সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলা ভাষায় প্রথম কুরআন অনুবাদক আমির উদ্দীন বসুনিয়া

মো.আবু রায়হান :বিশ্ব মানবতার হেদায়েতের উৎস আল কুরআন। কুরআন আরবি ভাষায় নাযিলকৃত।আল্লাহ তায়ালা বলেন, "নিশ্চয়ই আমি এটিকে কোরআন রূপে আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পারো। (সুরা হুদ, আয়াত - ২)।কিন্তু  বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষি মানুষের মাতৃভাষায় বোঝার সুবিধার্থে কুরআন তাদের নিজস্ব ভাষা অনুবাদ করা হয়েছে।কুরআন এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ভাষা অনূদিত হয়েছে। ইংরেজী ভাষায় পবিত্র আল কুরআন প্রথম অনুবাদ করেন আলেকজান্ডার বস ১৬৪৮ সালে। ইটালিয়ান ভাষায় প্রথম অনুবাদ করেন আন্দ্রে এ্যারি ত্যারিনি ১৫৪৭ সালে। জার্মানি ভাষায়  প্রথম অনুবাদ করেন সলেমন স্কেইজারী ১৫৪৭ সালে। আন্দ্রে ডুরিৎয়ার ফরাসী ভাষায় কুরআন প্রথম অনুবাদ করেন ১৬৪৭ সালে। পিত্তটর ডি পোষ্টানিকড ১৭১৬ সালে রাশিয়ান ভাষায়  কুরআন প্রথম অনুবাদ করেন। উর্দু ভাষায় কুরআন প্রথম অনুবাদ করেন  আব্দুস সালাম মোহাম্মদ ১৮২৮ সালে। বিশ্ব নবীর জীবদ্দশায় কুরআন বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত না হলেও তাঁর ওফাতের পর কুরআন প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন ভাষা অনূদিত হয়েছে।মক্কায় ইসলাম প্রচারে যখন রাসূল (দ.) তীব্র বাঁধার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তখন সেখানে একজন পারসিক  বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন দ্বিভাষী। কুরআন শুনা মাত্রই তিনি নিজে বুঝার জন্য অবচেতনে তা ফার্সিতে অনুবাদ করে নিতেন।পরবর্তীতে  তিনি কুরআনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
তুর্কি বীর ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী ১২০৪ সালে রাজা লক্ষণ সেনকে লখনৌতি থেকে বিতাড়িত করে বাংলা জয় করে  বিজিত অঞ্চলে বাংলা ভাষা চর্চার পথ উন্মুক্ত করেন।মুসলমানরা বাংলায় মসজিদ, খানকা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত করে তাদের ধর্ম কর্ম সম্পাদন করতে থাকেন এবং বাংলা ভাষার মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি ইসলাম ধর্ম প্রচার ও ধর্ম বিষয়ক গ্রন্থাবলী রচনায় আত্মনিয়োগ করেন। মধ্যযুগে প্রথম মুসলিম কবি শাহ মুহাম্মদ সগীর এদের অন্যতম। মাতৃভাষায় কুরআনি সাহিত্য চর্চা ষোড়শ শতাব্দীর মধ্য ভাগের কবি সৈয়দ সুলতানের (১৫৫০-১৬৪৮)‘ওফাতে রসুল’ নামক কাব্য গ্রন্থেও প্রতিফলিত হয়েছে।
 ১৮০৮/১৮০৯ খিষ্টাব্দে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলা চিলখাল মটুকপুর গ্রাম নিবাসী মাওলানা  আমির উদ্দীন বসুনিয়া আমপারার কাব্যানুবাদ করেছিলেন। খন্ডিত অনুবাদটি ছিল বাংলা পুঁথি সাহিত্যের ভাষায় আমপারার কাব্যানুবাদ। বাংলা ভাষায় কুরআন অনুবাদের তিনিই পথিকৃৎ, যদিও তা আংশিক ছিল। জানা যায়, এই আমপারা সে কালের লিথো প্রেসে মুদ্রিত হয়েছিল। মাওলানা আমির উদ্দীন বসুনিয়া ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ বাংলা ১২১৫ অব্দে তিনি প্রথম আমপারার অনুবাদ প্রকাশ করেন। যার আকার ছিল ডিমাই ১২ পেইজ ১৬৮ পৃষ্ঠা। অথচ আমাদের দেশে এ তথ্য আবিষ্কারের অভাবে গিরিশচন্দ্র সেনকে (১৮৩৫-১৯১০) কোরআনের প্রথম অনুবাদক বলা হয়।