হোম কোয়ারেন্টিন ও ইসলাম
মো.আবু রায়হান: হোম কোয়ারেন্টিন মানে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি নিজ বাড়িতে স্বেচ্ছায় একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকবেন এবং এ সময় নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। হোম কোয়ারেন্টিনকে অনেকে হোম আইসোলেশন বলে থাকেন। আইসোলেশন বাড়িতে রেখে সম্ভবও নয়। বরং একে হোম কোয়ারেন্টিন বলাটাই অনেক যুক্তিযুক্ত।কোনো ব্যক্তি যখন নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টিনের সব নিয়ম মেনে বাইরের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা বন্ধ করে আলাদা থাকেন, তখন তাকে হোম কোয়ারেন্টিন বলে। কোনো ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে বা রোগীর সংস্পর্শে এলে তার শরীরেও বাসা বাঁধতে পারে কোভিড-১৯। বাসা আদৌ বেঁধেছে কি না বা সে আক্রান্ত কি না এটা বুঝে নিতেই এই ব্যবস্থা নিতে হয়। এক্ষেত্রেও ন্যূনতম ১৪ দিন ধরে আলাদা থাকার কথা। আজ থেকে পনরো বছর পূর্বে মহানবী (সা.)যা বলেছেন তা হোম কোয়ারেন্টিনের যেন প্রতিচ্ছবি। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মহামারী হচ্ছে আজাবের নিদর্শন। আল্লাহতায়ালা এর মাধ্যমে তার কিছু বান্দার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। কাজেই তোমরা যদি কোথাও মহামারীর সংবাদ শোনো, তাহলে কখনোই সেখানে যাবে না। আর যদি তোমাদের বসবাসের নগরীতে মহামারী দেখা দেয় তাহলে সেখান থেকে পালাবে না।’ (মুসলিম, হাদিস -৫৯০৭)।
ইবনু আবি মুলাইকা (রহ.) বলেন, এক দিন উমর (রা.) কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত এক নারীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লক্ষ করেন, এ অবস্থায় সে কাবাগৃহের তাওয়াফ করছে। তখন তিনি তাকে বললেন, ‘হে আল্লাহর বান্দি, তুমি লোকজনকে কষ্ট দিয়ো না। যদি তুমি তোমার ঘরে অবস্থান করো, তাহলে সেটাই তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।’ (মুয়াত্তা ইমাম মালেক, কিতাবুল হজ, হাদিস : ৮৪৫)।যদিও কুষ্ঠ রোগ স্পর্শকাতর কোনো রোগ নয়। তারপরও সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ হিসেবে এটি গ্রহন করেছিলেন।
কুষ্ঠরোগীসহ অন্য গুরুতর সংক্রামক রোগীদের হাসপাতালে পৃথক করে রাখার ব্যবস্থা শুরু হয় হিজরি প্রথম শতাব্দীতে (৭০৬-৭০৭ খ্রি.)। ইসলামের ইতিহাসের উমাইয়া খেলাফতের ষষ্ঠ খলিফা ওয়ালিদ বিন আবদুল মালিকের তত্ত্বাবধানে দামেস্কে সর্ব প্রথম হাসপাতাল তৈরি করা হয়। সেখানে কুষ্ঠরোগী ও অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের পৃথক রাখার নির্দেশনা দেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন