সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রোজ কিয়ামত কত দূর ?



মো.আবু রায়হান : কুরআনে বিভিন্ন সুরাতে কিয়ামত কথা আলোচনা করা হয়েছে। মানুষের চরিত্র সংশোধনের জন্যে এবং তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যে কিয়ামতের আলোচনা করা হয়েছে। আজকাল কথায় কথায় কেয়ামত সন্নিকটে বলে হুশিয়ারি দেয়া হয়। এই দলে বক্তা থেকে কিছু ইউটিউবার পর্যন্ত যুক্ত আছেন। দাজ্জাল কখন আসবে, ইয়াজুজ মাজুজ কখন গেট ভেঙ্গে আসবে, ইমাম মাহদী নাকি ইতোমধ্যে এসেছেন ইত্যাদি সস্তা কথা বলে জমজমাট ব্যবসা করছে ইউটিউবাররা। এসব শোনে কিছু জাহেল মুসলমান জড়োসড়ো হয়ে হাত পা ছেড়ে দিয়ে কিয়ামতের দুশ্চিন্তায় অস্থির। অথচ কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সন তারিখ কুরআন ও হাদিসের কোথাও নেই।এই প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসে নির্দিষ্ট কোন তারিখ উল্লেখ না থাকলেও কিয়ামতের  আলামত বা নিদর্শন সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তারা কি শুধু এই অপেক্ষায় রয়েছে যে কিয়ামত তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কিয়ামতের লক্ষণগুলো তো এসেই পড়েছে। সুতরাং এসে পড়লে তারা কীভাবে উপদেশ গ্রহণ করবে? (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত - ১৮)। অপর আয়াতে বলা হয়েছে, তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন হবে? আপনি বলে দিন, এর খবর তো আপনার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে তিনি তা পরিষ্কারভাবে দেখাবেন । (সুরা  আরাফ, আয়াত -১৮৭)আল্লাহ এরশাদ করেন, কিয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোনো ফল আবরণমুক্ত হয় না এবং কোনো নারী সন্তান প্রসব ও গর্ভধারণ করে না। (সুরা হা-মিম-সাজদা আয়াত - ৪৭)।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, গুপ্ত জ্ঞানের বিষয় পাঁচটি—১. কিয়ামত। তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। ২. আগামী দিন কী ঘটবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। ৩. কখন বৃষ্টি হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। ৪. কার কোথায় মৃত্যু হবে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। ৫. কখন কিয়ামত হবে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। (সহিহ বুখারি)।
কিয়ামত শব্দটি আরবি। অর্থ মহাপ্রলয়, পুনরুত্থান। ইয়াওমুল কিয়ামা—অর্থ কিয়ামতের দিবস। কিয়ামত দিবসের আরো কিছু নাম আছে। যেমন—ইয়াওমুল জাযা (প্রতিদান দিবস), ইয়াওমুল হিসাব (হিসাবের দিবস), ইয়াওমুল কাজা (বিচার দিবস) , ইয়াওমুদ-দিন ( শেষ বিচারের দিন), ইয়াওমুল হাশর (সমাবেশের দিন) ইয়াওমুল জাময়ে (একত্রিত করার দিন), ইয়াওমুল বায়াছ (পুনরুত্থান দিবস) ইত্যাদি।
কিয়ামত হচ্ছে যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর সর্বশেষ পরিণতি অর্থাৎ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার নাম। মানুষ, পৃথিবী ও সৌরজগতসহ সকল কিছুর মহা ধ্বংসকেই কিয়ামত বলে অভিহিত করা হয়। 
কিয়ামতের লক্ষণ সমন্ধে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের আগে অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, মানুষের হৃদয় কঠিন হয়ে যাবে এবং মারামারি, হত্যাযজ্ঞ বেড়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি)। হযরত জিব্রাঈল (আ.) একদিন ছদ্মবেশে রাসুলুল্লাহ (সা.)'র কাছে হাজির হয়ে আরজ করেন, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি থেকে জিজ্ঞাসাকারী অধিক জ্ঞাত নয়। অর্থাৎ কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।