এর একটি কপি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের গ্রন্থাগারে অদ্যাবধি রক্ষিত আছে। আমির উদ্দিন বসুনিয়ার পবিত্র কুরআনের আমপারার বঙ্গানুবাদ ১৮৬৬ সালে ছাপার অক্ষরে আসে বলে অনেকেই মনে করেন। সেই হিসেবে গিরিশচন্দ্রের প্রায় বিশ বছর আগে রংপুরের আমির উদ্দিন বসুনিয়াই কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদকারী। যদিও তা আংশিক ছিল, তা সত্ত্বেও তিনিই কুরআনের প্রথম অনুবাদকারী হিসেবে বাংলার মুসলমান সমাজে অমর হয়ে আছেন।পূর্ববঙ্গের সর্বপ্রথম পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’ যে সময় প্রকাশ হয়েছিল সেই সময়টা ছিল ১৮৪৭ সাল। খুবসম্ভব এই প্রেসেই ছাপা হয়েছিল বসুনিয়ার এই কুরআনের বঙ্গানুবাদ গ্রন্থটি।
ব্রাহ্মণ ধর্মাবলম্বী গিরিশ চন্দ্র সেন (১৮৩৫-১৯১০) কর্তৃক বঙ্গানুবাদিত সম্পূর্ণ কুরআন প্রকাশিত হয় ১৮৮১ সালে এবং সমাপ্ত হয় ১৮৮৬ সালে।  গিরিশ চন্দ্র সেনের বঙ্গানুবাদটি ছিল পূর্ণাঙ্গ আর অন্যদের অনুবাদ ছিল খন্ডিত। গিরিশ চন্দ্র সেনের অনুবাদটি অনেকটা আক্ষরিক পর্যায়ের। এতে টীকা-টিপ্পনী সংযুক্তির ফলে এটাকে অর্থানুবাদ বললেও বেশি বলা হবে না। এর ভাষা প্রাঞ্জল। তবে সংস্কৃত শব্দের প্রভাবও কম নয়। প্রাথমিক পর্যায়ের কুরআন হিসেবে বিভিন্ন মুসলিম পন্ডিত ও সাহিত্যিকদের কর্তৃক অনুবাদটি প্রশংসিত হলেও অনুবাদটি ত্রুটি  মুক্ত নয়। উদাহরণ স্বরূপ সূরা ইখলাসের ‘আস সামাদ’ শব্দের অনুবাদটি লক্ষণীয়। তিনি শব্দটির অনুবাদ করেছেন ‘নিষ্কাম’ অথচ এর সঠিক অর্থ হবে ‘অমুখাপেক্ষী’। তিনি তার অনূদিত কুরআনের বিভিন্ন স্থানে স্বধর্মের প্রভাব বিস্তারেও প্রয়াসী হন। দৃষ্টান্তস্বরূপ সূরা হুমাযার অনুবাদের একটি টিকা লক্ষণীয়। তিনি বলেন “এই সূরাতে নরক যে বাহিরে নয়, অন্তরে ইহাই পরিব্যক্ত হইয়াছে”। গিরিশ চন্দ্র সেন অনুদিত কুরআন শরীফ (কলকাতা হরফ প্রকাশনী  ১৯৭৯)।আরবির পাশাপাশি ফার্সি অনুবাদেরও সাহায্য নিয়ে ছিলেন।আর তিনি আল্লাহ পাক এর নামের জায়গায় স্রষ্টা/ঈশ্বর এবং নবী ও রাসুল এর স্থানে পয়গম্বর ব্যবহার করে ছিলেন।১৮৮১সালের ১২ ডিসেম্বর কুরআনের প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয়। প্রথম খন্ড প্রকাশের সময় গিরিশচন্দ্র অনুবাদকের নাম গোপন রাখেন। কারণ তৎকালীন সময়ে কাজটি যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। মুসলিম সমাজে এর প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে সে সম্পর্কে তার কোন ধারণাই ছিল না। গ্রন্থটিতে শুধুমাত্র প্রকাশক গিরিশচন্দ্র সেন এবং মুদ্রক তারিণীচরণ বিশ্বাসের নাম ছিল। গিরিশচন্দ্র সেনের আগেও রাজেন্দ্রনাথ মিত্র কুরআনের অনুবাদ করেন ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মার্চ। আংশিক ছিল। 
টাঙ্গাইলের করটিয়ার মৌলভী মুহম্মদ নইমুদ্দীন (১৮৩২-১৯০৮) সাহেবের কথা। তিনি আখবার এসলামিয়া পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। আখবারে এসলামিয়া ১৮৮৩ সাল থেকে ১৮৯৩ পর্যন্ত চলছিল।এ পত্রিকার মাধ্যমে সমাজের কুসংস্কার দূর ও কুরআনের অনুবাদ প্রকাশ করতে থাকেন। মুসলমানদের মধ্যে মাওলানা নঈমুদ্দীন সর্বপ্রথম কুরআনের বঙ্গানুবাদ সহ ভাষ্য রচনা করেন।তিনিও পূর্ণাঙ্গ কুরআন অনুবাদে সফল হননি।। তাঁর অনূদিত কুরআন হতে ১ম থেকে ৯ম পারা পর্যন্ত তাঁর জীবদ্দশায় (১৮৮৭-১৯০৮) সালের মধ্যে প্রকাশিত হয়। অতঃপর তাঁর পুত্রগণও তাঁর অনুসরণ করে ২৩ পারা পর্যন্ত কুরআনের বঙ্গানুবাদ ও ভাষ্য ১৯০৯ খৃস্টাব্দে প্রকাশ করেন।
