহী করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। জুলাইয়ে ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইনস্টিটিউটের জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে শোহাম দাবি করেন, চীনের যে চারটি গবেষণাগারে জৈব অস্ত্র তৈরি হয়, উহান তার মধ্যে একটি। ১৯৮৫ সালে জৈব অস্ত্র কনভেনশনে স্বাক্ষর করে চীন। এরপর ১৯৯৩ সালে চীন উহানকে দ্বিতীয় জৈব অস্ত্র গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে। 
বিশ্বনেতাদের মধ্যে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। আইসিইউতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার নেতৃত্বাধীন জরুরি কালীন কমিটি ‘কোবরা’ চীনের গবেষণাগার থেকে জীবাণু ছড়ানোর তত্ত্ব ফের সামনে নিয়ে আসে। বিজ্ঞানীরা যাই বলুন, উহান প্রদেশের গবেষণাগারে জীবাণু তৈরির তথ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন না ব্রিটেনের ওই বিশেষ কমিটি।ইরানের মানুষের বিরুদ্ধে জৈব অস্ত্র হিসেবে করোনাভাইরাস প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটি। সরকারি নির্দেশে দেশটির গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের একটি দল যৌথ ভাবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।চীনের পাশাপাশি ইরানের ভেতরেও ব্যাপক মানুষের বিশ্বাস এই জীবাণু যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।এমনকি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের কম্যান্ডার মেজর জেনারেল হুসেইন সালামি সরাসারি বলেছেন, করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি জীবাণু অস্ত্র। জে. সালামি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে চীনে এবং পরে ইরানের বিরুদ্ধে জীবাণু-অস্ত্রের সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছে পুরো বিশ্ব। এই  ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের সুপরিক'ল্পিত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হচ্ছে। এ কারণে চীনের শাস্তি হওয়া উচিত বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে আর্জি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞ সংসদ (আইসিজি) নামের লন্ডনের একটি সংগঠন।তবে চীনা কর্তৃপক্ষ সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে  তারা এই ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে কিছুই জানেন না। চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকার বিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক গাও ফু বলেন, উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে।
চীনের প্রতি সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয় এ কারণে  যে এই ভাইরাস চীনের সব প্রদেশে ছড়ায়নি।  অথচ এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২০৮ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।এ পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের জীবন। এটি কীভাবে হলো?  সেই রহস্যের এখনও কোনো কূলকিনারা হয়নি। ২৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার সাংহাইতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৩০০ জনেই সীমাবদ্ধ থাকলো। সাংহাই চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর, বাণিজ্যিক খাতের কেন্দ্রবিন্দু ও দেশটির বৃহৎ শিল্পকেন্দ্রগুলির একটি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, সংস্কৃতি, গণমাধ্যম, প্রযুক্তি ও পরিবহনে এটি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। এটি সমগ্র বিশ্বের অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র এবং জাহাজের মালামালের বাক্স তথা কন্টেইনারের হিসেবে বিশ্বের ব্যস্ততম সমুদ্রবন্দর। এছাড়া বর্তমানে উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রেও এটি চীনের অন্যতম অগ্রগণ্য কেন্দ্র। কিন্তু করোনা মহামারিতে শহরটি অক্ষত। চিন থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে ইতালি স্পেন তথা ইউরোপের দেশগুলো যখন করোনোর থাবায় লাশের স্তুপ। তখন চীনের রাজধানী বেইজিং, সাংহাই, হংকং অনেকটাই করোনা মুক্ত ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। করোনায় যখন বিশ্বের বাঘা বাঘা নেতা আক্রান্ত ও মারা সেখানে চীনের কোনো নেতাকেও স্পর্শ করলো না এই ভাইরাস!  এসব প্রশ্নের যথার্থ উত্তর কে দেবে?

উহানে মৃত্যুর সংখ্যা চীন কেন কমিয়ে বলা হচ্ছে? করোনা দূর পথের ইতালি স্পেন চিনলো কিন্তু উহান থেকে ১১৫২ কিলোমিটার দূরত্বের বেইজিং চিনলো না,উহান থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দূরত্বের সাংহাই চিনলো না, করোনা ৯১৯ কিলোমিটার দূরত্বের হংকং চিনলো না। অথচ করোনা উহান থেকে ৮৬৫৯ কিলোমিটার দূরত্বের ইতালি চিনলো এবং দেশটিতে লাশের উপত্যকায় পরিণত করল।করোনা ছড়িয়ে পড়লো ইতালি থেকে স্পেন, ইংল্যান্ড, আমেরিকায়। যদি কখনো  প্রমাণিত হয় চীন করোনা ছড়িয়েছে জৈব অস্ত্র হিসেবে বিশ্ব অর্থনীতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে  তাহলে বিশ্বের জন্য সামনে অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর দিন।সেটি হবে করোনার চেয়ে ভয়াবহ কিছু।করোনা ছড়িয়ে দিয়ে চীন এখন বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। অসহায় মানুষদের সাহায্য সহযোগিতার ত্রাণকর্তা হিসেবে  আবির্ভূত হয়েছে। কেননা আমেরিকা এখন নিজের ঘর সামলানোয় ব্যস্ত। মাথামোটা বিশ্ব নেতারা অস্ত্র তৈরিতে বিলিয়ন মিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করতে পারেন কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার কথা খুব বেশি ভাবতে পারেননি।যে কারণে করোনার মতো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে  তাদের এতোটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে। 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিংশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ড  পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের ঔপনিবেশ সাম্রাজ্য  গুটিয়ে নিতে শুরু করলে বিশ্বব্যাপী একচেটিয়া কর্তৃত্ব বিস্তার করে যুক্তরাষ্ট্র।মূলত১৮৭২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই ছিল বিশ্ব অর্থনীতির লাগাম। নয়া সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের মাধ্যমে বিশ্বে বাণিজ্যের প্রসার ঘটায় দেশটি।সেই সময় আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল একমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন বর্তমানের রাশিয়া।গত শতাব্দীর শেষের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্ব হয়ে পড়ে এক মেরু কেন্দ্রিক।গোটা বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্র দাপটের সঙ্গে শাসন ও নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এদিকে ভবিষ্যতের সুপার পাওয়ার চীনের অর্থনৈতিক উন্নতির ইতিহাস খুবই অল্প সময়ের। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা বৃদ্ধি পায় ৯০-এর দশকে। মাত্র ৩০ বছরে তারা উল্লেখযোগ্যভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘটিয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। চীন যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অতিক্রম করে একক দখল নিয়ে নেওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।সারা বিশ্বে বাণিজ্যের বিস্তৃতি ঘটিয়ে বিশ্বের সুপার পাওয়ারের আসনে বসতে যাচ্ছে চীন। বর্তমানে বিশ্বের মোট সম্পদের ১০ শতাংশ চীনের দখলে। ২০১৮ সালে চীন ২৫ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য উৎপাদন করে বিশ্ব অর্থনীতিতে শীর্ষে অবস্থান করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র  ২০ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার উৎপাদন করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।অনেকের ধারণা আগামী দিনে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় চীন সম্মুখ সমরে না জড়িয়ে অর্থনীতিভাবে এগিয়ে চলতে চায়। একই সঙ্গে সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের নামে জৈব অস্ত্র ছড়িয়ে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য জানান দিল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...