কিয়ামতের আগে গোটা পৃথিবীতে অনিয়ম, পাপাচার ছড়িয়ে পড়বে। 
১. সরকারি মালকে নিজের মাল মনে করা হবে। ২. আমানতের মালকে নিজের মালের মতো ব্যবহার করা হবে। ৩. যাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে। ৪. ইসলামি আকিদা বর্জিত ইলম শিক্ষা করা হবে। ৫. পুরুষ নারীর অনুগত হবে। ৬. মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হবে। ৭. বন্ধুদের আপন মনে করা হবে। ৮. পিতাকে পর ভাববে। ৯. মসজিদে শোরগোল করবে। ১০. পাপী লোক গোত্রের নেতা হবে। ১১. অসৎ ও নিকৃষ্ট লোকেরা জাতির চালক হবে। ১২. ক্ষতির ভয়ে কোনো লোককে সম্মান করা হবে। ১৩. গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের প্রচলন হবে। ১৪. মদপানের আধিক্য ঘটবে। ১৫. এই উম্মতের পরবর্তী লোকেরা পূর্ববর্তী লোকদের বদনাম করবে। (তিরমিজি)।
কিয়ামতের নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্বীনি ইলমের ঘাটতি, নগ্নতা ও উলঙ্গপনা, ফিতনা-ফাসাদের বিস্তার, অশ্লীলতার সয়লাব, হত্যাকাণ্ড, ভূমিকম্পের আধিক্য। এমনকি হত্যাকারী বলতে পারবে না কেন সে খুন করছে। মানুষ অট্টালিকা নির্মাণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে। মানুষ জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে মৃত্যুকে বেশি পছন্দ করবে। ধনসম্পদ এত বেড়ে যাবে যে ধনী সদকা করার মতো কাউকে পাবে না। দুটি বৃহৎ দল একই দাবিতে ভয়াবহ যুদ্ধে লিপ্ত হবে। কিয়ামতের আগে ৩০ জন মিথ্যা নবুয়তের দাবিদার হবে। মুসলমানরা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুকরণ ও অনুসরণ করবে। মানুষ জালিমকে জালিম বলবে না, খারাপ কাজ থেকে কেউ কাউকে বারণ করবে না। নারীদের আধিক্য হবে, ৫০ জন নারীর দেখাশোনার ভার একজন পুরুষের ওপর অর্পিত হবে। যিনা, ব্যভিচার ও মদের ছড়াছড়ি হবে। ইহুদিদের সঙ্গে মুসলমানদের যুদ্ধ হবে এবং যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হবে। এমনকি জড়পদার্থ পাথরও তোমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসে বলবে, হে মুসলমান! দেখো আমার পেছনে এক ইহুদি লুকিয়ে আছে, তাকে হত্যা করো। (সহিহ বুখারি, মুসলিম)।

কিয়ামতের কিছু বড় আলামত বা আলামতে কুবরা সমন্ধে বর্ণনা কুরআন ও হাদিসে পাওয়া যায়। 
.দাজ্জালের আবির্ভাব হবে : দাজ্জালের আগমণের পূর্ব মুহূর্তে মুসলমানদের অবস্থা খুব ভাল থাকবে। তারা পৃথিবীতে শক্তিশালী এবং বিজয়ী থাকবে। সম্ভবতঃ এই শক্তির পতন ঘটানোর জন্যই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। মানুষকে গোমরাহ করার জন্য পূর্ব দিক থেকে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।দাজ্জাল মক্কা-মদিনা ছাড়া সর্বত্র বিচরণ করবে। দাজ্জালের মাধ্যমে মানুষ দলে দলে গোমরা হয়ে যাবে। তবে খালেস ইমানদাররা তাকে চিনতে পারবে, তার দুই চোখের মাঝখানে কাফের লেখা থাকবে এবং ডান চক্ষু টেরা থাকবে। রাসুল (সা.) বলেন, সমস্ত নবি-রাসুলই তাঁদের উম্মতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন, তবে আমি তার সম্পর্কে বলছি, তার ডান চক্ষু টেরা, তোমাদের প্রভু টেরা নন। (বুখারি, হাদিস : ৭৪০৮)। 