বঙ্গানুবাদে এগিয়ে আসেন কলকাতার পাটওয়ার বাগানের মির্জাপুর মহল্লার অধিবাসী আকবর আলী।আকবর আলীর অনুবাদটি ‘তরজমা আমছে পারা’ নামে বাংলা পুঁথি সাহিত্যের ভাষায় একটি কাব্যানুবাদ। এটি কলকাতা থেকে ১৮৬৮ খৃস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।পূর্ণাঙ্গ কুরআন শরিফের অনুবাদে কৃতিত্ব অর্জন করেন পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার চণ্ডিপুর গ্রামের অধিবাসী মাওলানা আব্বাস আলী (১৮৪৬-১৯২২)। কবি আবদুল কাদির তাঁর সুশীল "সাহিত্য ও সংস্কৃতি গ্রন্থের" চতুর্থ অধ্যায়ে লিখেন ‘সমগ্র কোরআনের বঙ্গানুবাদ করেন মুসলমানদের মধ্যে সর্বপ্রথম মাওলানা মোহাম্মদ আব্বাস আলী (১৮৫৯-১৯৩২) কলকাতা ৩৩ নম্বর বেনেপুকুর রোড, আলতাফি প্রেসে মুন্সি করিম বকসের দ্বারা মুদ্রিত ১৩১৬ বাংলা সন। আমপারা পর্যন্ত ৩০ পারার অনুবাদ। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৭৬। মূল আরবি পাঠের নিচে উর্দু তরজমা এবং তার নিচে বাংলা অনুবাদ।বর্ডারের দুই পাশে উর্দু তাফসীর ও বাংলা টীকা দেয়া হয়েছে। অতপর ওই তাফসিরের শেষে অনুবাদক যা বলেছেন তার উদ্ধৃতি, ‘ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থ অমৃতময় কুরআন আলেমরা ফার্সি, উর্দু ইত্যাদি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। কিন্তু বাংলার মুসলমানদের বোধগম্য সরল বাংলা ভাষায় কোনো অনুবাদ অদ্যাবধি পরিদৃষ্ট হয় নি। তাদের শ্রুতিমধুর কোরআনের বাক্য সুধাপানে বঞ্চিত ছিল। তাদের সেই অভাব বিমোচনের জন্য এ অনুবাদ প্রকাশিত হলো।'মৌলভী আব্বাস আলী পূর্ণাঙ্গ কুরআন অনুবাদ করেন এবং প্রকাশ করেন ১৯০৭ সালে। তাই বলা চলে, মুসলমানদের মধ্যে সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ কুরআনের বঙ্গানুবাদের গৌরবের দাবিদার মৌলভী আব্বাস আলী (১৮৪৬-২২)।
এরপর পূর্ণাঙ্গ কুরআন যিনি অনুবাদ করেন, তিনি হলেন- রংপুরের খান বাহাদুর তসলিম উদ্দীন আহম্মদ (১৮৫২-১৯২৭)।তিনি রংপুর জেলার প্রথম মুসলিম গ্র্যাজুয়েট (১৮৭৭) কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। খান বাহাদুর তসলিম উদ্দীনকৃত এই মহাগ্রন্থের পূর্ণাঙ্গ তরজমা ১৮৯১ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ ২২ বছরব্যাপী তার অকান্ত পরিশ্রমের ফসল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ের দিন আজ

মো.আবু রায়হানঃ আজ ২০ রমজান ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের ১৪৩৩ তম বার্ষিকী।আজ থেকে ১৪৩৩ বছর আগে হিজরতের ৮ম বছরে ২০ রমজান তথা ৬৩০ খৃস্টাব্দে রাসুল (সা.) মক্কা বিজয় করেন। ইতিহাসে এই ঘটনা মক্কা বিজয় বা ফতেহ মক্কা নামে খ্যাত।২০ রমজান শুধু মক্কা বিজয়ই হয়নি বরং প্রিয় নবি স্বমহিমায় নিজ জন্মভূমিতে ফিরে এসেছিলেন।তাই ২০ রমজান ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যবহ ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে।শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব ইতিহাসে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার অধিকারী হলো মক্কা বিজয়ের এ ঘটনা। পৃথিবীর আরম্ভ থেকে আজ পর্যন্ত যত যুদ্ধ ,বিজয় অভিযান, হয়েছে এসব যুদ্ধ ও অভিযানে একদল বিজয়ী হয়েছে আরেক দল পরাজয়কে বরণ করেছে। এসব যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন দিগ্বিজয়ী ইতিহাসের মহানায়কেরা। তাদের মধ্যে হিটলার,আলেকজেন্ডার,আর নেপোলিয়ান বেনাপোর্টের বিজয় অভিযানগুলো ছিল রক্তপাতের ইতিহাস,মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত হবার ইতিহাস।একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়। ঐতিহাসিকদের মতে মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয় যদিও আল কুরআনে হুদাইবি য়ার সন্ধিকেই ফাতহুম মুবিন বা প্রকাশ্য বিজয় বলে উল্লেখ করা হয়েছ...