.হযরত ঈসা (আ.)-এর প্রত্যাগমন : হযরত ঈসা (আ.) কিয়ামতের আগে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করবেন। তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তাঁর আগমনের পর পৃথিবীতে ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।তিনি সমস্ত পৃথিবীর শাসনভার গ্রহণ করবেন এবং পৃথিবীতে শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।এরপর তাঁর ওফাত হবে। এক বর্ণনা মতে, তাঁকে রাসুল (সা.)-এর রওজা মুবারকের পাশে সমাহিত করা হবে।
৩.ইয়াজুজ ও মাজুজের আবির্ভাব : কিয়ামতের আগে হজরত নুহ (আ.)-এর পুত্র ইয়াফাসের বংশে ইয়াজুজ ও মাজুজের আবির্ভাব হবে।তাদের জুুলকারনাইনের প্রাচীর দ্বারা আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ-মাজুজকে বন্ধনমুক্ত করে দেওয়া হবে এবং তারা উচ্চভূমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে (কিয়ামত হবে না)।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত - ৯৬)।তারা বর্বর, নিষ্ঠুর ও জালিম প্রকৃতির। কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে তারা প্রাচীর ভেঙে সমতল ভূমিতে চলে এসে হত্যাযজ্ঞ ও লুটতরাজ চালাবে। এদের রোধ করার ক্ষমতা কারো থাকবে না।হযরত আবদুর রহমান ইবনে ইয়াজিদের বর্ণনা মতে, পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ইয়াজুজ-মাজুজ তবরিয়া উপসাগর অতিক্রম করবে। ইয়াজুজ-মাজুজ বায়তুল মোকাদ্দাসসংলগ্ন পাহাড় জাবালুল খমরে আরোহণ করে ঘোষণা করবে : আমরা পৃথিবীর সব অধিবাসীকে হত্যা করেছি। এখন আকাশের অধিবাসীদের খতম করার পালা। সে অনুযায়ী তারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করবে। আল্লাহর আদেশে সে তীর রক্তরঞ্জিত হয়ে তাদের কাছে ফিরে আসবে। এটা দেখে বোকারা এই ভেবে আনন্দিত হবে যে আকাশের অধিবাসীরাও নিঃশেষ হয়ে গেছে। (মা’আরেফুল কোরআন)।
৪.ইমাম মাহদীর আবির্ভাব ঘটবে :
মুসলমানরা যখন কাফের-মুশরিকদের অত্যাচার-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে আল্লাহ তায়ালা তখন মুসলমানদের ত্রাণকর্তা হিসাবে ইমাম মাহদীকে প্রেরণ করবেন। সকল আল্লাহ দ্রোহী শক্তির বিরুদ্ধে তিনি বিজয়ী হবেন। তখন পুরো পৃথিবীতে ইসলামের পতাকা উড়বে। মুসলমানদের জয়গান বেজে উঠবে।
কিয়ামতের ১০টি বড় নিদর্শনের কথা বুখারী শরিফে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ১০টি নিদর্শন যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা দেখতে পাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। তা হলো—১. ধোঁয়া, ২. দাজ্জাল, ২. দাব্বাহ (জমিন থেকে একটি জন্তুর বের হওয়া), ৪. পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, (কিয়ামতের ১০০ বছর আগে মাত্র এক দিনের জন্য পশ্চিম দিক দিয়ে সূর্য উদিত হবে), ৫. হযরত ঈসা (আ.)-এর আগমন, ৬. ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন, ৭. পূর্ব দিকের তিনটি ভূমিকম্প, ৮. পশ্চিম দিকে ভূমিকম্প, ৯. আরব উপদ্বীপের ভূমিকম্প, ১০. ইয়েমেন থেকে উত্থিত আগুন, যা মানুষকে তাড়িয়ে সমাবেশের স্থানে নিয়ে যাবে। (সহিহ বুখারি)।
অন্য এক বর্ণনায় ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ, কাবা শরীফ ধ্বংস এবং মানুষের অন্তর থেকে কুরআনুল কারীম উঠিয়ে নেয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে।কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের নেক আমলও বাড়াতে হবে। যাতে কঠিন বিপদে এসব আমল আমাদের জন্য নাজাতের উসিলা হয়। আমিন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...